জিবন কত বৈচিত্রময় সেটা মধ্যবিত্ত হলেই টের পাওয়া যায়।
" বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
#আসসালামু_আলাইকুম_ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
☝🏿☝🏿সকল প্রশংসা মহান রবের জন্য, যিনি সৃষ্টি করেছেন! পৃথক করেছেন আসমান ও জমিন। এ কঠিন বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যে আমাদের সুস্থ রেখেছেন! আলহামদুলিল্লাহ ☝🏿☝🏿
💘💘 দুরুদ ও সালাম পেশ করছি বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি যাঁর প্রতি নাযিল হয়েছে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন 💞💞
💘💘 হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি বাংলাদেশ নামক ছোট্ট "ব" দ্বীপে জন্মগ্রহণকারী এক সূর্য সন্তান এর প্রতি, যাঁর আলোয় আলোকিত হয়ে নিজেকে সমাজের বুকে ভালো মানুষ হিসেবে,সফল উদ্যোক্তা হিসেবে, আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে হাজারো যুবক, যুবতী, তরুণ, তরুণী। যিনি দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ হয়ে অধিক জনসংখ্যার এই দেশে যুব সমাজ কে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একটি স্লোগান!চাকুরী করবো না, চাকুরী দিব!! সেই লক্ষে তিনি গড়ে তুলেছেন *নিজের বলার মত একটা গল্প প্লাটফর্ম*। সেই মহান শিক্ষক, জাতির শ্রেষ্ঠতম সন্তান,আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। আমাদের উপহার দিয়েছেন এমন একটি যৌথ পরিবার,যে পরিবারের আশ্রয়ে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে অসংখ্য দেশ প্রেমিক ভালো মানুষ, একটি সুশীল সফল উদ্যোক্তা সমাজ।💕💕
💘অন্তর থেকে ভালোবাসা ও সম্মান জানাই তারুণ্যের অহংকার, বাংলা-মায়ের গর্বিত সন্তান সম্মানীত কোর ভলেন্টিয়ার এবং মডারেটর ,একজন হৃদয়বান সৎ মানুষ, জনাব আব্দুল করিম মুন্না ভাইয়ের প্রতি,যার উদারতা ও মহানুভবতায় একজন সন্তান ফিরে পেয়েছে হৃদয়বান পিতাকে, একটি পরিবার ফিরে পেয়েছে তার প্রিয় অভিভাবক কে।💕
💘কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সেই সকল ভালো মানুষদের প্রতি, যাদের ভালোবাসা উৎসাহ উদ্দীপনায় আমি নিজের জীবনের গল্প লেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।💕
♻️সময়ের সাথে জীবন চলমান, প্রতি নিয়ত সেখানে তৈরি হচ্ছে অসংখ্য গল্প! আমি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ও চলমান ঘটনাবলী থেকে সামান্য এক খন্ড আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আশা রাখি আপনারা পড়বেন, আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন একজন পরিপূর্ণ ভালো মানুষ হতে পারি ,হতে পারি একজন সফল উদ্যোক্ত।✌️
👉**জীবন গল্পের খন্ড চিত্র **👈
