❣️আমার রাজার ভালোবাসার ঘরে , আমি রাণীর মতো থাকতে চাই। বরকে ছোট করে চাকরাণীর মতো নই। হোক না সে আমার কুঁড়েঘর ❣️
আমার জীবনের গল্প#
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম,
আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ,
সুপ্রিয় ভাই ও বোনেরা সবাই কেমন আছেন? আমি আলহামদুলিল্লাহ চমৎকার ভালো আছি,
শুরুতেই সকল প্রশংসা জ্ঞাপন করছি মহান আল্লাহ পাকের প্রতি, যিনি আমাকে দয়া করে আপনাদের সকলের ভালোবাসার সান্নিধ্য পেয়ে আজকে এখানে উপস্থিত হওয়ার তৌফিক দান করেছেন বলছি আলহামদুলিল্লাহ,,
কৃতজ্ঞতায় নুইয়ে যাওয়া অন্তরের অন্তস্থল থেকে কোটি কোটি শ্রদ্ধায় নত এই আমি কে যে বাবা-মা এই সুন্দর ধরণী দেখবার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের প্রতি অশেষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
-আজীবনের কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা
অফুরন্ত ভালোবাসা ও নিরন্তর ও দোয়া কামনা করছি আমাদের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি। যিনি আমাদের নিজ পরিবারের পরেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও বৃহৎ পরিবার একটি পরিবার উপহার দিয়েছেন। নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
যাঁর পথ অনুসরণ করে প্রতিদিন অগণিত পরিবারের মুখে ফুটছে তৃপ্তির হাসি। প্রতিদিন হাজারো তরুণ তরুণীর বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বনির্ভর বা আত্মনির্ভরশীল হয়ে সমাজ ও দেশের জন্য বয়ে আনছেন সম্মান আর বৈদেশিক মুদ্রা।
আমার দেশের হাজারো মোটিভেশনাল স্পিকারের মধ্যে আমার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ মোটিভেশনাল স্পিকার শতাব্দীর সেরা মানব, তরুণ প্রজন্মের আইডল, তরুণ-তরুণীদের উদ্যোক্তা গড়ার কারিগর প্রিয় Iqbal bahar zahid স্যার।
অনেক কিছুই করি
ইদানিং অনেক সাহস করি
একটু এগিয়ে যাওয়া বুঝতে পারি
পিছিয়ে পড়ার কারনটাও জানতে পারি
শিখার অনেক কিছু প্রয়োগ করতে পারি
আমি বিশ্বাস করি এগিয়ে যাওয়ার অনেক শিক্ষা পেয়েছি নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন থেকে।
প্রিয় মেন্টর Iqbal Bahar Zahid স্যার এই ফাউন্ডেশন এর জন্য নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
অনেকেই স্বপ্ন দেখাতে পারে, কিন্তু তা বাস্তবায়নে সঠিক, সহজ দিক নির্দেশনা এবং বাস্তব ভিত্তিক অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ আমাদের প্রিয় স্যার ইকবাল বাহারের দ্বারাই সম্ভব।
প্রিয় স্যারের প্রতিটি কথা, কাজ সবসময় আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে ভালো মানুষ হওয়ার।
স্যারের ব্যক্তিত্ব, নানাবিধ সামাজিক উদ্যোগ ও কর্মকান্ড অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও শিক্ষনীয়।
