না জানা কাজে লেগে যাওয়ার ফলাফল
সময় ২০০৮ ইং আমি ইরাক থেকে দেশে আসছি মাত্র ১বছর হলো কি করবো-কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না হঠাৎ একজন আমাকে বুদ্ধি দিল শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনের ব্যবসা করার জন্য আমি ও আগে পিছে না ভেবে হ্যা বলে দিলাম।তখন নসিমনের নতুন ব্যবসা চালু হইছে তাই কারো সাথে পরামর্শ না করেই ব্যবসায় নেমে পড়লাম,একজনকে সাথে ব্যবসা পাটর্নার হিসাবে নিলাম।তার কোন পুঁজি ছিলনা তবে নসিমন চালানোর দক্ষতা ছিল।আমার পুঁজি আর ওর পরিশ্রম এই দুইয়ের সমন্বয়ে লেগে পড়লাম।গাড়ি কিনতে চলে গেলাম আক্কেলপুর।ঠাকুরগাঁও থেকে আক্কেলপুর এর দূরত্ব বেশি হওয়ায় রাত্রে এক আত্মীয়(ইরাকের কলিক মামুনের বাসায় উঠলাম) দুঃখের বিষয় রাত্রে ওদের বাড়িতে চোর এসে ওদের সাইকেলসহ কিছু জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেল।কি যে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আমার কাছে ব্যবসার টাকা তার উপরে আমি নতুন আত্মীয়!নিজেকে নিজে এত ছোট মনে হচ্ছিল আর ভাবছিলাম কেন যে ওদের বাসায় উঠলাম,কখনো নিজের পকেট হাতিয়ে দেখছি টাকা আছে কিনা!আবার কখনো ভেতরে ভেতরে ভয় পাচ্ছি-না জানি এলাকার মানুষ আমাকে কি বলে,রাতে অনেক হৈচৈ হওয়ার পরে সকাল হলো।আল্লাহ আমাদর ইজ্জত বাঁচিয়েছে বাড়ীর মানুষেরা আমাদেরকে কিছু বলেনি।ওরা হয়তো আন্দাজ করতে পেরেছে তাদের শত্রুদের মধ্যে কেউ এ কাজ করেছে।যাহোক আমরা সকালে বিদায় নিয়ে তাদের বাসা থেকে চলে গেলাম আক্কেলপুর বাজারে,সেখানে অনেক নসিমন দেখলাম পছন্দ ও হইলো কিন্তু আমার কোন অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না কোনটা ভালো,কোনটা খারাপ,চেন ভালো নাকি গিয়ার ভালো,হ্যান্ডেল ভালো নাকি গোল হ্যান্ডেল ভালো।অতএব পার্টনার যেটা ভালো বলে আমিও সেটাই ভালো মনে করি।অনেক যাচাই-বাছাই করে একটি চেন সিস্টেমের গাড়ী কিনে নিলাম,আর পার্টনারের কথামতো আরেকটি গাড়ি তৈরি করার মালামাল কিনে নিলাম।এবার ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা দিলাম এক গাড়ির উপরে আরেক গাড়ির মালামাল।যাওয়ার পথে অনেক সমস্যায় পরি ছোট ও চেনের গাড়ী হওয়ায়,তাই তখন থেকেই আমার হতাশা শুরু।বিভিন্ন প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক শুরু করে দিল।গাড়ি ক্রয়ের পরে যদি এই অবস্থার শুরু হয় তাহলে রাস্তায় চলার পথে না জানি কি সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে?আমি কি গাড়ি দুইটা ক্রয় করে ঠিক করলাম?আমার এই ব্যবসায় ধারণা নেই তাহলে কেন এই ব্যবসায় জড়িত হলাম?এমন হাজার ও প্রশ্ন।অনেক কষ্টে বাসায় পৌঁছালাম তবে কারো কাছে কষ্টের কথা বলিনি।এবার শুরু করলাম নতুন গাড়ি তৈরির কাজ এখানে সবচেয়ে বড় ভুল ছিল আমার দ্বিতীয় গাড়িটি তৈরীর জন্য যে কারখানা নির্বাচন করা হয়েছিল সেটি একটি অদক্ষ এবং সাধারন মানের কারখানা সেখানে শুধু দরজা জানালা তৈরীর কাজ হতো আর মার্কেট থেকে কারখানার দূরত্ব অনেক বেশি।এক গাড়িকে ব্যবহার করেছি অন্য গাড়িটি তৈরী করার জন্য মার্কেটে যাওয়া এবং কারখানায় আসাতে।এই সব করতে অনেক খরচ পড়ে যায় দ্বিতীয় গাড়িটির।শুধু তাই নয়,দ্বিতীয় গাড়িটি একদম অকেজো,এটা কোন কাজেরই না,এটা ভাড়া মারতেও পারেনা,যেখানে যায় সেখানেই পড়ে থাকে,এটাকে আবার মেরামত করে আনতে অনেক টাকা খরচ ও সমস্যায় পরতে হয়েছে।পার্টনার আর পার্টনার রইলোনা কারন তারও পরিবার আছে তাই লোকসান আমি শিকার করে নিলাম ওনাকে পেমেন্ট করলাম যত দিন সে আমার সাথেছিলো সে হিসাবে।শেষে ভাঙরির দামে গাড়ি দুটি বিক্রি করি এবং যা পুজিছিলো সব শেষ হয়ে গেলো।আরও অনেক ইতিহাস আছে এই গাড়ি দুটির,,,,,, তাই আমার মত কেউ ভুল করবেন না
(১)#যে_ব্যবসাই_করবেন_আগে_সেটার_বিষয়ে_জানবেন_বুঝবেন_তার_পর_লেগে_পরবেন_এবং_লেগে_থাকবেন।
(২)#শুধু_পরের_লাভ_দেখে_কখনোই_ব্যবসায়_নামা_যাবেনা।
(৩)#ব্যবসাতে_নিজের_ভালো_লাগা_থাকতে_হবে_পরের_ভালো_লাগাকে_পূজি_করে_ব্যবসায়_নামা_যাবেনা।
(৪)#এমন_ব্যবসা_বাছাই_করতে_হবে_সেটার_যেন_ভবিষ্যৎ_থাকে_উপরের_দিকে_উঠা_যাবে_এবং_অনেক_মানুষের_কর্মসস্থান করা যাবে। ধন্যবাদ জানাই জনাব-Iqbal Bahar Zahid স্যারকে এতো সুন্দর প্লাটফরম না করলে আমার এই অভিজ্ঞতার কথা সিয়ার করতে পারতামনা।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬১
Date:- ১৫/১১/২০১৯ ইং
মোহাম্মদ মুনজুর আলম
জেলাঃঠাঁকুরগাও
ষষ্ঠঃব্যাচ
মেম্বার রেজিঃ151
রক্তের গ্রুপঃ0+
সংযুক্ত আরব আমিরাত
munjuralam03@gmail.com