🔏🔏 আমি ইমরান হোসেন কিবরিয়া, সকলে আমাকে কিবরিয়া ইমরান নামে চেনেন! জন্মেছি ১৯৮৯ সালে ২রা ফেব্রুয়ারী যশোর জেলার, অভয়নগর উপজেলার,দিঘলিয়া নামের সবুজে ঘেরা গ্রামের মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে। আমরা ২ ভাই ২ বোন, বড় দুই বোনের জন্মের পর অনেক প্রার্থনা ও সাধনার পর জন্ম হয় আমার, তাই খুব আদর,স্নেহময় ছিল আমার জীবন।
♻️মায়ের কাছে হাতেখড়ি নিয়ে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার শিক্ষা জীবন শুরু, মায়ের একান্ত অনুগত ছাত্র হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষা জীবনে আমি বরাবর ২ স্থান অধিকার করতাম।
♻️এরপর ভর্তি হই স্থানীয় পায়রাহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। কৃষক পরিবার হলেও বাবা বরাবর ব্যবসায়ী ছিলেন, যদিও তিনি কখনো শ্রম আর আদর্শনুযায়ী সেরকম সফলতা পাননি, তবুও তিনি চেষ্টা করেছেন, প্রচুর পরিশ্রম করেছেন, যার জন্য তিনি আমাদের সময় দিতে পারতেন না। আমিও বড় হতে থাকি, মায়ের আঁচল ছেড়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকি, বন্ধুর সংখ্যা বাড়তে থাকে, লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়ি,যার জন্য SSC পরিক্ষায় মোটামুটি একটা রেজাল্ট করে কলেজে ভর্তি হই। এই সময়ে আমি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি। বাবার ব্যস্ততার সুযোগে অবাধ্যতার চরমে পৌঁছে যাই,যদিও মা কড়া শাসন করতেন! কিন্তু আমি ছিলাম চালাক,আর মায়ের চোখ ফাঁকি দেওয়ার উস্তাদ! এভাবে HSC পাস করার পর আমার সাথে বাবার বিভিন্ন বিষয়ে মতের অমিল! হঠাৎ করে বাবার অতি শাসন আমি মেনে নিতে পারিনি, তাই রাগ করে ঢাকায় চলে আসি, বহু কষ্টে একটি গার্মেন্টসে চাকুরী জোগাড় করি, কিন্তু প্রথম দিন থেকেই আমার মন কাঁদতে থাকে মায়ের জন্য। আমি রাতে ঘুমাতে পারিনি কখনো, দুই মাস ঢাকায় ছিলাম আমি, কখনো একটি বারের জন্য বালিশে মাথা রাখেনি!
♻️আসলে ঢাকায় আসার পর একাকি নিঃসঙ্গতা, খাটহীন বিছানা, স্বাদহীন খাবার,অপরিচিত জায়গায় খালি পকেট,জীবনের কঠিন বাস্তব শিক্ষা দেয়।
মায়ের অভাব আমাকে পোড়াতে থাকে।
♻️সারাদিন কাজের শেষে আমি ঘরে ফিরে যখন নিজেকে একা আবিস্কার করতাম শুন্যতায় বুকটা হাহাকার করে উঠতো এই ঘরে মা নেই! মনে পড়তো মায়ের সেই হাসি মাখা মুখ,বাড়ি ফিরতে দেরি হলে মায়ের সেই ব্যাকুলতা, অশ্রু সিক্ত মায়ের চোখ আমি কত যে মুছে দিয়েছি বড় হবার ভানকরে। আমার চিন্তায় মা কেঁদেছে,আমাকে বকা দিয়েও মা লুকিয়ে কেঁদেছে! আমি চলে এলাম সেটাও মাকে কাঁদিয়ে! কিন্তু বিশ্বাস করো "মা" আমি তোমায় কখনো কাঁদাতে চাইনি! তোমায় খুব ভালোবাসি "মা"সেটা বোঝাতেই পারিনা, শুধু কাঁদিয়েছি! কিভাবে প্রকাশ করবো সেই অনুভূতি?
আমার যে কান্নায় দুটো চোঁখ ভিজে যাচ্ছে! দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে! "মা- মাগো " অনেক মনে পড়ছে তোমায়! কতদিন তোমার বকুনি শুনিনা! তোমার হাতের পিটুনি টা খুব মিস করছি মা!।৷৷
♻️আজ কেন নিজেকে অপরাধী লাগছে সেই ত্যাগী বাবার কথা মনে করে,যে বাবা আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে বলে কখনো ঘুরতে নিয়ে যাইনি। যার উপর রাগ করে আজ বালিশ বিহীন, খাট হীন ঘরে শুয়ে আছি! তাঁর কথা মনে করে কেন বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে? আহ,"বাবা" তুমি তো সেই মানুষ যে দিন-রাত পরিশ্রম করে একটি যৌথ পরিবারের সবাই কে খুশি রাখতে চেয়েছিলে!সবার চাহিদা পুরণ করতে নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখতে! তারা কেউ বোঝেনি তোমায়,সবাই স্বার্থ দেখেছে! আজ খুব মনে পড়ছে তোমায় "বাবা" ব্যস্ততার কারনে বাড়িতে তিন বেলা খেতেও পারতে না তুমি! তোমার কোন ছুটির দিন দেখেনি আমি! তাইতো আমায় নিয়ে ঘুরতে যেতে না পারলেও কোন অভাব আমাদের পরিবারকে স্পর্শ করতে পারেনি! আমার কোন চাহিদা তুমি অপূর্ণ রাখনি। মনে পড়ছে সেইসব দিন গুলো বাবা, আমি অসুস্থ হলে তুমি আমায় ঘাড়ে তুলে দুই/ তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যেতে, আবার ঘাড়ে তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরতে, কখনো মাটিতে রাখতে না! কত রকমের সুস্বাদু খাবার আনতে আমার জন্য, আমি যে তোমার বহু কাঙ্খিত বড় আদরের সন্তান।" বাবা " আজ খুব মনে পড়ছে তোমায়! আমার ঘুরতে যাওয়ার বাহানা পূরণ করতে না পেরে কতটা কষ্ট তুমি পেয়েছো! আমার অবাধ্যতায় কতটা আঘাত পেয়েছো! ছোট বেলায় মাকে হারিয়ে যে পরিবারকে আকড়ে ধরে তুমি সুখী হতে চেয়েছো,সেই পরিবারের সবাই তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে! সেই সাথে আমিও! তুমি কখনো সুখ পেলে না বাবা! অথচ তুমি ছিলে দায়িত্বশীল হৃদয়বান। তোমায় শুধু কষ্ট দিয়েছি! আমি অপরাধী বাবা। আজ খুব বলতে ইচ্ছে করছে! তোমায় ভালোবাসি "বাবা" সত্যিই তোমায় খুব ভালোবাসি! আমি তোমার আদরের সন্তান।
নিজের ভুল বুঝতে পেরে ২ মাস পর ঢাকা থেকে ফিরে আসি মায়ের কোলে!সেদিন "বাবা" আমায় জড়িয়ে ধরে কান্নায়
ভিজিয়ে দিয়েছিল! আজ প্রথম বাবাকে কাঁদতে দেখলাম।
আমি বাড়ি ফিরে ভর্তি হই নওয়াপাড়া সরকারি কলেজে বি এস এস কোর্সে। এই সময়ে এলাকার এক বড় ভাই আমায় পারটাইম কাজ হিসেবে রেজিস্ট্রী অফিসে টাইপিং কাজ দেয় যদিও বেতন ছাড়া!। কলেজে ১ম বর্ষটা ভালোভাবে শেষ করি,২য় বর্ষে পড়াকালীন সময়ে একদিন বাবা ঘাড়ের ব্যাথা নিয়ে ঘরে ফিরে, সেই থেকে দীর্ঘদিন বাবা অসুস্থ ছিলেন, বাবার চিকিৎসা করাতে বেশ টাকা ব্যায় হয়, পরিবারে দেখা দেয় অভাব। তখন আমি বুঝতে পারি নিজের কিছু একটা করতে হবে, আমার পরিবারের প্রতি দায়িত্ব আছে! তাই আমি ফুলটাইম রেজিস্ট্রী অফিসের কাজে লেগে পড়ি। সময়হিন কাজ করে বাড়ি ফিরতাম সামান্ন কিছু টাকা নিয়ে ! সেই টাকা আমি মায়ের হাতে তুলে দিতাম, মা আমাকে বুকে টেনে আদর করতো, আমার মাথায় হাত রেখে দোয়া করতো, হৃদয় শীতল হয়ে যায়। বাবা সুস্থ হয়ে লেগে পড়ে ধান ও মাছ চাষ প্রজেক্ট হাতে নিয়ে,এবার বাবা মোটামুটি লাভের মুখ দেখতে পায়! আমি আবার লেখা পড়ায় মন দেই, এই সময়ে আমি ভুল করে ফেলি, ঘটে যায় একটি দুর্ঘটনা, হারিয়ে ফেলি সবচেয়ে কাঙ্খিত প্রিয় মানুষটিকে! চিরচেনা নিজেকেই আমি চিনতে পারেনি, ডুবে যাই অন্ধকার অতল সাগরে! হতাশা একটি মানুষকে এভাবে শেষ করে দিতে পারে? জীবন থেকে হারিয়ে যায় একটি বছর! কর্মসংস্থানহীন একটি রাষ্ট্রে বেকারত্ব কি অপরাধ? তাহলে আমি সত্যিই অপরাধী!! আহারে জীবন! সেদিন যদি প্রিয় মেন্টর # ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার# এর মত একজন শিক্ষক পেতাম! আমাকে প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা সইতে হতো না!! বুক ফুলিয়ে বলতে পারতাম আমি বেকার নই, আমি একজন উদ্যোক্তা, আমার আছে ৫ লক্ষের অধিক ভোক্তা পরিবার,হায় আফসোস!!
♻️বেকারত্বের সেই গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে রেজিস্ট্রী অফিসের সেই বড় ভাইয়ের কথা মত বাবাকে বুঝিয়ে একটা মোটা অংকের টাকা নিয়ে সেই ভাইয়ের হাতে তুলে দেই, আমার দলিল লেখক লাইসেন্স পাওয়ার জন্য। তিনি সেটা আর করে দেননি! মাসের পর মাস আমাকে ব্যবহার করে অবশেষে বের করে দেন অফিস থেকে!! আমি পুর্বে নেওয়া টাকার সাথে আরও কিছু টাকা বাবার থেকে নিয়ে তুলে দেই একই অফিসের আরেক বড় ভাইয়ের হাতে। তিনিও শুরু করেন বিভিন্ন তালবাহানা,আসলে দুজনেই আমাকে শুধু প্রয়োজনে ব্যবহার করেছে। আমার টাকায় নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েছে। আমি সরল মনে মানুষ বিশ্বাস করি সেটাই আমার অপরাধ। অবশেষে আমি বহু কৌশল করে টাকা ফেরত নিয়ে নিজেই নেমে পড়ি পথের খোঁজে!এ যুদ্ধ আমার! আমাকে জিততেই হবে আমি পারবো, এই বিশ্বাস নিয়ে চেষ্টা করি আল্লাহর রহমতে সফল হই। যদিও তাঁরা আমাকে নিয়ে জল কম ঘোলা করেনি! তবুও আমি একা লড়াই করার সাহস রেখেছি, পেয়েছি দলিল লেখক সনদপত্র এবং পরবর্তীতে লেখক এ্যাসোসিয়েসন এর সদস্য পদ লাভ করি। শুরু হয় ব্যস্ততাময় কর্ম জীবন,আমি সফলতা পেয়েছি, মা বাবা কে খুশি করতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে এখানে ইতি টানলাম। এখনো অনেক কিছু লেখার এবং শেয়ার করার আছে আমার প্রাণপ্রিয় ভাই-বোনদের সাথে তবেই আংশিক পূর্ণ হবে জীবনের গল্পকাহিনী।যদি আল্লাহপাক বাচিয়ে রাখেন এবং আপনাদের সবার ভালোবাসা পেলে অন্য কোনদিন অন্য কোন সময়ে হাজির হবো গল্পের বাকি অংশ নিয়ে।আল্লাহ হাফেজ।
👉🏻আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই করোনা মহামারী থেকে সবাই সুস্থ ও নিরাপদে থাকবেন। সবাইকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা ও অভিনন্দন।💖💝
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৬৫
Date:-০৪ & ০৫/১১/২০২১ইং
🌹কিবরিয়া ইমরান
🌹ব্যাচ নং- ১৩,
🌹রেজিষ্ট্রেশন নং - ৬১৭৭৯.
🌹নিজ জেলা - যশোর,
🌹পেশা - দলিল লেখক।
🌹আজীবন গর্বিত সদস্য নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন।