প্রবাস জীবন আকর্ষণীয় হলেও এর পেছনে লুকিয়ে থাকে অনেককিছু
কেউ হয়তো কর্মজীবনের কিছু সময়ের জন্য প্রবাসী হন, আবার কেউ সারা জীবন কাটাতে। এ জীবন কারো জন্য সুখের, কারো জন্য দুঃখের। দেশ থেকে মানুষ বিদেশ যায় দেশের মানুষগুলোকে ভালো ও আনন্দে রাখার জন্য। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও প্রবাসীদের ভূমিকা কোন অংশে কম নয়।
প্রবাসের কর্মজীবিরা মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানকে ভালো রাখার জন্যই রাত-দিন পরিশ্রম করে থাকেন। তাই প্রবাসের জীবন একটু ভিন্ন।
#প্রবাস_জীবন
দেশ থেকে যারা বিদেশ যান আমরা তাকে প্রবাসী বলে থাকি। কেননা তারা নিজের জন্মভূমি ফেলে একটু ভালো থাকার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভালো রাখার জন্য পরবাসে চলে যান।
কেন যান?
আমাদের দেশে কর্মসংস্থানের অভাব বলে, বিদেশের মতো সুযোগ-সুবিধা নেই বলে, বেতন কম বলে ইত্যাদি কারণে। এই কারণগুলোও থাকত না, আমরা যদি আমাদের দেশের ভেতরের, দেশের মানুষদের জন্য যদি সঠিক উপায়ে সুষ্ঠু কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি করতে পারতাম। এ নিয়ে এখন আমাদের প্রিয় স্যার যে প্রতিদিন শিক্ষা দিচ্ছেন তা থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেকেই হয়তো প্রবাসে আসার ইচ্ছা থাকলেও আসবেন না, চেষ্টা করবেন নিজ দেশেই কিছু করার।
দেশ থেকে প্রবাসে গিয়ে কি খুব ভালো থাকে সবাই?
না, নিজ দেশ থেকে সবকিছু ছেড়ে যেমন তার মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজনদের রেখে যখন প্রবাসে একা একটা মানুষ যায় বা কাজ করে তখন তার মনটা কিন্তু পড়ে থাকে দেশের মাটিতেই। মনে পড়ে তার মা-বাবার কথা, ভাই-বোনের কথা, তার অতীত স্মৃতি। এই কথা গুলো মনে পরলে আর কাজ করতে ইচ্ছে হয় না কোন প্রবাসীর। তখন ইচ্ছে করে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে পুনরায় দেশে চলে আসতে। কিন্তু না, সময় এবং পরিস্থিতির কারনে তা হয়ে উঠে না। কারন চিন্তা করে যে অনেক টাকা নষ্ট করে বিদেশে আসলাম এখন হটাৎ দেশে গিয়ে কি করবো? বেশির ভাগ লোকই টাকা ঋণ করে বিদেশে যান। চিন্তা করে দেশে আসলে আপন মানুষগুলো অর্থকষ্টে ভুগবে, তিনবেলার খাবার একবেলা খেতে হবে, কোনো কোনো বেলা আবার না খেয়েই থাকতে হবে। এটা তার চোখের সামনে ঘটলে সে সহ্য করতে পারবে না।
তাই শত যন্ত্রণার পরও নিজের কষ্টের কথা ভুলে গিয়ে প্রিয় মানুষ গুলোকে ভালো রাখার চিন্তা করে। সে যেন পরবর্তীতে দেশে ফিরে এসে প্রিয় মানুষগুলোর হাসিমুখ দেখতে পারে।
আসলে জানে না/জানার চেষ্টা করেনা কেউ যে একটা দেশের ছেলে অন্য আরেকটা দেশের মাটিতে অচেনা-অজানা একটা দেশে কেমন কষ্ট করে আয়-উপার্জন করে??
এই বিষয়গুলো কারো জানারও তেমন বিষয় নয়, কেন নয়?
এই বিষয়গুলো জানা কি সকলের দরকার নয়?
নাকি এই বিষয়গুলো পাথর চাপা দেয়ার মতো কোনো বিষয়?
না, দেশে থেকে একটা মানুষ বুকে কতটা কষ্ট নিয়ে দেশের বাইরে যায় তা হয়তো যে মানুষটা যায় সে মানুষটার থেকে ভালো আর কেউ বলতে পারবে না বা জানে না।
কেননা দেশ থেকে একটা মানুষ সুস্থ অবস্থায় বিদেশে গেল ঠিকই সে মানুষটা বিদেশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় ফিরে আসে দেশে। তখন তার প্রিয়গুলোর কষ্ট হয় কিন্তু প্রিয় মানুষ ছাড়া বাইরের কোনো মানুষের কষ্টের লেশমাত্র হয় না। কেননা সে মানুষটা তো শুধু তার আপন মানুষগুলোর জন্যই কষ্ট করছে, তা কিন্তু ভুল। সে মানুষটা কষ্ট করছে একটি পরিবারের জন্য, একটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, দেশের আঠারো কোটি জীবনের জন্য, জীবনগুলোর বেঁচে থাকার জন্য।
তাহলে কেন প্রবাসে থাকা মানুষটাকে কোনো মূল্যায়ন করছে না বা সম্মান দেখাচ্ছে না বা শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটাও থাকে না?
এটা আমাদের দেশের সমাজব্যবস্থা, কিছু মানুষের অহংকারীতা প্রবাসীদের নিম্ন চোখে দেখা, মূর্খ বলে ধিক্কার দেওয়া আরো অনেক কিছু।
এই সবের পেছনে লুকিয়ে আছে এক এক জনের স্বার্থ।
দেশের সঙ্গে, দেশের মানুষজনদের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্কের কথা চিন্তা করলে আমরা দেখতে পাই দেশের প্রতি, দেশের মানুষজনদের প্রতি প্রবাসীদের যে টান-সে টান দেশের মানুষদের নেই। কেননা তারা তাদের কাছে থাকা মাতৃভূমিকে অনুভব করতে পারছে না যেমনটা পারে দেশের বাইরে থাকা প্রবাসীরা। দেশের মাটির গন্ধ পর্যন্তও তারা শুকতে পায় কেননা তাদের কাজের মধ্যে থাকে দেশকে উদ্দেশ্য করে খেটে খাওয়া মানুষদের কথা, আপন মানুষগুলোর হাসিমুখের জন্য অপেক্ষা।
বোনের বিয়ে, ভাইয়ের পড়াশোনা, বৃদ্ধ মা-বাবার ওষুধের খরচ সবকিছুর কথাই যেন তার মাথায় কেউ গেঁথে রেখেছে যে, তোমার টাকার জন্য তোমার বোনের বিয়ে দিতে পারছে না,তোমার ভাইয়ের স্কুলের বেতন দিতে পারছে না, তোমার বৃদ্ধ মা-বাবা ওষুধ কিনতে পারছে না এই কথাগুলো যেন তার কানে বাজতেই থাকে। যার জন্য সে তার কাজ ছাড়াও বাড়তি কাজ করে যেন তারা হতাশ না হয় বা যত টাকা খরচ করে ঋণ নিয়ে সে বিদেশ এসেছে তা পরিশোধ করার আগ পর্যন্ত তার যেন কোনো নিদ্রা নেই। সে কাজ করতেই থাকে তার মতো করে। সেই কাজ করার মধ্য দিয়েই মনে পড়ে দেশের কথা, দেশের মানুষজনদের কথা, আরো মনে পড়ে চেনা পরিচিত কিংবা অচেনা অপরিচিত দেশের পথ-ঘাটের কথা।
#নাড়ির_টান_ও_দেশাত্মবোধ
