বাবা তোমার সেই আদরের ছোট্ট মেয়েটা আজ একা চলতে শিখে গিছে।
আসসালামু আলাইকুম
❤️❤️ বাবার সেই ছোট্ট রাজকন্যা একা চলতে শিখে গিছে ❤️❤️
🌿মায়ের হাত ধরে, বোনেদের সঙ্গ ছিল তার একমাত্র ভরষা। সেই ছোট্ট রাজকন্যা মায়ের কোলে করে এসেছিল ঢাকা শহরে। রাজকন্যার বাবাকে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করে নিবে বলে।
🌿রাজকন্যার মনে অনেক আনন্দ তার বাবা আসছে। বাবা তার চাওয়া জিনিস আনবে বলে। তার মা যখন চিঠি লিখতো রাজকন্যা পাশে বসে বলে দিত কি কি লাগবে তার। বাবার কাছে তার আবদার লাল শাড়ী, লাল চুড়ী, লাল কলস, সব কিছু তার লাল লাগবে।🤗🤗🤗
🌿বাবার কোলে বসে রাজকন্যা প্রশ্ন করে যেত, বাবা এটা এনেছ ওটা এনেছ😊😊😊 রাজকন্যা জানে না এগুলি ওখান থেকে আনা যায় না। রাজকন্যার জন্য এনেছে কথা বলা পুতুল, ডল ড্রেস আরো অনেক কিছু।
🌿সেই ছোট্ট রাজকন্যা হাত ধরে চলতে চলতে বড় হয়ে গেল😊😊
🌿তার ভবনা ছিল এতো বড় শহরের অলিগলি সে কি করে চিনবে। হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে রাজকন্যা মনে মনে ভাবল- "সে কখনো একা পথ চলতে পারবে না। এটা তার জন্য প্রসিভেল নয়। যে স্কুল, কলেজে যেত বোনের হাত ধরে, বেড়াতে যেত বাবা-মার হাত ধরে সে কি করে পারবে।"
🌿বাবার আদরের রাজকন্যাটি কখনো ভাবেনি তাকে কোন একদিন একা চলতে হবে😔😔।
🌿হঠাৎ বাবা চলে গেল না ফেরার দেশে।😥😥 বোনেরা চলে গেল স্বামীর ঘরে। রাজকন্যা হয়ে গেল সম্পূর্ণ একা 😭😭😭😭। আকাশের সব কালো মেঘ যেন রাজকন্যার জীবনে এসে পরলো। কখনো যে একা চলেনি, কি করে চলবে সে একা 😥😥😥। কি করে পারি দিবে বাকীটা পথ।
🌿মা যেন রাজকন্যার জীবনের সঙ্গী হয়ে গেল। মাকে নিয়ে পথ চলা শুরু হলো তার, মা তার জীবনের সব।
🌿সুস্থ মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লো। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়নি এখনো। চলছিল রাজকন্যার জীবনটা এমন করে।
🌿এক লকডাউন তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, ঘর বন্দি থেকে, পিছিয়ে পরা জীবন কত কঠিন। শত ঝরের সাথে মোকাবেলায় এগিয়ে আসা রাজকন্যা, সবে মাত্র ঘুরে দাড়িয়েছে। এমনি সময় আবার সেই লকডাউন 😭😭😭😭😭
রাজকন্যার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরলো। 😥😥😥
💦💦০৪/০৪/২০২১ হঠাৎ বৃষ্টির সেই রাত 👇
🌿৪টা অর্ডার ছিল কিন্তু ম্যাটারিয়ালস ছিলনা। এমন সময় রাজকন্যা শুনতে পায় সোমবার থেকে লকডাউন। যে করে হোক তাকে ম্যাটারিয়ালস গুলি আনতে হবে। রাজকন্যা তার বোনদের অপেক্ষায় ছিল কাউকে সাথে নিয়ে যাবে বলে। কিন্তু সবাই তাদের নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত। কেউ রাজকন্যাকে সময় দিতে পারেনি😔😔। রাজকন্যা পড়লো মহাবিপদে।
🌿তাকে স্বরণ করিয়ে দিল গতবছরের সেই লকডাউন এর কথা। এগিয়ে যাওয়া রাজকন্যা আবার যদি পিছিয়ে পরে, যদি হেড়ে যায়! রাজকন্যা আর হাড়তে চায় না।
🌿সারা রাত ভেবেছে কি করবে🤔🤔🤔 এতো দুরের পথ একা কি করে যাবে। মনের ভিতর এক ভয় কাজ করছিল। কিন্তু তাকে যেতেই হবে। নয়তো সে হেড়ে যাবে।
রাজকন্যার মনে ভাবনা 👇
"কেন আমি ভয় পাব। আমি না একজন উদ্যোক্তা। আমি পারব আমাকে পারতেই হবে"
🌿এই ভেবে সিদ্ধান্ত নিলো - "এখন আমার একা চলতে শিখতে হবে। আমার জন্য তো আর সব সময় সবার কাজ ফেলে যেতে পারবে না। আমাকে একা পথ চলতেই হবে। "
🌿সকালে ঘুম থেকে উঠে, মাকে খাইয়ে দিয়ে, রাজকন্যা চলল জীবন যু্দ্ধের পথে। যে পথটি ছিল তার জন্য অনেক কঠিন। রাস্তায় কোন গাড়ী মিললো না। হেটে চললো অনেকটা পথ। মাঝ পথে একটা লোকাল বাস পেয়ে উঠে গেল। এ কি রে ৫ টাকা করে ভাড়ার জায়গায় ১৫৳ নিয়ে নিলো 😱😱😱😱। যাই হোক গাড়ীতো পেলো☺️☺️।
🌿রাজকন্যাটি রামপুরা ব্রিজে নেমে পরবর্তী গাড়ীর অপেক্ষা রইল। কোন গাড়ী খালি পেলো না। রাস্তায় অনেক লোকের ভীর, গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছে। দুই থেকে আড়াই ঘন্টায় ও কোন গাড়ী মিললো না। তবুও রাজকন্যা হাল ছাড়েনি যেতে তাকে হবেই 😀😀😀😀।
🌿হুট করে মাথায় বুদ্ধি এলো 🙉🙉🙉। এ সময় তো মেজদু ঐ পথে অফিসে যাবে 🤓🤓🤓। মাথায় এলো কি, সাথে সাথে কল চলে গেল আপুর কাছে। আপু বলে মেজদুকে পাঠিয়ে দিল। আহ! রাজকন্যা তো অনেক খুশি। তাকে আর গাড়ীর জন্য অপেক্ষায় থাকতে হলো না। ৩/৪ ঘন্টা জ্যামে থাকতে হলো না 🤗🤗🤗 আরামছে বাইকে করে চলে গেল। পৌছে গেল রাজকন্যার গন্তব্যে।
🌿বেচারা মেজদু শালিকাকে পৌছে দিতে গিয়ে দেড় ঘন্টা লেট করে অফিসে পৌছালো 😔😔😔।
🌿রাজকন্যা চারদিকে চেয়ে দেখে শুধু যানজট ও মানুষের ভীর। অচেনা এক জায়গায় রাজকন্যা যেন কোন পথ খুজে পাচ্ছে না। 😭😭😭😭 এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছুটে বেড়াচ্ছে তবুও তার কাঙ্খিত দোকানগুলি খুজে পাচ্ছে না। ওদিকে পেটে খুদা কিন্তু খাওয়ার সময় যে তার নেই।
🌿দোকানের কার্ডটাও হারিয়ে গিয়েছিলো 😥😥😥😥। রাজকন্যার মনে পরলো তার সাথে তো ম্যাসেন্জারে কথা হয়েছিল। ভীরের ভিতরে ফোন বের করতেও সাহস পারছিল না। তবুও কিছু করার নেই বের তার করতেই হবে। ফোন করে দোকানের ঠিকানা চেয়ে নিল। ভীরের ভিতর দোকান খুজে পাওয়াটা খুবই মুশকিল ছিল। অনেক কষ্টে দোকানটা খুজে পেল।
🌿পেটে খুদা নিয়ে রাজকন্যা ছুটে চলছে দোকানের দিকে। গিয়ে দেখে যা চাচ্ছে তার ৫ ভাগের ৪ ভাগ পেলো না 😭😭😭😭। দোকানদার ভাই বললো সকাল থেকে না খেয়ে আছে কাস্টমারের ভীরে। এখন খেতে যাবে সেই মুহুর্তে রাজকন্যার আগমন 🤗🤗🤗। দোকানদার ভাইয়েরা মুড়ি বের করে দিল বলল-
" আপা খান। আমরাও সকাল থেকে না খাওয়া। মুড়ি খাচ্ছি আপনিও খান"।
