আমার হতভাগ্য দুঃখী বাবা
#আমার_বাবার_______জীবনের_গল্প____________নিয়ে_আজকে_
আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম ভুলভ্রান্তি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে পুরো গল্পটা পড়ার অনুরোধ রইল।
#একজন_দায়িত্বশীল_রেমিটেন্স_যুদ্ধার____জীবন_কাহিনী
👉মানুষের জন্য কাজ
👉 করলে জীবিকার জন্য
👉কাজের অভাব হয় না।
----------------------
আসসালামুআলাইকুম রাহমাতুল্লাহ
আসলে জীবনের গল্প কখনও লিখে শেষ করা যায় না অসমাপ্ত থেকে যায় তবে আজকে আমি আমার বাবার জীবন নিয়ে কিছু লিখবো।
♥️আমার হতভাগ্য দুঃখী বাবা ♥️
আমার দাদার অনেক বড় পরিবার ছিল, পাচ ছেলে ও তিন মেয়ে এবং অন্যান্য আরো আত্মীয়-স্বজন মিলে প্রায় 20, 21 জনের একটি বিশাল পরিবার ছিল।
পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত দাদা ওনার বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে অনেক আদর যত্নে বড় হয় এবং পড়াশোনা করে পড়াশোনা করার পর ভারতের দেওবন্দ গিয়ে ওখানে মাওলানা টাইটেল পাশ করে।
তারপর উনি দেশে আসে দেশে আসার পর একটি মাদ্রাসায় চাকরি নেয়। চাকরি নেওয়ার পর উনি বিনা বেতনে পড়াশোনা করাতে থাকেন।
ওনার কথা হলো উনি বিনা বেতনে গরীব ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পড়াবেন এর বিনিময় কোন পয়সা কানাকড়িও নিবেন না।
এইভাবে উনি জীবনের 24 টি বছর মাদ্রাসায় বিনা পয়সায় পড়াশোনা করান গরিব ছাত্র-ছাত্রীদেরকে।
বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে বিশাল সহায়-সম্পত্তি ওনার পারিবারিকভাবে উনি পেয়েছেন।
এই সহায়-সম্পত্তি কিছু কিছু করে বিক্রি করে উনি নিজের সংসার চালাতেন নিজের সন্তানদের কে পড়াশোনা করাতেন।
আসলে এভাবে তো সবসময় চলতে পারেনা, এরকম করে তো একসময় রাজার গোলাও ফাঁকা হয়ে যায়।
বিষয়টা তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যখন দেখেন আস্তে আস্তে ওনার সহায় সম্পত্তি একদম অল্প অল্প করে কমে আসছে।
হঠাৎ করে পরিবারে অভাব-অনটন আসতে শুরু হল।
আমার বাবা ছিলেন পরিবারের মেজ সন্তান।
পরিবারের বড় ছেলে আমার জ্যাঠা উনি কোনো কাজকর্ম করত না এবং পড়াশোনা করতেন না শুধু এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতেন।
🍀আমার বাবার উপর পরিবারের দাইয়ীত্ব এসে পড়লো। 🍀
আমার বাবা ছিলেন পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং সুঠাম দেহের অধিকারী সুদর্শন ছেলে।
আস্তে আস্তে দেখতেছে বোন গুলা বড় হচ্ছে ওদের বিয়ের ব্যাপারে বাহিরে থেকে কথা আসছে, তখন আমার দাদার কাছে এত টাকা পয়সা ছিল না যে ভালো কোন ঘরে তার মেয়েদেরকে বিয়ে দিবে।
পরিবারের অন্যান্য ছোট ভাই গুলো পড়াশোনা করতেছে টাকার অভাবের কারণে তাদের পড়াশোনার প্রায় বন্ধের ধারপ্রান্তে।
এমতাবস্থায় আমার বাবা গ্রাম ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
নিজের আপন খালার বাসায় উঠে এবং কলেজে ভর্তি হয় ও সারাদিন নিজে পড়াশোনা করে এবং তাদের খালাতো ভাই বোনদের কে পড়াশোনা করায় এর বিনিময়ে কিছু খাবার জোটে এবং তাদের বাসায় থাকার একটা ব্যবস্থা হয়।
এভাবেই দিনগুলো পার হচ্ছিল কিন্তু আমার বাবার মনের মধ্যে ছিল দাদাকেবযেভাবেই হোক সহযোগিতা করতে হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ উনি ষাট টাকা বেতনের একটা চাকরি জোগাড় করে নিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় ওই চাকরি করলে পড়াশোনা চালানো যাবে না।
তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন পড়াশোনা ছেড়ে দিবেন চাকরী করে ওনার বাবাকে অনেক সহযোগিতা করবেন।
কিন্তু অত্যন্ত মেধাবী হওয়ার সত্তেও এভাবে পরিবারের প্রয়োজনের কারণে চাকরিতে জয়েন্ট করার জন্য পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হবে এটা ভেবে উনি অনেকটা ভেঙে পড়েন।
