২০টি বছর পার হয়ে গেল এখনো সৌদিতে
🤵আমি আব্দুর রাকিব, আমি মধ্যবৃত্ত পরিবারের সন্তান, আমরা তিন ভাই এক বোন তাদের মধ্যে আমি সবার বড়,
বাবা একজন প্রবাসী, ভাল বেতনের চাকরি করতেন কুয়েত একটি কম্পানিতে বেশ ভালই ছিলাম আমরা,
হঠাৎ করে একদিন রেডিও নিউজের মাধ্যমে খবর শুনি ইরাক আর কুয়েত যুদ্ধ লেগেছে,
তখনই আমি সহ আমাদের পরিবারের সবাই অনেক কষ্ট পাচ্ছি, বাবার জন্য সবাই টেনশনে পরে যায়, পরিবারের সবার নাওয়া খাওয়া এক প্রকার বন্ধ বাবা টেনশনে,
একটা পর্যায়ে বাবা অনেক বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে সুস্থ ভাবে চলে আসেন দেশে আলহামদুলিল্লাহ,
প্রথম আমাদের দেখে জরিয়ে অনেক কেঁদে ছিলেন কোনো কিছু আনতে পারেননি বলে,
তখন আমরা বলেছিলাম আমাদের কিছুই লাগবে না বাবা আপনি আমাদের মাঝে এসেছেন তাতেই আমরা খুশি,
বাবাকে কাছে পেয়ে আমরা সবাই খুশি কিন্তু বাবা একটু টেনশনে থাকেন, আমি বুঝতে পারি বাবা বসে থাকলে আমাদের সংসার চলবে কিভাবে, কিছু দিন যাওয়ার পরিবারের বড় হওয়াতে আমি একটা সিদ্ধান্ত নেই ও স্বপ্ন দেখি, আমি একটা মাছের ফার্ম করব। কিন্তু মাছের ফার্ম করব যে আমার কোনো টাকা নেই, পুকুর কাটাব বা পুকুর লিস নেব যে সে টাকা ও নেই, কারণ আমার আমার সব কিছু এবং আমাদের পরিবারের সকল আয়ের উৎস ছিলেন আমার প্রিয় বাবা,
বাবা এখন বেকার বাবার কাছে টাকা চায়তে পারব না, বাবা দিতে পারবে না তখন অনেক কষ্ট পাবেন,
যেহেতু টাকা মেনেজ করতে পারব না তাই আমার সপ্ন দেখা বন্ধ হয়ে যায়,
✍️পরিবারে কষ্টের দিন শুরু,
এক পর্যায় ধিরে ধিরে আমাদের পরিবারে কষ্ট নেমে আসে এবং তখন থেকে বাবাও মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়ে পরেন পারিবারিক সমস্যা কারনে দিন দিন বাবা দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন হঠাৎ মা আমাকে বললেন তুমি কিছু একটা কাজ কর আয় রোজ করত নয়তো পরিবার চলতে কষ্ট হচ্ছে, তখন মাকে বললাম মা আমিতো কোনো কাজ জানিনা কখনো কোনো কাজ তোমরা করতে দেওনি, কি কাজ করব মা? বললেন বাবা তুমি চিন্তা করনা তোমার আংকেল বিদেশে আছেন,
তার সাথে আলোচনা করে দেখি তোমাকে বিদেশে পাঠানো যায় কিনা। তখন আমি মাকে বললাম মা আমার বিদেশ ভাল লাগেনা,
পরিবারে বড় ছেলে হওয়াতে সবার ও মায়ের আদরের ছেলে ছিলাম আমি,
তখন মা বললেন তোমার যদি বিদেশ ভাল না লাগে যাওয়ার দরকার নেই, দেশেই কিছু কর।
কিছু দিন যাওয়ার পরে বাবা আমি বেকার থাকায় সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে, তখন মা আমাকে বললেন তিনি কিছু জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং আমাকেও বললেন কাস্টমার দেখার জন্য,
তখন আমার সাংসারিক বিষয়ের প্রতি তেমন আইডিয়া নেই বললেই চলে, এক পর্যায় আমার গ্ৰাযমের এক বড় ভাইকে বললাম আমরা কিছু জমি বিক্রি করব কাস্টমার দেখার জন্য, বড় ভাই বললেন আমাকে একটি কথা বলবে টাকা দিয়ে তোমরা কি করবা তখন বললাম আমাদের সাংসারিক বাবদ করছ হবে, বড় ভাই খুব ভাল মানুষ ছিলেন, বড় ভাই বললেন এক পর্যায় যায়গা শেষ হয়ে গেলে তখন কি করবি? আমি তার কথা শুনে চুপ হয়ে আছি, উনাকে কোনো কিছু না বলে চলে আসি বাড়িতে কিছু সময় নিয়ে ভাবতে লাগলাম আসলে বড় ভাই সত্য কথা গুলি বলেছে আমার ভালর জন্য তখন এক পর্যায় মা-কে বললাম আমি বিদেশ যাব আংকেলের সাথে ষ আলোচনা কর।
✍️✍️ প্রবাস জীবন
কিছু দিন পর আমার আংকেল আমাকে ভিসা দিয়েছে সেই ভিসায় আনন্দর সহিতে চলে আসি সৌদিতে, তখন থেকে কর্ম জীবন শুরু হয়ে যায় তবে আমার কর্ম জীবন অন্য মানুষের চাইতে একটু আলাদা তখন আরেক ভাই বলল তুমি যে ভিসা এসেছ সেই ভিসা ফ্রি ভিসা, বছর গুরে এলে নিজ করছে আকামা লাগাতে হবে তখন একটু মন গাবরে যায়, তবে আমার আংকেল খুবই ভালো মানুষ আমার জন্য যথেষ্ট করেছেন, অনেক কষ্ট করেছেন আমাকে ভাল একটা কাজ ধরিয়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু কাজ পাচ্ছেন না তখনকার সময় টা ছিল ২০০১ শাল তখন কাজের সংকট ছিল সৌদিতে এক পর্যায় রিয়াদ ফুট নামক একটি কম্পানিতে যোগ দান করি এবং দেখা হয়ে যায় আমাদের আরেক বাংলাদেশি ভাইয়ের সাথে তিনি বললেন অন্য কম্পানিতে কাজ পাওনি? তখন উনি এই কথার বলার কারন হল এই কম্পানিতে প্রচুর কষ্ট হয় সবি মেনু ওয়াল সিষ্টেমে কাজ করতে হয়, তখন কার ঐ কম্পানির পুরোনো লোক গুলি মিলে সেই কম্পানিকে বলত এটি মরন ফুট কম্পানি বলে পরিচিত, কিন্তু এতো কষ্টের মধ্যে ও আমি পিচপা হয়নি কাজ চালিয়ে যাচ্ছি কারন একটাই আমি বড় ছেলে বলে,
✍️✍️স্বপ্ন দেখার শুরু,
আজ আমার ২০টি বছর পার হয়ে গেল এখনো সৌদিতে কাজ করে যাচ্ছি, স্বপ্ন দেখা ভুলে গিয়েছিলাম, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন এ যুক্ত হয়ে প্রিয় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সেশন পড়ে এখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি, আমি এখন স্বপ্ন দেখছি উদ্দোগতা হয়ে উঠার, অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যিনি আমাকে স্বপ্ন দেখতে সাহস করতে অনুপ্রানিত করেছেন,
সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই প্রাণের প্রিয় গ্ৰুপের সকল ভাই বোনদের প্রতি, সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন,
আমার লিখার মধ্যে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে সবাই কমা সুন্দর দেখবেন,
সবার দোয়া ও ভালোবাসা প্রত্যাশী।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭০৮
Date:- ২৭/১২/২০২১ ইং
আব্দুর রাকিব
নিজ জেলা হবিগঞ্জ
ব্যাচ নম্বর ১৪
রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ৬২১৫৭
সিলেট বিভাগ
বর্তমান সৌদি আরব রিয়াদ।