⏩⏩⏩প্রবাশ জীবনের গল্প⏩⏩
⏩⏩২০১৩ সালের জুন মাসে ১৩ তারিখ, জন্ম ভূমি আমার মাতৃভূমি বাংলার মাটি ছেড়ে আমার জনম দুঃখী মা কে ছেড়ে আমার কলিজার টুকরো একমাত্র সন্তান যার বয়স ছিল মাত্র ১৮ মাস, সবাই কে রেখে জনম দুঃখী মায়ের মাথায় বিশাল এক দ্বায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে পরিবারে সবার মুখে খাবার তুলে দিতে অভাবের তারনায় পাড়ি জমায় প্রবাশ নামের লেবানন কান্ট্রিতে।
২০১৩ সালে ১৩ই জুন আমার জীবনের শরনীয় একটা দিন, আমার সন্তানের আত্যনাত তার চিৎকার আর মায়ের চোখের পানি আমাকে ক্ষত বিক্ষত করেছিল যা আমি আজ ও ভুলতে পারিনি। এক বুক কষ্ট অপমান অবহেলা আর লাঞ্চিত হয়ে মা আর সন্তানের মুখে হাসি ফুটানো জন্য এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিলো আমাকে, যে সিদ্ধান্ত শুধু আমাকে নয় আমার মা,আমার সন্তান,ও আমার স্বামীর জীবনে যেন এক টা বিশাল ঝড়। আমি জানিনা সেদিন বিদায় দেওয়ার পরে আমার পরিবারের উপর কত টা ঝড় বয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে।
সবাইকে কাদিয়ে নিজের স্বপ্ন পুরনে পা রাখলাম লেবানন শহরে। নতুন শহর নতুন দেশ নতুন মানুষ সব কিছু নতুন। আমি যখন পৌছালাম তখন লেবাননে রাত কত বাঝে আমি নিজেও জানিনা, কিছুক্ষন অয়েটিং রুমে বসে থাকার পর একটা মেম এসে আমাকে রিসিভ করলে, দেখতে বেশ ভালোই, এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে একটা গাড়িতে করে নিয়ে যায় বাসায় প্রায় দের থেকে দুই ঘন্টা পর বাসায় পৌছালাম, অনেক বড় একটা বাড়ি সিড়ি বেয়ে ৩ তলায় উঠে এলাম, দরজা কলিং বেল বাঝতে ভিতর থেকে এক বাঙ্গালী আপু এসে দরজা খুলে দিয়ে আমাকে স্বাগত জানালে এর পর একটা রুমে নিয়ে গেলেন। সব কিছু কেমন যেনো স্বপ্নের মত লাগছে চোখের সামনে মায়ের মুখ আর সন্তানের চেহারা ছাড়া কিছু যেন দেখতে পাচ্ছিনা। আমি রুমে গিয়ে চুপ চাপ দ্বারিয়ে আছি আর পরিবারের কথা ভাবছি, হঠাৎ আমার ভাবনা কাটিয়ে আপু আমাকে ধরে বসিয়ে দিলেন, আমার চোখে পানি না শুধু ভেতর টা কেদে চলেছে। আমি নিরব হয়ে বসে আছি আর সবাই মিলে আমার বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া ব্যাগ টা খুলে দেখছে। সব কিছু চেক করে মেডাম অই বাঙালি আপুকে কি যেনো বলে রুমে চলে গেলেন। মেম চলে যেতেই আপু আমার কাছে এসে বসলেন আমার বিষয় সব জানতে চাইলেন। আমি আমার সন্তান, মা, স্বামী সবার কথা বললাম, আপু আমার কথা শুনে বুজতে পারলেন আমার মনের অবস্থা, মাত্র ১৮ মাসের সন্তান রেখে প্রবাসে যাওয়া টা কত টা কষ্টের ছিলো আমার জন্য পৃথিবীর কেউ তা বুঝতে পারেনি, খুব কান্না পাচ্ছিলো কিন্তু কান্না করা যাবে না আগেই বলা ছিলো তাই কাদতেও পারিনি। আমি নিজেকে শক্ত করে আপুকে বললাম আপু এখন কত বাঝে আমি কি আমার মায়ের সাথে কথা বলতে পারবো, আপু মুচকি হেসে বললেন বোন তুমি তো দুনিয়ার মাঝে একটা দোযখ আছে সেখানে এসেছো তাই এখন তুমি চাইলেও কথা বলতে পারবে না, কথা টা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো, আপু বুঝতে পেরে আমাকে ওয়াস রুমে নিয়ে গেলেন এবং গোছল করালেন নিজ হাতে, অই বাসার নিয়ম ছিল নতুন কেউ আসলে তাকে কেউ না কেউ গোছল করাবে আমাকে করালেন। গোছল।