যাওয়া হলো না মালয়েশিয়ায়!
👦🏻শৈশবকালঃ
আমার শৈশব এবং কৈশোর সবই কেটেছে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার চিওড়া ইউনিয়ন এর চাপিরতলা গ্রামে। আমরা দুই ভাই, ছয় বোন (দুই বোন শিশু কালে দুনিয়া ছেড়ে চলে যান)। পাঁচ বোন এর পরে আমি তারপরে বোন তারপরে ছোট ভাই। অর্থাৎ ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। বাবা ঢাকায় চাকুরী করতেন। আমি যখন দুনিয়াতে আসি সেই খুশিতে বাবা ঢাকা থেকে চলে আসেন।সবাই আমাকে অনেক আদর করতেন। বাবা, মা এবং বোনদের কোলে অতি আদরে বেড়ে উঠি আমি। মা বাবার প্রথম পুত্র সন্তান এবং পাঁচ বোনের পর ভাই বলে অনেক স্নেহ এবং ভালোবাসা পেয়েছি আমি।
🎗স্মরণীয় ঘটনা
একবার আমি ছোটবেলায় আমাদের বাড়ির পাশের কুয়াতে পড়ে যাই।তখন আমার বোন আমাকে ছেড়ে দিয়ে খেলা করতেছিলেন। আমি পানিতে পড়ার পর পা দুটি শুধু উপরে ছিল, মাথা পানির নিচে ছিল! হয়তো আর দু'এক মিনিট এভাবে থাকলে আমাকে চিরবিদায় নিতে হতো ! লিখা হতো না আর এই নিজের বলার মত এই গল্পটি ও ! জানতে পারতেন না আপনারাও ! হঠাৎ আমার মামাতো বোন এবং আমার বোন আমাকে দেখে তাড়াতাড়ি পানি থেকে তুলে নেন।আলহামদুলিল্লাহ তাদের উসিলায় আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেন। আল্লাহ তাদের উত্তম জাযা দান করুন।
🎒লেখাপড়াঃ
মাথার উপর হাতটা দিয়ে কান ধরতে পারতাম বলে খুব অল্প বয়সে আমাকে ভর্তি করানো হলো আমাদের সাঙ্গিশ্বর প্রাইমারি স্কুলে।
ক্লাস সিক্স সেভেন এইট কখন যে শেষ হয়ে গেল অনেক কিছুই মনে করতে পারছিনা তবে ক্লাস নাইনে যখন উঠি তখন আমি বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করি।কখনো কোন প্রাইভেট পড়িনি টাকার অভাবে ! সবশেষে সম্ভবত ২/৩ মাস পড়েছিলাম যতদূর মনে পড়ে অনেক কষ্ট করে!পায়ে হেটে ক্লাসে যেতাম অনেক কষ্ট করে লেখা পড়াটা শেষ করলাম।পড়া শুনার পাশাপাশি ছোট বেলা থেকেই কিছু একটা করার ইচ্ছা মনের মধ্যে সব সময়ে বিরাজ করতো।
📚২০০০ সালে এসএসসি পরীক্ষা__
এতো কষ্টের মধ্যে থেকে পড়া শুনা করে আলহামদুলিল্লাহ ফার্স্ট ডিভিসন এ পাস করি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থাকলেও এইচএসসি তে বাণিজ্য বিভাগ নিতে হলো কারন বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে অনেক খরচ হবে,প্রাইভেট পড়তে হবে তাই ! কিন্তু সমস্যা আরো বেড়ে গেলো,কলেজে বাড়ি থেকে অনেক দূরে,যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা। কলেজে যাওয়ার জন্য একটা সাইকেল দরকার কিন্তু সাইকেলটা কেনার সেই পয়সাটা কে দিবে ? অবশেষে আমার শখের একটা ছাগল ছিলো,সেটি বিক্রি করে একটা হিরো সাইকেল কিনি।এভাবেই শেষ হয় আমার কলেজ জীবনের পড়া লেখা।
🧗🏻♂️প্রশিক্ষণ, ব্যবসায় ,চাকুরি:
