জীবন মানেই উঠা-নামা, কখনো পরিবর্তন আবার কখনো সংযোজন।
আসসালামু আলাইকুম,
আল্লাহ তাআলার নিকট লাখো কোটি শুকরিয়া তিনি আমাদেরকে এখনো সুস্থ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ। ❤️❤️
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং ফাউন্ডেশনের ভাই আপুদের প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে আমার আজকের লিখা শুরু করলাম। 💐💐
জীবন মানেই উঠা-নামা,
কখনো পরিবর্তন আবার কখনো সংযোজন।
কিছু চাওয়া কিছু পাওয়া।
আমি আপনি আমরা কেউই এর ব্যাতিক্রম নই...
জীবনের চলার পথে এ পরিবর্তন বা সংযোজন আমাদের জীবনের ঠিক কতটুকু প্রভাব ফেলে সেটাই ভাববার বিষয়। সব সময় কি আমরা তা
মানিয়ে নিতে পারি ?
হ্যা কিছু সময় হয়ত মানিয়ে নিতে পারি না আবার কিছু সময় হয়ত মানিয়ে নেই কিন্তু সেটা ঠিক কতটা গ্রহণযোগ্যতা পায়???
আমার ব্যক্তিগত জীবন অনেক পরিবর্তন ও সংযোজন এর মধ্য দিয়ে চলমান। সব সময় যে মানতে পেরেছি তা কিন্তু না অনেক সময় মানিয়ে
নিতে হয়েছে....
প্রাইমারি আর মাধ্যমিক সময় পার করেছি আমার নিজ এলাকার কুমিল্লায় ...ভুলতে পারিনা এখন ও সে প্রাইমারি আর মাধ্যমিকের বন্ধু বান্ধব
দের,
একাকীত্ব ও গভীর রাতে যখন চোখে ঘুম আসেনা একা বসে থাকি তখন স্বপ্ন হয়ে তারাই আসে। মন ছুটে যেতে চায় সেই সময় গুলো তে।
প্রাইমারি থেকেই খুব ভাল সময় কাটছিল ক্লাশের সবচেয়ে নম্র ভদ্র ছেলে, ক্লাশে প্রথম সারির স্টুডেন ফ্যামিলির ভাল সাপোর্ট সব মিলিয়ে ভালই
যাচ্ছিল।
হাইস্কুলে উঠার পর ও ক্লাশ সিক্স,সেভেন ভালই যাচ্ছিল এইট এ উঠার পর থেকেই শুরু হল আমার জীবনের এক অন্যরকম অধ্যায়...
আব্বুর শেয়ার ব্যবসায় লস, উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য জব ছেড়ে দেওয়া এই রকম আরো নানা সমস্যা তখন ই শুরু হয় আমার খারাপ সময়।😔😔
আসলে একটা মানুষ বাচ্চা থেকে কিশোর হওয়া পর্যন্ত একভাবে চলাফেরা করে আসছে কখনো কোন কিছুর কমতি ছিল না ছিল না কোন কিছু
না পাওয়ার ব্যাথা ।
হঠাত এই সময়গুলা মেনে নিতে পারছিলাম না
কিন্তু কিছুটা মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছিলাম।
তখন যদি আমার জীবনে ইকবাল বাহার স্যার এর মত কোন একটা মানুষ থাকত তাহলে হয়ত নিজে এত ভেঙ্গে পরতাম না ।
এর পর আব্বু এক এক করে অনেকগুলা উদ্যোগ নিল কিন্তু কোনটাতেই সফল হতে পারছিল না
বরং প্রত্যেকটা নতুন উদ্যোগের সাথে যুক্ত হতে থাকে নতুন ঋন এর বোঝা।।
অন্যদিকে আম্মু একটা এনজিওতে জব করতেছিল আম্মুর জব থেকে উপার্জন এর টাকা নানুর বাড়ি থেকে সাপোর্ট ছিল আমাদের পরিবারের চলার মত ব্যবস্থা কারন আব্বু যা ই ইনকাম করতেছিল সব জাচ্ছিল ঋন শোধ করতে।
এইভাবে চলতে থাকে যখন ক্লাশ নাইন এ উঠি তখন শুরু হল আমার নিজের ধ্বস নামা আমার চলাফেরা তখন শুরু হল ক্লাসের লাস্ট সারির
স্টোডেন্ট দের সাথে শুরু হল স্কুল ফাকি দেওয়া আরো অনেক কিছু।
যেই আমি ক্লাশ এইট পর্যন্ত অসুস্থথা বা মেজর কোন সমস্যা বাদে এক দিন ও বন্ধ করিনি সেই আমার মাসে ৪/৫ টা ছাড়া কোন এটেন্ডেন্স ই
নেই খাতায়।
তখন আমার ক্লাশ টিচার আমার আম্মুকে ফোন দিয়ে স্কুলে নিয়ে গিয়ে এটেন্ডেন্স দেখায় তখন আমার আম্মু স্কুলে প্রায় অজ্ঞান হওয়ার মত
অবস্থা হয়ে গিয়েছিল।(এইটা ছিল তখন পর্যন্ত আমার ফ্যামিলির কাছে আমার কাল অধ্যায়।
কারন আমি তখন পর্যন্ত এইটা ছাড়া আব্বু আম্মুর মনে কখনো কষ্ট দেইনি।সব সময় ছিলাম বাধ্যগত সন্তান ছিলাম অনেক নম্র,ভদ্র গর্ব করে বলতে পারি আমার জীবনের এখন পর্যন্ত আমার কোন প্রতিবেশি ভাই, বন্ধু কারো সাথে ঝগড়া হয় নি।
কোন সমস্যায় হয়ত সহ্য করে ছিলাম না হয় নিজের মনকে মানিয়ে নিয়ে চলে এসেছি।
তার পর আম্মু আমাকে ওয়াদা করায় যেন এই রকম কোন কাজ আর জীবনে না করি।
তখন থেকে আবার আগের মত হওয়ার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে আমার এইচ এস সি এক্সাম মাত্র ২ মাস এই ২ মাসেই
কোন রকম পড়ে পরিক্ষা দেই।
পরিক্ষার পর যখন রেজাল্ট দেয় এমন অবস্থা হয়েছিল যে সেই বছর আমাদের স্কুলের মেরিট লিস্টের কয়েকজন স্টোডেন্ট ও ফেইল করেছিল
আমাদের স্কুলের পাশের হার ৩০-৪০% যেইটা সব সময় ৯০%+ থাকত আমার এক এর পর এক বন্ধু যখন ফোন দিয়ে তাদের ফেইল এর
খবর দিচ্ছিল আর আমার রেজাল্ট এর খবর নিচ্ছিল তখন আমার আম্মুর ও কান্নাকাটির মত অবস্থা ধরেই নিয়েছিল আমি ফেইল।
তখন আল্লাহর রহমতে আমি পাস করি ।
খুশি হয় আমার পুরা পরিবার।
কারন আমার নানুর বাড়ির ফেমেলির মধ্যে সবার বড় আমি সবার স্বপ্ন , আমার সব আন্টিরা আমাকে তাদের ছেলে হিসেবে চিন্তা করে।
এর পর ই আসল আমার কলেজে ভর্তি হওয়ার পালা তখন আমার একটাই স্বপ্ন ছিল আমি বাসার বাহীরে থেকে পরব ।
কারন ছোটবেলা থেকেই আমার জীবন এর প্রতিটা মুহূর্ত যাচ্ছিল নিয়ম নিতীর মধ্যে ।
তখন স্বাধীন হওয়ার খুব ইচ্ছা জেগেছিল (এই বয়সে যা হয়) এর পর আমার জেদের জোরে আমাকে একটা স্বনামধন্য একটা কলেজে ভর্তি
করে দেওয়া হয় আর আমি হোস্টেলে উঠী ।
এটাই ছিল ফ্যামেলি ছাড়া নতুন কোন জায়গায় আমার প্রথম অবস্থান।
হোস্টেলের প্রথম সময়ে আমার কিছু কিছু বন্ধু যখন বাড়ির জন্য কান্না করছিল আর আমি তার বিপরীতে খুশি হয়েছিলাম।
প্রথম থেকেই সবার সাথে মিশে গিয়েছিলাম
তখন হই হুল্লোর আড্ডাবাজি আর ঘুড়াঘুরির মধ্য দিয়ে খুব ভাল ভাবেই আমার সময় যাচ্ছিল এইটা ছিল আমার লাইফের সেরা মুহূর্ত ।
জীবনে সময়ের সাথে সাথে হয়ত অনেক কিছুই ভুলে যাব কিন্তু এই সময়টা আজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে আমার মনে।
এইভাবে যেতে যেতে সময় যখন প্রায় শেষ এর পথে তখন মাথায় চিন্তা আসল বাসার বাইরে আসলাম পড়াশোনার জন্য কিন্তু ২ বছড়ে কি
করলাম কি রেজাল্ট তুলে দিব ফ্যামেলির হাতে। চিন্তা করে আর লাভ হল না, সময় তখন শেষ এসে গেল পরীক্ষা কিন্তু পরীক্ষা এত ভাল হল
যা কোনদিন সপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি। এইভাবে শেষ হল পরীক্ষা আর জীবনের সেরা মুহূর্ত এসে গেল সেই বিদায় আসলে আমার জীবনে।
বিদায় বলে তখন কার সময় ছাড়া আর কোন সময় ছিলনা বিদায় যে এত কষ্টের বিষয়টা তখন ই বুঝেছি কারন বুন্ধুগুলার থেকে দূরে সরে
যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল।
এর মধ্যেই আমার আম্মু আমাদের কথা চিন্তা করে আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য নারায়ণগঞ্জ চলে আসে আর আমিও এইখানে চলে আসেই তারপর রেজাল্ট এর জন্য অপেক্কার পালা রেজাল্ট পেলাম অনেক ভাল রেজাল্ট হয়েছিল সব ক্রেডিট ছিল পাশে থাকা ভাল ছাত্রের 😍😍
এর পর নিজের মধ্যে উপলদ্ধি হতে থাকে কিছু করার
তখন আমি অনলাইনে নানাভাবে অনেক কিছু করার ট্রাই করছিলাম কিন্তু কোনটাতে সফল হচ্ছিলাম না তখন প্রতিনিয়ত নিজের স্কিল ডেবলাপমেন্ট করার চেষ্টা করতাম।
🌺🌺এর মধ্যেই ইউটিউবে স্যার এর একটা ভিডিও পাই অনেক ভাল লাগে কথাগুলো এর পর স্যার এর ভিডিও দেখা শুরু করি এবং এক পর্যায়ে আমাদের এই গ্রুপের কথা জানতে পারি এবং এই গ্রুপে জয়েন হই।🌺🌺
গ্রুপে জয়েন হওয়ার পর জেলা মিট আপ গুলোর কথা জানতে পারি এবং আমাদের জেলার একটা মিট আপ এ অংশগ্রহন করি ।