শেষে আমাকে একটা রুটি তার সাথে মাঘন দিয়ে খেতে দিলেন। খাবার দেখে আমার আরো কষ্ট হলো ভেবেছিলাম হয়তো একটু ভাত আর সব্জি পাবো তার বদলে দিলো রুটি যা আমি কোন দিন ও খাই নি।। আমি নিজের লজ্জা কাটিয়ে আপুকে বললাম আমাকে একটু ভাত হবে সেই সকালে বাড়ি থেকে একটু ভাত খেয়েছি পথে কোন কিছু খাইনি এখন একটু ভাত খেতে ইচ্ছে করছে। আপু কথা শুনে নিজের চোখের কোনে জমে থাকা পানি মুছে বললো বোন এখানে তো ভাত নেই এসব ই খেতে হবে কষ্ট হলেও খেয়ে নাও কথা টা বলে আপু রান্না ঘরে চলে গেলেন। আমি বুঝতে পারলাম আপু কষ্ট পেয়েছে আমাকে দেখে, ছোট থেকেই খুব সহজ সরল হলেও বুদ্ধিমতি ছিলাম তাই না বলতেই অনেক কিছু বুঝতে পারতাম। যাইহোক কষ্ট করে পানি দিয়ে গিলে গিলে একটা রুটির অর্ধেক টা খেয়ে নিলাম, আপু আমার জন্য এক গ্লাস দুধ এনে দিলেন আর বললেন খেয়ে নিতে আমি খেয়ে নিলাম, আপুর ব্যাবহারে আমি যেন একটু ভালবাসার ছোয়া পেলাম। আপু আমাকে রুমের দরজা বন্ধ করে মেম এর রুমে গেলেন
কিছু ক্ষন পর ফিরে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমাকে ঘুমানোর ব্যাবস্থা করে দিলেন। কিন্তু ঘুম কি আর আসে বার বার সন্তানের কথা মনে পরছে আর দু চোখ বেয়ে পানি ঝরছে। কিছু ক্ষন পর পর আপু আমার দিকে তাকাচ্ছে বুঝতে পারলাম আপু ও ঘুমাতে পারছেনা এক পর্যায়ে আপু উঠে বসলো আমি ও বসলাম এর পর খুব আস্তে আস্তে আপু বললেন আমি যানি তোমার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু বোন কিছু করার নেই এই কষ্ট কে বুকে চাপা দিয়েই তোমাকে এখানে থাকতে হবে তাই সব চেয়ে ভাল ভুলে যাও ৩ বছরের জন্য। আমি শুধু চুপ করে আপুর কথা শুনছি। এত পর আপুর জীবনের গল্প শুনাতে শুরু করলেন।
আপু ৩ বছর ধরে এই বাসায় কাজ করে যাচ্ছেন তার ৮ বছরের একটা মেয়ে রেখে এসেছেন, অনেক ভাল পরিবারের মেয়ে ছিলেন আপু, খুব ভালো মনের মানুষ, ভালবেসে বিয়ে করে তাকে প্রবাসে আসতে হয়েছিলো স্বামীর কারণে। আপুর জীবনের গল্প শুনে খুব কেদেছিলাম দুজন মিলে, কথা বলতে বলতে রাত তখন দুইটা বাঝে আপু ঠিক আমার মায়ের মত করে বুকে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো আর বলছিলো এত ছোট মানুষ হয়ে কেনো সন্তান রেখে বিদেশে এলি। তুই কি এত কষ্ট করতে পারবি।আমি সেদিন আপু কে বলেছিলাম আমি সব পারবো আমাকে পারতেই হবে। কখন ঘুমিয়েছিলাম যানিনা, ৫ টা বাঝে ঘড়িতে এলান বাঝতেই ঘুম ভেঙে গেলো আপু আমাকে বললো তুমি ঘুমাও এখন আমার উঠার সময় তুমি কাল থেকে এই টাইমে উঠবে। আপু উঠে নিজের কাজে চলে গেলেন আমি আবার ঘুমাতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম আর হলোনা উঠে নামাজ পরে আপুর কোরআন পরতে শুরু করলাম কখন সে সকাল ৭ টা বেঝে গেছে কিছুই বুঝতে পারিনি। আপুর আগমনে বুঝতে পারলাম কোরআন রেখে আপুর সাথে রুমের বাইরে এলাম, স্যার মেম বাচ্চারা সবাই চলে গেলেন, যাবার সময় আপু বলে গেলেন সে যেনো আমাকে সব কাজ বুঝিয়ে দেন। উনারা চলে যেতেই আপু খুব খুসি। আসলে আপু মাত্র ১৫ দিন থাকবে আমার সাথে তারপর তিনি দেশে ফিরে যাবেন। আমাকে সব কাজ বুঝিয়ে দিলেন আর বললেন যতদিন তিনি আছে কোন কাজ করতে হবে না, আরো বললেন বাসার কেউ জানবে না যে আমার কাজ গুলো সে করে দিচ্ছে। আমি চিরকৃতজ্ঞত আপুর কাছে।
