অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসে গমন করে। সকলের জীবনে একটা স্বপ্ন থাকে আমি অনেক বড় হবো।
প্রবাস জীবন
________________________
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমাই।অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসে গমন করে। সকলের জীবনে একটা স্বপ্ন থাকে আমি অনেক বড় হবো। কিন্তু বাংলাদেশের পেক্ষাপটে বর্তমানে হাজার হাজার লোক বেকার হয়ে পড়েছে। তারা কোন কুল কিনারা না পেয়ে স্বপ্নের দেশ প্রবাসে পাড়ি জমায়। অনেক ধারদেনা করে বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে প্রবাসে যায়।কিন্তু প্রবাসে যাওয়ার পর তারা যা দেখে হয়তোবা তার জন্য তারা প্রস্তুত ছিল না। আমরা সবাই ভাবি প্রবাসে অনেক টাকা কাজ করব টাকা ইনকাম করব। কিন্তু যে ব্যক্তি প্রবাসে যায় সে বোঝে বিদেশ কত কষ্টের। বিদেশে পাড়ি জমানোর পর অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে প্রথমদিকে কাজ পায় না।অনেক মানবতার জীবনযাপন করেন যে কষ্ট কাউকে বোঝানো যায় না। যার সাথে হয়েছে সেই বোঝে হয়তো এখানে কেউ টিকে থাকতে পারে। কেউ স্বপ্ন দেখার আগেই স্বপ্ন টা শেষ হয়ে দেশে চলে যেতে হয়।
প্রবাসীর আত্মকথা
_________________________________
একজন প্রবাসী তার সবচাইতে কাছের মানুষদের ছেড়ে দূর প্রবাসে যায়। শুধু তাদের কাছের মানুষদের কে একটু ভালো রাখার জন্য।এর মাঝে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসে গমন করে। এর মাঝে অনেকে আছে যারা দেশে কখনো কাজ করেনি। মায়ের সবচেয়ে আদরের ছেলেটি ভাত খেয়ে নিজের প্লেট কখনো পরিস্কার করেনি।তার পরনের জামা কাপড় কখনো পরিষ্কার করেনি।কিন্তু সেই ছেলেটি প্রবাসে পাড়ি জমিয়ে প্রত্যেকদিন 12 থেকে 16 ঘন্টা ডিউটি করে বাসায় এসে নিজের ডিউটির কাপড় পরিষ্কার করে। রান্না করে সবকিছু পরিষ্কার করে রাতে ঘুমাতে যাই। যে ছেলেটি সকাল দশটা বারোটার আগে ঘুম থেকে উঠতো না।সেই ছেলেটি সকাল ছয়টায় কাজের জন্য রওনা দেই। এখানেই শেষ নয় কাজের ওখানে মালিক সুপারভাইজারদের গালাগালি শেষ নেই।আমাদের দেশের শ্রমিক ভাইয়েরা যে কত কষ্ট করে প্রবাসে এটা কেউ না দেখলে বুঝতে পারবে না।হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে টাকা ইনকাম করতে হয় সেখানে।যেই ছেলেটি প্রত্যেক মাসের জন্য হাতখরচ নিতো 5 থেকে 10 হাজার টাকা। সেই ছেলেটি বেতনের সবগুলো টাকা মা-বাবার জন্য দেশে পাঠিয়ে দেয় শূন্য পকেট রেখে। যা সে কল্পনাও করেনি এটা তো আমাদের যুবক ভাইদের কথা।যারা দেশে স্ত্রী-সন্তান রেখে এসেছে তারা বুঝেছে প্রবাস কি জিনিস। প্রবাসে অনেক ব্যক্তি আছে যারা বিবাহ করে দুই মাস পরে বিদেশে পাড়ি জমাই পরিবারের চাহিদার কারণে।কেউ কেউ 10 বছর 12 বছর দেশে যায় না শুধু তার আপনজনদের একটু ভালো রাখার জন্য। অনেকে কপালে তার আদরের সন্তানের মুখখানি দেখার সুভাগ্য হয়না।এখানেই শেষ নয় প্রবাসীদের যদি শরীর খারাপ হয় কেউ দেখার নেই।103 ডিগ্রি জ্বর নিয়ে তাদেরকে কাজ করতে হয় শুধু তাদের ফ্যামিলির জন্য।
প্রবাসীদের করুণ কাহিনী
________________________________________ প্রত্যেকটা প্রবাসী তার ফ্যামিলির জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যৌবনের সবটুকু সময় অনেকেই কাটিয়ে দেয় শুধু তার স্ত্রী সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে। প্রত্যেক মাসে হাজার হাজার টাকা পাঠাই তারপরও কেউ কেউ তার ফ্যামিলির চাহিদা মেটাতে পারেনা।একজন ব্যক্তি প্রবাসে গেলে তার ফ্যামিলি থেকে সবাই ভাবে সে অনেক টাকা ইনকাম করে। সবার চাহিদা বেড়ে যায় প্রত্যেক মাসে বাবার জন্য টাকা দিতে হয় ভাই বোনের জন্য টাকা দিতে হয়।আবার আলাদা করে স্ত্রীকে টাকা দিতে হয়। শুধু সকলের খুশির জন্য কিন্তু তারা বুঝতে চায় না প্রবাসীরা কত কষ্ট করে টাকা ইনকাম করে। যদি কোন মাসে একটু অল্প টাকা দেশে পাঠায় তাহলে বিশাল সমস্যা দেখা দেয়।বাবা ভাবে বাবার অজান্তে বউকে টাকা দিচ্ছে বউ ভাবে বউয়ের অজান্তে বাবাকে টাকা দিচ্ছে। কিন্তু তারা বুঝতে চায় না হয়তোবা তার এ মাসে কিছু সমস্যা হয়েছিল বলে কম টাকা পাঠাইছে। এখানেই শেষ নয় প্রবাসীদের সবাই ভাবে তারা কলুর বলদ। তারা বলদের মতন সয়ে যায় সব কষ্ট। দুঃখ ভুলে ফ্যামিলির কথা চিন্তা করে তারপরও পরিবার থেকে নানান হেনস্থার শিকার হয় তারা............
প্রবাসীরা আসল হিরো
__________________________________
বাংলাদেশের প্রবাসীরা আমার দেশের গর্ব।মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিল। তেমনি বাংলাদেশের প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রতিমুহূর্তে ঘাম ঝরা পরিশ্রম করে কষ্ট উপার্জিত টাকা দেশে প্রেরণ করে।দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রেখেছে। প্রত্যেক মাসে লাখ লাখ ডলার প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে বাংলাদেশে। এই টাকা দিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা পাচ্ছে।বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দিক দিয়ে প্রবাসীরা দ্বিতীয় অবস্থান করছে। প্রত্যেকটা প্রবাসী আমাদের দেশের জন্য একেকটা রত্ন।তারা কিন্তু দেশে বেকার হয়ে বসে থাকেনি তারা কারো বোঝা হয়ে বসে থাকেনি। তারা নিজ ফ্যামিলিকে অপেক্ষা করে বিদেশে পাড়ি জমিয়ে নিজের ফ্যামিলিকে যেমন স্বচ্ছলতা দিচ্ছে তার সাথে দেশটাকেও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে তৈরি করছে। বর্তমানে করুনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব সেখানে দিশাহারা। সেখানে আমার সোনার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এখনো পিছিয়ে পড়ে নি।শুধু এই রেমিট্যান্স যুদ্ধাদের কারণে। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ এই করুণা ভাইরাসের কারণে নাজুক অবস্থার তৈরি হয়েছে। সে দিক বিবেচনা করলে আমাদের দেশ রেমিটেন্স যোদ্ধাদের কারণে এখনো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বাংলাদেশ হিসেবে বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর আমার দেশের প্রবাসীরা নানা ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।তারা যখন দেশে আসে আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মানুষ কোন মূল্যায়ন করে না। ইভেন প্রবাসীরা যে সময় এয়ারপোর্টে আসে আসার পরে নানান ভোগান্তির কবলে পড়ে অনেক প্রবাসীর সবকিছু লুটে খায়। এয়ারপোর্টে নানান হয়রানির শিকার হয় প্রত্যেকটা প্রবাসী।তাদের লাগেজ চুরি হয়ে যায় তাদেরকে জরিমানা করা হয় কেউ বলার থাকেনা।আমাদের সোনার বাংলাদেশ মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের মূল্য আছে। কিন্তু আমার দেশের যোদ্ধাদের কোন মূল্যায়ন নেই।