তখন আমার অবস্থা এমন ছিল যে কথা বলতে পারতাছিলাম না নিজের মধ্যে অনেক লজ্জা কাজ করতাছিল।
আসলেই আমি ছোটকাল থেকেই এমন ই ছিলাম কখনো অপরিচিত কারো সাথে কথা বলিনি কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করিনি যার ফলে নিজের মধ্যেই অনেক জরতা কাজ করছিল।
তখন থেকে প্রত্যেক মাসে প্রত্যেক্টা মিটআপ এর মধ্যে অংশগ্রহন করলাম আস্তে আস্তে নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে থাকলাম , এর মধ্য দিয়েই আমার নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া, সবার সামনে কথা বলা এই জড়তাগুলো কাটা শুরু হল।
আল্লাহর রহমতে এখন আমার কথা বলার জড়তা অনেকটাই কেটে গেছে । সহযেই যে কারো সাথে কথা বলতে পারি যে কারো সাথে মিশতে পাড়ি। যে কোন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারি এর পুরুটাই সম্ভব হয়েছে ইকবাল বাহার জাহীদ স্যার এর জন্য স্যার যদি আমাদের এত সুন্দর একটা প্ল্যাটফর্ম করে না দিত তাহলে হয়ত আমার এই জরতাগুলো এত সহজে কাটত ই না।
এর জন্য স্যার এর কাছে চির কৃতজ্ঞ।
তাছাড়া গ্রুপের মধ্যে নিয়মিত এক্টিভ থাকার কারনে কিছু মানুষের সাথে এমন একটা সম্পর্ক হয়েছে যা রক্তের সম্পর্কের চেয়েও বেশি❤️❤️
এই মানুষগুলা প্রতিনিয়ত আমার খোজ খবর নিচ্ছে আমি কি করছি কি উদ্যোগ নিচ্ছি তার আপডেট জানতে চাচ্ছে যার ফলে আমার যদি মাঝে মাঝে মনে হয় যে, এই উদ্যোগ নিব না বা আর কোন কিছু করব না তাদের কথা , ভালবাসা আর সাপোর্টে আমার কনফিডেন্স তখনি বেড়ে যায় মনে হয় না আমি পারব আমি একা নেই আমার সাথে এই মানুষগুলো আছে।
তাদের সাপোর্টে ও স্যার এর অনুপ্রেরনায় আমি স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি ।
এখন আমি একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছি আর একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করছি মূলধন সংগ্রহের জন্য।
আমার স্বপ্ন হল আমার স্বপ্ন ও পরিশ্রম দিয়ে গড়া একটা কোম্পানি বাবার হাতে তোলে দেওয়া কারন আমি ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আবার আব্বু কতগুলো উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু সবগুলাতেই ব্যর্থ হয়েছে ।
আমার স্বপ্ন একটা রিসেইলার প্লাটফর্ম করা আর একটা আইটি সার্ভিস এর এজেন্সি দেওয়া।
এই স্বপ্নগুলো নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি আর আল্লাহর রহমতে ইনশা আল্লাহ কিছুদিনের মধ্যেই এইগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছি।
আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের অনেক ভাই বোন এর জীবনের গল্প পড়েছি তাদের না পাওয়া তাদের স্ট্রাগল এত তুলনায় আমারটা কিছুই নয়।
আমার এই ছোট বয়সের অভিজ্ঞতা,চাওয়া,পাওয়া-না পাওয়া এগুলো ।
আমার এই গল্পে যেন আর কোন কাল অধ্যায় এর গল্প লিখতে না হয় যেন আমি এই গল্পে প্রতিনিয়ত নিজের অর্জন নিজের পাওয়াগুলোই সংযোগ করে যেতে পারি এই লক্ষে কাজ করছি।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ
আমি যেনো আমার মা বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি, নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই কে নিয়ে যেনো বিজয়ের হাসি টা এক সাথে হাসতে পারি ❤️❤️
💙💚💛🧡
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"-৫০৫
তারিখ :- ০৯.০৪.২০২১
ধন্যবাদান্তে,,
মোঃ নাইমুল ইসলাম
ব্যাচঃ ৮
রেজিষ্ট্রেশন নংঃ৪৪৪৫
জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ
উপজেলাঃ সোনারগাঁ