⏩⏩যাইহোক সবাই চলে যেতেই আপুর কাছে বাইনা ধরলাম ভাত খাবো কথা শুনে আপু তো পুরো থমকে গেলো, কারণ ভাত তো নেই সে দিবে কি করে, আমাকে কাছে ডেকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বললো যে এখানে তারা যা খেতে দিবে আমাকে তাই খেতে হবে এবং মেডাম যাবার সময় আমার জন্য খাবার রেখে গেছে, কথা শুনে আমি তো অবাক এ কেমন কথা খাবার টাও নিজের ইচ্ছা মত খেতে পারবোনা। খুব কষ্ট হচ্ছিলো তবু ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে খেয়ে নিলাম, এবার কাজ বুঝে নেওয়ার পালা, সকাল ৪ঃ৩০/৫ ঘুম থেকে উঠতে হবে মানে ফজরের আজানের ৩০ মিনিট আগে।বাচ্চাদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে পোশাক চেঞ্চ করে নামাজের জন্য রেডি করাতে হবে।নামাজ শেষ করে রান্না ঘরে বাচ্চাদের টিফিন সকালের নাস্তা রেডি করতে হবে তাও আবার সবার পছন্দ মত। ৩ টা বাচ্চা সবার চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন, মেডাম আর স্যারের গুলোও ভিন্ন। লিষ্ট দেখে তো আমি শেষ কিছু ই জানিনা কিভাবে কি করবো। যাইহোক আপু বুঝিয়ে দিলেন। ৭ টার সময় সবাই চলে গেলে নিজের নাস্তা শেষ করে ঘর মুছা থেকে শুরু করে কাপড় ধোঁয়া ও ঘরের সব কাজ শেষ করতে হবে ১ঃ৩০ মিনিটের মধ্যে। ২ঃ৩০ মিনিটের মধ্যে গোছল করে রেডি থাকতে হবে এবং দরজার সামনে বসে থাকতে হবে। ৩ টা বাঝে বাচ্চারা সহ মেডাম ফিরে আসলে দরজা খুলে দিতে হবে যদিও বাহির থেকে তালা দিয়ে যেতেন তারপর ও দারিয়ে থাকতে হবে। এবং নিচে গিয়ে বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগ উপরে তুলে আনতে হবে। দুপুরের টেবিল সাজাতে হবে ৩ টার সময়। লাঞ্চ শেষ করে টেবিল চেয়ার গুছিয়ে রাখতে হবে এবং পানি দিয়ে ফ্লোর ধুয়ে ফেলতে হবে, আসরের নামাজ শেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে নিচে যেতে হবে তারা খেলবে, এবং মাগরিবের আজান দিলে বাসায় এসে বিকেলের হাল্কা খাবার রেডি করতে হবে। এবং রাত ১২ /১ টা পর্যন্ত জেগে থাকতে হবে যখন যা বলবে তা করতে হবে। বাচ্চারা ঘুমালে তবেই ঘুমাতে যেতে পারবো এই ছিলো কাজের চ্যাট।
প্রথমে খুব সহজ মনে হলো
কিন্তু যখন কাজ গুলো করতে শুরু করলাম তখন বুঝতে পারলাম কত টা কষ্ট।
প্রতিদিন সকালের খাবার রুটি আর চা অথবা মাখন
এই ধরনের কিছু। দুপুরে মাংস পুরা আলু ভাজা কোন দিন আঙ্গুর ফলের পাতা সিদ্ধ, পাতা কপির সিদ্ধ আরো কত কি যা কোন দিন বাংলার মানুষ খায় নি। রাতে আবার সেই রুটি। ১৫ দিন আপু ছিলো তাই তেমন কষ্ট হয় নি,আপু চলে যেতেই শুরু হলো কষ্ট সকাল ৪ঃ৩০ থেকে রাত ১২ /১ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে তার উপর ঠিক মত খাবার খেতে পারতাম না, আপু থাকতেই অনেক বার বলেছি বাংলা খাবার দিতে কিন্তু তিনি দিবেন না। তার কথা তিনি আমাকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন তাই তিনি যা বলবেন তাই করতে হবে।