🌿রাজকন্যা মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল 😊- "ধন্যবাদ, আপনারা খান। আমি বাহিরে গিয়ে খেয়ে নিব।"
🌿কি আর করা যতটুকু পেলো ততোটুকু নিয়ে রাজকন্যা বের হয়ে এলো। অনেক টেনশনে পরে গেল বাকী ৪ ভাগ জিনিস সে কোথায় খুজবে 😔😔😔😔। ওদিকে সন্ধা হয়ে গেল। তাকে তো বাড়ী ফিরতে হবে। কাল থেকে আবার লকডাউন। এই ভেবে খুজে বেড়াচ্ছে, অচেনা জায়গায়। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটা ছুটি করছিল। কোন কিছুই মিলছিল না।
🌿এক দোকানদার ভাইকে বলল -" এখানে কাছা-কাছি কোন খাবারের দোকান আছে? "
🌿দোকানদার ভাই একটা দোকান দেখিয়ে বলল- " আপা একটু সামনে গিয়ে ঐ দোকানে পাবেন। আপনি গিয়ে খেয়ে আসেন, তারপর দেখেন। আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে।"
🌿রাজকন্যা চলে গেল খাবার দোকানে তখন বিকাল ৫:৪৫ বাজে। দোকানের সামনে গিয়ে দেখে বিশাল দোকানে শুধু পুরুষ একটাও মেয়ে নেই 😱😱😱😱। কি করবে এখন 🤔🤔🤔 এক মিনিট ভেবে দোকানের ভিতর ঢুকছে আর ভাবছে -" এখন লজ্জা করে লাভ নেই পেটে খুদা 🤗🤗🤗। সোজা দোকানে গিয়ে হাত ধুয়ে টেবিলে বসল। আরে বাবা সবাই ভ্যা করে তাকিয়ে আছে রাজকন্যার দিকে 😲😲😲😲। বার বার ডাকছে রাজকন্যা আর ওদিকে এক জন আরেক জনকে বলছে তুই দেখ কি খাবে।
🌿দোকানে খাবার ছিল ভাত আর বোয়াল মাছ 😭😭😭😭 মাংস, বর্তা কিছুই ছিল না। অবশেষে বের হয়ে আসতে হলো খাওয়া আর হলো না।
🌿একটু সামনে এক চায়ের দোকানে মিললো বনরুটি আর রং চা। কিছুটা খেয়ে আবার ম্যাটারিয়ালসের দোকান খুজতে লাগল। অনেক খোজা খুজির পর কয়েকটা দোকানে ২ভাগ মিললো। এতোক্ষুনে সাড়ে ৭টা বেজে গেল।
💦💦 হঠাৎ নামলো বিশাল ঝড় দোকানগুলো বন্ধ করতে লাগল। রাজকন্যা খুজতে লাগল বাকী ২ ভাগ ম্যাটারিয়ালস। কোথাও মিললো না সবাই বলল - " আপা লগডাউনের পর আসুন।"
🌿রাজকন্যা ভাবল- "এই লগডাউন কি আর শেষ হবে? আবার যদি গত বছরের মত হয়"। এই ভেবে বাড়ীর পথে রওয়ানা হলো।
🌿প্রচুর ঝড় হচ্ছিলো। হালকা হালকা বৃষ্টির আগমন। ছাতাটা যেন মাথার উপর আর থাকছেনা। বার বার ছাতাটা উল্টে যাচ্ছিল। অনেক ভীরের মাঝেও ছাতাটা ব্যবহার করা যাচ্ছিল না যেন। বাড়ীর পথটাও খুজে পাচ্ছেনা। কেউ বলছে এই ঝড়ের জন্য লোকাল গাড়ীগুলো অফ করে দিয়েছে। রাজকন্যা পরলো অনেক টেনশনে। কি করে যাবে সে বাড়ী। আক্স করতে করতে একটা পথ খুজে পেলো। সে পথে গিয়ে দেখে, সেখানে কোন গাড়ী নেই। ৩ ধাপে গাড়ীতে করে রাজকন্যাকে বাড়ী ফিরতে হবে।
🌿প্রথম ধাপের গাড়ীটা পেলো না। সেই ৩০ মিনিট পথ ঝড় বৃষ্টির রাতে, অচেনা জায়গায়, অচেনা শহরে তাকে একা হেটে চলতে হচ্ছে। কোথায়, কোন পথে যাচ্ছে সে নিজেও জানে না। তবু আক্স করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছিল। ভয় কে দূরে সরিয়ে একবুক সাহস নিয়ে রাজকন্যা হেটে চলছে। হাতে তার বিশাল একটা সপিং ব্যাগ। কাঁধেচাপা ছিল আরো একটি বড় ব্যাগ।
🌿রাজকন্যার পা যেন চলছিল না। পেটে খুদা, পায়ে, হাতে ও পিঠে ব্যাথা নিয়ে ঝড় বৃষ্টির ভিতর হেটে চলছে। অনেক ক্লান্তি ভরা মাথাটা কারো কাঁধে রাখার মত কোন প্রিয় জনের কাঁধ ছিলনা। ছিল না কোন আপন জন তার পাশে। বলতে পারছিল না - "আমি আর পারছি না "😥😥😥।
🌿বৃষ্টিতে ভেজা কাপড় গায়ে, হাটতে হাটতে এক জায়গাতে এসে দেখল জ্যামের মাঝ খানে একটা মেক্সি। কয়েক জন লোক নিয়ে থেমে আছে। রাজকন্যা মেক্সিতে উঠল। তাও জ্যামে আটকা পরা, 😔😔 বাসস্থান এর খুব কাছে।
🌿৫ মিনিটের জায়গায় এক ষন্টার মত জ্যামে আটকা পরে ছিল। ড্রাইভার কিছুদূর গিয়ে সব যাত্রীদের নামিয়ে দিলো আবার হাটা শুরু হলো। বাসস্থানে গিয়ে কিছুটা নিশ্বাস ফেললো, এই বুঝি চলে এলো একটু বিশ্রাম নিতে পারবে গাড়ীতে উঠে।
🌿রাজকন্যার মনের ইচ্ছেটা আর পুরুণ হলো না 😭😭😭😭। শত শত গাড়ী ছিল শুধু রামপুরা যাওয়ার গাড়ী পেল না। রাস্তায় পানিতে ভরে গেল। কাঁদা পানিতে হাটা মুশকিল। রাজকন্যা যাকে আক্স করে রামপুরার গাড়ী কোন দিকে গেলে পাবে। কেউ বলছে ঐ দিকে। আবার কেউ বলছে এই দিকে। এমন করে পানি, বৃষ্টি, ঝড়ের মধ্যে একবার এদিক যাচ্ছে আরেকবার ওদিক যাচ্ছে। ছাতাটা যেন মানছেনা। উড়ে যেতে চাচ্ছে। ঐ ঝড়ের রাতে রাস্তায় অনেক মানুষের ভীর ছিল। সবাই গাড়ীর জন্য ভিজে দাঁড়িয়ে আছে।
🌿এক এক করে সব লোকগুলো পাশে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছিল বাট রাজকন্যা সেই রাস্তার মাঝে দাড়িয়ে ছিল। তাকে যে বাড়ী ফিরতে হবে। কয়েকটা গাড়ী পাওয়া গেলেও সেগুলোতে আর যাত্রী নিচ্ছিল না। দরজা বন্ধ ছিল। বার বার রাস্তার মাঝে গিয়ে গাড়ী থামানোর ট্রাই করছিল। তার মাঝে ২ বার গাড়ীতে চাপা পরা থেকে বেচেঁ গেল। এক ভাই চিৎকার করে বলে উঠলো - "এই আপু সরে যান। আপু আপনি শুনতে পাচ্ছেন।"
🌿কথাগুলো রাজকন্যার কানে গেল বাট তার একটাই টেনশন কি করে বাড়ী ফিরবে।😥😥😥😥 হঠাৎ দেখল বাসের সাথে তার ঢাক্কা লেগে যায়। সে চিৎকার করে পিছনে চলে এলো।
🌿কিছুক্ষণ ভাবল সে কি করবে, কি করে বাড়ীর পথে যাবে। অনেকে রিক্সা, সি এন জি ভাড়া করছিল কেউ কিছুই যেতে চাচ্ছিল না। রাজকন্যা রাস্তার মাঝে বৃষ্টিতে ভিজে দাড়িয়ে আছে। কোন পথ খুজে পাচ্ছে না। তবুও একবারও সে ভেঙ্গে পরেনি, ভয় পায়নি। সাহস করে একটা রিক্সাকে বলল - "মামা যাবে রামপুরা"। মামা রাজি হয়ে গেল। রাজকন্যা মাথায় হুট করে ভাবনা এলো বলার সাথে সাথে রাজি কেন হলো। কেউতো পায়নি। তাহলে সে কেন যেতে চাচ্ছে। রাজকন্যা চুপটি করে দাড়িয়ে রইল ব্যপারটা আসলে কি দেখার জন্য। ঠিক কিছুক্ষণ পর কয়েকটা ছেলে এসে ঐ রিক্সা ওয়ালাকে বলল সে রামপুরা যাবে কিনা। সে বলল যাবে না। রিক্সাওয়ালা বার বার রাজকন্যার দিকে তাকাচ্ছিল।