কিন্তু তিনি পড়াশোনার হাল ছেড়ে দেননি এক বছর মিস দিয়ে উনি আবার একটি নাইট কলেজে ভর্তি হন দিনে চাকরি করেন এবং রাতে ক্লাস করেন এভাবেই চলছিল ওনার জীবন।
এভাবেই উনি অনার উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন।
🌼শুরু হল আরেক জীবন যুদ্🌼
কিছু দিন না যেতেই আমার সেজো চাচা উনি ঢাকায় চলে আসলেন কারণ আমার দাদা ওনাকে পড়াশোনা করবেন না।
কারন দাদা চাইতেন মাদরাসায় পড়ুক কিন্তু চাচা কুরআন হাফেজি পড়ার পর স্কুলে পড়তে চাইলেন।
আর পরিবারে তখন প্রচণ্ড অভাব চলছিল তাই আমার বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন যেহেতু আমার চাচার পড়াশোনার মেধা ছিল ভাল তাই উনি যত কষ্টই হোক উনি চেয়েছেন ওনার কাছে রেখে ভাইকে পড়াশোনা করানোর জন্য।
তখন উনি নিজের কাছে এনে দুইটি জামাকাপড় রেখে বাকি জামা কাপড় গুলা উনার ভাইকে দিয়ে উনি উনাকে ইস্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন এবং পড়াশুনার যাবতীয় খরচ বহন করতে লাগলেন।
নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাইট ব্যাচে ভর্তি হয়ে গেলেন এবং দিনের বেলায় চাকরি করতেন।
নিজে কোনরকমে থেকে ভাইকে পড়াশোনা করাতে লাগলেন নিজেও পড়াশোনা করতেন আবার পরিবারকে সহযোগিতা করতেন।
✈️✈️বাবার প্রথম বিদেশ যাত্রা ✈️✈️
পরিবারের অভাব অনটন দিনদিন এতই বাড়তে লাগলো যে আর বেশি দিন তিনি স্বল্প বেতনের চাকরি দিয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করে তাদের পাশে তাদের মনমতো থাকতে পারলেন না।
পরিবারের চাপে ওনাকে বিদেশ পাড়ি জমাতে হল।
চলে গেলেন কুয়েত এবং ওখানে ভালো একটি চাকরিতে যোগদান করেন পড়াশোনা থাকার কারণে এবং ইংরেজী জানা থাকার কারণে কুয়েত রয়াল ফোর্সের ক্যাটারিং সার্ভিসের যোগদান করেন।
আব্বুর বিদেশে টাকা দিয়ে আমার দাদার পরিবার তখন খুব ভালো এবং স্বাচ্ছন্দে চলতেছিল।
🎄বিয়ের বয়স হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে করছেন না 🎄
নিজের বয়স বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে করছেন না পরিবার থেকেও চাপ দিচ্ছে না।
আবার ওনার বড় ভাই আমার জ্যাঠা ও বিয়ে করছেন না কারণ উনি কোন কাজকর্ম কিছু করেন না এইজন্য ওনাকেও পরিবার থেকে বিয়ের ব্যাপারে কোন কিছু বলে না।
দেখলেন এভাবে তো বড় ভাইয়ের বয়স হয়ে যাচ্ছে তারপর সিদ্ধান্ত নিলেন নিজেই বড় ভাইকে বিয়ে করাবেন নিজে পুরো খরচ দিয়ে বড় ভাইকে বিয়ে করালেন।
বড় ভাইয়ের যমজ সন্তান হলো তাদের ভরণপোষণ করতে পারতেছে না আমার জ্যাঠা তাই নিজে আমার বাবা সব খরচ বহন করা শুরু করল তার
সন্তানদের যেন দুধের ঘাটতি না হয় সে জন্য একটি গাভী কিনে দিল।
🎉 এবার আসলো নিজের বিয়ের পালা 🎉
এবার আসলো নিজের বিয়ের পালা,
বিয়ের পর কিছুদিন ছুটি কাটিয়ে আবার চলে গেল কুয়েত।
যাওয়ার পর হঠাৎ শুরু হলো ভয়াবহ যুদ্ধ সাদ্দাম হোসেনের ইরাক-কুয়েত আক্রমণ করেছে।
প্রবাসী সবাই তখন কুয়েতে আটকা পড়ে যায়।
এমতাবস্থায় কুয়েত রয়াল ফোর্সে চাকরি করার সুবাদে চালিয়ে যেতে হয়।
যুদ্ধের ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করল তখন নিরাপত্তার স্বার্থে তাদেরকে বাংকারে নিয়ে পাহাড়ে মাটির নিচে রাখা হলো।
একদিকে নতুন বিয়ে করা বউ দেশে রেখে এসেছে তারপর আবার পরিবারের চিন্তায় আমার বাবা অনেকটা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। কারণ কোন যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিলনা পরিবারের সবাই খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে হয়তো ভেবেছে এ যাত্রায় শেষ যাত্রা আর হয়তো কখনো আমার বাবার দেখা পাবে না।
আমার আম্মু সবেমাত্র নতুন বিবাহিত এবং মাত্র এসএসসি পাস করেছে এমত অবস্থায় শুনে স্বামী বিদেশে যুদ্ধের কারণে আটকা পড়েছে আমার আম্মু শেষ পর্যন্ত দেশে অনেকটা পাগলপ্রায় হয়ে যায় এবং আমার নানার বাড়িতে আমার নানা আমার আম্মুকে নিয়ে যায়।
