আমার না বলা কথা
বিসমিলাহির রহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম।
প্রথমেই মহান আল্লাহর কাছে লক্ষ্য কোটি শুকরিয়া জানাই আমাদের সবাইকে সুস্থ্য রেখেছেন।
আমাদের সকলের প্রিয় প্লাটফর্ম নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউনন্ডেশন এর কর্ণধার সৎ,মহৎও পজিটিভ মানুষ গড়ার কারিগর আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর জনাব#### ইকবাল বাহার যাহিদ স্যার #### এর প্রতি কৃতঙ্ঘতা ও শ্রদ্দ্বা ঘ্যাপন করছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে আমার না বলা কথা বলব
আমার বিশ্বাস আমাদের ভাই ও বোনেরা আমার গল্পটা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
আমি ফেরদৌসী হক
আমি বাবা মায়ের সবচেয়ে ছোট মেয়ে ।আমরা তিন বোন ওএক ভাই।
আমাদের পরিবারের সবাই উচ্চ শিক্ষিত ।সবাই যার যার জায়গায় প্রতিষ্ঠ্যিত।
আমি যখন অনার্স(বাংলা) ২য় বর্ষে এবং (হোমিওপ্যাথিতে) ২য় বর্ষে পড়ি তখন পারিবারিক ভাবে আমার বিয়ে হয়।সবাইকে একটা কথা বলেছিলাম আমাকে পড়াশুনা করার সুযোগ দিতে হবে।সবাই রাজি হল।
(২০০৭-২০২১)
শুরু হল আমার জীবন যুদ্দ্ব-
নরসিংন্দী সরকারী কলেজে অনার্স এবং ঢাকায় পড়ি হোমিও ।দুই যায়গায় সমান তালে ক্লাস করি।
এবং এর মধ্যে আমি আমার মাঝে নতুনত্ব বুজতে পারি।মা হতে চলেছি।সামনে পরীক্ষা কি করব আমার মাথা নষ্ট ,তারপর আমার মা বড় আপা সবাই আমাকে সান্তনা দিল তোমার পড়াশুনার কোনো ক্ষতি হবেনা ।আমরা সবাই তোমাকে সাহায্য করব।
সবাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।কিন্ত আমি দুই যায়গায় সমান তালে পড়তে গিয়ে নিজের যত্ন নিতে পারিনি।
৮মাস গর্ভকালিন সময়ে হঠাৎ আমার খিচুনী শুরু হয়।তিন হাসপাতাল থেকে বিদায় দিয়ে দেয় সবশেষে ঢাকা মেডিকেল এক্লামশিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করে।এবং আমার মেয়ের জন্ম হয় ।
আমি ১১দিন পর্যন্ত কিছু বলতে পারিনি।কিছু মনে নেই
তারপর ১৫দিনের পর আরামবাগ আমার আপুর বাসায় আসি।এবং ১৬ দিনের মাথায় আমার হোমিওতে ৩য় বর্ষের টেষ্ট পরীক্ষা শুরু হয় ।আমাকে সবাই অনেক সাহায্য করেছে।
কলেজে ফোন করে বিস্তারিত বলার পর স্যার বলল টেষ্ট পরীক্ষা না দিলে ফাইনাল পরিক্ষা দিতে পারব না।
আমি ১টা পরিক্ষা দিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে দেখা করে সব বলাতে স্যার আমাকে ফরম ফিলাপ করার সুযোগ দেয়।
৩১ দিন পর অনার্সের ফাইনাল পরীক্ষা।অসুস্থ্য থাকা কালীন আমি বাসায় বসে প্রাইভেট পড়ে সিলেবাস কমপ্লিট করেছি।
অনেকেই বলেছিল পড়াশুনার দরকার নেই ।আমি এটা মানতে পারিনি।
আমি আরো পরিশ্রম করতে লাগলাম।(পূণ্যতা) আমার মেয়ে যখন ঘুমাতো আমি তখন পড়তাম।এমন ও হয়েছে আমার মোটা ব ইটা আমার হাত থেকে পূণ্যতার উপর পরে গেছে।
আমি হাল ছাড়ি নি।
যতবার আমার পরীক্ষা থাকত সেই দিন পূন্যতা অসুস্থ্য হয়ে যেত।বেশির ভাগ সময় আমি ভোর রাতে পড়াশুনা করেছি।