একজন প্রবাসীর যদি দেশে আসে নানান দিক থেকে তাকে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।বিদেশ গমন প্রবাসীর কাছ থেকে চাদা চাওয়া হয় এবং চুরি ডাকাতি অহরহ হচ্ছে প্রবাসীদের বাড়িতে। প্রত্যেকদিন নিউজে একটা জিনিস দৃশ্যমান যে প্রবাসীর স্ত্রী ধর্ষণ হয়েছে প্রবাসীর স্ত্রী খুন হয়েছে প্রবাসীর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে।একজন প্রবাসী আমাদের দেশের কত বড় একটা রত্ন তা আমরা বুঝতে চায় না।প্রবাসীদের সিকিউরিটি দেওয়ার মত কেউ নেই।তারা প্রত্যেকটা পদে পদে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। এ প্রবাসীরাই আমার দেশের সম্পদ কিন্তু আমরা তাদেরকে মূল্যায়ন করি না। এই প্রবাসীরা আমাদের কাছে সম্মান ব্যতীত কিছুই চায় না। কিন্তু আমরা তাদেরকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেইনা।আমাদের দেশের সরকার সর্বক্ষেত্রে দেখভাল করছেন কিন্তু প্রবাসীদের ক্ষেত্রে নাজুক অবস্থা। কিন্তু এই প্রবাসীরাই টাকা পাঠিয়ে আমার দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী করে প্রতিবছর।ইভেন প্রবাসীরা দেশে আসার পর বিবাহ করতে গেলে তাদেরকে নানান লাঞ্ছনা গঞ্জনা শুনতে হয়। সমাজের মানুষ এও বলতে থাকে প্রবাসী ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিব না।প্রবাসীদের দেশে রোহিঙ্গাদের চাইতে খারাপ ভাবে থাকতে হয়।তাদেরকে কেউ মূল্যায়ন করতে চায়না।তারা কাদের জন্য প্রবাসে যৌবনের সবটুকু সময় পার করেছে।কি পেল তারা সত্যিই আমরা অভাগা জাতি প্রকৃত বীরদেরকে আমরা সম্মান করতে পারিনা।
❤ একজন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এবং প্রবাসী❤
রাষ্ট্র যেখানে প্রবাসীদের নিয়ে কোন ক্ষেত্র তৈরি করেনি। সেখানে একজন মানুষই ব্যতিক্রম তিনি আর কেউ নয় হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর আইডল প্রিয় মেন্টর প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। তিনি সর্বদা প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন। তিনি প্রবাসীদের কথা বলেন কিভাবে প্রবাসীরা উদ্যোক্তা হতে পারে।তা নিয়ে তিনি বিনামূল্যে প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন।প্রিয় মেন্টরের একটাই স্বপ্ন প্রবাসীরা যেন বিদেশ থেকে এসে একদিনও দেশের বোঝা হয়ে না থাকে।আমি সত্যিই স্যালুট জানাই এই শতাব্দীর কিংবদন্তিকে তিনি শুধু আমাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করছেন না সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসেবে বুক ফুলিয়ে কিভাবে চলতে হয় তাও শেখাচ্ছেন।আমি প্রিয় মেন্টরের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।যেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রিয় মেন্টরকে হাজার বছর আমাদের মাঝে বাচিয়ে রাখেন।তিনি আরো মানুষকে তার দীক্ষায় শিক্ষিত করুক। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ যেন বলতে পারে গর্বের সাথে আমি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের ছাত্র। আমরা এক একটা ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার❤❤❤❤❤
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"-৫১৬
তারিখ :- ২৪.০৪.২০২১
ধন্যবাদান্তে
মোহাম্মদ মেহেদী হাসান
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
১২তম/৪৮১১৯
মানিকগঞ্জ
লেবানন প্রবাসী