তিনি যা খেতে দিবেন তাই খেতে হবে। ২০ দিন পর আমাকে বাড়িতে কথা বলার জন্য নিয়ে গেলেন একটা দোকানে। মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলেন কথা বলার, কাকে ফোন দিবো ভেবে পাচ্ছি না, কোন কিছু না ভেবেই মা কে ফোন দিলাম, ফোন দিতেই মা খুব কান্না করে দিলো ২০ দিন পর এখন মনে হলো মায়ের কথা? নিজের সন্তানের কথা ও কি মনে পরে নি অনেক ভাল আছিস তাই না। মায়ের কথা শুনছি আর চোখ বেয়ে পানি ঝরছে কি বলবো ভাষা খুজে পাইনি সেদিন শুধু বলেছিলাম আমি অনেক ভালো আছি চিন্তা করো না। মা আমাকে প্রশ্ন করেন কি দিয়ে ভাত খেয়েছো কারণ মা জানতো আমি রুটি খাই না। মা কে খুসি করতে মিথ্যা বললাম।
মা ওরা খুব ভালো আমাকে প্রতিদিন ই ভাত দেই আর আমার মনের মত তরকারি রান্না করি। কথা বলে বাসায় আসতেই মেডাম রেগে আগুন, কারণ আমি যে কেদেছিলাম ওরা দেখতে পেয়েছিলো,তারা ভেবেছে আমি তাদের নিয়ে কিছু বলেছি। আমি তখন অল্প অল্প আরবি ভাষা বুঝি। আমি আল্লাহ কছম দিয়ে বললাম যে আমি তাদের নিয়ে খারাপ কিছু বলিনি আমি আমার সন্তানের জন্য কেদেছি। আমি যখন ফোনে কথা বলছিলাম আমার ছোট ছেলে টা পাশ থেকে মা মা করে ডাকছিলো আর কাদছিলো তখন যে কত টা কষ্ট হয়েছিলো বুঝানো সম্ভব না।
⏩এভাবে ১ মাস কেটে গেলো এর মাঝে আমার সাথে মেডাম কারনে অকারনে খারাপ ব্যাবহার করতো ভাষা বুঝতে পারতাম না বলে মাইর দিতো, কাজে কোন রকম ভুল হলেই খাবার বন্ধ করে দিতো। ১ মাস পর আমি আবার বাড়িতে ফোন দিলাম। মা খুব কান্না করছে কারণ আমার বাচ্চা খুব কাদতো আমার জন্য। আমি মাকে শান্তনা দিয়ে বুঝিয়ে বলতাম যেনো আমার সন্তান কে এত ভালবাসা দেন যাতে সে আমাকে ভুলে যায়।প্রতিদিন রাতে বাচ্চার ছবি বুকে নিয়ে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে যেতাম।
⏩২মাস কেটে গেলো এর মাঝে কত বার মার খেয়েছি নিজেই ভুলে গেছি। আমি এই দুই মাসে এক দিন ও পেট ভরে খেতে পারিনি কারণ ৩ বেলায় রুটি দিতেন যা আমি একদম খেতে পারতাম না, যার কারণে অনেক অসুস্থ হয়ে পরি। একদিন সাহস করে ওরা বাসায় থেকে চলে গেলে নিজে দুই মুঠো চাউল নিয়ে
ভাত রান্না করি আর একটা ডিম ভেজে খেয়েছিলাম বাসায় এসে বুঝতে পেরে খুব মেরেছিলো। সেদিন মনে মনে ভাবি আমি আর থাকবোনা কিন্তু কি করবো বুঝতে পারছি না।নামাজ পরে প্রতিদিন আল্লাহ কাছে সাহায্য চাইতাম, আল্লাহ আমার উপর দয়া হলো। এবং আমি যেই অফিসের মাধ্যমে বিদেশে যাই সেই অফিস থেকে বাংগালী এক ভাই ফোন দিয়ে আমার কাছে সব কিছু জানতে চাইলে আমি সব খুলে বলি। ভাইয়া সব শুনে বুঝতে বাকি নেই কেমন আছি তিনি অফিসের বসের কাছে সব বলেন। বস আবার মেডাম কে ফোন দিয়ে সব কিছু জানতে চাইলে তিনি অসিকার করেন এবং আমাকে মিথ্যাবাদি বলেন।
