✌️✌️উদ্দোক্তা জীবনের গল্প ✌️✌️
🌺🌺🌺আসসালামু আলাইকুম 🌺🌺🌺
❤️❤️❤️বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম❤️❤️❤️
🕋🕋শুরু করছি মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে, যিনি আমাকে সুস্থ, সবল এবং কর্মঠ রেখে এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
সেই সাথে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করছি মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি, যার অপার মহিমায় আমি এই সুন্দর পৃথিবীতে অগণিত হালাল নেয়ামত ভোগ করার সুযোগ পেয়েছি।
🕌🕌লাখো কোটি দুরুদে সালাম পেশ করছি আমাদের প্রানের নবী,প্রিয় নবী, সকল মুসলমানদের আদর্শ, পথপ্রদর্শক হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর প্রতি, যার উম্মত হিসেবে মহান আল্লাহ্ পৃথিবীর বুকে আমাকে পাঠিয়েছেন। আমি গর্বিত কারণ আমি প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর উম্মত হিসেবে জন্ম নিতে পেরেছি। ❤️❤️
❤️❤️কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই প্রিয় মানুষ, লাখো তরুণ তরুণীর স্বপ্নদ্রষ্টা,জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া লাখো তরুণ তরুণীর জীবনে ঘুরে দাড়ানোর শক্তি, এই শতাব্দীর সেরা আবিষ্কার,জীবন্ত কিংবদন্তি, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের হৃদয়ের স্পন্দন, সম্মানিত শ্রদ্ধেয় প্রিয় 😍IQBAL BAHAR ZAHID স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে গড়ে তোলা "নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশনের মতো একটা ভালোবাসার প্লাটফর্ম।
যার বদৌলতে আজ আমি আমার সকল ভালোবাসার মানুষগুলোর সাথে আমার উদ্দোক্তা জীবনের গল্প বিনিময় করার সুযোগ পেয়েছি।😍
🌹🌹সবাই আমার উদ্দোক্তা জীবনের গল্পটি সময় নিয়ে পড়বেন সেই আশা নয় সকল ভালোবাসার মানুষগুলোর প্রতি বিশ্বাস রেখে আমি আমার উদ্দোক্তা জীবনের গল্প শুরু করছি।
👩🦰👩🦰আমি আমাদের পরিবারের প্রথম কন্যা সন্তান। আমি ছোটবেলা থেকেই খুব আদরে- যত্নে বড় হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। আমার বাবা-মা দুইজনই সরকারি চাকুরিজীবি। সেই সুবাদে আমি জন্মের পর থেকে, যখন থেকে বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই শুনতে শুনতে বড় হয়েছি যে আমাকেও চাকরি করতে হবে। শুধু চাকরি নয়, বাবা- মায়ের চেয়েও উঁচু কোন পোস্টে সরকারি চাকরি করতে হবে।
আমি যখনই কোন শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিতাম, তখন প্রতিটি পরীক্ষার পর বাসায় ফিরতেই আমার বাবা জিজ্ঞেস করতেন পরীক্ষা কেমন হলো?
