আমি একজন পাঞ্জাবিওয়ালা #গল্পে_গল্পে_সেল_পোষ্ট
আমি একজন পাঞ্জাবিওয়ালা
#গল্পে_গল্পে_সেল_পোষ্ট
নামটা যেমন তেমন কামটা কিন্তু পারফেক্ট। কত রকমের মানুষের সাথে প্রতিনিয়ত কথা বলি, আড্ডা দেই & চলাফেরার সুবিধাদে তাদের সম্পর্কে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে জানার চেষ্টা করি। এই জানার কারন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। স্যার বলতে আপনেরা ভ্রমণ করুন বা বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের মাধ্যমে বিজনেস আইডিয়া বের করুন। তখন ভাবতাম বিজনেস আইডিয়া বা পরামর্শের জন্যে কন্সালটেন্সি কোম্পানির কমতি নাই জায়গা ঘুরে কি ভাবে বিজনেস আইডিয়ারপেতে পারে? নিজে নিজে ভাবতাম আর চিন্তা করলাম আচ্ছা করে দেখি।
পরিদর্শনের জায়গাগুলোকে আড্ডার জন্যে বিবেচনা করি তারপর কয়েকজন বন্ধু সহকারে ঘুরতে যেতাম এইভাবে ঘুরতে গিয়ে অনেক সময় ও অর্থ অপচয় করতাম।
কিছুদিন পরে ভাবলাম এই অর্থ খরচ করার মানে কি? উত্তরে পেলাম ইমোশন। কারন ঘুরতে গিয়ে তো আমরা কোন না কোন জিনিস ক্রয় করতেছি & পরিবহন বাবদ খরচ করি। এছাড়া অন্য কিছু না।
যা কিছু ক্রয় করতাম তার মধ্যে ৮৫% জিনিস দেশীয় পণ্য। তখন থেকে মনে ধরতো যদি আমি এই পণ্য সমূহ নিয়ে কাজ করতে পারতাম কত আনন্দ লাগতো ঠিক কিছুদিন পর ঈদ আসে। ঈদের সময় সবাই চাই দেশীয় পোশাকের সাজে নিজেকে আলোকিত করতে কিন্তু সব সময় সম্ভব হয় না। পরিস্থিতির কারন আমার বেলায়ও তাই হয়েছে।
সমগ্র কাতার জুড়ে একটা ভালো পাঞ্জাবি কিনতে পারি হয় এটার কারন হয়তো আমার নেটওর্য়াকিং স্ট্রং ছিলো না বা সোর্সিং জানতাম না। তখন আরাবিক তোফ/কান্দুরা/জুব্বা যে যে নামে ডাকে তা পড়ে ঈদের নামাজ আদায় করি। পুরোদিন পরিবার ও আত্মীয় স্বজন ছাড়া ঈদ আসলে মনের অবস্থা কতটা খারাপ ছিলো বুঝানো যাবে না।
তারপর পুরো দিন মন খারাপ করে ছিলাম একটা সময় রাতে বের হয়েছি খুরতে তারপর খাওয়ার জন্যে হোটেলে যাই ঠিক তখন এক দেশী দোকানে কিছু পাঞ্জাবি দেখি জিজ্ঞেস করি ভাই বিক্রী করেন না? উনি বলে প্রবাসে পাঞ্জাবি কে কিনে তখন ভাবলাম হয়তো ঠিক বলেছে।
পরের বছর কোভিড-১৯ পৃথীবি ব্যাপী শুরু হলো মহামারী তখন পণ্য আনা নেওয়া খুবই দুস্কর ব্যবসায়িদের হাল খুবই ন্যাক্কর। ঠিক কিছুদিন পর ঈদ। আমিও স্যারের সেশন চর্চার শিক্ষা ও সাহসকে কাজে লাগিয়ে ১৫০ পিচ পাঞ্জাবি আনি তখন আমার কাছের বন্ধুরা বলছিলো তোর মাথা গেছে গ্রুপের লগে লগে।
আমিও ভাবলাম মাথা যেহেতু গেছে তাহলেতো লোকশান তাহলে সহকর্মীদের ও বন্ধুদের দিব যেমন চিন্তা তেমন কাজ। কয়েকজনকে দিলাম তারাও পে করলো। ঠিক রমজানের শেষের দিকে ফোনের একটা চাপ ছিলো ভাই একটা পাঞ্জাবি হবে?
উত্তরে এড্রেস ফোন নাম্বার চলে যাচ্ছে পণ্য, শেষ হচ্ছে স্টক। এভাবে চাঁদ রাতে সব শেষ বেশ ভালো চাহিদা পূরণ করলাম সবার। ঠিক কোরবানীর ঈদে অনেকেই জানতে চাইলো পাঞ্জাবি আছি কি? এদের মধ্যে কেউ আমার নাম সেভ করছে পাঞ্জাবি ভাই, পাঞ্জাবিওয়ালা, কূর্তাওয়ালা। আমিও নামগুলো খুব মজার সাথে উপভোগ করলাম।
এর মধ্যেই বুঝে গেলাম মেলা, স্থান, বা ব্যবসায়িক বাজার ঘুরাঘুরী পরিদর্শনের ফলাফল তখন মন থেকে ভাবলাম সেশন চর্চার গুরুত্ব কতটুকু।
এবারে রমজানের শুরুতেই আমি একটা একটা করে আমার নতুন পাঞ্জাবি পড়ে অফিসে যেতাম এবং বিভিন্ন মিটিংয়েও যেতাম বেশ কিছু অফিসিয়াল গুরুত্বপূর্ন মিটিংয়েও গিয়েছিলাম পাঞ্জাবি পড়ে । তখন সবাই তাকিয়ে থাকতো আর বলতো ভাই এতো সুন্দর সুন্দর পাঞ্জাবি একা একা গায়ে দেন আমাদের জন্যে কিছু রাইখেন। তখন আমি বলি এটাতো কোন কালেকশনই না এর থেকেও বেশ ভালো ও গর্জিয়াস ডিজাইন & কালারের বেশ কালেকশন আছে।
কোথায় জিজ্ঞাস করার সাথে আমি ফেসবুক ওপেন করে Trade Mark Group এর পেইজ ওপেন করে লাইক & সি ফাষ্ট করে দেই।
কিছুদিন পরে আমার নতুন নতুন কালেকশনগুলোর লাইভ ভিডিওতো অবাক ফোনে ভাই এটা কি আপনার? উত্তরে খানিকটা স্ট্রংলি বলি আমি ছাড়া এই কালেকশন কে দিবে ভাই?
তখন বলে আগে লোকেশন দাও তারপর কথা বলি কথামত কাজ তারপর উনি এসে দেখে আমিতো মস্ত বিজি পণ্য বিক্রয় নিয়ে উনিও বেশ কিছু পণ্য খেটে খেটে দেখছিলো আর বলছিল সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি কোনটা নিমু কারন সবগুলো পছন্দ হয়। এরপর এসে আমার রুমে ২ জনে চায়ের চুমুকে গল্পে মেতে উঠি এর মধ্যে আমার পার্টনার ইকবাল ভাই ও ইয়াকুব ভাই বেশ কিছু পাঞ্জাবি সেল করে দেই।
পরে উনি এসে দেখে উনার পছন্দের পাঞ্জাবিগুলো শেষ। উনি বলে আমার গুলো কই?
ইকবাল ভাই বলে ট্রেডমার্কে পণ্য ক্রয় করে রাখতে হয় না হয় কাষ্টমারের চাহিদা মিটানোর জন্যে মাঝে মধ্যে আমাদের গুলো দিতে হয়। এর মধ্যে উনি তড়িৎ গতিতে উনার ও উনার বন্ধুদের জন্যে ক্রয় করে। তারপর সেহেরী পর্যন্ত আড্ডা দিছিলো আমাদের সাথে। তখন দেখলো ভোর সেহেরীর পর্যন্ত শুধু আসে আর যাই। তখন উনি বলে তুমি ফেসবুকে বুষ্টিং করো নাই প্রচারনা করো নাই তাহলে এই অবস্থা কেন তখন আমি বলি আমি একজন সি.এম. হাসান উনি উত্তরে বলে আপনি একজন পাঞ্জাবিওয়ালা। শুনে ২ মিনিট হাসি তখন বলে আপনিই পারবেন দোয়া রইল।
ঠিক এবারের ঈদের আগে পাঞ্জাবি নিয়ে আসি প্রথম ধাপে তারপর ২য় ধাপে আর এইভাবে ৮ ধাপে মাল কাতারে আনি দেশ থেকে এবং ভারত ও পাকিস্তান থেকে।
কিছু পণ্যের ছবি তুলতে পারি নাই সময়ের গ্যাঁড়াকলের চাপে।
এবারের পর্যাপ্ত সেল দেই আলহামদুলিল্লাহ।
সব কিছুর মূল ছিলো ঈদের আনন্দ সবার সাথে শেয়ার করা পাঞ্জাবি দিয়ে পুরো কাতার জুড়ে ডেলিভারী করেছি পাঞ্জাবি । কাছের সকলের চাহিদা পূরনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
আপনাদের পছন্দের পাঞ্জাবি কাতারে পেতে ভিজিট করুন আমাদের অফিস বা পেইজ থেকে নজর ভুলিয়ে আসুন।
Trade Mark Group
সবাই ট্রেডমার্ক গ্রুপের সাথেই থাকবেন এমন প্রত্যাশা করি।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৩০
Date:- ০৯/০৫/২০২১
ধন্যবাদান্তে
সি.এম. হাসান
তৃতীয় ব্যাচ- ১০১
কোর ভলান্টিয়ার - মডারেটর
লক্ষ্মীপুর জেলা - কাতার প্রবাসী
নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন
উদ্যোগতা :- Trade Mark Group