হঠাৎ আমার এক কলেজ বান্ধবীর সাথে দেখা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
#আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
আজ আমি আমার নিজের গল্প লিখছি।
☝🏿☝🏿সকল প্রশংসা মহান রবের জন্য, যিনি সৃষ্টি করেছেন! পৃথক করেছেন আসমান ও জমিন। এ কঠিন বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যে আমাদের সুস্থ রেখেছেন! আলহামদুলিল্লাহ ☝🏿☝🏿
💞💞 দুরুদ ও সালাম পেশ করছি বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি যাঁর প্রতি নাযিল হয়েছে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন।
🥀🥀কৃতজ্ঞতা জানাই এই মানচিত্রের সফল মানুষ আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় স্যার প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহীদ স্যারের প্রতি,যার একান্ত প্রচেষ্টায় আমারা পেয়েছি প্রাণের প্লাটফর্ম ।🥀🥀
🌱জীবন গল্প🌱
🌷আমি রুমা রুমানা,জন্ম ১৯৮৫ সালে যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় শংকর পাশা গামে। আমরা এক ভাই এক বোন। মধ্যবিও পরিবার।🌷
🌱শিক্ষা জীবন🌱
🖋️🖋️ছোট বেলা পড়াশোনা করছি নওয়াপাড়া শংকর পাশা স্কুলে ওখান থেকে এস এস সি পাশ,অনেক দুর পায়ে হেটে তারপর নৌকায় করে যেতে হোত স্কুলে। আমার বাবা ঢাকায় চাকরি করতো
আমার ভাইয়া পড়াশোনা করতে ঢাকায় গেলেন । আমার ছোট বেলা থেকে শখ ছিল সাংবাদিক ও লেখক হওয়া কিন্তু হতে পারিনী। এস এস সি পাশ করার পর ২০০০ সালে ঢাকায় চলে আসি। সেখানে শুরু হয় আর এক জীবন। অনেক দিন পড়াশোনা বন্ধ ছিল পরে ২০০৬ সালে এইচ এস সি পাশ করি। তখন চাকুরী করতে চাইলাম,কিন্তু কোন চাকরি পাইনি, কি করবো ভেবে না পেয়ে আবার আমার গ্রামের বাড়ি শংকর পাশা চলে আসি। গ্রাজুয়েশন করার জন্য বি এ তে ভওি হই।আবার শুরু হয় পড়া পাশাপাশি চাকরি খুজি, কিন্তু পাইনা।
🌾🌾সংসার জীবন🌾🌾
বি এ পড়াকালিন সময়ে ২০১০ সালে আমার বিয়ে হয়ে যায়। বাবার আদরের একমাত্র মেয়ে ছিলাম তাই অনেক দেখেশুনে ব্যাবসায়ি ছেলের সাথে বিয়ে দেয় আমার। বেশ সুখে শান্তিতে কাটছিল আমাদের সাংসারিক জীবন। শ্বশুর বাড়ি থেকে প্রথম সমস্যার সম্মুখীন হই আমার লেখাপড়া নিয়ে, শাশুড়ী বাধা হয়ে দাড়ায়,বলে কি হবে পড়া লেখা করে। আমার স্বামী ভালো ছিল সে আমার পক্ষেই দাড়ায়, আমি সাংসারের সমস্ত কাজ করতাম নিজ হাতে,আবার সময় মত লেখাপড়া করতাম! লড়াই করে পড়েছি থেমে থাকেনি, আমার স্বামী বলেছে পড়ুক এভাবে বি এ পাশ করি। এর পর চাকুরি খোঁজা শুরু করি তবে পাইনি,আমার স্বামী বলতো চাকরি করে কি হবে! তবু চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি! ভাবতাম নিজে কিছু করবো। এই সময়ে চাপ আসে বাচ্চার জন্য, আমার স্বামী ও শাশুড়ী চাপ দেয়। আমি ভেবে ছিলাম নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে, পরে বাচ্চা নিবো। এরপর চাইলেও বাচ্চা হচ্ছিল না,তারা বলে আর হবে না, শুরু হয় অবহেলা কষ্টের জীবন। সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখায় না শুধু বলে তোমার পেটে আর বাচ্চা আসবে না, অনেক দিন এ ভাবে চলে। তারা আমার উপর মানুষিক অত্যাচার শুরু করে কারণ ছেলে মেয়ে। ওই সময়ে কত দিন রাত না খেয়ে নিরবে একাকী কেঁদেছি কেউ সান্ত্বনা বাণী নিয়ে পাশে বসে বলেনি ভেঙে পড়িস না। আপনারা বলেন তো বাচ্চা না হওয়াটা কি আমার অপরাধ? নিরুপায় হয়ে আমার মা আমাকে ডাক্তার দেখায়,শুরু হয় চিকিৎসা, কিন্তু তবুও তাদের মন রক্ষা করতে পারিনি। তাদের এক কথা আমার বাচ্চা হবে না, ডাক্তার দেখিয়ে কোন লাভ নেই! নিজেরা তো কোন চেষ্টা কখনো করেনি। এভাবে দিন যায় মানুষিক চাপ বেড়ে যায় কি করবো ভেবে পাই না। চুপ করে থাকি নিরবে সব কিছু সহ্য করি। এভাবে কেটে যায় তিন বছর! আমার স্বামী অন্য একটা মেয়ের সাথে প্রেম করতো, তার আচার-আচরণ দেখে বুঝা যায়নি কারন সে ব্যাবসা করতো। মাঝে মাঝে বাড়ি ফিরতো না!বলতো ব্যাবসার কাজে বাইরে যাচ্ছি, তখন বুঝতে পারিনি! সে বিয়ে করেছে গোপনে আমাকে না বলে! আমার ছেলে মেয়ে হয় না এটাই আমার অপরাধ নাকি অন্য কিছু! সত্যি কারন জানি না কি কারনে বিয়ে করছে। তিন বছর পর জানতে পারলাম বিয়ে করছে একটা মেয়ে হয়েছে। কি করবো ভেবে পাইনি মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো এখন আমি কি করবো, কোথায় যাবো কাকে বলবো? আমার কি অপরাধ, আমি তাকে বিশ্বাস করেছি, তাকে ভরসা করেছি তার উপর নির্ভর করেছি? এসব কথা ভেবে রাতে ঘুমাতে পারতাম না, কেঁদেছি সারারাত ধরে! বোঝানোর কেউ ছিলনা। আমার স্বামী মিথ্যা কথা বলতো। কি করবো কোথায় যাবো চারদিকে নেমে আসে অন্ধকার, শুধু কষ্ট আর কষ্ট,জীবন ভরা কষ্ট। জীবনে নেমে আসে দুঃখ কষ্টের সাথে কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এর পর শুরু হয় সংগ্রাম নিজের সাথে যুদ্ধ করি ভাবি আত্মহত্যা করবো,সেটাও পারিনি!
🌹🌹এই কস্টের মধ্যে অন্ধকার জীবনকে আলোকিত করে ছয় বছর পর আমার ছেলে হয়।
কিন্তু আফসোস এই ছেলের বাবা এখন আমাদের থেকে অনেক দুরে সরে গেছে, কি ভাবে ছেলেকে মানুষের মত মানুষ করবো এই চিন্তায় আমার খাওয়া ঘুম হারাম। কি ভাবে ছেলে মানুষ করবো ছেলের ডাক্তার দেখানো, দুধ কিনে দিবো আরও কত খরচ ছিলো কিভাবে চালাবো সব। ছেলেটা একটু বড় হলে আমার সাথে ঝগড়া বাধিয়ে সে চলে যায়। আমাদের খবর তেমন রাখে না। আমার কষ্ট হয় খরচ চালাতে। ছেলের খরচ আমার ভাই পাঠাতো মাঝে মাঝে। এভাবে বহু কষ্টে দিন যায়, অনেক দিন পর পর সামান্ন কিছু টাকা দিতো তাতে বাজার খরচই খরচ হতোনা। কিভাবে ছেলেকে মানুষ করবো খুব কষ্টে জীবন যায়।
হঠাৎ আমার এক কলেজ বান্ধবীর সাথে দেখা হয়। তার সাথে সমস্ত কথা খুলে বলি। তখন সে বলে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর কথা। আমি বললাম এই গ্রুপ দিয়ে আমি কি করবো। তখন সে বললো এই গ্রুপ থেকে পেতে পারিস তুই কোন নতুন আইডিয়া।
এমন কি তোর জীবন ও ঘুরে যেতে পারি। আমি বিশ্বাস করি নি এটা আবার হয় নাকি?
আমাকে লিংক দিলো আমি গ্রুপ টা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। আর স্যারের পোস্ট গুলা ফলো করতে লাগলাম। আমার অনেক অনেক ভাল লাগলো। আমি পেয়ে গেলাম আইডিয়া। আমি ও বিজনেস করবো।
মনে সাহস সঞ্চয় করলাম। এরমাঝে যশোর জেলার মেসেঞ্জার গ্রুপে অ্যাড হলাম। যশোরের ভাই-বোনেরা আমাকে অনেক হেল্প করতে লাগলো।
আসলে এই প্লাটফর্মে প্রাপ্তি বলে শেষ করা যাবে না। পেয়েছে পিতার মত একজন অভিভাবক ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে।
আরো পেয়েছি প্ল্যাটফর্মের এক ঝাঁক ভাই-বোনকে।
মনের মধ্যে আশার আলো জাগে। খেয়ে পড়ে টুকটুক করে ৩০০০ টাকা সঞ্চয় করি. সেই টাকা দিয়ে অল্প কিছু থ্রি পিস কিনে ব্যাবসা করি ইকবাল বাহার জাহীদ স্যারের অনুপ্রেরণায় ঐখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি সবাই পাশে থাকবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৮১
Date:- ২৫/১১/২০২১ ইং
রোমানা
ব্যাচ ১৪
রেজিষ্ট্রেশন ৬৫১৫২
অভয়নগর,নওয়াপাড়া, যশোর।