এবং সেদিন রাতে আমাকে খাবার ও দেন নি। এবং খুব খারাপ ব্যাবহার করেন। দুই মাস ১০ দিন পর আমি ঘুমের মাঝে দেখতে পাই আমার ছেলে অসুস্থ তাকে হসপিটালে রাখা হয়েছে। সকাল বেলা ঘুম ভাংতেই আমি অনেক অনুরোধ করি আমাকে যেনো কথা বলতে দেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা কিছুতেই রাজি হলেন না। রাতের বেলায় আবার হাতে পায়ে ধরি কারণ আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল ছেলের জন্য। অবশেষে রাজি হলেন, ফোন দিতেই জানতে পারলাম ছেলে সত্যি খুব অসুস্থ তবে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় নি বাসায় চিকিৎসা করা হচ্ছে। এবং মা টাকা ও চাইলেন।
আমি সব খুলে বললাম এবং মালিকের কাছে টাকা চাইলাম কিন্তু তারা ৩ মাসের আগে টাকা দিবে না। সেদিন আর রাগ করে কোন কাজ করিনি ফলে আমার উপর রেগে গিয়ে একটা থাপ্পড় দিলে আমি ওয়ালের সাথে বাড়ি খাই এবং আমার কপালে ঘা লেগে অনেক টা কেটে যায়। ছোট থেকেই আমার খুব রাগ। তাই আমি আমার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে থাকি, পরেদিন ওরা বাসায় থেকে বের হতেই ফোন দেই অফিসে বিস্তারিত সব খুলে বলি। অফিস থেকে ফোন দিয়ে আমাকে অফিসে নিয়ে যেতে বলে কিন্তু মেডাম নিয়ে যান না কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে অফিসে নিয়ে গেলে প্রমান সহ ধরা খেয়ে যাবেন। এর পর থেকে ৭ দিন খুব ভাল ব্যাবহার করেন আর বলতেন আমি যেনো অফিসে গিয়ে কিছু না বলি।
আমার কপালের কাটা দাগ টা তখন ও আছে হিজাব দিয়ে ঢেকে নিয়ে যান। আমি অফিসে গিয়ে সব সত্যি কথা বলে দেয় কারণ আমি বুঝতে পেরেছি এসব কিছু ছিল শুধু আমাকে পটানোর একটা চাল মাত্র। অফিস থেকে সব বুঝতে পেরে তাদের বলেন যে এর পর আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করলে তারা আমাকে নিয়ে আসবে। ঠিক তখন আমি দাবি যানায় যে আমাকে বাংলাদেশের খাবার দিতে হবে। কথা টা বলতেই মেডাম রেগে গিয়ে বলেন যে আমি তার দাসি সে যা দিবে তাই খেতে হবে আলাদা কোন খাবার দেওয়া হবে না। কথা টা শুনে বাঙালি যে ভাই ছিলেন তিনি তখন অফিসের আরোবিয়ান কে বললেন মাত্র আড়াই মাস হলো ও এসেছে এই আড়াই মাসে ওর কি অবস্থা হয়েছে দেখেন তো এত কাজ করাবে ঠিক মত খেতে দিবে না খাবার খেতে না পারলে কাজ করবে কি করে। অফিসের সবাই বললেন যে বাঙ্গালী ভাই ঠিক বলেছেন।
অনেক কথা কাটাকাটির পর সিদ্ধান্ত নিলেন মাসে দুই দিন আমাকে রান্না করে খেতে দিবে আমার পছন্দ মত। আমি আর কিছু বললাম না মেনে নিয়ে ফিরে এলাম। বাসায় আসতে না আসতে শুরু হলো আবার খারাপ ব্যাবহার। এবার যেনো আরো বেশি খারাপ ব্যাবহার করতে শুরু করলেন। আমি বুঝতে পারলাম এরা শুধরাবে না। তাই মাত্র দুই দিন পর ই অফিসে ফোন দিলাম কারণ বাসায় যে ফোন ছিলো ওটা আমি ব্যাবহার করতে জানতাম এবং ওটা দিয়েই ফোন দিতাম। কিন্তু দেশে ফোন দেওয়া যেতো না। যাইহোক অফিসে ফোন দিয়ে বললাম যে তারা আমার সাথে খুব খারাপ ব্যাবহার করতেছে। অফিস থেকে তাদের আবার ফোন দিলে তিনি বাসায় এসেই আমাকে মাইর দেন। আমার জ্বর চলে আসে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ি।মেডামের স্বামী ছিল একটু ভাল মানুষ কিন্তু মেডাম কে খুব ভয় পেতো তাই আমার সাথে কখনো কথা বলতো না। তিনি ছিলেন ডাক্তার রাতে বাসায় ফিরতেই ছোট ছেলে টা তার বাবার কাছে সব বলে দেন। স্যার সেদিন প্রথম আমার কাছে এসে কথা বলেন। এবং বুঝতে পারেন যে আমি খুব অসুস্থ। তিনি মেডাম কে খুব রাগ করেন এবং আমাকে ঔষধ এনে দেন। দুই থেকে ৩ দিন পর অফিস থেকে আবার ফোন দেন, আমি তখন কেদে দিয়ে বলি স্যার ওরা আমাকে মেরে ফেলবে আমার ছোট একটা বাচ্চা আছে প্লিজ আমাকে বাচান খুব কান্নাকাটি করতে থাকি