এই ফাউন্ডেশন এর দায়িত্ব প্রাপ্ত সম্মানিত প্রিয় ভাইবোনসহ আমার শুভাকাঙ্ক্ষী সবার প্রতি সম্মান, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও অফুরন্ত শ্রদ্ধা জানাই যাঁরা আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে দিন রাত সীমাহীন অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের কে উৎসাহ ও কাজ শিখিয়ে যাচ্ছেন।
আমি যা পেয়েছি ভালোবাসার এই ফাউন্ডেশনে
ফাউন্ডেশন এর প্রিয় ভাইয়া ও আপুদের লেখা পড়তে পড়তে নিজেকে নিজে বুঝতে পেরেছি, চিনতে পেরেছি, নিজের সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু আবিষ্কার করতে পেরেছি, যা আগে কখনো জানাতামই না। সাহস করে মুখে যা সবার সামনে বলতে পারতাম না, এখন আমার লেখার মাধ্যমে আমি যা জানি সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারছি।
"পথ পথিকের সৃষ্টি করে না , পথিকই পথের সৃষ্টি করে।"
"হাতে কাজ করায় অগৌরব নাই , অগৌরবমিথ্যায় মূর্খতায় ।" সদুপায় এবং কাইক শ্রমের মাধ্যমে জীবিকা অর্জন মহত্বের লক্ষণ । যদিও আমাদের দেশে কায়িক শ্রম কে শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয় না। যা আমাদের সংকীর্ণ দৃষ্টি ভঙ্গি ও মূর্খ তার ই প্রমাণ ।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ই একটি করে গল্প থাকে, তেমনি আমার জীবনেও নিজের বলার মত একটি গল্প আছে যা আপনাদের আজ ভালোবেসে শোনাতে চাই,
সন্তানের কাছে প্রত্যেক বাবা মা ই শ্রেষ্ঠ, আমার কাছেও আমার বাবা-মা মানে এক পৃথিবী ভালোবাসা।
" আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে ।""
বহুদিন পরে কবির বাণী আমার হৃদয় গহীনে আঘাত করতে লাগলো। আমি আমাদের এই প্রিয় পরিবারে নিজেকে নতুন রূপে নতুন ভাবে খুজে পেলাম।
আমি কারোর মা, আমি কারো বোন আমি কারো স্ত্রী।
এরপরেও আমার একটি বিশেষ পরিচয় থাকা দরকার।
এই মহা উপলব্ধিবোধ প্রিয় পরিবারে যোগ হয়েছে বিধায় জাগ্রত হয়েছে । আমি নারী ,আমার একটি প্রয়োজনে হোক অপ্রয়োজনে হোক পরিচয় থাকা উচিত ।
"তৃষ্ণার জল যখন আসার অতিত হয়
মরীচিকা তখন সহজেই ভোলায় "
স্বপ্ন দেখছি একজন ভালো মানুষ হবো , স্বপ্ন দেখছি একজন মানুষ হবো । মেয়ে মানুষ নয় একজন মানুষ হবো ।
"" কালো আর ধলো বাহিরে কেবল ,
ভিতরে সবার সমান রাঙ্গা"
জীর্ণ লোকাচার ও কুসংস্কার জাতিকে প্রগতি বিমুখ করে তোলে । আর প্রগতি চেতনাশূন্য জাতি জীবন বিকাশের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় ।
নারীর জন্য কবি নজরুল তাঁর কবিতায় লিপিবদ্ধ করেছেন"
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর ।""
অনেকের গল্প আমার হৃদয়ের গহীনে আমার আমিকে জাগিয়ে তুলিয়াছে । আমি অনেক নারীর গল্পে অশ্রু বিসর্জন করেছি। তাহাদের গল্পে আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে । আমাকে নতুন করে চিনতে শিখিয়েছে । আমি বুক ফুলিয়ে আমি মাথা উঁচু করে আমি আমার পরিচয় দিতে চাই। আমি নারী আমি পারি । নারীকে অযোগ্য ও অকর্মণ্য ভেবে তাদেরকে গৃহবন্দী করে রাখা ঠিক নয় । জাতি গঠনে পুরুষের মতো নারী ও যে অবদান রাখতে পারে উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালেই তার প্রমাণ মেলে ।