প্রবাসে থাকা একজন মানুষের সবচেয়ে বড় যে টান তা হলো নাড়ির টান। এই টানের কারণেই একজন প্রবাসীকে দেশ নিয়ে ভাবায়, ভাবায় তাকে ভালো কিছু নিয়ে তার দেশের কাছে, তার নাড়ির কাছে ফিরতে হবে। নইলে তার প্রবাস জীবন ব্যর্থ। এই ব্যর্থতার কারণে কেউ কেউ দেশ ত্যাগই করে না, জীবন পর্যন্ত ত্যাগ করে। এটা আসলে একটা হতাশার কারণ। এই কারণের মূল ব্যাখ্যা পাওয়া না গেলেও বোঝা যায় একটা মানুষের দেশ, দেশের মানুষ নিয়ে তার কতটা টান, কতটা বন্ধন মিশে আছে।
যে মানুষগুলো দেশে থাকে বা দেশে আছে তারা সাধারণত নাড়ির টানটা গাঢ়ভাবে অনুভব করতে পারে না। কেননা তারা দেশ দেখতে পাচ্ছে, দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে, আরো দেখতে পাচ্ছে মা, ইচ্ছে করলেই ক্লান্তি এলেই তারা তাদের মায়ের আঁচল পেতে জীবনের সব ক্লান্তি দূর করতে পারছে নিমিষেই। হতাশ লাগলেও মা সেই হতাশা দূর করারও চেষ্টা করছে। আহ এর থেকে প্রশান্তির আর কী হতে পারে। কিছুই না। আসলে মা হলো সন্তানের মূল চাবিকাঠি।
মা এক পৃথিবীর সন্তানদের জন্য তার আঁচল বিছিয়ে রেখেছেন তারা তাদের ক্লান্তির সময়টুকুতে এসে আশ্রয় নেবে বলে। মা, এই মায়ের মধ্যে যেমন মমতাবোধ আছে বা কাজ করে ঠিক তেমনই মমতা আছে বা কাজ করে দেশের মধ্যে। যে দেশ কিনা প্রবাসীদের আবার তার কাছে, তার আঁচলে ফিরিয়ে আনে, শুধুই আনে না, গভীর মমতাবোধের জায়গাটুকু দিয়ে পরম যত্নে লালন করে তাদের মানুষের মতো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার ক্ষমতা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখেন।
নাড়ির টানে প্রবাসে গিয়েও শান্তি পায় না বা প্রশান্তির জায়গা খুঁজে পায় না বা পেলেও তারা তার তৃপ্তিটুকু পায় না। এই পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মেলাতে গিয়ে তারা তাদের নাড়ির কাছে হার মেনে যায়, ফিরে আসে, দিনশেষে নাড়ির কাছে হাত পেতে বলে, আমাকে তোমার আঁচল দিয়ে খানিক আশ্রয় দাও, যে আশ্রয়ে কোনো ভয় নেই, গ্লানি নেই, আছে শুধু তৃপ্তি আর প্রশান্তি।
একটা মানুষের ভেতরে দেশ নিয়ে বোধ জাগে তখনই যখন সে দেশের কথা ভাবে, দেশ নিয়ে ভালো কিছু চিন্তা করে, দেশের জন্য নিজের শান্তি বিসর্জন দিয়ে কষ্ট বেছে নিয়েও প্রবাসে থাকে। দেশের ভেতরে নিজেকে খুঁজে পায় কিংবা নিজের ভেতরে দেশকে খুঁজে পায়। যে খুঁজে পাওয়ার মধ্যেও থাকে গাঢ়-গভীর মমতাবোধ। যে মমতাবোধের টানে কেউ দেশে ফিরে আসে। দেশের মানুষ দেশ ছেড়ে কি আর বিদেশ শান্তি পায়। নিজের দেশে যতটা স্বাধীনতা নিয়ে চলাফেরা করা যায়, যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাওয়া যায় সেটা কি আর অন্যদেশে সম্ভব?