এভাবে সবাই কান্নাকাটি করতে করতে সবার কান্নাকাটি এবং আশা-ভরসা সব একদিন শেষ হয়ে যায় হয়তো আর যোগাযোগ হবে না আর হয়তো ছেলে দেখা পাবে না পরিবারে আমার দাদার পরিবারে নেমে আসে এক নীরবতা।
দাদার পরিবার সুন্দরভাবে উঠে দাঁড়িয়েছিল ফুফুদেরদেরকে বিয়ে দেওয়ার পর পরিবারটা একটু ভালো কিছু স্বপ্ন দেখেছিল এমন সময়ই এই বিপর্যয় নেমে আসে।
তারপর একদিন বাড়িতে খবর আসলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমান ফ্লাইট এ কুয়েত থেকে যুদ্ধাহত লোক দেশে ফিরে নিয়ে আসতেছে।
এবং যারা সুস্থ ছিল তাদেরকেও নিয়ে আসতেছে এরকম একটি ফ্লাইটে আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার বাবা সুস্থ ভাবে দেশে ফিরে আসে।
দেশে আসার পর দেখল বড় ভাইয়ের ফ্যামিলিতে সদস্যসংখ্যা তিনজন হলো এখন থাকার জায়গা থাকার জায়গার সমস্যা তাই চিন্তা করলো নিজের ঘর করার আগে বড় ভাইকে একটি ঘর করে দেওয়া উচিত।
যেই ভাবা সেই কাজ তারপর বড় ভাইকে ঘর করে দেওয়া হল কিন্তু নিজের থাকার জায়গা হল না অন্য সব টাকা পয়সা শেষ হয়ে গেল।
✈️✈️আবার নতুন করে বিদেশ যাত্রা। ✈️✈️
উপায়ান্তর না দেখে আবার বিদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা দিল এইবার ঠিকানা সৌদি আরব। 🇸🇦
এর ভিতর আমি দুনিয়াতে আসলাম কিন্তু আমার আম্মুর আর আমার জন্য আলাদা কোন রুমের ব্যাবস্থা ছিল না।
আমার আম্মু অনেক অসুস্থ হয়ে যায় তারপর আমার নানাভাই আমার আম্মুকে নানুর বাড়িতে নিয়ে যায় ওখানে নিয়ে আম্মুর চিকিৎসা চলে আমার চিকিৎসা চলে এভাবে আস্তে আস্তে বড় হতে থাকি নানুর বাড়িতে।
আব্বু তারপরে কিছু টাকা জমিয়ে বাড়িতে একটি ঘর করার ব্যবস্থা করে কিন্তু আব্বুকে ঘর করার জন্য ছোট্ট একটি জায়গা দেওয়া হল।
যাক তারপরে আব্বু ওখানে ঘর করার ব্যবস্থা করল তখনকার সময়ে আমাদের বাড়িতে ওইটা দ্বিতীয় দালান ঘর।
ফ্যামিলির অন্যান্য সবার চোখ পড়ে গেল সবাই ভাবতেছে এইবার মনে হয় আব্বুর অনেক টাকা, এটাই আব্বুর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।
ছুটিতে দেশে আসলো আমি তখন নাকি মাত্র দুই বছরের কিছুই বুঝতাম না বাবা কি জিনিস, চাচা জেঠাদের বাবা ডাকতাম কিন্তু উনারা অনেক বিরক্ত হতো কারণ আমার বাবা তো দেশে ছিল না আমি বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতে লাগলাম আবার ছুটি শেষ করে আবার সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে চলে গেল।
☹️আব্বুকে কাছে না পাওয়ার কস্ট☹️
এভাবেই চলছিল জীবন আব্বু দুই বছর পর পর ছুটিতে আসত কিন্তু আমি আব্বুকে ভালোমতো বুঝে চিনে ওঠার আগেই আবার ছুটি শেষ করে আমি আব্বু চলে যেত। 😢
আমি আব্বুর কথা ভুলেই যেতাম আবার চাচা জেঠাদের বাবা বলে ডাকা শুরু করতাম।
আম্মু বলতো আকাশ দিয়ে কোন বিমান গেলে আমি নাকি সবসময় তাকিয়ে থাকতাম আর বলতাম ওই যে আমার আব্বু আসতেছে যতক্ষণ পর্যন্ত বিমানটা দেখা যাইতো ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম যতক্ষণ পর্যন্ত না বিমানটা মেঘেতে হারিয়ে যেত।
আমার এই অবুজ চাওয়া পাওয়াগুলো আম্মু দেখে অনেক কান্নাকাটি করতো একা একা আমিতো কিছুই বুঝতামনা, আম্মুর কাছে বলে শুনেছি।
আমি আম্মুর সাথে নামাজের কাতারে বসে মোনাজাতে সবসময় চাইতাম আমার কাছে আব্বু জেন খুব তাড়াতাড়ি চলে আসে কারন আমি নাকি একটা সময়ে খুব কান্নাকাটি করতাম বাবার জন্য। আমার আব্বুকে দেখতে চাই কারণ আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার আব্বু আবার বিদেশ চলে যেত আব্বুকে ঠিকমতো চিনতে পারি নাই আমার বয়স যখন দশ বছর আমার তখন আব্বু চেহারা ভালো করে মনে থাকত না আমার আম্মু ছবি দেখে দেখে বলতো এটা তোমার আব্বু তোমার আম্মু।
ঠিক এর পর থেকেই আস্তে আস্তে যখন বড় হতে শুরু হলাম আব্বুর প্রতি ও আস্তে আস্তে অভিমান বাড়তে শুরু হলো সবার আব্বু সবাইকে মসজিদে নিয়ে যায় আমার আব্বু কেন আমাকে মসজিদে নিয়ে যায় না সবাইকেই স্কুলে নিয়ে যায় আমার আব্বু কেন আমাকে স্কুলে নিয়ে যায় না?