🌹 আমার পরিচিতি
আমি নাসরিন ইসলাম রিতা, প্রানের শহর বগুড়া জেলার যমুনা নদীর কোল ঘেঁষা সারিয়াকান্দি উপজেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা একটি মেয়ে । আর দশটা মেয়ের মতোই আমার বেড়ে ওঠা প্রকৃতির কোলে লালিত-পালিত হলাম। পল্লী মা আমাকে যত্ন করে বড় করে তোলেন। বহতা নদীর মতো বহিয়া গেলাম তা বর্ণনা করতে পারবো না ।আমার বাবা একজন কৃষক ও ব্যবসায়ী ছিলেন আমার বাবার ১০০ বিঘা জমি ছিল না আবার অঢেল সম্পদ ও ছিলো না ।কিন্তু অনেক বড় পরিশ্রমী মনোভাবাপন্ন একটি সুন্দর মন ছিল । উদারতা ও মহানুভবতার প্রতিক নিয়ে ন্যায় পরায়নতার সহিত সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য প্রবল ইচ্ছা শক্তির ধারক ও বাহক ছিলেন। আমাদের এলাকায় বেশ সুনাম রয়েছে আমার প্রিয় বাবার।
আমাদের যৌথ পরিবারে দাদা দাদি চাচা চাচি মা-বাবা ভাই বোন কে নিয়ে আমাদের যৌথ পরিবারটি ভালবাসায় ভরপুর ছিল।
আমরা তিন ভাই বোন , আর চাচাতো এক ভাই । আমার বড় ভাই, একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার , বর্তমানে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের হেড অফিসে কর্মরত আছেন। আমি মেজো প্রাইমারিতে শিক্ষকতা করছি আর ছোট ভাই একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা । আমার চাচাতো ভাই ও গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত আছেন । তিন ভাইয়ের অনেক আদরের একটি বোন আমি, সোনার চামচ মুখে নিয়ে না জন্মালে ও ভালোবাসার কমতি ছিল না মোটেও। তবে আমার ছোট ভাইটির সনে আমার সবসময় খুনসুটি লেগেই থাকতো।
🌹 আমার শৈশব ও কৈশোর,🌹
একজন ব্যক্তির জীবনে সবচেয়ে মধুময় অধ্যায় হচ্ছে তার শৈশব । ছোট ছোট ঘটনা গুলো মিলে তিনি সাজিয়ে থাকেন তার শৈশব । ছোটবেলায় কত আনন্দ আয়োজনের মাধ্যমে বড় হয়েছি তা আধুনিক প্রজন্মের মানুষের কাছে কল্পকথা ছাড়া কিছুই নয় ।
যেখানে মানুষ এখন এন্ড্রয়েড সেট ছাড়া কিছু বোঝে না কম্পিউটার ছাড়া কিছু বোঝে না সেখানে এই বালিকার বেড়ে ওঠার গল্প টা তাদের কাছে মনে হবে অনেক আজব গল্প ।
আমার বাবার নাম বাদশা ,বাদশাহী না থাকলে ও বাবার রাজকন্যা ছিলাম আমি আর মমতাময়ী মায়ের আদলে , দাদী ও মায়ের মতো চাচীর স্নেহের পরশে এবং আমার চাচা গ্রামের হাঁট থেকে গুড় মাখানো নই (মিষ্টি খাবার) তিলের খাজা, কটকটি , পিঁয়াজু এগুলো এনে আমার হাতেই দিতো, আর আমার দাদী বলতো নাও আমার বেটার ছোট মাও তুমি এগূলো সবাই কে ভাগ করে দাও । আমি ও লক্ষী মেয়ে হয়ে সবাই কে বিলিয়ে দিয়ে এই মুখে দিতে নিয়ে ই আমার ছোট ভাই এসে ছো মেরে কেড়ে নিয়ে দে দৌড়,,,,
আমাদের বাড়ির সামনে একটি সান বাঁধানো পুকুর আছে, এভাবে আমাকে পুকুরের চারিদিকে কত বার যে আমার ছোট্ট ভাই টি আমাকে ঘুরপাক খাইয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই।🥲 তবে ওকে বড্ড বেশি ভালো ও বাসি ।
সারাদিন হৈ হুল্লোড় সময় অসময়ে পুকুরে গোসল করা, অনেক ধরনের খেলা সেটা আমাকে কারণে অকারণে আনন্দ দেয় । পাড়ার অনেক ছেলে মেয়েরা আসতো আমাদের পুকুরে গোসল করতে । একসাথে হই হুল্লোর করতাম আমার মায়ের হাতে কত বকুনি খেয়েছি তার হিসাব করতে পারবোনা ।
পুরনো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায় ।
পুরনো দিনের কথা চাইলেই ভুলা যায় না। আমরা অনেকে মিলে বউ-জামাই খেলতাম । সবার কাছ থেকে চাঁদা উঠিয়ে বিয়ের আয়োজন করতাম । আমাদের মাঝে কেউ বরপক্ষ থাকতো কেউ কন্যাপক্ষ থাকতো । মাঝে মাঝে এ খেলায় বড়রাও যোগ দিত। এই মিছে মিছি খেলাতে মাঝে মাঝে বাড়িতে বিশাল খাবারের আয়োজন হতো।
আমি যখন নিরবে থাকি তখন স্তৃতি আমার মন মন্দিরে এসে উঁকি দিয়ে যায়।
এসব খেলা এখন আর নেই ।
, বিকেল বেলা বাড়ির উঠোনে কানামাছি খেলা, দাড়িয়া বান্ধা খেলা , চড়ুইভাতি খাওয়া,ঐ দিন গুলো তে আমাদের ভাই বোন দের মধ্যে ভাতৃত্ববোধের বন্ধন টা আরো মজবুত করতো ,যেমন ।
একসাথে আমরা যৌথ পরিবার ছিলাম । সকালবেলা আমরা চাচাতো ভাই বন্ধুরা মিলে একসাথে খেতে বসতাম । যৌথ পরিবারে একসাথে খাবার স্বাদটাই আলাদা । আজ একক পরিবারের সে আনন্দ পাওয়া যায় না । অনেক রান্না হতো কিন্তু হিসাবের বেলায় কখনো বেশি পাওয়া যেত না । অনেকগুলো খাবার একসাথে বারা হত। ভাত তরকারি দিয়ে সাজানো হতো তারপর একেক করে আমাদেরকে দিত। আমরা তাকিয়ে দেখতাম কার থালায় কি কি আছে। মাঝে মাঝে ঝগড়া বেধে যেত পানির গ্লাস নিয়ে।
দু একটা চড় থাপ্পড় ও খেয়েছিলাম বোধহয় ভাইয়ার হাতে । আজ সেগুলো মনে পড়লে বেশ হাসি পায়। কোন এক অনুষ্ঠানে বা ঈদ আনন্দ আয়োজনে আমরা একসাথে হই সেই গল্পগুলো আবার উঠে আসে। আবার আনন্দ হয় । যারা যৌথ পরিবারে আছেন তারা বিষয়টি ভালোভাবে বোঝবেন ।
ফজরে কে কার আগে উঠে পাল্লা দিয়ে জোরে জোরে শব্দ করে পড়তে পারে । আর শীতের কুয়াশামাখা সকাল টা শুরু হতো আমার দাদীর হাতের তৈরি মুড়ি মুড়কির সহিত,এভাবেই দুরন্তপনায় কেটেছিল আমার শৈশব ও কৈশোর ।
একজন ব্যক্তির জীবনে সবচেয়ে মধুময় অধ্যায় হচ্ছে তার শৈশব ।
🌹 আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায় 🌹
আমার প্রাইমারি ও হাইস্কুল আমাদের ওখানে ই। ।
কথায় আছে মেয়ে মানুষ বড় হতে কত দিন ।
রইল না রইল না মোর নানান রঙের দিনগুলি।
আমি বড় হয়ে গেলাম । প্রাইমারি বিদ্যালয়ের গল্পটা আজ না হয় গুছিয়ে রাখলাম অন্য কোন গল্পে গল্প করা যাবে । মাধ্যমিক বিদ্যালয় টা আমার কাছে অন্যরকম।
ওখান থেকে আমার নেতৃত্ব শিখেছি । সব সময় দায়িত্বভার আমার কাঁধে এসে পড়তো। এভাবেই আমার মাধ্যমিক বিদ্যালয় টি আমার ভালো লাগার জায়গায় আসন করে নিল। মেয়ে মানুষ হয়েছি । বড় হয়েছি ।
এভাবে ই জীবনের ১৬টি বসন্ত পেরিয়ে আমি যখন
এস এস সি পরীক্ষার পর স্কুলের গণ্ডি পার করে সবে মাত্র কলেজে পা রাখি, ঠিক তখনই আমার দাদী ও নানী তাদের পছন্দের পাত্র সৌদি আরব প্রবাসী এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার সাথে আমার বিয়ে দিয়ে দেন। আমি যেহেতু আমার বাবার একমাত্র মেয়ে ছিলাম, তাই