আমি যদি বলতাম মোটামুটি, তাহলে বাবা বলতেন মোটামুটি কোন কথা নেই, হয় হবে ভালো না হলে হবে খারাপ। আমিও সেইভাবেই পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করতাম, যাতে বাবাকে সঠিক উত্তর দিতে পারি।
এভাবেই চলতে থাকে পড়াশোনা। আমি মাধ্যমিক পাশ করার পরে পরিবার থেকে বলল, এখন থেকেই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে সরকারি চাকরি পেতে হলে। কিন্তু আমি তখন ভাবছি পরিবারের বিপরীতে। সবাই অনেক সরকারি চাকরি,সরকারি চাকরি করত তবুও কেন জানিনা আমি কখনোই চাকরির প্রতি আগ্রহী হতে পারিনি।
🙃🙃 বাচ্চাদের যেখানে যেতে না করা হয়, তারা সেই দিকেই যায় খুব আগ্রহ নিয়ে। আমার অবস্থাও হয়ত সেই অবুঝ বাচ্চাদের মতোই হয়েছিল।।
🖊️🖊️আমি যখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করি, তখন থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করা। যে কোনো নিয়োগ পরীক্ষার আগে বাবা-মায়ের চাপে মুখ গুজে বসে থাকতে হতো বইয়ের মধ্যে। শুধু বসেই থাকতাম পড়ায় থাকতনা কোন আগ্রহ। এরপর স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হলাম। এরই মাঝে নিজের আগ্রহে শিখে নিলাম বেশ কিছু কাজ।
🏸🏸আমি ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলায় খুব ভালো ছিলাম।বেশ কয়েকবার বিভাগীয় পর্যায়ে চান্স পেয়েও conservative পরিবারের সদস্য হওয়ায় অংশগ্রহন করতে পারি নি।
✏️✏️এরপর আন্তঃজেলা পর্যায়ে একটি হাতের লেখা প্রতিযোগিতা হয়। সেখানে অংশগ্রহন করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করি। নিজে কিছু করার উৎসাহ আরও বেড়ে যায় তারপর থেকে।
🎂🎂পাশাপাশি কেক বানানো, সুই- সুতার হাতের কাজ এবং রং-তুলি দিয়ে হ্যান্ডপেইন্ট করতে পারতাম।
🎎এরই মাঝে আমার বিয়ে হয়ে যায়।
শুরু হয় জীবনের এক নতুন অধ্যায়। যদিও আমার হাজবেন্ড একজন ব্যাবসায়ী, কিন্তু তবুও তিনিও বাবা-মায়ের মতো চাইতেন আমি কিছু করি।
তবে চাকরি না-যা আমি করতে চাই।😍😍
😧😢বাবা-মায়ের অমতে যাওয়ায় তারা কিছুটা নারাজ হয়ে গেলেন আমার প্রতি!
👇👇শুরু হলো সফল উদ্যোক্তা হয়ে বাবা-মাকে খুশি করার লড়াই।
🎂🎂এরপর হঠাৎ করেই একদিন সিদ্ধান্ত নিলাম আমি কেক নিয়ে কাজ শুরু করব।
যেই ভাবা সেই কাজ।
বিয়েতে উপহার হিসেবে পাওয়া কিছু টাকা এবং হাজবেন্ডের সহযোগিতায় কেক বানানোর সরঞ্জাম কিনলাম এবং বেশ কয়েকটি কেক বানালাম।
বেশ সাড়াও পেয়েছিলাম অল্পদিনের মধ্যে।😍
কিন্তু নিজে কোথাও একটা সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না।মনে হচ্ছিলো আমি দক্ষতার সাথে করতে পারছি না। তাই বন্ধ করে দিলাম কেক তৈরি।
তবে নিজেদের যেকোনো আয়োজনে আমার বানানো কেকই ব্যাবহৃত হয় এখনও।
❤️❤️এরপর মহান আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত মহামূল্যবান পুরস্কার হিসেবে আমার ছেলে,
(সাফির রহমান আদর) আসলো পৃথিবীতে আমাদের ঘর আলো করে। ব্যাস্ত হয়ে গেলাম স্বামী-সন্তান ও সংসার নিয়ে। তবে মনের কোনে প্রবল ইচ্ছে উঁকি দিতে থাকে কিছু করার জন্য। কিছু করতে না পারার বেদনা প্রকট থেকে প্রকটতর আকার নিতে থাকল। যখনই কাজের ফাঁকে ১০ মিনিট সময় পেতাম বসে যেতাম পেইন্টিং করতে। ভালোবাসার আরেক নাম পেইন্টিং 🖌️।