বায়িং হাউস এবং কয়েকটা গার্মেন্টসে কাজ করেছি ২/৩ বছর ঢাকায় এবং চট্টগ্রামে।ফার্মেসিতে প্রায় সাত-আট মাস কাজ করেছি। ঔষধ সম্পর্কে অনেক আইডিয়া হয় । মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছি প্রায় ছয় মাস।এক্সপ্রেস ওয়ান কুরিয়ার সার্ভিসে প্রায় দুই বছর কাজ করেছি। টিউশনি করেছি অনেক বছর।
🧑💻সমাজসেবা অধিদপ্তর ফেনী শাখা হতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিই।যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ফুলগাজী শাখায় তিন মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে চিওড়াতে পোল্ট্রি ফার্ম করি মোটামুটি লাভ তেমন একটা না হলেও লস হয়নি।
💍ফিরে দেখা:
জেঠাতো ভাই এবং চাচাতো বোনের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হয় আমার দাদুর পছন্দে । আমার মা এবং বাবা উভয়ে চৌধুরী পরিবারের সন্তান । তবে শিশু কালে মা এতিম হয়ে যান! নানু মারা যান মাকে খুব ছোট্ট রেখে বুকের দুধ খাওয়া অবস্থায়! খুবই সহজ-সরল এতিম মা বাবা আমার। এই সরলতার সুযোগ নিয়ে অধিকাংশ কাছের মানুষ গুলো বাবা মাকে অনেক দুঃখ কষ্ট বেদনা দিয়ে তিল তিল করে শেষ করে দিয়েছেন! যা লিখে শেষ করা যাবে না...!
🌺আমার বাবা অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ অনেক কষ্ট করেছেন আমাদের জন্য। বাবা জীবনে অনেক ব্যবসা করেছেন। পরবর্তীতে প্রবাসের চলে যান , অনেক বছর সৌদি আরবে ছিলেন।প্রবাস ফেরত বাবা বেকার হয়ে পড়েন আমিও তখন অতটা বড় হয়নি যে সংসারের হাল ধরবো। শুরু হলো নতুন অধ্যায়...
🏚নতুন বাড়ির স্বপ্নভঙ্গ:
পুরাতন বাড়ি বিক্রয়মূল্য তখনকার সময়ে ১৮,০০০ টাকার মধ্যে সমাপ্ত হলে বাবা ৩,০০০ টাকা ওদের কাছ থেকে নেয়। আর এই টাকা দেয়ার সাথে সাথে তারা বাবার কাছ থেকে জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেয়।পুরাতন বাড়ি বিক্রয় করে নতুন বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি । অবশ্য সেটা আগে থেকে আমাদের বাগান বাড়ি ছিল যার নাম ছিল আয়েশা বাগান (বড় বোনের নামে)
🏚মাটি কাটা, মাটি ভরাট সবকিছুই রেডি এবার শুধু আমাদের পুরাতন বাড়ি থেকে নতুন বাড়িতে যাবার পালা ! কিন্তু হঠাৎ কি এক কারনে আমাদের আর যাওয়া হলো না সেই নতুন বাড়িতে! বাবাকে কে যেন এসে বলল চৌদ্দগ্রাম যাওয়ার জন্য ওখানে বাবার ঘরের লোকেরা জায়গাটা বিক্রি করে দিচ্ছে, বাবা তখন সাথে সাথে চৌদ্দগ্রাম রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে যান,গিয়ে দেখতে পান উনার ঘরের লোকদের এবং যাদের কাছে জায়গা বিক্রি করছেন তাদেরকে;দেখে বাবার দু চোখের পানিতে অকুল সাগরে পরিণত হতে থাকে! এত কষ্ট এত বেদনা! মনে হচ্ছে যে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল আমার বাবার উপর! কেঁদে কেঁদে বাবা নিস্তব্ধ শুধু চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল! আমার বাবার সেই আর্তনাদ দেখার কেউ ছিলনা! না ছিল তার .. ! না ছিল তার নিকটতম আত্মিয়!
🏚হায়রে মানবতা ! হায়রে মানুষ ! আপন হয়েও এমন কাজটা কেউ কি কখনো করতে পারে? হতাশার গ্লানি নিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া সব বন্ধ করে দেন এবং কোথায় যাবেন! কোথায় থাকবেন আমাদেরকে নিয়ে এই চিন্তায় রাত কাটেনা! দিন ও শেষ হয় না ! এ কোন বিচার নিয়তির ! কেন এমন হলো কেন আপন..পর হল! যাদের অনেক আছে তাদের কিছুই হলো না! আর আমাদের এই সামান্য নিয়ে.. ! আমাদের স্বপ্নটাকে ভেঙে চুরে চুরমার করে দিল! সেই ছদ্মবেশী আপন মানুষগুলো!
একুল ওকুল সব কুল হারিয়ে অবশেষে বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন আগের সেই পুরনো জায়গাটি ফেরত নেবেন। কিন্তু এখানেও বাঁধল আরেক বিপত্তি তারা এই জায়গাটি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানাল!
কিছু দিন যাওয়ার পর...অনেক ভেবেচিন্তে রাজি হল যে তাঁরা জায়গাটুকু ফেরত দিবেন। এরই মধ্যে বাবা সৌদি আরব চলে যান।যাওয়ার পরপরই ওখান থেকে জায়গা ফেরত এর জন্য তাদের কাছে ধাপে ধাপে টাকা পাঠান।বলা বাহুল্য তাদের কাছ থেকে বাবা (১৮,০০০ টাকা মূল্য সমাপ্ত হলেও)৩,০০০ টাকা শুধু নিয়েছিলেন।কিন্তু বাবা যে ৩,০০০ টাকা নিয়েছিলেন সেগুলো ফেরত দিলে তারা গড়িমসি করে এবং বলে আরো টাকা দিতে হবে। এই তিন হাজার টাকার বিনিময়ে বাবাকে ৩০,০০০ টাকার আক্কেল সেলামি গুনতে হল!নিষ্ঠুর এই আক্কেল সেলামি দিয়েও পরিত্রান পেল না আমাদের সাজানো এই পরিবার!
দশগুণ টাকা বেশি নিয়েও তারা জায়গা ফেরত দিতে চায়না! দিন যায় মাস যায় বছর যায় কিন্তু .... !
🏚বাবার ছোট ভাই নতুন বাড়িতে চলে যান এবং তার জায়গাটুকু আমাদেরকে দেয়ার জন্য অনেকে রিকোয়েস্ট করেন কিন্তু উনি আমাদেরকে দিতেই অপারগতা প্রকাশ করেন এবং উনি ওই জায়গাটুকু আমাদের পাশে থাকা সেই প্রতিবেশীদের দিয়ে দেন সামান্য টাকার বিনিময়ে। দুঃখে কষ্টে চৌচির হয়ে যায় এই বুক! দেখার কেউ নাই একমাত্র আল্লাহ ছাড়া!
শুধুই কি তাই আমাদের জায়গার উপরে নারকেল গাছ আম গাছ সহ অন্যান্য প্রজাতির গাছগুলো ও তাদেরকে দিয়ে যান তিনি..!একদিকে তারা নারকেল গাছের নারকেল খাচ্ছেন অন্যদিকে তারা আমাদের জায়গাটুকু ফেরত দিচ্ছেন না ! কিছুই বলা যাবে না চুপচাপ...! বলার কোনো ভাষা ছিল না কখনো নিষেধ করতে পারেনি,কেন আপনারা নারকেল গুলো খাচ্ছেন ? কি করব বেশি বললে যদি আমাদের সেই জায়গাটুকু তারা ফেরত না দেয় !
🛫সম্ভবত দুই বছর পর বাবা সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন ছুটিতে, আমরা সবাই মহাখুশি , আনন্দের মুহূর্তে হঠাৎ শুনতে পেলাম বাবার মানিব্যাগ নাই! বাবার সাথে থাকা সেই সময়ের প্রায় ২৫+হাজার রিয়াল চুরি হয়ে যায়! খুশিতে থাকাটাও অনেকের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়! আর কত কষ্ট ...... বলার ভাষা নেই!
কে যেন বলল আয়না-পড়া দিলে চোরকে ধরা যাবে চোর আশেপাশেই আছে আয়না পড়া দেয়া হলো কিন্তু চোর পাওয়া গেল না অবশেষে টাকাটা পাওয়া গেলোনা! হায়রে কষ্ট! হায়রে দুঃখ! দুঃখের ধারাবাহিক পর্বটি একের পর এক চলছেই তো চলছে...!
🚰 পানি পানে ও বাঁধা..!
টিউবওয়েল নিয়ে আসা হল মিস্ত্রি ও আসলো কিন্তু সেই প্রতিবেশীরা এসে বাধা দিল।বসানো যাবে না টিউবওয়েল! কেন? কারণ তারা তো এখনো জায়গাটি ফেরত দেন নি। যদিও ইতিমধ্যে দশগুণ টাকা নিয়েছেন জায়গা ফেরত দিবে বলে। হে আল্লাহ তোমার কাছে বিচারের অপেক্ষায়...।
🗞মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে সেই প্রতিবেশী জায়গাটি ফেরত দিতে রেজিস্ট্রি অফিসে যান বাবাকে নিয়ে। ফেরত দেওয়া হল জায়গাটি এবং বাবার অজান্তে ২ শতক জায়গা লিখে নিলেন অন্যায় ভাবে...!
এখানেও ক্ষান্ত হয়নি তারা!
আমরা আমাদের জায়গাটুকু সরেজমিনে বুঝে নেয়ার জন্য আমিন নিয়োগ করি। আমিন কে পয়সা দিতাম আমরা,কিন্তু আমিন তাদের স্বপক্ষে সাফাই গাইতো এবং তারা যেভাবে বলতো সেভাবেই মাপজোপ দিত।আমার মনে হতো এখানে কোন একটা কারচুপি করতো তারা। প্রায় ১৫ থেকে ২০বার আমিন আনা হলেও সঠিক মাপ টা কখনোই পেতাম না! মাপটা কিভাবে দিলেন এটা আমাকে একটু বুঝিয়ে দিন তখন তারা বলত আমি নাকি পাগল হয়ে গেছি! মাথা খারাপ হয়ে গেছে! এই জায়গার মাপজোপ নিয়ে ছোট ভাইকে তার কানের উপর সজোরে থাপ্পর খেতে হল! আমাকে শুনতে হলো পাগল ! আমার বাবাকে ধাক্কা খেতে হল ! আরো কত কি...সব কথা বলা যাচ্ছেনা কিছু কথা আল্লাহর কাছে...। চলতে থাকে বিভিন্ন সময় মামলা-মোকদ্দমা সালিশ,বৈঠক কিন্তু কি হবে এগুলো করে সবই তো তাদের পক্ষেই রায় আসে।শেষ হইয়াও হয়না শেষ ! কারণ অন্যায় জুলুম অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে নিতে হলো প্রতিনিয়ত। কিন্তু আর কত! জানিনা এর শেষ কোথায়! এসব কারণে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মা আমার এখনো অসুস্থ ।মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
🗞সুদীর্ঘ ২৮ বছর পর… ধারাবাহিক ভাবে লিখতে থাকলে কয়েকটা বই লিখা হবে তাই অনেক কিছু লিখি নাই এবং সর্ট করে লিখলাম।
২০২১ সালের শুরুর দিকে এর পরিসমাপ্তি ঘটে
দুবাই থেকে করা প্রবাসী কল্যাণ মামলার মাধ্যমে আলহামদুলিল্লাহ। যারা নিরপেক্ষ এবং নি:স্বার্থ ভাবে সহযোগিতা করেছিলেন তাদের সকলকের জন্য অনেক অনেক দোআ এবং ভালোবাসা রইলো আল্লাহ তাদের উত্তম জাযা দান করুন।
😥কোরবানির ঈদ:
কুরবানীর দিনে ঘুমিয়ে থাকতাম ঘুম না আসলেও.... !