পরের দিন সকালে মেডাম আমাকে ডেকে বলেন কোন কাজ করতে হবে না আমি যেনো রেডি হয়ে তাদের সাথে যাই, আমি বুঝতে পারছিলাম কি হবে আমার সাথে শুধু আল্লাহ কে স্বরন করছি। সকাল বেলা কোন কিছু খেতেও দিলেন না এমন কি সেদিন আমাকে গাড়ি পিছনে যেখানে ব্যাগ বা বাজার রাখে সেখানে ডুকালেন তখন বুঝতে পারলাম আমাকে অফিসে নিয়ে যাচ্ছে। মেডাম ছিলেন স্কুলের টিচার, তাই আমাকে গাড়িতে রেখে তিনি ক্লাস করান বাচ্চাদের আমি প্রায় ৫ ঘন্টা গাড়ির পিছনে বস্তার মত পরে ছিলাম। ৫ ঘন্টা পর অফিসে নিয়ে গিয়ে আমার নামে অনেক মিথ্যা কথা বললেন আমি চুরি করি আমি কাজ করি না আরো অনেক কিছু। কিন্ত আল্লাহ রহমতে কেউ বিশ্বাস করেন নি তার কথা। কারণ তখন ও আমি অসুস্থ। আমাকে রেখে দেন অফিসের বস। উনারা চলে গেলে অফিসের বাঙ্গালী ভাই আমাকে খাবার এনে দেন এবং অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ডাক্তার দেখে বলেন যে আমার শরিল খুব দুর্বল আমি অনেক অসুস্থ। তিনি আমাকে রেষ্টে রাখতে বললেন ও বেশি বেশি খাবার খাওয়াতে বললেন।
সারাদিন অফিসের একটা রুমে শুয়ে দিন কাটালাম সন্ধায় নতুন মেডাম নিতে এলেন। আমি ভয়ে ভয়ে চলে গেলাম তার সাথে। ছোট একটা বাড়ি দুইটা রুম মাত্র। বাসায় নিয়ে আমাকে বসার রুমে বসতে দিলেন আমি ফ্লোরে বসলে তিনি আমাকে সোফায় বসার অনুমতি দিলেন। আগের বাসায় সোফায় বসা নিশেদ ছিলো। বুঝতে পারলাম হয়তো ভাল মানুষ হবে।
আমাকে দিয়ে তিনি কোন কাজ ই করালেন না। রাতে মেডামের রুমে ফ্লোরে গুমানোর ব্যাবস্তা করে দিয়ে বললো তার বাসায় এক্সটা রুম নেই তাই নিচেই ঘুমাতে হবে। আমি কোন কথা না বলেই ঘুমিয়ে পরলাম।
⏩সকাল বেলা ঘুম ভাংলো ৮ টা বাঝে আমি তো ভয়ে অস্থির কি যানি কি বলে। আলহামদুলিল্লাহ কিছুই বললো না একটা পাউ রুটি দিয়ে বললো খেয়ে নিতে।
আমি ও খেয়ে নিলাম কিছু না বলে।৯ টা বাঝে উনারা বাহিরে চলে গেলেন যাবার সময় বলে গেলেন বাহিরে যাচ্ছে আমি যেনো বাসার বাইরে না যাই। উনারা চলে গেলে নিজের ইচ্ছে মত বাসায় কাজ করতে থাকি তেমন কাজ না ১ ঘন্টায় কাজ শেষ হয়ে গেলো আমি আবার ঘুমিয়ে পড়ি। ৩ টা বাঝে খাবার নিয়ে ফিরে এলেন এসে দেখে বাসার সব কাজ শেষ। খুব খুসি হয়ে এক সাথে খেতে বসালেন। আগের বাসায় রান্না ঘরে খেতে দিতেন কিন্তু এখানে টেবিলেই বসে খাইলাম। রাতে আর খাবার পেলাম না