হাজবেন্ডের পুরাতন পান্জাবিতে🥼 হ্যান্ডপেইন্ট করে দিতে থাকলাম নতুন রূপ। এরপর হাজবেন্ডের অনুপ্রেরণায় এবং পরামর্শে তার জন্য এবং ছেলের জন্য কয়েকটি এক কালার পাঞ্জাবী অর্ডার করে পেইন্ট করলাম। হাজবেন্ড সহ আশেপাশের সবাই বেশ তারিফ করলেন এবং বাসায় এসে অর্ডার করতে থাকেন। এভাবেই বেশ কিছু পাঞ্জাবীর কাজ করলাম, তবে কোনো লাভ ছাড়া। শুধু পাঞ্জাবী কেনার টাকাটা নিতাম। আর রং আমার হাজবেন্ড কিনে দিতেন। হাজবেন্ড বলতেন আগে এভাবে করে অভিজ্ঞতা অর্জন করো তারপর প্রফেশনালি সেল করার চিন্তা করবা।
🤒🤕এরপর আমি আমার দ্বিতীয় বেবি কন্সিভ করি এবং অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার অসুস্থতার সময় আমার পাশের বাসার এক বড় আপু একটি হ্যান্ডপেইন্ট শাড়ি অর্ডার করেন আমাদের এলাকায় একজন আপু হ্যান্ডপেইন্ট শাড়ি নিয়ে কাজ করতেন সেই আপুর কাছে। তার জন্য শাড়ি টি অর্ডার দেওয়ার সময় তার ৪ বছরের বাচ্চা মেয়ের একটা ফ্রক দিয়ে বলেন ওইটায় একটু পেইন্ট করে দেওয়ার জন্য।
কিন্তু সেই সেলার আপু শুধু মাত্র অর্ডারের শাড়িটিই কাজ করে দেন। বাচ্চা মেয়েটার জামায় কাজ করেন না😒। বড় আপু মেয়ের জামায় কাজ না করার কারন জানতে চাইলে সেই সেলার আপু এবং তার মা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাদের এত সময় নেই ফ্রী তে কাজ করার। তাদের অনেক অর্ডার আছে।😔বড় আপু আমাকে এসে কথাগুলো বলেন এবং তিনি একপর্যায়ে কান্না করে ফেলেন।😢
তখন আমি ভীষণ অসুস্থ ছিলাম কিন্তু তার কান্না দেখে অনেক খারাপ লাগে। তখন আমি অসুস্থ অবস্থায় সেই বাচ্চা মেয়েটার জামাটা পেইন্ট করে দেই। মেয়েটা অনেক খুশি হয়ে আমাকে জরিয়ে ধরেছিল। তখন মনে হচ্ছিলো আমি একজন সার্থক মানুষ।🙂
ঐ হাঁসি দেখে যেনো আমার অসুস্থতা ভুলেই গিয়েছিলাম।😍
এরপর সেই সেলার আপু এই কথাগুলো জানতে পেরে আমাকে তার ফেইসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে আনফ্রেন্ড করে দেন🥺। আমি হয়ত কাউকে বোঝাতে পারবনা সেই অপমানিত হওয়ার যন্ত্রণা আসলে কেমন ছিলো!
এরপর আমি অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলাম নিজেকে। মনে হতো আমি পারবনা। যদি কিছু করতে চাই আর না পারি তখন অনেকে অনেক কথা শোনাবে। একটা ভয় ঢুকে যায় আমার মধ্যে।
🥰🥰এরই মাঝে কোন একদিন আমার হাজবেন্ড (আব্দুর রহমান সোহেল) যিনি ১১তম ব্যাচ থেকে ❤️নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের❤️ সাথে যুক্ত আছেন, তিনি আমাকেও যুক্ত করে দিয়েছিলেন এই ফাউন্ডেশনে। আমাকে বলেছিলেন ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ফলো করতে কিন্তু আমি সময় দিতে পারিনি এবং সেরকম গুরুত্বও দেইনি।
কারণ তখন আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমি দ্বিতীয় সন্তান (মেয়ে-সাফরিন রহমান আরবি)এর মা হয়েছি।❤️
এরপর মেয়ের যখন ১মাস বয়স আমিও সুস্থ, তখন আমার হাজবেন্ড নিজেই আমাদের উপজেলা এম্বাসেডর ❤️প্রিয় ফজিলাতুন্নেছা রাবেয়া❤️ আপুর মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে দেন ১৫ তম ব্যাচে।
এরপর গুগল মিট ডাউনলোড করে একটি সেশন চর্চা মিটআপে যুক্ত করে দিলেন। ১৫ তম ব্যাচের সেশন চর্চা মিটআপে প্রথমে সকলের সাথে কথা বলি, পরিচিত হই। তখন থেকে শুরু হয় জীবনের আরও একটি নতুন অধ্যায়। তখন থেকে আজ পর্যন্ত হাজবেন্ডের অনুপ্রেরণায় লেগে আছি শ্রদ্ধেয় প্রিয় স্যার কে, শরীয়তপুর জেলা কে, প্রিয় প্লাটফর্মের সম্মানিত ভাই-বোন ও আঙ্কেল সহ সকলকে ভালোবেসে, সকলের ভালোবাসা নিয়ে।❣️❣️❣️
প্রিয় স্যারের নিম্নোক্ত বানীটি সেই দিন থেকেই অন্তরে গেথে নিয়েছিলাম। ❤️❤️❤️❤️❤️
🌺🌺স্বপ্ন দেখুন 🌺🌺
🌺🌺সাহস করুন 🌺🌺
🌺🌺শুরু করুন 🌺🌺
🌺🌺লেগে থাকুন 🌺🌺
🌺🌺সফলতা আসবেই 🌺🌺
❤️❤️স্যার বলেন রাগ হয় অন্যের সাথে আর জেদ হয় নিজের সাথে।❤️❤️
তাইতো সেই দিন থেকে অপমানের রাগ গুলো জেদে পরিণত করতে থাকি। আলহামদুলিল্লাহ্ এখন আর কারো অপমানের জবাব মুখে দিতে হয়না।
✌️✌️আজ আমি হাজবেন্ডের অনুপ্রেরণায় প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে স্যারের বাণীগুলো বুকে ধারণ করে, স্যারের দেখানো পথ অনুসরণ করে পাঞ্জাবিতে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ করে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ্।😍
আজ আমার সাফল্যের প্রতিটি মুকুট, প্রতিটি উজ্জ্বল পদক্ষেপ, এক একটি তীর হয়ে আঘাত করে আমাকে পেছনে টেনে ধরে থামিয়ে রাখতে চাওয়া এক এক জন শুভাকাঙ্ক্ষীদের বুকে।🙃🙃
🧡🧡আজ বাবা-মাও খুশি। তারা হয়তো প্রত্যক্ষ সাপোর্ট করেন না কিন্তু দোয়া করেন সব সময় যেন সফল উদ্যোক্তা খুব তাড়াতাড়ি হতে পারি এবং আরও ২-৪জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি।।
🙏🙏 সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি,সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য, আমি যেনো আমার বাবা- মায়ের প্রত্যক্ষ সাপোর্ট পেতে পারি এবং একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে আরো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি।
আমি একজন উদ্দোক্তা
বতর্মানে কাজ করছি -হ্যান্ডপেইন্ট শাড়ি পাঞ্জাবি নিয়ে।
ওনার অফ-Sumaya's unique Creations
😍😍কৃতজ্ঞতা প্রিয় স্যারের প্রতি, এত সুন্দর একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দেওয়ার জন্য। মহান আল্লাহ তা'আলা প্রিয় স্যারকে সুস্থতার সাথে দীর্ঘ নেক হায়াত দারাজ করুন।🙏🙏🙏
সেই সাথে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার সেই প্রিয় ভালোবাসার মানুষ, আমার হাজব্যান্ডকে যিনি আমাকে প্লাটফর্মে যুক্ত করে দিয়েছেন এবং এখনো পর্যন্ত লেগে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন।
🤲🤲প্রিয় ভালবাসার প্ল্যাটফর্মের সকলের জন্য দোয়া শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রেখে সেইসাথে সকলের সুস্বাস্থ্যএবং দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করে বিদায় নিচ্ছি। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই। আমার উদ্দোক্তা জীবনের গল্প লেখার ইতি এখানেই টানছি আজকের মতো।
🥰🥰সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ গল্পটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য 🥰🥰
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৬৯
Date:- ০৯/১১/২০২১ ইং
সুমাইয়া সুলতানা
ব্যাচ- ১৫
রেজিষ্ট্রেশন -৬৮৯৪৯
জেলা -শরীয়তপুর
থানা -ডামুড্যা