কোরবানি দেই নি বলে..! খুবই কষ্ট হত এই দিনটিতে..! নিজেকে অনেক তুচ্ছ,ছোট মনে হতো! মাকে বলে দিতাম; কেউ আমাকে খুঁজলে বলে দিও আমি অসুস্থ ,জ্বর ...। একমাত্র কোরবানির দিনই সুস্থ থেকেও অসুস্থতার ভান ধরতাম। কেউ যখন কোরবানির গোশত নিয়ে আসতো এবং ডাকত বিশ্বাস করুন খুবই কষ্ট লাগতো অঝোরে চোখের পানির ঝরতো ! আল্লাহর কসম এই লেখাটা যখন লিখছি তখন ও আমার চোখের পানি এবং আওয়াজ বিহীন কান্না আমি বন্ধ করতে পারছিলাম না শুধু ভিতর থেকে গলা কাপানো কান্না আসছিল !
আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আজ আমি একাই ...।
🧗🏻♂️সেই ২০০২ সাল থেকে সুদীর্ঘ বিশ বছর আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় চাকুরী, ব্যবসা করে যাচ্ছি…
🇲🇾মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়ে দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম।দালাল চক্র ভিসা ও দেয়না,টাকাটা ও ফেরত দেয়না ! মহা বিপদ ! সর্বশেষ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে তার সাথে মারামারি পর্যায়ে চলে গেল,মামলা মোকদ্দমা শেষে ৩০,০০০ টাকা কম দিয়ে বাকি টাকা ফেরত দিল। যাওয়া হলো না মালয়েশিয়ায়!
🇦🇪দুবাই আসার জন্য এক ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা দেই ২০০৯ সাল। তবে সে আমার জন্য একটা ফেইক ভিসা পাঠায় অবশেষে আর আসা হলোনা দুবাই ! পরবর্তীতে ২০১১ সাল সে আমার জন্য নতুন করে একটা ভিসা পাঠায়। চলে আসি দুবাই । মালিক খুবই বদমেজাজি এবং খারাপ প্রকৃতির মানুষ ছিল! ঠিকমতো বেতন দিত না গালাগালি করত মাঝে মধ্যে গায়ে হাত তুলতে ও দ্বিধা বোধ করত না ! মুখ বুজে সহ্য করেছিলাম সবকিছু! বলাবাহুল্য এই মালিকের কাছে কেউ বেশি থাকতে পারত না ।সর্বোচ্চ কেউ থাকলেও ৩ মাস থেকে ৬ মাস পর্যন্ত! কিন্তু আমি অনেক কষ্ট করে ধৈর্য সহিত এই মালিকের কাছে দুই বছর পর্যন্ত ছিলাম। কিন্তু আমার একটা জিতছিল যে মালিকের জন্য আমি মামলা করব ! আমি দেখিয়ে ছাড়বো !
🔥প্রতিশোধের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে!তাকে আমি সব শেষ দেখেই ছাড়বো। সর্বশেষ তিন-চার মাসের বেতনের টাকাকে ইস্যু করে আমি তার নামে মামলা দায়ের করি। কিন্তু সে মামলা না নেয়ার জন্য অনেক প্রভাব খাটালেও তার সেই প্রভাব টেকেনি !
৫০ বারের ও উপরে যেতে হয় তাকে শারজাহ কোর্টে তিন বছরের মধ্যে। তার ইমারতের ৪০ বছরের ইতিহাসে আমি প্রথম অভিযোগকারী এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী।
তিন বছর পর মামলার নিষ্পত্তি হল তাকে জরিমানা করল সাড়ে সাত হাজার দিরহাম এবং টিকিট দিতে হলো আমাকে দেশে যাওয়ার জন্য। এরইমধ্যে আমি আমার ভিসা টা লাগানোর ব্যবস্থা করে দেশে চলে যাই।
💍শাদী মোবারক:
পারিবারিকভাবে মেয়ে খোঁজা হচ্ছে ...।অবশেষে পেয়ে গেলাম...!
নিজেই লিখি নিজের বিয়ের ফর্দ । বিয়ের অনুষ্ঠানটি ইসলামিক রীতিনীতির উপরেই করার অনেক চেষ্টা ছিল। মোটামুটি তাই হয়েছে। বিয়ের ২ মাস পর আমার ভিসা বের হয় আমাকে চলে আসতে হল দুবাইতে। তিন মাস পর আবার দেশে যাই আবার কয়েক মাস পর ফেরত আসি দুবাইতে।
🤱ঘর আলো করে আসে আমার মেয়ে ইসরা।ইসরাকে দেখার জন্য যেতে পারিনি দেশে তবে তাদেরকে নিয়ে আসি দুবাইতে এবং তারা এখানে খুব ভালো ছিল,প্রায় এক বছর ছিল অবশেষে তাদেরকে দেশে পাঠিয়ে দেই। বর্তমানে ইসরার বয়স চার বছর।
🤱গতবছর আমাদের ঘরে নতুন আরেকটি অতিথি আসে তানজিল চৌধুরী আলহামদুলিল্লাহ বর্তমানে আমাদের এক মেয়ে এক ছেলে ,ইসরা এবং তানজিল 👨👩👧👦
🌺কৃতজ্ঞতা প্রকাশঃ
অধিকাংশ রক্তের সম্পর্ক বেইমানি করে। যেমনটি আমাদের বেলায় হয়েছে। কিন্তু আজকে এই নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে যে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এবং যেভাবে আপনারা একে অপরকে ভালোবেসে আপন করে নেন তা সত্যি অবাক করে দিয়েছে আমাকে! এই প্লাটফর্মের শুরু থেকে এই পর্যন্ত যারা আছেন এবং আরো যারা আসবেন সকলের জন্য হৃদয়ের গহীন থেকে অনেক অনেক দোআ এবং ভালোবাসা রইলো।
🌺আলহামদুলিল্লাহ…!
গ্রুপ থেকে এই অল্প সময়ে অনেক কিছু পেয়েছি। নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন নিঃসন্দেহে একটি ভালোমানুষের পরিবার।যে পরিবারটির সাথে যুক্ত হয়ে মনে হচ্ছে জীবনের অনেক কিছুই পেয়ে গেছি! অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই উদ্যোক্তা গড়ার কারিগর প্রিয় মেন্টর জনাব @Iqbal bahar Zahid স্যারকে ।
📚এতক্ষণ পর্যন্ত যারা আমার গল্পটা ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা রইলো। গুছিয়ে লিখতে পেরেছি বলে মনে হয় না ,তবে ইনশাআল্লাহ আগামীতে আরো ভালো ভাবে লেখার চেষ্টা করব ।লেখায় ভূল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দোআয় শামিল রাখবেন। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা যাতে আপনাদের সকলের মনের নেক আশা গুলো পুর্ণ করেন এই দোআ করছি।
আল্লাহ হাফেজ..
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৮১
Date:- ২৫/১১/২০২১ ইং
🔷মুহাম্মাদ ইব্রাহিম চৌধুরী
🔶নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
🔹জেলাঃ কুমিল্লা/চৌদ্দগ্রাম
🔸ব্যাচ-১৫
🔷রেজিস্ট্রেশন নাম্বারঃ৭০৫০০
🔶বর্তমান অবস্থানঃ দুবাই
🔹ব্যবসায়িক পেইজঃ
👍https://www.facebook.com/শখের-তোলা-আশি-SakherTola-Ashi-102181368947156/
👍https://www.facebook.com/activefreshfood/