কিছু টা মনোমালিন্য বাবার ছিলোই। কিন্তু আমার দাদীর মুখের উপর কোন কথা বলতে পারতেন না।
আমার বাবা ও বড় ভাই আমার উপরে ও ভীষণ মন খারাপ করেন, আমি কেন রাজি হলাম, আর আমি তো তখন অনেক কিছুই বুঝতাম না।এটাই আমার দোষ। তখন আমার অনেক কষ্ট হতো, তবে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন গুলো আমায় অনেক ভালোবাসতো এবং এখন ও বাসে, এখানে আর একটা কথা, আমার বরের বড় ভাই আমার বিয়ের মেইন ঘোটক ছিলেন।
কিন্তু আমি তো তখন রঙিন প্রজাপতির ডানায় ভর করে উড়ছি, নতুন বউ অনুভূতি ও আলাদা। বিয়ের ৩ মাস পরে ই আমার প্রবাসী বর আমায় ছেড়ে পাড়ি জমান মরুর প্রান্তরে। তখন আমি ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা
ছিলাম,ঐ অবস্থায় আমি আবার সারিয়াকান্দি ডিগ্রী কলেজে যাওয়া আসা করতে থাকি, যথাসময়ে আমার
মাতৃত্বকালীন মমত্ববোধ থেকে মাতৃত্বের স্বাদ নিয়ে মা রুপে নতুন জন্ম হলো।কোল আলোকিত করে
জন্ম নিলো আমার রাজকুমার। এতো দিনে আমার বাবার ও বড় ভাই এর রাগ কমেছে,নাতীর মুখ দেখে
সব অভিমান ভুলে কালেমা ও আযানের পবিত্র ধ্বনি
কানে শুনিয়ে কোলে তুলে নেন আদরের একমাত্র নাতি
কে।
🌹 অভিমানী সহযোদ্ধা 🌹
ওদিকে আমার প্রবাসী বর মহাশয় তো বাবা হওয়ার খুশিতে আত্মহারা,সে অনেক কথা,,,,,,। কিছুদিন পর আমি আবার পড়াশোনা শুরু করলাম, আলহামদুলিল্লাহ,এইচ এস সি পরীক্ষা দিয়ে ভালো ভাবে পাশ করলাম। সাপোর্ট হিসেবে আমার দাদী আমার সাথে ই ছায়ার মতো পাশে থাকেন সবসময় ।এদিকে ছেলে ও বড় হচ্ছে,মা ছেলের পড়ালেখা ও চলছে আমি ও বগুড়া শহরে চলে আসি এবং বগুড়া জেলার সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে বাংলায় অনার্সে ভর্তি হই,এরই মাঝে আমার প্রাণ প্রিয় বর এসে ৩ মাস ছুটি কাটিয়ে ও ছেলে কে দেখে আবার পাড়ি দেন সুদুর প্রবাসে। ছেলে তার বাবা কে অনেক মিস করতে থাকে, এবং আমায় বলে মা মনি সবাই তো তাদের বাবার হাত ধরে স্কুলে আসে, তবে আমার বাবা কেন আমাদের কাছে থাকেনা!😢 মনে অভিমান নিয়ে
তখন আমি অনেক কান্না করতাম আর বলতাম, বাবা তোমার বাবা তো রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তোমার ভালো র
জন্যই তার এতো এতো ত্যাগ, তোমাকে ভালোভাবে লেখা পড়া শিখে ভালো মানুষ হতে হবে, বাবার কষ্ট বুঝতে হবে।
আমার ঘরে রাজকন্যা ও এসেছে। তবে আমার দাদী কে হারিয়ে ফেলেছি 😥 আমার আদরীনি শ্বাশুড়ি মা ও আমার সাথে থাকেন, আমাকে অনেক ভালবাসেন । আমি ও মাকে ভালো রাখার চেষ্টা করি ।আমি পড়ালেখা শেষ করে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করছি, আমার যোদ্ধা বরের ভালো বাসা নিয়ে ছেলে ও মেয়ে কে ওদের বাবার অভাব কিছু টা লাঘব করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে আজ অব্দি । আমার চাকরি বাচ্চাদের পড়ালেখা সব মিলিয়া একেবারে হিমশিম খেতে হয় মাঝে মাঝে। এ রকম হাজারো সুখ দুঃখ নিয়ে ই ভালো থাকি আমরা যোদ্ধা পরিবার গুলো । স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ছেলেও আজ ভার্সিটিতে পড়ছে,আর আমার ছোট্ট রাজকন্যা ও ক্লাস নাইনে পড়ে। ওরা আমাকে অনেক কেয়ার করে, একটু খারাপ লাগলে, কাছে এসে বসে, গাঁয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, আলহামদুলিল্লাহ।
