১০ টা পাঞ্জাবি হ্যাপি নিউ ইয়ারের জন্য একি সাইজের একি ডিজাইন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম
#গল্পে_গল্পে_সেল_পোস্ট
শুরুতেই শুকরিয়া জানাই মহান আল্লাহর দরবারে এতো সুন্দর পৃথিবীতে প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে নির্মল বাতাসে
এখনো সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে আছি। তার জন্য আরো একবার বলি আলহামদুলিল্লাহ।
আর বেঁচে আছি বলেই আজ এতো গল্প এত উচ্ছ্বাস এবং লেখার আগ্রহ জাগে।আর বেশি লিখতে ভালো লাগে মঙ্গলবার আসলে। যা বলতে ভালো লাগে শুনতে ভালো লাগে।
আর সেই লেখার জায়গাটা তৈরি করে দিয়েছেন আমাদের সবার প্রিয় মেন্টর #জনাব_ইকবাল_বাহার_জাহিদ_স্যার। তাই স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। সারাদিন বলেও শেষ করা যাবে না।
#তাই_৭৮তম_হাটবারে_আপনাদের_সবাইকে_অভিনন্দন_ও___শুভেচ্ছা।
আপনাদের সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো।
স্যারের সেশনের প্রতিটি লাইন প্রতিটি শব্দ বাস্তব জীবনের সাথে মিশে আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো লাগার কথা গুলো হলো লেগে থাকা আর দায়িত্ব ।
এই দুটোই জিনিস সঠিকভাবে পালন করতে পারলেই স্যারের শিক্ষার যর্থাত মর্যাদা দিতে পারবো।
#এখন_আসি_গল্পে
বিকাল থেকেই প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছিল।যত সময় যাচ্ছে ততই বেড়েই চলেছে সাথে বাড়ছে টেনশন। যদি বেশি বেড়ে যায় তাহলে স্টুডেন্টদের কিভাবে পড়াবো? রান্না করবো কিভাবে?
আবার সেশন চর্চা ক্লাসের সঞ্চালনা কিভাবে করবো? দায়িত্ব টা তো আমার উপর। বাবার চোখে ড্রপ দিতে হবে এখনো আরো ৬ বার বাকি।
যত সময় যাচ্ছে ততই বেড়েই চলেছে ব্যাথা।ভয়ে মুখে কিছু দিতে পারছিনা যদি বমি হয়। এতোটাই অসহ্য ব্যাথা করছিল। স্টুডেন্টদের বলে দিলাম আজ পড়াতে পারবো না।
অনেক কষ্টে সেশন চর্চার ক্লাস সম্পন্ন করলাম।কথা বলিনি হোস্টে ছিলাম। আরকে ভাইয়া সঞ্চালণা করে দিলেন।
তারপর দেখি রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য ৪ জন ইনবক্সে তথ্য দিয়ে বসে আছেন।দেখছি আর বসে বসে ভাবছি কি করবো। তারপর ভাবলাম আজ কিছুই করবো না।এইদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ফিডব্যাক টিমের কাজ জমা দিতে হবে।
সব মিলিয়ে কাজের হিসেবে করতে করতে ব্যাথার পরিমাণটা আরো বেড়ে গেল। তখনই এক ভাইয়া বার বার নক করছে।
আপু রেজিষ্ট্রেশন করে দেন।কি করবো? বাধ্য হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে রেজিষ্ট্রেশন করে দিলাম।মোবাইলের দিকে তাকাতে পারছি না।ভাইয়াটা এতো সুন্দর করে বলছে।
সেই ভাইয়াটার ব্যবহার দেখেই রেজিষ্ট্রেশন করে দিলাম।তারপর বলছে আপু কি করতে হবে? সেটাও বলে দিলাম যে এখন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হতে হবে।তারপর ওনি বললেন যুক্ত করে দিতে।
বললাম ভাইয়া যুক্ত হতে সময় লাগবে। আপনি তো আমার জেলার না অন্য জেলার।
তখন বললেন ঠিক আছে।তারপর আবার নক করে বসেন আপু আপনি কি নিয়ে কাজ করেন? তখন খুব বিরক্ত হচ্ছিলাম কথা বলতে ভালো লাগছিল না।
কিন্তু কি করবো? যদি ওনার কথার উত্তর না দেই খারাপ ধারণা হবে। সেটা ভেবেই বললাম আমি মেয়েদের বিভিন্ন আইটেম ও ছেলেদের পাঞ্জাবি নিয়ে কাজ করছি।
তখন আবার প্রশ্ন করে বসলেন আপু হাতের কাজের পাঞ্জাবি আছে?
আমি বললাম জ্বি
আপু আমাকে কয়েকটি পিক দেন।
মনে মনে ভাবছি হায় আল্লাহ এখন কি করবো? আমি তো মোবাইলের দিকে তাকাতে পারছি না।তাও কষ্ট করে কয়েকটি পিক দিলাম।
তারপর দেখলাম আর কোন রেসপন্স নেই। ভাবলাম বোধহয় পছন্দ হয়নি।খুশিও হলাম যাক মোবাইল টা রেখে ঘুমাতে পারবো।
তখন আবার ডাইরেক্ট কল দিয়ে বসেন ম্যাসেঞ্জারে। প্রথমে রিসিভ করিনি। তারপর আবার কল তখন রিসিভ করলাম।
বললেন আপু পাঞ্জাবির কোয়ালিটি কেমন?
বললাম হাই কোয়ালিটির
সম্পূর্ণ পিওর কটন কাপড়ের তৈরি।
আবার বললেন এক কালার আছে?