এই জিনিস গুলা আমাকে সেই ছোট্ট বয়স থেকেই মানসিকভাবে অনেক আঘাত করা শুরু করল মনের ভিতর।
এবং আব্বুর প্রতি আস্তে আস্তে কস্ট খোভ রাগ জমা শুরু হলো আমার।
কারণ আমি মানতেই পারতাম না যে আমার জেঠাতো ভাইয়েরা আমার জেঠুর সাথে চাচাতো ভায়েরা চাচার সাথে বাজারে যায় স্কুলে যায় মাদ্রাসায় যায় মসজিদে যায় তাদেরকে আইস্ক্রিম কিনে দেয় সম্পাপরি কিনে দেয় মোজা কিনে দেয় আমি কেন আমার আব্বুর সাথে যাইতে পারি না এই প্রশ্নের উত্তর আমি মনের ভিতরে সারাদিন ঘুরপাক খেত।
আমার অনেক কষ্ট হত, আর সারাদিন এই প্রশ্ন গুলাই মনের ভিতর ঘুরপাক খেত আমি কোন উত্তর না দেখে শুধু কান্না করতাম আম্মুর সাথে রাগারাগি করতাম আম্মু যখন বুঝাইতে পারতো না।
তখন আমাকে মারতো। আবার আমাকে ধরে কান্নাকাটি করত।😔
রাতে বুকের মধ্যে জড়িয়ে রেখে অনেক কান্নাকাটি করতে আমাকে ধরে।😭
আমি আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম এবং আব্বুর সাথে আমার দূরত্ব আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলো।
এই দূরত্ব দূরত্বই রয়ে গেল আর কখনো দূরত্ব কমলো না।
আব্বু জানি কেমন ছিল আমাদেরকে রেখে তার অন্যান্য বোনের ছেলেমেয়েদেরকে তার ভাইদের ছেলেমেয়েদেরকে অনেক আদর যত্ন করতো।
পরিবারের প্রতি ভীষণ অনুগত ছিল যদি আমাদেরকে সবার সামনে আদর করলে কেউ কিছু মনে করে এজন্য কারো সামনে আমাদেরকে কখনো আদর যত্ন করতো না।
😥 আম্মুকে আলাদা করে দিল সংসার😥
আব্বু আবার বিদেশ চলে গেল, এভাবে কয়েকদিন আব্বুর জন্য কান্নাকাটি করার পর আবার আব্বুকে ভুলে গেলাম।
আব্বু যাওয়ার কিছুদিন পর হঠাৎ করে একদিন আম্মুকে সংসার থেকে আলাদা করে দিল।
আমার দাদার ফ্যামিলি অনেক বড় হওয়াতে আব্বু বেতনের কিছু টাকা নিজের খরচের জন্য রেখে দিয়ে বাকি পুরা টাকাটাই সংসারের জন্য সংসারের খরচের জন্য আমার চাচার একাউন্টে পাঠিয়ে দিত।
আম্মুর সংসার খরচের জন্য কিছু টাকা দিত চাচার কাছে বলে দিত যে এটা আমাদের খরচের জন্য কিন্তু পুরা কাছে দিত না।
কিন্তু এই খরচে আম্মুর এবং আমাদের পুরাটা চলতে অনেক কষ্ট হয়ে যেত। আব্বুকে অনেকবার বলা হতো এ ব্যাপারে কিন্তু কোন সমাধান হচ্ছিল না। আব্বু খুব একটা গুরুত্ব দিত না যেহেতু ফ্যামিলির সবাইকে অনেক ভালোবাসতো এবং বিশ্বাস করত এবং আব্বু ভাবতো ফ্যামিলি অন্যরাও হয়তো আমাদের জন্য করছে কিন্তু টাকাপয়সার ব্যাপারে কোনো হিসেব নিকেশ কোন কিছুই ছিল না।
আম্মু অনেক টাকার হিসেব পাইতো না এবং সংসারের সঠিকভাবে আম্মুকে টাকা দেওয়া হইত না যার কারণে আব্বুকে অনেকবার বলার পরেও আব্বু জিনিসটা গুরুত্ব দেয় না যেহেতু প্রবল বিশ্বাষ ছিল ফ্যামিলির সবার উপর।
চিঠির মাধ্যমে আম্মু জানানোর চেষ্টা করল কিন্তু একবার চিঠি পাঠালে এ চিঠির উত্তর আস্তে আস্তে প্রায় এক মাস লেগে যেত এজন্য দেখা যাচ্ছিল যে এটার সমাধান হচ্ছিল না সমস্যা লেগেই ছিল।
কিছুদিন পর আব্বু ছুটিতে আসলো দেশে ছুটিতে আসার পর আম্মুর এ কথাগুলো আব্বু খুভ একটা গুরুত্ব দিলো না আরো উল্টা আম্মুর উপরে রাগ দেখানো শুরু করল।
এজন্য আম্মু আর এই ব্যাপারে আব্বুকে আর কিছু বলতো না কিন্তু আম্মু কিছুটা আচ করতে পারলো যে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে কিন্তু আব্বু তেমন কিছুই বললো না কারণ না হলে ভাইয়ের সাথে মনমালিন্যে হবে সম্পর্ক খারাপ হবে এজন্য কখোনই উনি উচিত কথা বলতে পারেনি।
ওনেক ক্ষেত্রেই টাকার হিসেব আব্বু মিলাতে পারিনি ত তারপরও আব্বু তার ভাইকে কিছু বোল্লো না কারণ বললে হয়তো মন খারাপ করবে বা সম্পর্ক নষ্ট হবে আবার চিন্তা করলো মা হয়তো বলবে যে সংসারে টাকা-পয়সা দিছে এখন এটার হিসাব নিচ্ছে,
তাই মার কাছে খারাপ হবে এই ভয়ে হয়তো আর গুরুত্ব দিত না। টাকা পয়সার হিসাব অনেক কিছু ঠিকমত মিলাতে না পারলেও আব্বু আর তেমন কিছুই বলল না।
আমার দাদার একটি দোকান ছিল ওই দোকানের পুরো মাল সামানা আমার আব্বু টাকা দিয়ে ওঠানো হয়েছিল ওই দোকানের হিসাব নিকাশ সব এলোমেলো করে ফেলছিল আমার চাচা তারপরও আব্বু আর কিছু বলে নাই।
আব্বু আবার বিদেশ চলে গেলো আবার শুরু হল আম্মুর সংগ্রাম আমাদেরকে নিয়ে কারন আব্বু কোন কিছু সমাধান করে গেল না যে সমস্যাগুলো আব্বু না থাকাতে হয়েছিল এগুলা আব্বুর অবর্তমানে আবারো আগের সমস্যাগুলোই দেখা দিল।
😊আমাদের বিদেশ যাত্রা 😊
একদিন আম্মু হুট করে বলল যে তোমাদের পাসপোর্ট করতে হবে তোমার আব্বু বলেছে আমরা একদিন পাসপোর্ট অফিসে চলে গেলাম চাঁদপুর থেকে তখন পাসপোর্ট বানাতে গাজীপুরে চলে গেলাম, ওখানে জেয়ে আমরা পাসপোর্ট বানালাম আমরা দুই ভাই এবং আম্মু।
পাসপোর্ট বানানোর পর আব্বু আমাদেরকে টুরিস্ট ভিসা দিল সৌদি আরবের। ভিসা আসার পরে আমাদের টিকিট পাঠালো আব্বু আমরা
চলে আসলাম সৌদি আরব দাম্মাম।
কিন্তু আসার পর আমার কিছুতেই মন বসছিল না এখানে কারণ এখানে আমার গ্রামের মতো স্কুল নেই গ্রামের মতন মক্তব নেই গ্রামের মত বন্ধু বান্ধব নেই আমি কোন কিছুতেই মন বসাতে পারছিলাম না সারাদিন শুধু একটা বন্দি ঘরের ভিতরে আমার একদম দম আটকে আসছিল আমি সারাদিন কান্নাকাটি করতাম।
আর বলতাম আমি দেশে চলে যাব আমি এখানে থাকতে পারবো না আমি সারাদিন শুধু আম্মুর সাথে এগুলা নিয়ে কান্নাকাটি করতাম।
করে আমাকে একটি বাচ্চাদের মাদরাসায় ভর্তি করে দিল কিন্তু আমার ওখানে মন বসাতে পারছিলাম না।
এরপর আবার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি করার বিভিন্ন কাগজ সবকিছু রেডি করার পরেও আমি ওখানে মন বসাতে পারিনি তখন আমার এই অবস্থা দেখে আমার নানু তখন হজ করতে গিয়েছিল তখন নানু বলে এরকম করলে তো নাতিটা অসুস্থ হয়ে যাবে পড়াশোনা কিছু হবে না আমার সাথেদেশে পাঠিয়ে দে আমি দেখাশোনায় করব।
এই অবস্থায় আম্মু বলতে লাগল আমি ওর এ ছাড়া কিভাবে থাকব আমিও দেশে চলে যাব তখন আব্বু বলল যে এখন যদি সবাই দেশে চলে যাও তাহলে যে এত টাকা খরচ করে আনলাম তাহলে তো সব অনেকগুলো টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে।
তখন আব্বু বললো যে আমাকে স্টুডেন্ট ভিসা করে দিবে আমি এগারো মাস দেশে থাকব একমাস সৌদি আরবের ভিসা রিনিউ করে আবার চলে যাব তখন আমাদের সাথে তার এক বছর 11 মাস পরপর দেখাশোনা হবে।
তো এরকম আমার টিকিট কেটে দিলো আমাকে আমি দেশে চলে আসলাম দেশে চলে আসার পর আমি যেদিন বিমান থেকে নামি,
আমি তখন আমার কাছে মনে হল যেন আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম কিন্তু আম্মুর জন্য খুব কষ্ট লাগতেছে আম্মু তো আমাকে এয়ারপোর্টে ধরে অনেক কান্নাকাটি করল আমি আসার এক সপ্তাহ আগে থেকে আম্মু কোন ঘুম নাই খাওয়া নাই আমাকে ছেড়ে কীভাবে থাকবে কিন্তু আমার মনে কেমন যেন একটা আনন্দ লাগতেছিল আমি দেশে চলে আসবো ছোট মানুষ ছিলাম এত কিছু বুঝতে পারিনি কিন্তু আম্মুর জন্য কষ্ট হয় যখন বিমানে উঠে গেছি তখন মনে হল যে আমি এখন তো আমার আম্মুর কাছে পাবো না তখনই আম্মুর জন্য কষ্ট লাগা শুরু হলো।
