সবার পন্যের পশরা বসায় অনলাইন হাটের মেলায়
সকাল থেকেই কাজের খুব চাপ যাচ্ছে আজ। কারন ছোট বোনের শাশুড়ি, ননাস , তার হাসবেন্ড ও ২ বাচ্চা সহ পুরো পরিবার আসতেছে আমাদের বাসায় ।
তাই কাজ গুলো একটু গুছিয়ে নিয়ে নিজেও একটু পরিপাটি হয়ে নিলাম কারন অতিথি আসার পর তো আর ফ্রেশ হওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনা না।
১২ না নাগাদ আন্টি ও আপুরা চলে আসলো। তাদের নাস্তার আয়োজন আগেই করা ছিল তাইতো বেশি বেগ পেতে হয়নি। নাস্তার পর্ব শেষ করে দুপুরের আয়োজনে মন দিলাম। পোলাও, মুরগির রোস্ট, গরুর রেজালা, কোপ্তা, চিংড়ি দোপেঁয়াজু, সালাদ আর সাথে ছিল রসুনের আচার। রসুনের আচারটা রাখার উদ্দেশ্য হলো আমাদের খাবারে যেন ডায়েট কন্ট্রোল থাকে এই চিন্তা করেই।
দুপুরের খাবার রেডি করে সবাইকে খাবার খেতে দিলাম। খেতে খেতে হঠাৎ আপুর হাসবেন্ড বলে উঠলো আপু সব আয়োজনের সাথে রসুনের আচারটা রেখে খুবই ভালো করেছেন কারন একে খাবারের রুচি যেমন বাড়লো তেমনি এতো রিচফুড খাওয়ার জন্য খাবারের ডায়েট কন্ট্রোল ও রইলো। তার উপরে রসুনের আচার আমার খুবই পছন্দের একটা আচার। আমার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখতে চেষ্টা করি।
আমার খুব পছন্দের রসুনের আচার। সচরাচর আমি যে আচারটা খাই আজ তেমন স্বাদ পাইনি। মজা করে আমিও বললাম কেন আজকের টা বুঝি বেশি খারাপ লেগেছে? উনি বলে উঠলেন আরে না না কি যে বলেন এর স্বাদ, গন্ধ সম্পূর্ণ ভিন্ন ।আমি বললাম এটা তো আমার হাতের তৈরী তাই হয়তো এমন লেগেছে । ভাইয়া বললো দোকানের কেনাটার সাথে আপনার হাতের তৈরী আচারের পাথর্ক্য ব্যাপক স্বাদ এবং গুনগত মান সম্পূর্ণ আলাদা লেগেছে ।ভাইয়া ভাবছে আমি নিজেদের খাবারের জন্যই হয়তো বানাই ততক্ষণে ও জানেনা যে আমার অনলাইনে আচারের ব্যবসা করি। তখন নিজেই বললাম এস.আর আচার সমাহার নামে আমার একটা পেইজ আছে। সেখানে বিভিন্ন রকমের আচার সেল করি।ভাইয়া খুবই উৎসাহিত হয়ে বললেন তাই নাকি, তাহলে এখন থেকে দোকানের টা আর কিনবোনা আপনাকেই অর্ডার করবো যখন তখন। আসলে ভাইয়া একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি কারন উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগে কর্মরত রয়েছেন । এজন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা উনার ভিতর একটু বেশি।খাবার পর্ব শেষ হলে তো পরের পর্ব থাকে গোছানো এবং পরিষ্কারের পালা। যথারীতি তাই করছি। তারপরে আবার বিকালের নাস্তা তৈরীর পালা যেহেতু আপুরা সন্ধ্যায় চলে যাবে। সবাইকে নাস্তা দিলাম সাথে আমাকেও বসতে হলো, খাওয়ার এক পর্যায়ে আপু বলে উঠলো আপনার জামাটা তো খুবই সুন্দর কোথায় থেকে নিয়েছেন?
এতো সুন্দর জামাটা পরেই সারাদিন কাজ করলেন নষ্ট হয়ে যাবেতো? আমি মুচকি হেসে বললাম নষ্ট হবেনা কারন এর রং এবং কোয়ালেটিতে আমি বিশ্বাসী।আপু বললো কিভাবে? বললাম এর নেপথ্যে যে আমিই রয়েছি। আর জামাটা নতুন নয় আরো ১ বছর আগের জামা। আপু অবাক হয়ে বললো খুলে বলুনতো এর রহস্য কি? তখন বললাম এই জামাটা আমি কোন শো রুম থেকে কিনিনি সম্পূর্ণ নিজেস্ব ডিজাইন করা, জামাটা যেহেতু বল্কের ছিল তাই বলছি এতে উন্নত মানের রং এবং উজ্জ্বল ও রংয়ের টেকসই হতে যা যা উপকরন লাগে সবগুলোর সঠিক ব্যবহার করেছি। তাইতো এখনো ঝকঝকে রয়েছে। ওই যে সোফায় কুশন কভার গুলো দেখছেন ওগুলো আমি করেছি আপু সহ সবাই খুব অবাক হলো কথা শুনে। প্রায় ২ বছর আপুরা আমার বাসায় আসেনি তাই অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেল। এর মাঝে আমি বল্কের কাজ শিখেছি, করোনা কালীন সময়ে ঘরে বসে বোর হচ্ছি তখনি কিছু করার সিদ্ধান্ত নেই। প্রথমে মার্কেট থেকে আনি কিন্তু মনের তৃপ্তি যেন অদূরাই রয়ে গেল। নিজে কিছু করার ইচ্ছাই প্রবল হচ্ছে দিন দিন। যেই ভাবা সেই কাজ নিজের শিক্ষাটাকে কাজে লাগিয়ে দিলাম। আমার পরনের জামা, ওড়নায় টারসেল করা, কুশন কভার সব আমার করা আর বেডসীট টাও আমার কালেকশনের । আন্টি ,আপু ,ভাইয়া সবাই অবাক হয়ে গেল। এবার আন্টি বলে উঠলো তোমার কাছে সবই আছে? আমি বললাম হুম সবই আছে।
কথায় কথায় যাওয়ার সময় হয়ে এলো .... যাওয়ার সময় আমাকে অবাক করে দিয়ে ভাইয়ার জন্য রসুনের আচারের অর্ডার করলো একটু ঝাল ঝাল যেন হয় এই বলে। তারপরে আপু আর তার ৫বছরের মেয়ের জন্য মা - মেয়ের ম্যাচিং ড্রেসের অর্ডার করলো। সাথে বলে দিল ডিজাইনটা আমার মতো করে দিলেই চলবে। আর বললো পরবর্তীতে কুশন কভারের ও অর্ডার করবে ইন শা আল্লাহ।
এই ছিল আমার গল্পে গল্পে আজকের সেল পোস্ট। যদিও গল্পের অনেকটাই আমার উদ্যোক্তা জীবনের সাথে মিল আছে।
🍂🍁🍂আমার উদ্যোগের নাম Rup Collection House & এস.আর আচার সমাহার।
কাজ করছি পুরান ঢাকা থেকে মেয়েদের সব ধরনের পোশাক, বল্কের কূর্তি , হাতের কাজের ও বল্কের কুশন কভার, টারসেল এবং বেডসীট আর নতুন সংযোজন রসুনের আচার নিয়ে।
নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন
সুস্থ থাকুন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৭৯
Date:- ২২/১১/২০২১ ইং
সুলতানা রাজিয়া সীঁথি
ব্যাচ ১৪
রেজিস্ট্রেশন ৬৫২১৭
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
লালবাগ জোন
জেলা লক্ষ্মীপুর
ঢাকা