এটা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে অনেক কথা শুনতে হত।সারাদিন অফিস করে এসে আমার কারনে ঘুমাতে পারতো না আমার স্বামী এটা আমার শ্বাশুরী মার কাছে খারাপ লাগতো।
পূণ্যতার আব্বু আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।সবাই আমাকে সাহায্য করেছে।
আমার কাছে তখন পড়াশুনার নেশা এত প্রবল ছিল যে কারো কোন কথা আমার কানে ঢুকাইনি।
এভাবে আমি সুখে দুঃখে অনার্স শেষ করি।DHMS শেষ করি।
মাস্টার্স ভর্তি হব।
আর ঐত পড়াশুনা করে কি হবে।শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে আলমারি ভরে কি লাভ।
সে দিন সারাদিন আমি অনেক কেঁদেছি।আমি ভর্তি হবোই হব।আমাকে কেউ ই আটকাতে পারবেনা।
আমি অল্প অল্প চিকিৎসা শুরু করেছি ।২য় বর্ষে থাকতেই।
আমি মাস্টার্স ভর্তি হ ই এবংআল্লাহর রহমতে শেষ করি।এর মধ্যে আমি ২০১০-২০১৪ পর্যন্ত মতিঝিল টি এন্ড টি কলেজে পার্ট টাইম লেকচার হিসেবে কাজ করেছি। কলেজ পর্যায়ে নিবন্ধন করেছি। আমি জীবনে হাল ছাড়িনি। চেম্বার করছি।আমার ছেলের মা হয়েছি।
এখনো লেগে আছি।ভালো কিছু করার আসায়।
আমি গরীব অসহায় মহিলাদের ফ্রি চিকিৎসা করি।
১বছরে 21জনকে টাকা ছাড়া নরমাল ডেলিভারির চিকিৎসা করে সফল হয়েছি ইনশাআল্লাহ।আরো 3 জন চিকিৎসাদিন আছে।
(আমার জীবনে এই প্লাটফর্ম)
হঠাৎ করে একদিন স্যারের ভিডিও আমার সামনে চলে আসে।
(কি করলে একদিন ও বেকার থাকবনা।)
আমি ভিডিও টা দেখলাম প্রত্যেকটা ভিডিও আমাকে পাগলপ্রায় করে তুলেছে।স্যারের সব গুলো সেশন ভিডিও বার বার দেখেছি।এখনো এখনো সাংসারিক কাজের সাথে সাথে আমি ###নিজের বলার মতো একটা গল্পে###ভিডি ও গুলো দেখি ।
আমি এখানে যুক্ত হ ওয়ার আগে কেমন ছিলাম
সারাদিনে একবার কি ২বার মোবাইল হাতে নিয়েছি।Just কথা বলার জন্য।
এখন সারাদিন মোবাইল নিয়ে সেশন নিয়ে এই গ্ৰুপে সময় দেই।নিজেকে আবার নতুন করে আবিস্কার করেছি।নিজের নামে ফেইস বুক আইডি করেছি ই-মেইল আইডি করেছি।নিজের নামে পেইজ খুলেছি।যা আগে দরকার মনে করিনি। নিজে যা সবচেয়ে বেশি পারি তা নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরনা পেয়েছি এখান থেকে।প্রতিদিন জেলা মেসেন্জার গ্ৰুপে সেশন চরচা করি।আগে আমি মেসেজ লিখতে পারতাম না এখন পারি। আমার মাঝে আমূল পরিবর্তন এসেছে এটা এই গ্ৰুপের অবদান।
কালকে একজন আমার কাছের মানুষ ফোন করে বলেছে তুমি কী আমাদের সম্মান রাখবানা কাপরের ব্যাবসা করবা ।এটা তোমাকে মানায় না ।আমি মনে মনে ভাবি মানুষের কথায় আমার কোনো যায় আসে না।
আমি এখন নিজের সিদ্দ্বান্ত নিজে নিব।এটা আমার স্যারের শিক্ষা।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।সততার সাথে যেন কাজ করতে পারি।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৭৯
Date:- ২২/১১/২০২১ ইং
ফেরদৌসী হক
১৫তম
রেজি-73551.
রুপগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ।
পূণ্য হোমিও হল
সাথে স্যারের অনুপ্রেরনায় ব্লক ও জামদানী নিয়ে কাজ করছি।
আমার পেইজ
Haque boutics
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে এতক্ষন আমার গল্পটা পড়ার জন্য।