দেশে আসার কিছুদিন পর বাস্তবতার সম্মুখীন হলাম প্রতিটা মুহূর্তেই যে বাবা-মা কতটা গুরুত্ব বহন করে সেটা আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করলাম কিন্তু কি করব আমি তো নিজে থেকেই দেশে চলে আসছি সেইজন্য কাউকে বুঝতে দিলাম না কিন্তু একা একা অনেক কান্নাকাটি করতাম আম্মুকে খুব মিস করতাম কারণ তখন ফোনের এরকম সহজ ব্যবহার ছিল না এক সপ্তা 15 দিন পর পর একটু ফোন আসতো তখন আমার পুরা পৃথিবীটা আমার কাছে আসছে এমন মনে হতো।
আম্মুর সাথে কথা বলার জন্য সব সময় অপেক্ষা করতাম কিন্তু আমার যেন 15 দিন এক সপ্তা শেষে হতো না।
এভাবেই চলতেছিল জীবন এক অজানা এবং কঠিন এক উদ্দেশ্যহীন জীবন।
😥আব্বু অসুস্থতা 😥
এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর আমি প্রতিবছর একবার সৌদি আরব যেতাম এক মাসের জন্য ভিসা রিনিউ করে আবার চলে আসতাম এভাবে কয়েক বছর পর একবার সুনলাম আব্বু খুব অসুস্থ।
এভাবে কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর হাসপাতাল থেকে বাসায় আসলেন
সুস্থ হয় আল্লাহর রহমতে।
সুস্থ হয়ে বাসায় আসার পর চিন্তা করল এভাবে তোর দিন চলেনা কিছু একটা তো করা উচিত ভবিষ্যতের জন্য।
একবার ছুটিতে এসে ঢাকায় একটা জমি নেওয়ার জন্য কিছু টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করবে এই শর্তে একটা জমিটা নিল জমিতে ঢাকা বাড্ডা নারিন্দা এলাকায়।
মোহাম্মদপুরে জাপান গার্ডেন এলাকায় একটা ফ্ল্যাট এর টাকা জমা দিল।
এই টাকা পুরো 10 12 বছর লাগিয়ে আস্তে আস্তে পরিসোধ করল কিন্তু
কিন্তু আজও প্রায় 10 বছর পেরিয়ে গেছে এখনো এই জমি এবং ফ্ল্যাট বুঝে পায়নি।
এর ভিতর আব্বু একদিন হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে যায় হাসপাতালে ভর্তি হয় অনেকদিন চিকিৎসা চলে এবং কোম্পানি ভালো খুবই আন্তরিক ছিল এবং চিকিৎসার পুরো খরচটাই কোম্পানি বহন করে।
তারপর কোম্পানি বললো এভাবে তো কয়েকদিন পর গো তুমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছ আমাদের মনে হয় তুমি একেবারে দেশে চলে যাও।
তারপর আব্বু-আম্মু সবাই মিলে দেশে চলে আসলো।
#শুরু হল ফেমেলিতে টানা পোড়েন#
আব্বু দেশে আসার পর ফ্যামিলির জায়গা-জমি হিসাব-নিকাশ নিয়ে সবার সাথেই একটা সমস্যা শুরু হয়ে গেল।
কেউ সঠিকভাবে হিসাব বুঝিয়ে দিচ্ছে না।
আব্বু আবার ঢাকার জমি এবং ফ্ল্যাট এর পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে সেগুলাও বুঝে পাচ্ছে না।
একটা টেনশন নেমে এলো কিভাবে কি করবে আমার এখানে পড়াশোনা শেষ হয়নি, এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি কিছুটা টানাপোড়েন কিছুটা হাসি আনন্দ নিয়ে।
# আমার বিদেশ যাত্রা #
আমি পড়াশোনা শেষ করার পরেই একটা চাকরি নিয়ে ঢাকায়, তারপর মাস চাকরি করার পর হঠাৎ করেই চলে আসি বিদেশ সৌদি আরব।
এভাবেই সৌদিতে দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল ব্যস্ততায় কাজে।
বিদেশে আসার পর বুঝতে পেরেছি আমার বাবা কি সাংঘাতিক রকমের কষ্ট করেছেন বিদেশ যারা থাকে তাদের কষ্ট দেখে নিজে কষ্ট করে।
তখন থেকেই মনে হচ্ছিল যেন এভাবে বিদেশ করা আমার জন্য ঠিক হবে না আমাকে পরিবারের কাছে থাকতে হবে এবং দেশে কিছু একটা করতে হবে।
সারাক্ষণ খালি এ চিন্তাগুলোই মাথায় ঘুরপাক খেত এবং সব সময় এগুলো নিয়ে পড়ে থাকতাম। আর ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখতাম কিভাবে কি করা যায়?
আমি সৌদিতে আসার এক বছর পর কিছুদিন আগে প্রায় তিন চার মাস আগে আব্বু হঠাৎ হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গেল স্ট্রোক করল।
কিভাবে যে আমার সময় গুলো কেটেছে আমি বুঝাতে পারব না একটু বাবার পাশে না থাকা পরিবারের পাশে না থাকতে পারা কিযে কষ্টকর একটা মুহূর্ত আমার প্রতিটা মুহূর্ত কেটেছে।
যারা প্রবাসী তারা বুঝেছে এই কষ্টটা কতটা ভয়ঙ্কর কতটা অব্যক্ত যন্ত্রণার মত প্রিয় জন অসুস্থ কিন্তু পাশে না থাকার যে কষ্ট প্রতিটা মুহূর্তে কুরে কুরে খাচ্ছিল আমাকে একমাত্র প্রবাসীরাই হয়তো এটা বুঝবে ভালো করে।
#আব্বুর চলে জাওয়া....
আমি যখন এই গ্রুপে আসি এবং নিয়মিত সেশন গুলো পড়তেছি স্যারে এর ভিডিও গুলো দেখতেছি গ্রুপে আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছি এবং স্যারের শিক্ষাগুলো বুকে ধারণ করতেছি, এবং চাঁদপুরের অনলাইন মিটাপে প্রতিদিন আমি এখানে যুক্ত হচ্ছিলাম কারণ আমাকে কিছু একটা করতে হবে কিছু একটা শিখতে হবে এ তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমি প্রতিদিন মিটাপে যুক্ত হতাম এবং কিছু শিখার চেষ্টা করতাম এবং বারবার যখন এই বিশেষ করে স্যারের সেশন গুলো পরাহত আমার এগুলা মাথায় আটকে যেত।
এভাবেই প্রতিদিন আমি মিটাপে যুক্ত হচ্ছিলাম এবং নতুন নতুন কিছু শিখছিলাম।
এই মিটআপের মাধ্যমে নতুন নতুন অনেকের সাথে সম্পর্ক হচ্ছিল এবং আস্তে আস্তে সময় বাড়াতে লাগলাম মিটাপে।
এই মিটাপ চলাকালীন অবস্থায় আমার মামা মেসেজ করল যে বলল দিয়াব তোমার আব্বু জান্নাত বাসী।
গত 18 ই মার্চ 2021 বৃহস্পতিবার রাত 10:30 এ আমার আব্বু মহান
রবের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আমি বাংলাদেশ টাইম সন্ধ্যার দিকে ফোনে কথা বলেছি আব্বুকে অনেকবার ডাকলাম কিন্তু আব্বু এত অসুস্থ ছিল যে আমার ডাকে সাড়া দিতে পারেনি শুধু আমার দিকে তাকিয়ে ছিল অসহায়ের মত 😭😭
আমার আব্বুর সাথে কথা বলা হলো না বলে ডাকা হলো না।
আব্বুকে কতবার ডাকলাম আব্বু আব্বু আব্বু কিন্তু আব্বু শুধু আমার দিকে তাকিয়ে ছিল কোন কথা বলতে পারেনি।
এর কয়েক ঘণ্টা পরেই যে আব্বু আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন আমি খুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারিনি।
আমার প্রাণপ্রিয় বাবা আমাকে ছেড়ে সত্যি চলেগেলেন।😭😭😭
আমার হতভাগা বাবা শুধু সারাজীবন কষ্টই করে গেলেন, জীবনের বাকিটা সময় একটু নিজের মতো করে থেকে যেতে পারলেন না।
আব্বুরে চলে যাওয়া, একটু কথা বলতে না পারা আব্বুর সাথে, এই যে অসুস্থ হলো আমি একটু কাছে না থাকতে পারা,
আব্বুকে একটু ছুঁয়ে দেখতে না পারা,
একটু শেষ না দেখা,
জানাযায় না থাকা,
খাটিয়া ধরতে না পারা,
কবরে একটু মাটি দিতে না পারা।
ছোট ভাই বোন গুলা চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ছিল তাদেরকে একটু বুকে টেনে ধরে ধরতে না পারা বড় ভাই হিসেবে কোনো দায়িত্বই পালন করতে পারলাম না!
কি হতভাগা জীবন আমার?
মাকে একটু জড়িয়ে ধরে সান্তনা দিতে পারলাম না,
বলতে পারলাম না মা আল্লাহ ভরসা টেনশন করো না।
আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।
আমার হাজারো কষ্টের সাথে এই কষ্টটা যেন কোনভাবেই মিলাতে পারছিলাম না।
যে কষ্টের কাছে আমার সব কষ্ট বৃথা।
বাবা হারানোর যন্ত্রণা বাবাকে একটু কাছে থেকে দেখতে না পারা,
এই কষ্ট কখনো যাবেনা।
এই কষ্টটা আমাকে আজীবন কুরে কুরে খাবে যে একটু কাছে থেকে বাবাকে দেখতে না পারা ,
বাবা তোমাকে আমি সত্যি অনেক ভালোবাসি।
আল্লাহ তোমাকে ভাল রাখুক,
তোমার ভুল ক্রুটি গুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।
তোমার কবর কে আল্লাহ জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিক।
প্রতিদিন তোমার জন্য আমি কোরআন শরীফ পড়ে দোয়া করি।
আল্লাহ তোমাকে ভাল রাখুক ।
প্রতিটা মুহূর্তে খুব মিস করি তোমাকে বাবা।
সবচেয়ে কষ্টের কথা কি জানেন,
এই লেখাটা যখন শুরু করি
তখন আমার আব্বু অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখুন লেখাটা শেষ করার আগেই আমার আব্বু আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
জীবন সত্যিই নাটকের চেয়েও নাটকীয়।
মিস ইউ আব্বু।
* বাবা মানে*
"""""""বাবা মানে হাজার বিকেল,
আমার ছেলে বেলা,
বাবা মানে রােজ সকালে,
পুতুল পুতুল খেলা,
বাবা মানে কাটছে ভালাে,
যাচ্ছে ভালাে দিন,
বাবা মানে জমিয়ে রাখা,
আমার অনেক ঋণ,
আমি যতই এলােমেলাে ভুলের অভিধান,
বাবা তুমি সময় মত সহজ সমাধান,
জীবনের টানাপােড়েন কিছুই না জানি,
আমার গানের স্বরলিপি তােমার মাঝেই খুঁজি,
বাবার কাছে হইনা কাল আমি কোনদিনই,
বাবা ডাকে আদর করে আমায় সােনামণি,
বাবা মানে অনেক চাওয়া বাবা মানে অনেক পাওয়া, বাবা মানে ছােট্ট শূন্যতা বাবা মানে অনেক পূর্ণতা,
ছেলেবেলা হাতছানি দেয় আজও সকাল সাঝে, আমি বড় হইনি আজ বাবা তােমার কাছে,
চিরদিন থাকবে বলাে তুমি আমার সাথে,
মা বলে ডাকবে বল সারা জীবন ধরে,
বেলা শেষে তুমি আজও অনেক অভিমানে,
কেউ না জানুক আমি জানি তােমার সােনামণি""""""""
##শেষ কথা
#আমি প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধা আমার মনের ভিতর লুকানো কষ্ট গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।
শ্রদ্ধেয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ
এত সুন্দর একটা প্লাটফর্ম উপহার দিয়েছেন আমাদেরকে তা না হলে আজকে আমার জীবনের মনের ভিতরে লুকানো কষ্ট গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারতাম না।
অন্তরের অন্তস্থল থেকে স্যার কে স্যালুট জানাই।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"-৫০৫
তারিখ :- ০৯.০৪.২০২১
আমার পরিচিতি
আবদুল্লাহ দিয়াব খান
আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা
জেলা চাঁদপুর
উপজেলা চাঁদপুর
ব্যাচ ১২
রেজিষ্ট্রেশন ঃ ৪৯৯৪৮
ব্লাড গ্রুপ ঃ A+
নিওমিত ডোনার আল হামদুলিল্লাহ
এখন আছি সৌদি আরব তাবুক শহরে
📬Diyab.khan1991@gmail.com