বললাম জ্বি আছে।কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। তারপর অনেক কষ্ট করে উত্তর দিচ্ছি।
তারপর জিজ্ঞেস করলেন এই রকম ১০ টা পাঞ্জাবি হ্যাপি নিউ ইয়ারের জন্য একি সাইজের একি ডিজাইনের করে করে দিতে পারবো?
বললাম জ্বি পারবো ইনশাআল্লাহ?
প্রাইস কত পড়বে?
বললাম প্রতিটা পিস ১২০০ টাকা
একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছেন। আর আমারও ব্যাথা ক্রমেই বেড়ে চলছে।
তারপর আবার জিজ্ঞেস করলেন কিভাবে দেবো? কিভাবে টাকার লেনদেন করবেন?
বললাম হোম ডেলিভারি দেওয়া যাবে আবার কুরিয়ারেও নিতে পারবেন।
কুরিয়ারে নিলে পুরো টাকা বিকাশ করতে হবে?
আর হোম ডেলিভারি হলে শুধু ডেলিভারি চার্জ আগে দিতে হবে।
বাকিটা পণ্য হাতে পেয়ে পরিশোধ করতে পারবেন।
ওকে আচ্ছা বলে ওনি রেখে দেন।আমিও শান্তি পেলাম। তারপর মোবাইলটা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পড়ি কিছুতেই ঘুম আসছে না।তারপর আব্বু ডাকেন একবার আম্মু ডাকেন একবার খাওয়ার জন্য।
কষ্ট করে খেতে বসেছি। কিন্তু পারিনি।উঠে আবার বিছানায়। তারপর কখন যে ঘুম আসে বুঝতে পারিনি।আমার পেইজে আপুর নাম্বার টা দিয়ে রাখছি।
ঐ ভাইয়াটা আমাকে অনলাইনে না পেয়ে আপুর নাম্বারে কল দিয়ে যাচ্ছে। আপু কথা বললো সেই লোকটা আমার নামটা ঠিক মতো বলতে পারেন নি।
আপু রং নাম্বার বলে রেখে দিল।
ওনি আবার ফোন করে বললেন যে পাঞ্জাবি নেওয়ার জন্য ওনি কল দিয়েছেন পরে আমার নামটা শুদ্ধ করে বলেন।
তারপর আপু আমাকে ডাকছে আর বলছে এই কাকে নাম্বার দিয়েছিস পাঞ্জাবি চাইছে।
আমি ঘুমের ঘরে বলছি কল দিলে সমস্যা কি আমার মোবাইল তো বন্ধ। কল দিক সমস্যা নেই।
আপু একটা ধমক দিয়ে বললো মোবাইলটা অন কর।তখন একটু নড়েচড়ে বসলাম।
মোবাইলটা অন করলাম। ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু করলাম।তখন দেখি সেই ভাইয়াটার ২০ টা কল ম্যাসেঞ্জারে আর ম্যাসেজ।
তখন ভাবলাম লোকটা কি ভাববে কি জানি। তারপর কল ব্যাক করলাম।
বললাম ভাইয়া আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আমার খুব মাথা ব্যাথা করছিল তাই মোবাইল বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ি।
তখন দেখলাম ওনি নরমালভাবে বললেন।যে আপু আমার এই পাঞ্জাবি গুলো লাগবে। আমি কুরিয়ারে নেবো।
আপনার বিকাশ নাম্বার টা দেন।
তারপর বিছানায় বসে বসে অর্ডার কনফার্ম করলাম।আর মনে মনে ভাবছি । দায়িত্ব কি জিনিস। দায়িত্ব যদি পালনে যদি অবহেলা করতাম তাহলে হয়তো সেই লোকটার সাথে আমার পরিচয় হতো না।
আর লেগে যদি কাজ না করতাম তাহলে বোধহয় আমাকে কেউ চিনতো না জানতো না। কাউকে বলতে হয় না রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য। নিজে থেকে তথ্য দিয়ে ইনবক্সে নক করে বসেন। এটা সত্যি একটা ভালো লাগার বিষয়।
আর বিছানায় বসে বসে অর্ডার কনফার্ম করতে পারতাম না।
কত সহজে বিছানায় বসে বসে অর্ডার কনফার্ম করছি। এর চেয়ে আরাম আয়েশের জায়গা আর কোথায় আছে।
#নিজের_বলার_মতো_একটি_গল্প_ফাউন্ডেশন " ছাড়া।
যেখানে বিশ্বাস এবং ভালোবাসার দাম টা অনেক বেশি।এবং চিন্তা করলাম এখান থেকে যদি কোন সেলও না হয়। তাও লেগে থাকবো এই ফাউন্ডেশনের সাথেই।
এখান থেকে যে ভালোবাসা যে সম্মান পেয়েছি আমার মনে হয় না আমার পরিবার থেকেও এতোটা পাইনি।
আর তার জন্য #স্যালুট_প্রিয়_মেন্টরকে যিনি আমাদের রুপকথার গল্পের রাজ্যকে বাস্তবে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।প্রতি মঙ্গলবার হাটবারে বাস্তব জীবনের গল্প তুলে ধরার জন্য।
এই ছিল আমার গল্প। আমার লেখার মধ্যে যদি ভুল ত্রুটি থেকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭০৩
Date:- ২১/১২/২০২১ ইং
রুনু বেগম
সোশ্যাল মিডিয়া ফিডব্যাক টিম
রেজিষ্ট্রেশন টিম মেম্বার
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
ব্যাচ ১২/৪৪৪৮২
জেলা-মৌলভীবাজার