🌿রাজকন্যা বুঝে গেল এটা একটা ফাদ। রাজকন্যা ঐ জায়গাটা দুরুতো চেইন্জ করে ভীরের ভিতর দাঁড়ালো। একটু দুরে গিয়ে ভাবতে লাগল এভাবে দাড়িয়ে থাকলে হবে না। যেভাবে হোক গাড়ীতে তাকে উঠতে হবে। সব মানুষ ঝড় বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য একটা দোকানে গিয়ে দাঁড়ালো। রাজকন্যার দাঁড়ানোর সময়তো নেই। তাকে ফিরতে হবে।
🌿আবারও সে বিশাল বিশাল গাড়ীর মাঝ রাস্তায় এসে রামপুরার গাড়ী খুজছে। রামপুরার গাড়ী আসলেও গেট বন্ধ ছিল। রাজকন্যা দৌড়ে গিয়ে গেটে আঘাত করছিল গেট খুলছিল না। কোন গাড়ী নিয়ে গেল না রাজকন্যা কে 😭😭😭😭।
🌿পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলো- "আপু ওরা নিবে না আপনি এ দিকে এসে দাড়াঁন।" ভাইটা দেখছিল রাজকন্যা পাগলের মত গাড়ী থামাতে ব্যস্ত অন্য দিকে তার খেয়াল নেই।
🌿এভাবে কয়েকবার ব্যর্থ হয়ে পাশে গিয়ে দাড়াঁলো। হঠাৎ দেখল দুর থেকে আবার একটা বাস এসছে। তাও গেট বন্ধ। রাজকন্যা এবার মনে মনে ভাবল যেভাবে হোক এই গাড়ীতে তাকে উঠতে হবে।
🌿সে রাস্তার মাঝে গিয়ে হাতে যতটুকু শক্তি আছে গেটে আঘাত করতে লাগল। বলল - " আমাকে নিয়ে যান প্লিজ"। আশে পাশে গাড়ী আসছিল তবুও সে হাল ছাড়েনি 🤗🤗🤗🤗।
বাস থেকে একজন ইশারা করে বলল -"আপনি ঐ দিকে আসুন।"
🌿রাজকন্যা দৌড়াতে লাগল গেট খোলার সাথে সাথে বাসে উঠতে গেল। হঠাৎ এক ঢাক্কায় রাজকন্যা গাড়ীর ভিতর পরে গেল। রাজকন্যা বুঝতেই পারেনি তার পিছনে আসলে কি হচ্ছিল। পিছনে তাকিয়ে দেখল এক মহিলা সহ এক দল লোক তার গায়ের উপর পরলো।
🌿ভাগ্গিস মহিলাটা গায়ের উপর পরছিল 🤔🤔🤔🤔। মহিলা উঠেই চিৎকার করল আমার বাচ্চা আমার বাচ্চা। ড্রাইভার বকা দিচ্ছিল গেট কেন খুললো। গাড়ী চালাতে যাবে তখন মহিলা আবার চিৎকার তার বাচ্চা নিচে, চালাতে বারণ করল। সবাই দেখল মহিলা বাসে উঠল বাচ্চারা নিচে। বাচ্চাদের টেনে তুলল। গাড়ীতে প্রচুর ভীর। রাজকন্যা যেন পড়েই যাচ্ছিল। পিছন থেকে এক ভাই বলে উঠল --" আপু আপনি এই দড়িটার উপর বসুন। আপনার তো ড্রেস এমনিতেই নোংরা হয়ে গিছে আর কাদা লাগলে সমস্যা নেই। "
🌿তখন রাজকন্যার খেয়াল হলো তার সাদা ড্রেস আর সাদা নেই। কাঁদা বৃষ্টি তাকে নতুন রুপে সাজিয়েছে। এই ভেবে ঠোঁটের কানায় একটুকরো হাসি দিল।☺️
এক দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে মনে মনে বলছে---👇
"বাবা তোমার সেই আদরের ছোট্ট মেয়েটা আজ একা চলতে শিখে গিছে। আজ তুমি নেই বাবা। তোমার দোয়া আছে বলেই, তোমার রাজকন্যা জীবন যুদ্ধে জয়ী করে বাড়ী ফিরছে। "
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"-৫০৪
তারিখ :- ০৭.০৪.২০২১
ঈশিতা জাহান
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
১০ম ব্যাচ
রেজিঃ ১৪৬২৫
জেলাঃ বরিশাল
বর্তমানেঃ ঢাকা।