মাএ ১০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করা উদ্দোগের এখন বর্তমান মূলধন ১০ লক্ষ টাকা
পরম করুনাময় মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই মহান রব্বুল আলামিনের প্রতি যিনি আমাদের সৃষ্টি করে এই সুন্দর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
ধন্যবাদ জানাই আমাদের সকলেরই প্রিয় মেন্টর,প্রিয় শিক্ষক Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি।
আজকাল বুদ্ধি পরামর্শ নিতে গেলে পয়সা খরচ করতে হয়।অনেকে আবার কুপরামর্শ দিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন করে দেই।বুদ্ধিমানরা বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের স্বার্থ নিয়ে চলে যায়।
Young Entrepreneurs "নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশন ব্যাতিক্রম ধর্মি একটা ফাউন্ডেশন। যে খানে সুপরামর্শ প্রদান করে সঠিক শিক্ষা এবং দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়।ে
সময়টা ২০১৫ সাল।তখন আমি প্রবাসে।পরিবার নিয়ে বসবাস সেখানে।প্রবাসে একটা সাইবারক্যাফে সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত। ভালোবেতন ও অনেক সুযোগসুবিধা নিয়ে বসবাস।সারাদিন ঘুরেফিরে কাজ,বাসায় বউয়ের হাতের রান্না,দারুন সব সময়।
সুযোগ পেলেই টুরে যেতাম।দুই একদিনের জন্য হারিয়ে যেতাম অন্য এক জগতে।মাসের শুরুতে নতুন কেনাকাটা। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে ভালো একটা এমাউন্ট জমাতে পারতাম।এ ভাবেই কেটে যেতো লাগলো সময়।দুই বছর হয়েগেলো বউকে সেখানে নিয়ে যাওয়া।একটা সময় প্রবাস জীবন ত্যাগ করে দেশে আসার চিন্তা মাথায় আসলো।তখন প্রাবে ১২ বছর অবস্তানরত আমি।
দেশে এসে কি করবো এই ভাবনা সব সময়।কোনো আইডিয়া পাচ্ছিলাম না।আপনজনেদের কাছে পোন করে জানতে চাইলে তারা শুধু বলে দেশে এসে কি করবো?ও খানেই ভালো আছো।সুযোগ করে ছুটিতে এসো।
কাছের মানুষদের কাছে আইডিয়া চাইলে তারা বলে আগে দেশে আসো তারপর অবস্থা বুঝে ব্যাবস্তা নেওয়া যাবে।
ব্যাবসা করার পুজি থাকলেও আইডিয়া আর অভিজ্ঞতার অভাবে কিছুই হয়ে উঠে না।
২০১৮ সাল। অনেক ভালো একটা সাল এটা। এই সালে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। সেটা আরেকদিন আলোচনা করবো।
আমার বউ Fatema Tuj Johra হঠাৎ একদিন রাতে আমাকে ইকবাল বাহার স্যারের ভিডিও দেখালেন।আমিও মনোযোগ সহকারে দেখলাম।তখন স্যার অভিসে বসে ভিডিও করতেন।ভিডিওতে স্যারের কথা শুনে মুগ্ধ হলাম।লাইক দিয়ে পেজে এক্টিভ হয়ে গ্রুপে যুক্ত হলাম। কিছুদিন পরে প্রথম ব্যাচের সমপনি অনুষ্ঠান দেখলাম ভিডিওতে।
দ্বিতীয় ব্যাচ থেকে প্রপারলি সেশন চর্চা শুরু করে দিলাম।অনেক বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে থাকলাম।তখন আমাদের গ্রুপের সদস্য মাএ কয়েক হাজার হবেন।
পরিচিত হলো বেশ কিছু ভালোমানুষের সাথে।একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হলো।
স্যার তখন নিজেই সব পোস্ট এপ্রুভ করতেন। দুপুর ১ আর রাত ১ টার সময় সম্ভবত।
সকল এক্টিভ সদস্যদের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হলো।আজও পর্যন্ত আছে।তখনকার
Md Iqbal Hossain ভাই, Shabbir Bhuiyan ভাই, Md. Movazul Hoque Movaz vai, Mi Hossain vai, Kazi Hasan Mahmud vai, Selina Akter apu, Meher Negar apu, Mahbub Hasan vai, Md Maksudur Rahman vai, Tania Akter apu সহ বেশ কিছু এক্টিভ সদস্যসের সাথে যোগাযোগ প্রতিনিয়ত।
কথা বলার জড়তা কাটানোর ভিডিও সেশন সম্ভবত ৫ম ব্যাচ থেকে শুরু হয়। প্রতিদিন সেই ভিডিও সেশন করতাম। ভিডিও সেশন করে কথা বলার জড়তা কেটে গেলো।আমি এই সেশন ক্লাস শুরু করার আগে ক্যামেরার সামনে একেবারেই কথা বলতে পারতাম না।
এখন আমি হাজারও মানুষের সামনে দাড়িয় কথা বলতে পারি।
গ্রুপে মডারেটরের দ্বায়িত্ব পেলাম। এর আগে মালয়েশিয়ার কান্ট্রি এম্বাসেডর। অনেক এক্টিভ থাকি গ্রুপে। ভালো লাগে। ভালো ভালো মানুষের সাথে পরিচয়।গ্রুপে ১৬ ঘন্টা সময় দিতাম।একটা লাইক পড়লেও নোটিফিকেশন পেতাম।
তখনকার সকল এক্টিভ সদস্য আমাকে চিনতেন।
সবার সাথে একটা গুড কমিনিউকেশন।
বউকে দেশে পাঠিয়ে দিলাম। আমিও সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে গিয়ে উদ্দোক্তা হবো।
এরি মধ্যে ব্যাবসায়ের খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হলাম।অনেক বিসয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করলাম।
মালয়েশিয়ায়তে প্রথম মিটআপ আমি তখন মালয়েশিয়ার কন্ট্রি এম্বাসাডর। Md Asaduzzaman ভাই নতুন এম্বাসাডর হলেন।দারুন কাজ করেন তিনি।
আমাদের প্রথম মিটআপ ছিল টুইনটাওয়ারে।
দেশে আসার আগে পরিকল্পনা করে এগ্রো খামার করলাম।আমি যেনো দেশে এসেই হাল ধরতে পারি।
২০১৯ সালে দেশে আসলাম।ভলেন্টিয়ার সম্মেলন হলো।অনেক ভলেন্টিয়ারের সাথে প্রথম দেখা।
এগ্রো খামারের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার শুরু করলাম।আলহামদুলিল্লাহ ভালোই চলছে উদ্দোক্তা জীবন।
পরবর্তীতে মাএ ১০হাজার টাকা নিয়ে শুরু করলাম ঘি উৎপাদনের কাজ। বোনের জামায়ের সহযোগিতা নিয়ে।আস্তে ধিরে সেটাকে প্রসারিত করলাম।
বড়ো পরিসরে শুরু করলাম।তিন মাস লস প্রজেক্ট। অনেক টাকা লস খেলাম।
এরি মধ্যে আম্পান ঝড়ে ১৬ টা গরু রাখার জায়গা বিশিষ্ট গরুর ঘর ভেঙে গেলো।একটা ঘরু স্টোক করলো।আমি ভেঙে পড়লাম।চারিদিকে শুধু লস।
স্যারের সেশনগুলো প্রতিদিন পড়তাম।লেগে থাকতে হবে।আমিও হাল ছাড়লাম না।কাজ কন্টিনিউ করতে থাকলাম।
ইতিমধ্যে বেশ কিছু দোকান ও প্রতিষ্ঠানে পাইকারি ঘি ডেলিভারি শুরু করলাম।
গ্রুপেও সাড়া পাচ্ছি বেশ।যাকেই ঘি দিচ্ছি সে প্রসংশা করছেন।কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেলো।
গ্রুপে প্রতিদিন বেশ ভালো সেল হয়।
আমার উৎপাদিত গাওয়া ঘি এর সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো।অচেনা মানুষ কল দিয়ে আমার ঘি এর খোঁজ করে।বাহ অনেক ভালো চলতে থাকলো।
একটা সময় চলে আসলো হিউজ সেল আর হিউজ পরিমানে প্রডাকশন।ঘি ছিল আমার একমাএ প্রডাক্ট।
এই একটি প্রডাক্ট নিয়েই উদ্দোক্তা। এই একটি প্রডাক্ট নিয়েই সবার কাছে পরিচিতি।আমি অন্য কোনো প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করলাম না।মনে করতাম অন্য প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করলে ঘি এর ডিমান্ড কমে যাবে।সেল কম হবে।প্রডাকশনে লস হবে।
হঠাৎ একদিন স্যার পোস্ট করলেন, ব্যাবসায়ে বেশকিছু দিক নির্দেশনা।তারমধ্যে একটা পয়েন্ট হলোঃ- নতুন কোনো প্রডাক্ট এড হলে সেটা আপনার কাস্টমারকে জানাতে হবে।
আমি বুঝতে পারলাম একটা প্রডাক্ট নিয়ে না আমি আরো কিছু প্রডাক্ট উৎপাদন করে সেল করলে ভালো হবে।কিন্তু কি করবো?
হটাৎ একদিন একজন পরিচিত কাস্টমার সরিষার তৈল নিবেন বলে কল করলেন।আমি মিল থেকে কিনে তাকে দিলাম,এবং গ্রুপে পোস্ট করলাম।
অনেকেই প্রথম চাপের সরিষার তৈল নিবেন জানালেন।
প্রথম চাপের সরিষার তৈল কি এটা বুঝলাম না।পরে বিষয়টি বুঝতে পারলাম।
মাএ ৪মন সরিষা ১৮০০ টাকা করে মন কিনলাম।সরিষার তেল প্রডাকশন করে প্রিয় কাস্টমারকে পরিবেশন করলাম।কাস্টমার তেল পেয়ে খুশি হলেন।আমাকে বল্লেন রুবেল ভাই প্রডাক্টের মান ঠিকরাখবেন সবসময় আপনার কাস্টমারের অভাব হবেনা ইনশাআল্লাহ।
আমার প্রচেষ্টা সবাইকে ভেজাল মুক্ত খাদ্য খাওয়াবো।
মানুষ আমার প্রডাক্ট খেয়ে আমার জন্য দোয়া করবেন।
সপথ করেছি কাউকে কখনো ঠকাবোনা,কাউকে কখনো খারাপ পন্য দিবো না।
আলহামদুলিল্লাহ আজ ২ বছর ধরে সুনামের সহিত ব্যাবসা করছি।আমার প্রডাক্ট খেয়ে প্রসংশা করেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুজে পাওয়া মুশকিল।
আমি যখন ফুড নিয়ে কাজ করা শুরু করি তখন গ্রুপে আর কেউ এভাবে করে বলে মনেহয়না।এখন হয়তো অনেকেই করছে আবার অনেকেই ঝরে পড়েছে।
আমি নিজে যেটা খেতে পারি,নিজের পরিবারকে যেটা খাওয়াতে পারি, ঠিক তেমন করে প্রিয় কাস্টমারকে প্রডাক্ট সরবরাহ করি।
বর্তমান আমার অনেকগুলো প্রডাক্ট
গাওয়া ঘি
কাঠের ঘানির প্রথম চাপের সরিষার তৈল
নারিকেল তৈল
মধু
খেজুরের পাটালি, গুড়
ছোট চিংড়ি শুটকি
চুইঝাল।
মাএ ১০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করা উদ্দোগের এখন বর্তমান মূলধন ১০ লক্ষ টাকা।
আলহামদুলিল্লাহ গ্রুপ এবং অফলাইনে আমার সেল প্রতি মাসে ৬-১০ লক্ষ টাকা টাকা।গতমাসের সেল ৮ লক্ষ প্লাচ।
আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের সকলের দোয়া ও ভালোবাসায় এগিয়ে চলছে আমার স্বপনের প্রতিষ্ঠান AHNAF organic foods.
১০০ জনের মতো উদ্দোক্তাকে প্রডাক্ট উৎপাদন করে সরবরাহ করছি।
আমার কাছ থেকে প্রডাক্ট নিয়ে উদ্দোক্তা জীবন শুরু করেছেন অনেকেই।
তিনজন ব্যাক্তিকে প্রাথমিক মূলধন দিয়ে ব্যাবসা শুরু করতে সহযোগিতা করেছি।
তারাও এখন অনেকটা সফল।এটার উপর ভর করে তাদের সংসার চলে।
আলহামদুলিল্লাহ ৫ জন মানুষের কর্মসংস্থান করতে সক্ষম হয়েছি।
মহান আল্লাহর রহমতে আউট লেটের কাজ চলছে।চলতি মাসেই উদ্ভোদন হবে ইনশাআল্লাহ।
সঠিক মূল্য এবং নির্ভেজাল পন্য সরবরহ করতে পারছি বলেই আজ এতো মানুষ আমার রিপিট কাস্টমার।
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে নিজেকে নতুন ভাবে তৈরি করেছি।
সৎ ভাবে জীবন-যাপন করছি।
আমি একজন ভালোমানুষ এটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি।
কখনো অন্যায়ের কাছে জিম্মি হয়না।
লাখ টাকা চলেগেলে এখন সৎ থাকার চেষ্টা করি।
মানুষের জন্য কাজ করি।
ভলেন্টিয়ারিং করি।
কথা দিয়ে কথা রাখি।
আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
গ্রুপে আমিই প্রথম প্রবাসী যে কিনা দীর্ঘ ১৩ বছর প্রবাস জীবন ত্যাগকরে আজ একজন উদ্দোক্তা।
আপনাদের সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে এই গ্রুপের একজন উদাহরণ হীসাবে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
#Ahnaf_organic_foods প্রতিটা মানুষের কাছে একটা নির্ভারযোগ্য প্রতিষ্ঠান।
আমি পন্য নয় বিশ্বাস কেনাবেচা করি।
পন্যের মান আমার সন্মান।
সকলের সুস্থতা ও নিরাপদ জীবন কামনা করছি।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭১২
Date:- ০১/০১/২০২২ইং
মোঃ রুবেল আহমেদ
কোর ভলেন্টিয়ার
দ্বিতীয় ব্যাচ,সাতক্ষীরা
রেজিষ্ট্রেশন ৬৫
01880409336
01319933170whatsapp,imo