নারী!! আমি একজন নারী! আমি গর্বিত।
আজকে "নারী উদ্যোক্তা দিবস"। সকল নারী উদ্যোক্তা আপুদের জানাই শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। এগিয়ে যাক সকলেই।
নারী মানেই ধৈর্য্যশীল,নারী মানেই সহনশীল।নারী এমন এক চরিত্র যাকে সব জায়গায় মানিয়ে নিতে শিখতে হয়।তার নিজের বলতে কিছু নেই। তবুও তারা চায় নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে।কেননা নিজের পরিচয় বড় পরিচয়।নারী থাকতে চায় না কারও অধীনে।নিজেই স্বাবলম্বী হতে চায়।ঘর সংসার সামলিয়ে নারী এখন নিজের কাজ দিয়ে নিজের পরিচয় তৈরি করতে ব্যস্ত। নারীদের এই প্রতিভা আমাদের বিমোহিত করে।
🌿🌿আজকের নারী উদ্যােক্তা দিবস উপলক্ষে আমি আমার জীবনের কিছু গল্প শেয়ার করতে চাই।
জীবনে প্রতিটি মানুষের কিছু না কিছু গল্প থাকে যা সবার জানা থাকে না। কিন্তু আমরা এমন এক প্লাটফর্ম পেয়েছি যেখানে নিজেদের জীবনের সুখ দুঃখের সব গল্প শেয়ার করতে পারি। এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় মেন্টর জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারকে। আজকের এত সুন্দর একটি দিনে আমিও চাই কিছু গল্প, কিছু ইচ্ছে শেয়ার করতে। ভাগাভাগি করে নিতে চাই নিজের জীবনের গল্প।
আমি মা-বাবার একমাত্র মেয়ে। তবে আমার মা-বাবার আরও সন্তান আছে। তারা হলেন আমার ৫ ভাই। আমি ৫ ভাইয়ের আদরের ছোট বোন। মা-বাবার আদরের একটি মাত্র মেয়ে আমি। আমার বাসা রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলায়। আমার বাবা একজন খেটে খাওয়া মানুষ।দিন আনে দিন খায়।গরীব ঘরে জন্ম নেয়া আমি।গ্রামে আমার বেড়ে ওঠা।বাবা-মায়ের উপরে কখনও কোনো অভিযোগ ছিল না, ছিল না কোনো বাড়তি চাওয়া।সংসারে আমাদের অর্থের অভাব হলেও সুখের কোনো অভাব ছিল না। ভালোই কাটছিল দিন। আমাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন।আমি পড়ালেখা করতে শুরু করি। কিন্তু আমার পড়ালেখা চালিয়ে নেয়ার তেমন সামর্থ্য হয় না আমার বাবার।আমি খুব বেশি পড়ালেখা করতে পারিনি।
পড়ালেখা আর করা হলো না। কিন্তু বড় হয়ে গেছি।যেহেতু আমি গ্রামের মেয়ে তাই সকলেই উঠে পড়ে লেগেছে বিয়ে নিয়ে। আমার বিয়ে হয়ে যায় দিনাজপুর জেলায়। আমার শ্বশুড় বাড়ি চলে যাই। আমার স্বামী ঢাকায় চাকরি করতেন সেই সুবাদে আমি ঢাকায় চলে যাই। সংসার জীবন শুরু করি।২০০৯ সালে আমার বিয়ে হয়।তখন থেকেই ঢাকায় অবস্থান করছি।
সংসার জীবনে আসার পর আমার প্রথম বাচ্চা জন্মের পর আমি অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি।আমি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়ি যে আমার বাঁচার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছিল তাই মরার মতো বেঁচে থাকা আর কি।২০১০-২০১২ সাল পর্যন্ত আমি অসুস্থ জীবন-যাপন করি। তারপর থেকে অনেক বেশি ডিপ্রশনে চলে যাই। আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আমার স্বামী সব সময় আমাকে সাপোর্ট করেছেন তাই ধীরে ধীরে সেই খারাপ অবস্থা থেকে সুস্থ হয়ে উঠি। তারপর থেকে খুব বেশি খারাপ অবস্থায় থাকি তা না। তবে এখনও মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে যাই।
আমি টুকটাক সেলাই কাজ পারতাম।তাই ঘরে বসে টুকটাক সেলাই করতাম। আমার স্বামীর আয়ে তো আর সংসারটা পুরোপুরি মেইনটেইন করা সম্ভব নয়। দুই সন্তান আছে আমার।তাই আমি ঘরে বসে সেলাই কাজ করি। আমার এই সেলাই কাজের অভিজ্ঞতা থেকে সামনে আরও ভালো কিছু করতে চাই।আমি সব ধরনের সেলাই করতে পারি । আমিও চাই নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে।তাই তো আমার ইচ্ছে গুলো নিয়ে স্বপ্ন দেখি।বাস্তব করতে চাই আমার স্বপ্নকে।সকলেই আমার পাশে থেকে আমাকে সহযোগিতা করবেন।
সব শেষে বলতে চাই,প্রিয় মেন্টরের থেকে পাওয়া শিক্ষা আমার জীবনে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে।আমিও এখন স্বপ্ন দেখার সাহস পাই। আমিও চাই একটা রঙিন জীবন।একটা সুস্থ জীবন। সকলেই আমার জন্য দোয়া করবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৭৮
Date:- ১৯/১১/২০২১ ইং
মোছাঃ শাপলা আক্তার
দিনাজপুর
৮ব্যাচ
রেজিষ্ট্রেশন ৫০১৪
পেজঃhttps://www.facebook.com/msshifatshilpi/