নতুন বাসায় কাজ নেই কিন্তু শুধু দুপুরে খাবার পেতাম সকালে আর রাতে কোন খাবার ছিলো না। এভাবে ১০ দিন কেটে গেলো আমি অসুস্থ আরো বেশি হয়ে গেলাম। ১১ দিনের দিন যখন সবাই বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলেন আমি কোন কিছু না ভেবে বেরিয়ে পরি আমার কাছে কিছু টাকা ছিলো যা আমি আগের বাসায় মেহমান এসে আমাকে দিয়েছিলো সেই টাকা টা আমি লুকিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। কারণ আমি বুজতে পেরেছিলাম যে টাকা গুলো আমার কাজে লাগতে পারে। যাইহোক বাসা থেকে বের হয়ে অজানা পথে হাটছি চোখে ঝাপসা দেখছি কিছু কিনে খাবো এই আসায় বের হয়ছি। এমন সময় মাথায় আসলো দেশে ফোন করে সব বলবো কারণ অফিসের নাম্বার তখন আমার কাছে নেই ডাইরিটা ফেলে রেখে এসেছি আগের বাসায়। তাই বাড়িতে ফোন দিতে গিয়ে চিন্তা করলাম মা কে বলা যাবে না। ফোন দিলাম আমার এক চাচাতো বোনের স্বামীর কাছে। তিনি আমাকে খুব ভালো বাসেন। সব খুলে বললাম দুলাভাই কে। আমার কথা শুনে তিনি সাথে সাথে যার মাধ্যমে আমাকে বিদেশে পাঠান তাকে ফোন দিয়ে অনেক চাপ দেন। এবং পুলিশের ভয় দেখান। এদিকে বাসায় এসে আমাকে না পেয়ে অফিসে ফোন দেন মেডাম। অফিস থেকে সবাই ভয় পেয়ে যান। আমি ও পথ হারিয়ে ফেলি, সারাদিন হেটে হেটে অবশেষে ফিরে আসি বাসায়। বাসায় আসতেই আমাকে অফিসে নিয়ে যান। অফিসে যেতেই কিছু না জেনেই আমাকে একটা থাপ্পড় দেন অফিসের বস। থাপ্পর দিতেই আমি পরে যায়। সাথে সাথে হসপিটালে নেওয়া হয়। অফিসের সবাই সেদিন আমার সাথে হসপিটালে যান। বুঝতে পারেন আমি খুব ই অসুস্থ এবং আমাকে ঠিকমত খেতে দেওয়া হয় নি। ১ দিন হসপিটালে রেখে নিয়ে আসেন আবার অফিসে। সেদিন বার বার বলেছিলেন দেশে ফিরে আসতে কিন্তু আমি আসিনি । আমার একটা ই কথা ছিলো আমাকে কাজ দিন আমি কাজ করতে চাই, অফিসের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। আমি বলেছিলাম স্যার কাজ করতে আসছি কাজ দিন আমার কথা শুনে সবাই বুঝতে পারে আমি কাজ করতে আগ্রহী। তাই আর কিছু বলে না । সেদিন সন্ধায় আবার এক মেডাম আসেন। এবং আমাকে তার সাথে নিয়ে যান। বাসায় নিয়ে একটা রুমে সোফায় বসিয়ে সব কিছু জানতে চান। আমি তো তখন অল্প অল্প আরবি বুঝি তাই সব বুঝিয়ে বলতে পারিনি। তিনি তখন একটা লেপটোপ নিয়ে ইংলিশ লেখেন এবং সেটা বাংলায় পরিনিত করেন। তখন আমি বলি যে আমি বাংলা লিখতে ও পরতে পাড়ি এবং আমি ইংরেজি ও পারি অল্প। আমি তখন বাংলায় সব বলি তিনি তা আরবিতে পরিনিত করে বুঝে নেন। সব শুনে সাথে সাথে ই আমাকে ভাত আর মাংস এনে দেন এবং আমাকে ঔষধ ও এনে দেন শুধু তাই না আমার জন্য অনেক ফল ও এনে দেন। আমার নতুন মেডামের ব্যাবহার দেখে আমি বুঝতে পারি আল্লাহ আমার দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। ৩ দিন পর থেকে আমি নতুন বাসায় কাজ করি আর এই ৩ দিন আমার মেডাম আমার খুব যত্ন নেন। আমি চিরকৃতজ্ঞ অই মানুষটির উপর। উনার ৩ টা মেয়ে ও একটা ছেলে। আমাকে কখনো কাজের মেয়ের মত দেখেন নি। নিজের বাড়ির মত থেকে এসেছি ৩ বছর। কিন্তু এই তিন বছরে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি কিন্তু হার মানি নি আমি এই ৩ বছরে কেউ মারেনি খাবারের ও কষ্ট দেন নি কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এই বছরে আমার অনেক কাছের মানুষ গুলো পৃথিবী থেকে চলে গেছে দেখতে পাইনি। তিন বছর পর ফিরে আসি বাংলা দেশে তখন আমার অনেক কিছু বদলে গেছে, প্রবাশ জীবনে
এমন ও দিন গেছে সকাল থেকে রাত ২টা ৩ টা পর্যন্ত জেগে থাকতে হয়েছে এবং কাজ করতে হয়েছে। আমার স্বপ্ন ছিলো একটা ঘর করবো ইনশাআল্লাহ করেছি আমার সব কিছু ই পুরন করতে পেরেছি। ৩ বছর পর ছুটি তে দেশে ফিরে আসি ইচ্ছে ছিল ছুটি কাটিয়ে আবার যাবো। কিন্তু দেশে আসার কিছু দিন পর ই মা অসুস্থ হয়ে যান সুস্থ হতে অনেক সময় লেগে যায় তাই আর আগের জায়গায় যাওয়া হয় না। মাকে সুস্থ করে পাড়ি জমায় আবার সৌদি আরব। সেখানে খুব ভালো ই ছিলাম কিন্তু মাত্র ১৫ মাস পর অসুস্থ হয়ে ফিরে আসি আবার নিজের দেশ বাংলাদেশ। দেশে এসে নিজের চিকিৎসা করাতে থাকি। দিন দিন আমার অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকে তাই বিদেশের আশা বাদ দিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে থাকি। কিন্তু স্বপ্ন পুরনে কি ভাবে করবো বুঝতে পারছিলাম না।
আস্তে আস্তে আবার সংসারে অভাব দেখা দিতে থাকে সেই সাথে নেমে আসে মহামারি
শুরু হয় হাহা কার।এদিকে দিন দিন অভাব বেড়েই চলেছে। সিদ্ধান্ত নিলাম বসে থেকে সময় নষ্ট করা যাবে না কিছু করতে হবে।
এই ছিলো আমার প্রবাস জীবনের গল্প। সব চেয়ে মজার বিষয় হলো আমি যেদিন দেশ ছাড়ি সেদিন মা কেদেছিলো আমি যেদিন ফিরে আসি সেদিন ও মা কেদেছিলো।
এই তিন বছরে সন্তানের সব চাহিদা পুরন করতে পারলেও মায়ের ভালবাসা দিতে পারিনি আমি। মাঝে মাঝে যখন ফোনে কথা হতো আমার ছোট ছেলে টা বলতো মা আমি তোমার কাছে যাবো তোমার হাতে খাবো তখন বুক টা আমার কষ্টের পাহাড় হয়ে যেতো। তবুও ভেঙ্গে পরিনি স্বপ্ন পুরনে লেগে ছিলাম এবং স্বপ্ন পুরন করেই দেশে ফিরেছিলাম
যদিও মেডাম অনেক ভালবাসতেন তবুও কষ্ট হতো নিজের মায়ের জন্য সন্তানের জন্য। এত কষ্ট করেছি কিন্তু কখনো পরিবার কে বুঝতে দেয় নি। ৩ বছরে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েছি ঠিক ই কিন্তু নিজের কোন চাহিদা পুরন করতে পারিনি আমি। মাস শেষ না হতেই ফোন দিতেন টাকার জন্য। মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতনে জব করতাম। স্বপ্ন ছিলো নিজের সন্তান কে মানুষের মত মানুষ করবো। আমি দেশে ফিরে আসাতে আমার ছেলে খুব খুসি হয়ে বলেছিলো তার কিছু চাইনা শুধু আমাকে চাই। ছোট ছেলে আমার অনেক বড় হয়ে গেছে কিন্তু আজ ও মাঝে মাঝে বলে কি এমন ক্ষতি হতো আমাকে রেখে না গেলে। কোন উত্তর দেই না চুপ থাকি।
নতুন করে স্বপ্ন দেখি সফল উদ্যোগতা হবো তাই তো শুরু করেছি লেগে আছি এখন শুধু সফলতা ছিনিয়ে আনার পালা।
ইনশাআল্লাহ আগামীতে উদ্যোগতা হওয়ার গল্প শুনাবো। আজ আর নয়
এত ক্ষন কষ্ট করে সময় ব্যয় করে আমার গল্প পরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাইকে
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৮২
Date:- ২৬/১১/২০২১ ইং
রিতা আক্তারী
জেলা ফরিদপুর
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
ব্যাচ ১৩
রেজিঃ৬০৯৭৮
পেইজ সোনালি দিন ফ্যাশন হাউস
মোবাঃ০১৭১৪৯৬৮৫৬২