সব মিলিয়ে ভালো ই চলছিল, আমার ছোট্ট
ভালোবাসা ময় সংসার।
হঠাৎ করোনা মহামারী পরিস্থিতি সব লন্ডভন্ড করে দেয় আমার সাজানো পৃথিবী,বরের কোম্পানি ধসের মুখে পড়ে বেতন বন্ধ হয়ে যায়,, আমি তখন শক্ত হাতে হাল ধরে সবকিছু সামলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি আর আমার ভাঙ্গা চূড়া মন ওয়ালা বরের মনোবল বাড়ানোর সাহস যোগাতে থাকি । যদিও আমার ভাইয়েরা যথেষ্ট হেল্প ফুল । কিন্তু আমি আমার বর কে কারো কাছে ছোট করতে পারবো না। হোক না সে আমার ভাই বা বাবা ।
❣️আমার রাজার ভালোবাসার ঘরে ,
আমি রাণীর মতো থাকতে চাই।
বরকে ছোট করে চাকরাণীর মতো নই।
হোক না সে আমার কুঁড়েঘর ❣️
এদিকে ছেলের পড়ালেখার খরচ, মেয়ের লেখাপড়ার খরচ, সংসারের খরচ,সব মিলিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি,
আমার স্কুল ও বন্ধ, একদিন ফেসবুক অনলাইন বিজনেসের দিকে নজর পড়ে আমার । প্রিয় স্যারের সেশন গুলো দেখতাম আর শুনতাম,
কিন্তু কিভাবে কি করবো তা ভেবে পাই না।
শুধু ভাবতাম, আমার প্রবাসী যোদ্ধার সহ যোদ্ধা হয়ে
এগিয়ে যেতে হবে আমাকে।
প্রিয় স্যারের অমিয় বাণী,,,,,,
সাহস করুন, স্বপ্ন দেখুন
লেগে থাকুন
সফলতা আসবে ই ইনশাআল্লাহ 💞
💞তো এ ভাবেই আমার উদ্যোক্তা জীবনে পা রাখা, আমি প্রথমে কয়েক পিচ থীপিচ নিয়ে কাজ শুরু করি,
নিজের আত্মীয় স্বজনের মধ্যে ই আমার বেশিরভাগ সেল হয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমার অনলাইন ও অফলাইনে দুই জায়গাতেই ব্যবসা চলছে ইনশাআল্লাহ। আমার মাধ্যমে আরো দুইজন মহিলার
কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।।আর আমার রেমিট্যান্স যোদ্ধা বর ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে আলহামদুলিল্লাহ
নিজের বলার মত একটি গল্প ফাউন্ডেশনের একজন গর্বিত সদস্য।।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৬৫
Date:-০৪ & ০৫/১১/২০২১ইং
নাসরিন ইসলাম রিতা
পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা
ভালোবেসে কাজ করছি মেয়েদের বাহারি পোশাক নিয়ে।
🌹 আমার ব্যাচ নাম্বার ১৫
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার,৭১০০৫
জেলা বগুড়া
উপজেলা সারিয়াকান্দি
বর্তমানে অবস্থান করছি বগুড়া সদরেই।
ব্লাড গ্রুপ বি পজেটিভ।
আমার জীবনে চলার পথে আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা এবং সাপোর্ট ভীষণ প্রয়োজন
এতক্ষণ ধরে আমার পোস্ট টি ধৈর্য্য সহকারে পড়ার জন্য সবাইকে অশেষ শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা।