বাবা আহত মুক্তিযোদ্ধা ছিল
_______"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"________
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
মনের অগোচরে লুকানো কিছু কথা সব সময় উঁকি মারে, এতদিন কারো সাথে শেয়ার করার সুযোগ ছিল না ,আজ আমার প্রিয় ফাউন্ডেশন-এর প্রিয় ভাই বোনদের সাথে আমার কিছু না বলা কস্টের কথা শেয়ার করতে এসেছি আশা করি পুরো লেখাটি আপনারা পড়বেন।
সর্ব প্রথম কৃতজ্ঞতা জানায় মহান রবের দরবারে।
মহান রব এই মহাবিশ্ব মহা মারিতেও আমাকে আপনাকে সুস্হ রেখেছেন ভালো ভাবে বাঁছিয়ে রেখেছন।
শ্রদ্ধার ভরা মন নিয়ে স্বরন করতেছি প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে।
যে স্যার আমাদের জন্য এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছেন।
সারাদিন কতো সেশন কতো কিছু শিখতেছি বিনা মূল্যে এমন প্লাটফর্ম এই দেশে আর আছে বলে আমার মনে হয় না।
স্যার এক মহান ব্যাক্তি সর্বোপরি আল্লার কাছে স্যারের জন্য দোয়া করি আল্লাহ্ আমার স্যার কে সুস্হতার সহিত নেক হায়াৎ দান করুন।
আমার প্রানের প্রিয় প্লাটফর্মের সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন আশা করি আল্লার রহমতে সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন দোয়া করি সবাই ভালো থাকেন।
🇧🇩🇧🇩এইমাস বিজয়ের মাস ডিসেম্বর মাস আসলেই আমার অনেক কিছু মনে পড়ে যায়।
এই বিজয়ের মাস অর্জন করতে আমাদের হাজারো মা বোন ইজ্জত দিয়েছেন। হাজারো ভাই শহীদ হয়েছেন।অনেক আবার আহত ও হয়েছন।
তার মধ্যে আমার বাবাও একজন আমি একজন মুক্তি যোদ্ধার সন্তান।
আজকে আমার পরিবার কে নিয়ে কিছু সুখ দুঃখ আপনাদের কাছে সিয়ার করবো।
আমার দাদা সিকদার ছিলো
সেই সুভাদে আমরা সিকদার ঘুষ্ঠি। আমার নানা ভাই চৌধুরীর সেই সুভাদে আমি চৌধুরী বাড়ির নাতীন।
নানা ভাই বিমানের পাইলট ছিলো তিন মামা উচ্চ শিক্ষিত ছিলো কিন্তু কি আজব কাহিনি আমার মা খালাদের বেশি পড়া-শুনা করার নি আমার নানা ভাই।
দাদা সিকদার সেই কালের জমিদার এক নামে চিনতো তাকে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার মানুষ।
আমার বাবা পরিবারের বড় ছেলে যুগ্ধের সময় বাবার ভুমিকা ছিলো অনেক আমার বাবা আমাদের কাছে গল্প করেছিলো পাক সেনারা যখন আসতো তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সবাই পালিয়ে আসতো আমাদের বাড়িতে। জীবন বাঁচানোর জন্য আর আমাদের পরিবারের লোক গুলো ও অনেক সাপোর্ট করতো তাদের তাদের খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে সব করতো আমাদের বাড়ির লোকজন।
বাবা যখন যুদ্ধ করতে মাঠে চলে যেত তখন আমাদের বাড়ি মহিলাদেরকে মাটিতে গর্ত করে উপরে কাঠ দিয়ে রেখে যেত।
হঠাৎ একদিন পাক সেনারা হিন্দুপাড়ায় হামলা করে তখন অনেক হিন্দু মহিলারা প্রেগ্যানেট ছিল তারা দৌড়াইয়া পালিয়ে আসে আমাদের বাড়িতে জীবন রক্ষার্থে।
আমার বাবা দাদা দাদি ফুফু সবাই তাদেরকে সুন্দর ভাবে আগলে রেখেছিল বাবা চাচারা সবাই যুদ্ধের মাঠে ছিল তারা যুদ্ধ করতে গিয়েছিল হঠাৎ করে হিন্দু মহিলার বাচ্চা হয় আমাদের বাড়িতে। তখন কি করবে তারা দিশাহারা ছিল তারা ইন্ডিয়া পালিয়ে যাবে ইন্ডিয়া যাওয়ার জন্য বাবার কাছে হেল্প চাচ্ছিল আমার চাচাদের কাছে হেল্প চাচ্ছিল।
তাদের হওয়া বাচ্চাটা আমাদের বাড়িতে রেখে তাদেরকে রাতে রাতে আমার বাবা চাচারা পালিয়ে যেতে সাহায্য করে।
পরে বাচ্চাটা আমাদের বাড়িতে রেখে ছিল পাশের গ্রামের এক লোকের বাচ্চা হয় না দেখে আমাদের বাড়ি থেকে এসে বাচ্চাটাকে নিয়ে যায় ওই বাচ্চাটাকে ও তার লালন-পালন করে তাদের কোন সন্তান ছিলোনা তাই আমার দাদা তাদেরকে দিয়েছিলেন না হয় আমার দাদা নিজে রেখে দিতো।
বাবা আহত মুক্তিযোদ্ধা ছিল আহত হয়ে তার কিডনির পাশে ব্যাথা পায় । আমার বাবা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন সৎ অনেস্ট মানুষ ছিল আমার বাবা প্রকৃতপক্ষে একজন ভাল মানুষ বলা যায় শুধু মানুষের জন্য করে গেলেন করে গেলেন কখনো বিনিময় চাইতেন না বাবা।
👉এভার,আসি আমার গল্পে 👈
বাবা-মায়ের খুব আদরের সন্তান বিশেষ করে দাদা বাইরে স্পেশাল নাতি আমি। খুব আদরে আহ্লাদে বড় ভাই বোনদের মধ্যে আমি বড় হই আমি ভাইবোনদের মধ্যে সাত নাম্বারে ও তবুও আদরের কোন অংশ কমতি ছিল না আমার প্রতি।
👉জীবনের আঘাত পেয়েছি কোথায়?
আমিও ছোটবেলা থেকে খুব আদরে আহ্লাদে একটু আবেগ বেশি আমার।
বাবা-মায়ের সংসারের সবচাইতে কষ্টের কথা যদি বলা হয় তাহলে বলবো আমার বাবা আমার মাকে বিয়ে করে আমার দাদা বড় ফুফির পছন্দে বাবা মাকে দেখেন নাই। না দেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।
আর আমার মায়ের বিবাহিত জীবনের সবচাইতে কষ্টের ছিল আমার সেই বড় ফুফি কারণে-অকারণে আম্মুর গায়ে হাত তুলতো বাবাকে নালিশ করতে বাবা এসে আম্মুকে মারতো দৃশ্যগুলো আমাকে খুব আঘাত করতো।
আমার মায়ের তুলনায় আমার বাবা অনেক শিক্ষিত ও অনেক সুন্দর স্মার্ট ছিল আমার মা একটু সাদামাটা ছিল যে কারণে তারা আমার মাকে তেমন একটা পছন্দ করতোনা আল্লাওয়ালা ছিল পর্দাশীল ছিলো। মাকে যখন মারতো তখন আমরা খুব কান্না করতাম।
বাবা পৃথিবীতে আল্লাহ নবী-রাসুল এরপর যদি কাউকে ভয় পেতেন সে হচ্ছেন আমার বড় ফুফি।
মা অনেক সময় আঘাত সহ্য করতে না পেরে নানা বাড়ি চলে যেত আমরা ছোট ছোট ভাই বোনকে নিয়ে।
তারপরে 2000 সালে আমার ফুপি মারা যায় আম্মু একটু শান্তি পায়।
মা নাই মারা গেছে ফফি মারা গেছে বাবা মারা গেছে দাদা মারা গেছে কিন্তু সেই স্মৃতি এখনো আমাকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে খায়।
আমার নতুন জীবন শুধু করি ২০০৮ সালে।
জুয়েলের সাথে আমার পরিচয় হয় প্রেম হয় তার পরে বিয়ে।
২০০৮ এর আগষ্টের ১১ তারিখ আমরা পালিয়ে বিয়ে করি। ওর দুই হাত ধরতে গিয়ে হারাজো হাত ছেড়ে জুয়েলের কাছে চলে আসছি সব মায়া মমতা ত্যাগ করে।
বিয়ের প্রথমে যাকে হারিয়েছি সেই হচ্ছে আমার কলিজা আমার বাবা কে।
কিন্তু তারা আমাকে এতো ভালোবাসা দিলো বাবা হারানোর শোক কাটিয়ে উটতে আমার বেশি দিন সময় লাগে নাই।
আমি বিবাহিত জীবনে খুব সুখী ছিলাম তারা আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছে আমাকে পেয়ে তারা মনে হয়ছিলো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছিলো।
এতো ভালোবাসা পেলাম যে নিজের পরিবার কে বেশি মনে পড়তো না।
আমার শ্বশুর ছিলো না মারা গেছে অনেক আগে। কিন্তু আমার শ্বশুরের বড় ভাই আমার বড় আব্বা আমাকে দেখে দুই হাত তুলে আল্লার দরবারে শুকুরিয়া করলো বললো আল্লাহ্ যেমন টা চেয়েছিলাম এমন ছেলের বৌ পেলাম আমার শ্বাশুড়ি ও একি অবস্থা খুশিতে আত্মহারা জুয়েলের পরিবারের সবাই। আমি আবার মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না করছিলাম আর এলেকার মা চাচিরা খুব আদর করতেছিলো।
সব চেয়ে মজার বিষয় হলো ৭ দিন ছিলাম গ্রামে সাত দিনেই আমাকে এলাকা বাসি ঘুমাতে দেয় নাই এলাকার মানুষ এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে তার পরে আমাকে দেখার জন্য ছুটে আসতো আর আমার নানী শ্বাশুড়ি আমাকে ডাক দিতো ভোর বেলা।আর ঘুম থেকে উঠে দেখতাম উটান ভরা মানুষ আমি তো রীতিমতো অভাগ হতাম এতো মানুষ কোথায় থেকে আসে?
সবাই বলতো ঢাকার বৌ।
নানি আমাকে দেখে কপালে চুমু খেলো বাড়িতে আমার পরে আরো তিনটা বৌ আসছে আমার মত এতো ভালোবাসা কেউ পায় নাই সেই দিকে আমি খুব ভাগ্যবান কিন্তু।
আমার শ্বাশুড়ি আমাকে নিয়ে কোথায় বেড়াতে গেলে সবাই কে বলতো এই বৌ এমনি আসে নাই আমি আল্লার কাছে চেয়ে এনেছি। খুব খুশি ছিলো আমাকে পেয়ে। সবাই বলতো আমি নাকি আমার শ্বাশুড়ির মেয়ে অনেকটা দেখতে আমার শ্বাশুড়ির মতই ছিলাম।
যখন সাত দিন বাড়ি থাকার পরে ঢাকায় আসবো সেই দিন কি কান্না সবাই অনেকে বলতেছে বৌ তুমি কি আবার আসবা নাকি আমার ছেলে কে কাধিয়ে চলে যাবা?
সবাই হু হু করে কান্না করতেছি সাথে আমাকে জড়িয়ে ধরে শ্বাশুড়ি বললো বৌমা আবার আসবে তো।আমি বলালম হে মা আসবো এই বাড়ি আমার আসল বাড়ি।
তবে বিয়ের পরে যখন আবার গেলাম তখন শুধু বলতো চট্টগ্রামের মেয়ে গ্যাদা একটা ছেলে নিয়ে নেয় আবার যদি বৌ চলে যায় ।
,,,,,,,,,,সুখের দিন বাঘে খেলো,,,,,,,,,,,
বিয়ের দুই বছর পরে আমি প্রেগন্যান্ট হয় শুনে সবাই খুব খুশি কল করে শুধু আলাহাদুলিল্লাহ্ বলতেছিলো আর বলতেছিলো আল্লাহ যেনো ছেলে বাবু দেয়।
আমি তো ভয়ে পড়ে গেলাম ছেলে বাচ্ছা কি আমি বানিয়ে আনবো?
প্রেগ্ন্যাসির দুই মাসের মাথায় আমার শ্বাশুড়ি আসে তাবিজ কবজ নিয়ে ১৫ দিন থাকার পরে চলে গেলো তখন আমার খুব কষ্টের দিন যাচ্ছিলো সাত মাস কিছু খেতে পারতাম না।
এভার বাচ্চা হবার সময় গুনিয়ে আসলো তখন আট মাস শেষ,
সাত তালা বাসার ৫ তালায় আমি ছিলাম সকালে জুয়েল চলে গেলে আমি একা হয়ে যেতাম খুব ভয় পেতাম এক পর্যায়ে আমার শ্বাশুড়ি কে নিয়ে আসি কারন তখন আমার পরিবারের কারো সাথে আমার কথা হতো না সবাই খুব নারাজ ছিলো।
শ্বাশুড়ি আসার পরে বেশ ভালোই যাচ্ছিলো দিন একদিন চেকআপে যাবো ডাক্তারের কাছে সকালে নামাজ পড়ে রান্না করে বাসার সব কাজ শেষ করে ডাক্তার কাছে গেলাম যাওয়ার সময় শ্বাশুড়ি বলতেছে আল্লাহ যেনো ভালো কিছু শোনায় আমি তো বুজছি কি বলতে চাইলো।
তার পরে আমি আর জুয়েল গেলাম আলট্রা করার পরে যখন বললো মেয়ে হবে তখন তো আমি ভয়ে শেষ আল্লা বাসায় গেয়ে যদি বলি মেয়ে হবে তখন তো আমাকে মেরে পেলবে এখন আমি কি করবো 😭
এরপরে রুম থেকে বের হয়ে জুয়েল কে বললাম জুজু ডাক্তার বলছে মেয়ে হবে জুয়েলের মন ও খারাপ হয়ে গেলো তা ও সেই বলতেছে রিপোর্ট ভুল আসছে ছেলে হবে সেই ও মা কে ভয় পাচ্ছে।
মেডিক্যাল থেকে বাহিরে এসে জুয়েল আমাকে বলে তুমি বাসায় চলে যাও আমি যাবো না আমি বলছি কেনো মা কে ভয় পাচ্ছো?
বলে হে আজকে বাসায় আগুন জ্বলবে তখন আমি বললাম এই আগুনে আমাকে নিক্ষেপ করতেছো তুমি?
সেই আসলোই না একা একা বাসায় আসলাম বাসায় কলিং বেল চাপলেই শ্বাশুড়ি দৌড়ে আসে আমি ৫ তালায় উটতে গিয়ে হয়রান হয়ে গেছি আমাকে আর ঘরে ডুকতে দিলো না আমি হাফাচ্ছিলাম নিশ্বাস বড় হয়ে গেলো আমার গায়ে ছিলো বোরকা মে, মাসে।
এর পরে বলে কি বাবু হবে তখন একটু মিথ্যার আশ্রয় নিলাম আর না হয় আমাকে লাথি মেরে নিচে পেলে দিবে এই ভয়ে।
বললাম ডাক্তার বলছে বাবু উল্টানো কিছু দেখে নাই।
এর পরে রুমে ডুকে একটু শুয়ে ছিলাম পরে জুহুরের আযান দিলো আর আমি উঠে নামাজ পড়ার জন্য গোসলে গেলাম তখন শ্বাশুড়ি ভাত বসাতে গেলো আমি গোসল শেষ করে নামাজ পড়তে বসলাম তখন আমার মোবাইলে কল আসে জুয়েলের এক বন্ধু কল করে জিজ্ঞেস করছিলো কি বাবু হবে পরে আমার ননদ বলতেছে ভাবি আপনার কল নেন কথা বলেন আমি সালাম ফিরিয়ে কথা বলছিলাম।
বলতেছে ভাবি কি বাবু হবে?
আমি নামাজে বসে অবস্থায় আর মিথ্যা বলতে পারলাম না ইজিলি বলে দিলাম মেয়ে হবে আর আমার শ্বাশুড়ি তেলে বেগুনে জ্বলে উটলো।
দৌড়ে এসে আমাকে নামাজে থাকা অবস্থায় লাথি মারতেছিলো
আর বলতেছে মেয়ে হবে মেয়ে মিথ্যা বাদি মেয়ে আমি দেখবো নি।
আমি নিরীহ অবস্থায় সিজদায় পড়ে আল্লা কে বিচার দিলাম।
অনেকক্ষণ নামাজে বসে কান্না করতেছিলাম আর আমার ননদ বলতেছে আসেন ভাত খাই আমি বলছি নামাজ পড়ে খাবো।
পরে নামাজ শেষ করে ভাতের প্লেট হাতে নিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে দেখি পাতিলে পানি ডেলে দিছে আমি জেনো খেতে না পাড়ি আর আমার কি খিদা লাগছে বলার মত না। শুধু পানি খেয়ে রুমে গিয়ে খুব কান্না করলাম আর বললাম আমার মা হলে কি এমন কাজ করতো?
জুয়েল কল দিলো জিজ্ঞেস করলো ভাত খাইছো আমি বলছি হে খাইছি।
রাতে যখন জুয়েল বাসায় আসলো আর আমার সাথে কথা বলে না মা বোনের কাছে বসে গল্প করতেছে আর মা বলছে হাত মুখ দৌ ভাত খাবি, সেই ও মায়ের কথা মত হাত মুখ দৌয়ে ভাত খেতে বসলো আমাকে একটু ডাকলো ও না।
তখন আমি বেছে থাকার ইচ্ছে হারিয়ে ফেলেছি।
তারা যখন ভাত খাচ্ছিলো তখন দরজা খোলে সাত তালার ছাদে চলে গেলা সুইসাইড করার জন্য হঠাৎ আমার কোন শব্দ না পেয়ে উঠে দেখে আমি নাই।
পরে বাসার ইনটারকোমে কল করে জানতে চাইলো আমি নিচে গেছি কি না যখন গার্ড বললো নিচে যায়নি তখন দৌড়ে ছাদে চলে আসে।
আর দেখে আমি লাফিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তার পরে চিৎকার করতেছিলো সুমী সুমী আল্লার দোহায় লাগে এমন কাজ করো না।
পরে আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে আমি সব জানি তোমার সাথে কি হয়ছে কি হতে পারে আমি কি করবো বলতে পারো সেই তো আমার মা।
তাকে তো আর মারা যাবে না বকা যাবে না তুমি তো আমার বৌ তোমাকে মারতে পারবো আদর করতো পারবো।
তখন আমি খুব আবেগি হয়ে বলতেছিলাম।
আমি সকালে ভাত খাই নাই দুপুরে ভাত খাই নাই রাতে ও না তুমি তো একটু জিজ্ঞেস ও করলা না?
পরের দিন সকালে জগড়া করে শ্বাশুড়ি চলে যায়।
আর আমার বাচ্ছা হওয়ার সময় আসলো না একা একা ২২ টা দিন মৃত্যু সাথে যুদ্ধ করেছি সিজারের শরীরের বাসায় এসে রান্না বান্না সব আমারি করা লাগলো।
যে দিন বাবু কে নিয়ে বাসায় আসবো সেই দিন বাংলাদেশ মেডিক্যালের নিচে জুয়েলের ছোট ভাই আসে ভাইয়ের সাথে দেখা করে চলে যায় তাও আমার মেয়েকে দেখতে আসে নাই।
তার পরে আমার কাশি ও জ্বর হলো জামাই বৌ দুইজন শুধুই কান্না করছিলাম কি করবো কার কাছে যাবো অবশেষে আমার মা কে কল করে মা আসে মা আসার পরে শ্বাশুড়ি ও আসে।
সেই দিন রাতে আমার মায়ের সামনে আমাকে ঝাড়ু দিয়ে ভারি মারে আমার শ্বাশুড়ি আমার মায়ের কান্নায় আকাশ ভারি হয়ে গেছিলো।তার পরে সব ভালোবাসার সমাপ্তি হলো শ্বশুর বাড়ি মানুষের সাথে এর পর থেকে জামাই বৌ একা একা সংসার চালাচ্ছি।
সুখে দুঃখে অনেক ঝড় পার করেছি তার পরে একে একে আমার আরো দুইটা মেয়ে হয় আল্লার দান কেউ কোন দিন দেখতে ও আসে নাই।
ছোট মেয়েটা হয় ১৯ সালের মে মাসের তিন তারিখ বিশ সালের ফ্রেভ্রুয়ারিতে আমার মেয়ের ডায়েরিয়া হয় আমার তিনটা বাচ্ছা তখন বাসায় কেউ নাই আবার ও কাল রাত সারারাত কান্না মেয়েকে পাহাড়া দেয় তার পরের দিন জুয়েলের বন্ধু ওহিদুল ভাই ও সুমন ভাইয়ার সাহায্য মিরপুর শিশু হাসপাতালে যায় তার পরে আরো দুইটা মেডিকেল চেইন্স করি কোন পরিবর্তন নাই মেয়ের।
আবার সাথে মেয়ে দুইটা নিয়ে কি কষ্ট আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
তিনটা মেডিকেলে টিটমেন্ট দেওয়ার পরে মেয়ে আমার সুস্হ হয়।
মার্চ মাসেই করোনা শুরু হলো এক ভয়াবহ দিন পার করছিলাম সারা পৃথিবী মানুষ।
জুলাই মাসে জুয়েল স্ট্রোক করে সেই রাত ছিলো আমার জীবনের করুন রাত
রাতের ৯ টা বাজে জুয়েল স্ট্রোক করেন রাতের তিনটা পযন্ত আমি আমার তিনটা বাচ্চা কান্না করতে করতে শেষ মনে করেছিলাম এই বুজি আমার সব শেষ হয়ে গেলো জুয়েলের ছোট ভাই নিকুঞ্জ থাকে তাকে কল করলাম সেই ও আসলো না আমার ভাইকে কল করলাম সেই ও আসলো না পাশের প্লাটের দরজা নক করলাম একটা শব্দ ও করলো না।
পরে মিরপুর থেকে তার বন্ধু এসে থাকে মেডিকেলে নিয়ে যায়।
এর পর থেকে শুরু হলো আমার
,,,,,,,,,,,,,,, জীবনের নতুন অধ্যায়,,,,,,,,,,,,
অর্থনৈতিকভাবে আমি দুর্বল হয়ে পড়লাম।
একদিন হঠাৎ করে জুয়েলের বন্ধু ওহিদুল ভাই আমাকে বলে ভাবী আপনি বিজনেস করেন অনলাইনে। আমি বললাম কি বিজনেস করবো ভাই আমি তো আর বিজনেস এর মর্ম বুঝি না।
তখন সে আমাকে বলে আপনি শাড়ি থ্রি-পিস বিছানার চাদর নিয়ে কাজ করতে পারেন।
আমি হেসে হেসে বললাম থাক ভাই আমি যেহেতু চট্টগ্রামের মেয়ে তাহলে আমি চট্টগ্রামে শুটকি নিয়ে কাজ করি অর্গানিক শুটকি উনি বলছে তাহলে ঠিক আছে করেন।
বিজনেসের কথা চলাকালীন হঠাৎ একদিন ওহিদুল ভাই আমাকে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর লিংক টা দেন।
আমি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের কিছুই বুঝতে পারছিলাম না টানা 90 দিনের ক্লাসের কথা শুন আমি একটু অবাক হলাম যে কিভাবে আমি তিনটা বাচ্চা নিয়ে ক্লাস করবো?
সেই মুহূর্তে আবার লিংক দিল আমাদের শামসুল ইসলাম রুবেল ভাই কুয়েত কান্ট্রি এম্বাসেডর।
মূলত এই গ্রুপে আসার পিচনে যার অবধান সব চাইতে বেশি সেই হচ্ছে আমার শামসুল ইসলাম রুবেল ভাইয়া।
রুবেল ভাইয়া সব সময় আমাকে সব কিছু বুজিয়ে বলতেন।
আর আমি ও ১২ তম ব্যাচের ১২ তম সেশন থেকে শুরু করে টানা ৯০ দিনের ক্লাস করি।
পরে আমি দুইটা সেল পোস্ট দেয় আমার ২ য় সেল পোস্ট থেকেই আমি ১১ হাজার টাকার শুটকির অর্ডার কনফার্ম হলো আলাহাদুলিল্লাহ্।
এই নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন আমার জীবনের মোর ঘুরিয়ে দিলো এখানে এড হবার পরে জানলাম আমার মত হাজার হাজার ভাই বোন উদ্যোক্ত হওয়ার প্রতিযোগিতা করতেছে আমি একা নয়।
তখন আমার সাহস আরো বেড়ে গেলো
মিটআপ করতে শুরু করলাম সবার সাথে পরিচিত হওয়া থেকে উত্তরা জোনে আমার নিজের একটা জায়গা করে নিলাম।
তখন থেকে আমার আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয় নাই।আমার বেশির ভাগ সেল হয় নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে।
এখানে পেলাম অনেক ভাই বোন অনেক হারানো ভালোবাসা।
আমার আম্মু মারা যাওয়ার পরে গল্প গ্রুপের আপু ভাইয়েরাই আমার পাশে ছিলো বেশি সব সময় সান্তনা দিয়ে গেছেন তাদের নাম না বললে নয়।
মাহমুদা খাতুন রানী আপু্।
আকলিমা আঁখি আপু।
নাছরিন আপু।
আমেনা আপু।নেওয়া থেকে শুরু করে সব জুয়েল করেছে আমি
জোছনা আপু।
রুমা আপু।
আরো অনেক ভাইয়া।
এর পরে এপ্রিলে হলো করোনা পজেটিভ তখন সাধারন সদস্য থেকে
গ্রুপের এম্বাসাডর থেকে শুরু করো মডরেটর কোরভলেনটিয়ার ,জেলা এম্বাসাডর জোন এম্বাসাডর সবাই আমার খোজ খবর নিয়েছেন প্রতিনিয়ত।
করোনার সময় সব চেয়ে যাকে কাছে পেয়েছি সেই হচ্ছে আমার হাজবেন।একি রুমে ঘুমানো একি তালায় খাওয়া সবি এক সাথে করেছিলেন।
ডাক্তার যখন জুয়েল কে বলছে জুয়েল তুমি বাচ্চাদের নিয়ে আলেদা রুমে ঘুমাবে তার প্রতি উত্তরে জুয়েল বললো না আংকেল আমি যদি সুমী কে একা ছেড়ে দেয় তাহলে সুমী মারা যাবে। সত্যি খারাপ ভালো সময় গুলোর মধ্যে বুজা যায় কে আপন কে পর।
🌹🌹আমার স্বামী আমাকে একা রেখে এক রাত ও ঘুমায় নাই তার কাধে মাথা রেখে আমাকে খাওয়াতো আমি খুব দুর্লভ হয়ে গেছিলাম একা চলাফেরা করতে পারতাম না বাথরুমে নেওয়া থেকে শুরু করে সব জুয়েল করেছে আমি তোমার এই ঋণ কোন দিন সুধ করতে পারবো না।🌹🌹
এই গল্প ফাউন্ডেশন আমার মৃত স্বপ্ন কে জাগ্রত করেছে আমি কোন দিন ভাবি নাই উদ্যোক্তা হবো।
👉স্যারের কিছু প্রবাদ আছে।👈
এই লিখা গুলো পড়ে আমি অনেক অনুপ্রেরণা পাই।
স্বপ্ন দেখুন
সাহস করুন
শুরু করুন
লেগে থাকুন
সাফল্য আসবেই
ইনশাআল্লাহ
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৯৯
Date:- ১৭/১২/২০২১ ইং
সুমী
চট্টগ্রাম
বর্তমান ঠিকানা : উত্তরা, ঢাকা।
ব্যাচ নং-১২
রেজিষ্ট্রেশন নং-৪২৭৭৭