বা সম্ভব হলেও সম্ভবপর তৃপ্তিটুকু মনে আসে না বা এলেও নিজের কাছে ভালো লাগে না। ভালোলাগার তৃপ্তি পূর্ণ হয়ে গেলেও না। তার একটাই কারণ বিদেশে যা কিছুই করুক না কেন প্রবাসীরা তাদের শুধু একটা কথাই মনে হয় যে, এই দেশটা তো আমার না! কিন্তু তবুও সেদেশে নিজের দেশকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, নিজের দেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য সে দেশের কাজ, সে দেশের সংস্কৃতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়।
#প্রবাসীদের_সুখ_দুঃখ
প্রবাসীদের সুখ-দুঃখের কথা যদি বলি তবে আমি বলব প্রবাসীদের নিজস্ব কোনো সুখ নেই বরং দুঃখেরও কোনো শেষ নেই। তাদের সুখ পরিবার প্রিয় জনদের মুখের হাসি,তাদের সকল আবদার পুরন করার মাঝেই। সকলের চাওয়া পাওয়া পুর্ন করতে পারলেই মনে করা হয় আমার প্রবাস জীবন সার্থক। সার্থক হয়ে উঠবারই কথা, তারা যে কারণে দেশ ছেড়ে প্রবাসে গিয়ে কষ্টের জীবন বেছে নিয়েছে সে জীবনের যে মূল কথা ছিল তাদের বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলা, স্ত্রী-সন্তানের জন্য ভালোভাবে জীবন কাটানোর জন্য কিছু সময় নিয়ে আসা এটাই যেন তাদের কাছে বড় পাওয়া বলে মনে হয়।
কেননা তারা তো এটার জন্যও বিদেশে দেশ ছেড়ে। প্রবাসে কী কেউ সুখের জন্য যায়? না প্রবাসে কেউ নিজের সুখের জন্য যায় না বরং অন্যের সুখটা দেখার জন্য প্রবাসে যায় দেশ ছেড়ে। তারা তাদের অর্জিত কাঙ্খিত সম্পদ দিয়ে যখন প্রিয় মানুষগুলোর জন্য প্রিয় কিছু নিয়ে আসে তখন তাদের ভালো লাগে বরং আনন্দ হয় যখন কিনা তারা বুঝতে পারে, দেখতে পারে তাদের প্রিয় মানুষ, কাছের মানুষের আনন্দ তখন তারা রীতিমতো অবাক হয়, বিস্মিত হয়।
#দেশে_প্রবাসীদের_গুরুত্ব
আমাদের দেশের কথা যদি বলি তবে বলব যে, আমাদের দেশে প্রবাসীদের কোনো গুরুত্ব নেই, আছে অবহেলা। একজন প্রবাসী দেশের জন্য কাজ করতে গিয়েও যতটুকু অবহেলা সহ্য করে আত্মসম্মানের বোধ ত্যাগ করে কাজ করে সেটা আসলে আমাদের এই দেশ কখনোই বোঝেনি বা বোঝার চেষ্টা করেছে বলে তা ততটা স্পষ্ট মনে হয় না আমার কাছে কারণ আমার কাছে আমাদের দেশে প্রবাসীদের মূল্য শূন্য।
আমাদের দেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রবাসীরা যদি দেশ ত্যাগ করে না যেত তাহলে দেশ আর দেশের মতো থাকত না। দেশ বৃন্দাবনে চলে যেত। ব্যাপারটা অনেকটা হাস্যকর মনে হলেও এটাই সত্যি।
#প্রবাসীদের_ভাবনা
যারা প্রবাসে আছেন দেশ ছেড়ে তাদের আপন মানুষজন ছেড়ে তাদের ভাবনায় শুধু একটা ভাবনাই থাকে, আমার মা ভালো আছে তো! আমার বাবা ভালো আছে তো! আমার ভাই-বোন ভালো আছে তো! এই ভাবনাগুলো তাদের আরো ভাবিয়ে তোলে যে, তাদের যত কষ্টই হোক না কেন তাদের উপার্জন করতে হবে। তখন তারা বুকে পাথর চাপা দিয়ে কাজে নেমে যায়, যে নেমে যাওয়ার মধ্যে আর কোনো দ্বিধা থাকে না, দ্বন্দ্ব থাকে না, থাকে শুধু একটাই ভাবনা যে, আমাকে ভালো কিছু করে দেশে গিয়ে পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। যে ফোটানোর মধ্যে কোনো ক্লান্তি থাকবে না, ক্লেদ থাকবে না, তৃষ্ণা থাকবে না, থাকবে না এর কোনোকিছু।
যিনি ঋণ করে বিদেশে আসে তার চিন্তা আমাকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যে অর্থ দিয়ে আমি বিদেশে এসেছি আমাকে তা শোধ করে পরিবারের জন্য কিছু নিয়ে দেশে ফিরতে হবে। যে ফেরার মধ্যে থাকবে মমতা বা পাওয়ার ফেরা এবং তার কোনো কিছুর পাওয়ার ইচ্ছা পূরণের আকাঙ্খা।
#দেশের_সঙ্গে_প্রবাসীদের_সম্পর্ক
দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্ক গভীর হয়েও গভীর হতে পারে না, তার কারণ প্রবাসীদের কখনোই দেশ সম্মানের চোখে দেখে না বা তাদের মূল্যবোধের জায়গাটা দেয় না। কারণ প্রবাসীরা দেশের বাইরে থাকে বলে। প্রবাসীরা দেশের জন্য দেশ ছেড়ে যায় অন্য দেশে এটা বুঝলেও বোঝে না দেশের মানুষ। বেশ বড় বড় মানুষ বলে, প্রবাসীরা দেশ ছেড়েছে দেশের প্রতি তাদের মায়া, দেশের প্রতি তাদের টান নেই বলে, কিন্তু তারা এটুকু বোঝে না বা এটুকু বোঝার ক্ষমতা তাদের নেই যে, আমাদের দেশে কর্মসংস্থানেরর অভাবেই তারা দেশ ছেড়েছে, আমাদের দেশের মানুষজনদের ভালো রাখার জন্য তারা দেশ ছেড়েছে।
দেশ প্রবাসীদের ভুলে গেলেও প্রবাসীরা কখনো দেশের কথা ভোলে না, তারা ভুলতে পারে না, কেননা সে সেদেশের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হতে পারে। সুতরাং বলা যায়, প্রবাসীদের সঙ্গে দেশে সম্পর্কটা ততটা বন্ধুত্বপূর্ণ না হলেও দেশের প্রতি প্রবাসীদের একটা টান আছেই শুরু থেকে। কেননা তারা তাদের আপনজনদের দেখা পাওয়ার জন্য যেখানেই যাক না কেন সবশেষে তাদের দেশেই ফিরে আসতে হয়, মা বলে ডাকার জন্য নিজের গ্রামটার মনোমুগ্ধকর প্রতিচ্ছবি তাকে বার বার দেখায় যেন তার টান, দেশের প্রতি তার মায়া আরো তীব্র হয়ে ওঠে তার কাছে।
যে তীব্রতায় মিশে থাকে মা, মাটি, দেশ, মমতা অনেক কিছু। যা আসলে প্রবাসীদের মতো করে ভেতরে ভেতরে আর কেউ এত গভীর করে লালন করতে পারে না। পারবেই বা কেমন করে, প্রবাসীরা যে তাদের মায়া ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে না বা অর্জন করলেও তাদের বিবেক তাদের অর্জন করতে দেয় না, সবসময় তাদের ভেতরে ভেতরে বুকের মধ্যে বাজতে থাকে যে, এটা আমার দেশ না। আমার দেশ বাংলাদেশ। তখন প্রবাসীরা নতুন করে সবকিছু দেখতে শুরু করে, যে দেখায় মিশে থাকে দেশের প্রতি গভীর মমতা।
এই মমতাই তাদের আবার দেশে ফিরিয়ে আনে, প্রিয় মানুষের কাছে এসে তারা তাদের মুখ দেখে প্রবাসে থাকার তৃষ্ণা দূর করে।
আমাদের স্যার বলেন প্রবাসীরা বাংলাদেশের অক্সিজেন। এই কথাটাই সত্যি। যে অক্সিজেনের কারণে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দেশ এবং দেশের মানুষ সুতরাং প্রবাসীদের ভালো থাকা বা ভালো রাখা সকলের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কিন্তু সবাই তার কতটুকু পালন করতে পেরেছে বা পারে তা হয়তো একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন সবাই। দেশ থেকে প্রবাসীরা যখন বিদেশ যায় তখন তাদের প্রতি সকলের বোধের জায়গাটা আরো খোলাসা হওয়া উচিত, যে খোলাসায় থাকবে স্পষ্টতা, গভীরতা, মমতা ও সম্মানবোধ।
#দেশ_বিদেশের_পার্থক্য
একজন মানুষ দেশে থেকে যে কোনো কাজ করতে পারে না কিন্তু প্রবাসে গিয়ে যে কোনো কাজ করতে পারে। কেননা তাকে অর্থ উপার্জন করে দেশে বাবা-মায়ের কাছে পাঠাতে হবে। তখন তারা লোকচক্ষুর লজ্জা আড়াল করে ভাবে যে, আমাকে আমার যে কোনো কাজ করতে হবে এবং করেও। একজন প্রবাসী অন্যের বাসাবাড়ি দেখাশোনা থেকে শুরু করে সুইপারি পর্যন্ত করে। কিন্তু এতে লজ্জাটা কোথায়, এতে তো আনন্দ থাকার কথা, যে আনন্দের কিনা অর্থ উপার্জন করার সক্ষমতা থাকে বা তা পরিবারের মানুষদের মুখে হাসি ফোটানোর মতো বিন্দু পরিমাণ ক্লেদও যেন জমা না থাকে।
দেশে যে মানুষটা রিকশা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করে সমাজ তাকে অবহেলার চোখে, অনীহার চোখে দেখে, কেননা সে মানুষটা রিকশা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করছে। কিন্তু বিদেশে সেই মানুষটা গিয়ে এই একই কাজ করছে। কিন্তু এতে লজ্জা কোথায়। সে তো চুরি করছে না, সে কর্ম করছে, কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করছে। এতে লজ্জা থাকবে কেন। এটাই তফাৎ দেশ আর বিদেশের মধ্যে। আমাদের দেশটা যে কারণে পেছনে পড়ে আছে তা হলো দেশের মানুষগুলোর মন ও মানসিকতা এখনো খুব নিচু হয়ে আছে। যে দেশ নিচু মন-মানসিকতার মানুষ লালন করে সে দেশ কী করে এগিয়ে যাবে বা তার যোগ্য অনুযায়ী কর্ম দেবে, তা কখনোই সম্ভব নয়।
তা এখনো অবাস্তব আমাদের দেশে। এটা কখনো বাস্তব হবে কিনা জানা নাই।
আজ আর নয় এখানেই শেষ করলাম।
আমার লেখার মাধ্যমে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৮৪
Date:- ২৮/১১/২০২১ ইং
🌺মোঃ আলি আকবর🌺
🌹নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন গবিত সদস্য
🌹NRB কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
🌺Top 20 Club Member
🌺 হাট মনিটরিং টিমের সদস্য
🌺রেজিস্ট্রেশন টিম মেম্বার
🌺ব্যাচ নাম্বার ১২ তম
🌺রেজিস্ট্রেশন নাম্বার 44137
🌹জেলা- শরীয়াতপুর
🌺এন আর বি মালয়েশিয়া টিম
আমার পেইজ লিংক লাইক দিয়ে সবাই পাশে থাকবেন
https://www.facebook.com/ALI-AKBOR-FASHION-CORNER-102980285089366/