মানুষের স্বপ্নের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে থাকতাম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম
শুরুতেই শুকরিয়া জানাই মহান আল্লাহর দরবারে যে এখনো পর্যন্ত সুস্থ ও সুন্দর ভাবে বেঁচে আছি। প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি।
এবং গর্ববোধ করছি প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত হিসেবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করার জন্য।
নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন এর সম্মানিত প্রিয় ভাই ও বোনেরা ও বন্ধুগন আপনাদের সবাইকে জানাই মনের অন্তস্থল থেকে অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা।
#আজকে_আমি_শেয়ার_করবো_নিজের_বলার_মতো_একটি_গল্প_ফাউন্ডেশন_এর_১৪৬০_দিনের_ভেতরে_আমার_পরিবর্তনঅনুভূতি।
আর সেই পরিবর্তনের কিছু গোপন টিপস। আর সেই টিপসগুলো আমি আয়ত্ত করতে পেরেছি আমাদের সবার প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সান্নিধ্যে আসতে পারে।
আমার মধ্যে সবসময়ই কিছু জিনিস কাজ করতো।সেগুলো হলো হতাশা কেউ কোন খারাপ কিছু বললে প্রচুর কান্না করতাম।
সমস্যা দেখলে পালিয়ে যেতাম ভয় কাজ করতো।সারাদিন সেটাই ভাবতাম কেন আমার সাথে এমন হয়।
নেগেটিভি,ভালো না লাগা, অগোছালো, আমি পারবোনা,আমার ভাগ্যটা বোধহয় খারাপ। এই চিন্তা ভাবনা খুব বেশি ছিল। না পাওয়ার আক্ষেপ সবসময়ই থাকতো।
অন্যের খুশী দেখে আনন্দ হতো ভালো লাগা কাজ করতো তবে মনের ভেতর কোথাও যেন একটা কষ্ট থেকে যেত।আমার জীবন টা যদি অন্যদের মতো।তখন বুকভরা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতাম সবার জীবন হয়তো এক রকম না।
ভাগ্য বলে কিছু ব্যাপার আছে।
মানুষের স্বপ্নের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে থাকতাম। মনে মনে ভাবতাম তাদের জীবন কতই না সুন্দর। আমার যদি এমন হতো। আর আমার স্বপ্ন সবসময় বড়ো বড়ো ছিল। যেটা পূরণ করা অনেক সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু আমার সেই ধৈর্য টুকু ছিল না।দীর্ঘ সময় ধরে কোন কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
মাঝ পথে থেমে যেতাম। আর সেখান থেকেই তৈরি হতো হতাশা, না পাওয়ার আক্ষেপ। তখন ভাগ্যকে দোষারোপ করতাম।কিন্তু কখনো নিজের ভুলের পরিমাণ টা হিসেব করে দেখিনি।
আর সেই জন্য কোন স্বপ্ন দেখতাম না। কারণ আমর মনে হতো স্বপ্ন কখনও সত্যি হয়ে আসেনা। এমনকি কারো সাথে কথা বলতাম না নিরব থেকে সবার কথা শুনতাম কে কি বলছে।
আর ভাবতাম মানুষ এতো কথা কিভাবে বলে। এমনকি ফোনেও কথা বলতে পারতাম না।কেননা কয়েকটি কথা বলার পর আমার কথা শেষ হয়ে যেত কি কথা বলবো খুঁজেই পেতাম না। সেজন্য আমার কথা বলা হতো না।
তবে পেছনে কাজ করতো বিরাট একটা মহামারী রোগ " লোকে কি বলবে "
লোকে কি বলবে তার জন্য আমি লিখতামও না।যদি আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। লোকে কি বলবে এই মহামারী রোগের
কারণে অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা,মৃত্যু পুরিতে চলে গেছে।
সেগুলো যদি লিখে রাখতাম তাহলে ডায়েরির পুরো পাতা না পাওয়ার হিসেবে ভরে যেত। ভাগ্যিস লিখে রাখিনি।
নাহলে হয়তো সেই হিসেব গুলো দেখে দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ত।নিজের ভেতর একটা চাপা কষ্ট থেকে যেত।
কিন্তু নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন এর সাথে যুক্ত হবার পর আমার জীবনে ম্যাজিকের মতো পরিবর্তন হতে থাকে।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো আমি একজন ভালো মানুষ সেই কথাটা গর্ব করে বলতে পারি। এবং লোকে কি বলবে সেই মনের রোগটাকে জব্দ করতে পেরেছি। তার জন্য কোন ভ্যাকিসনের প্রয়োজন হয়নি।হয়নি কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণার। কারণ তার একমাত্র মহা ঔষধ হলেন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার।
তবে প্রথম কোন কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। ভয়ে কথা বলতাম না কারো সাথে কে কি ভাববে। দুচোখ ভরে সবার পোস্ট গুলো দেখতাম পড়তাম এবং ফলো করতাম কে কিভাবে লিখছে।এমনকি কমেন্টস গুলোও পড়তাম কে কি মন্তব্য করলো।এভাবেই কেটে গেল ৩০ টা সেশন।
তারপর হাঁটি হাঁটি পা পা করে সাহস করে সবার পোস্টে লাইক কমেন্ট করতে শুরু করলাম। দেখা গেল আমার একটা কমেন্ট অনেক গুলো রিপ্লাই।
সেটা দেখে উৎসাহটা আরো বেড়ে যায়। তারপর একদিন পরিচিতি পোস্ট দেই।
তখন দেখা গেল সবাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছে আপু বলে সম্বোধন করছে।সেটা দেখে সাহস টা আরো একটু বেড়ে গেল। এবং মনের ভেতর আলাদা একটা অনুভূতি তৈরি হলো লেখার আগ্রহটা বেড়ে গেল।
তারপর থেকে প্রায় পোস্ট করতাম। কিন্তু স্যারের সেশন থেকে বিশ্লেষণ করে যে পোস্ট লিখতে হয় সেটা জানা ছিল না।হঠাৎ এক ভাইয়ার পোস্ট পড়ে দেখলাম লিখেছেন সেশন থেকে বিশ্লেষণ। সেই পোস্ট টা দেখে আমিও লিখলাম।সবাইকে অনুকরণ করতাম কিন্তু কখনও কপি করিনি।
তারপর হঠাৎ একদিন রাতে আমার লেখা পোস্টে অভিনন্দন জানানোর ধুম পড়ে যায়। কিছুই বুঝতে পারছিলাম কেন আমাকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে। একবার মনে হচ্ছিল যারা যারা অভিনন্দন জানাচ্ছে ওরা বোধহয় পাগল হয়ে গেছে। সামান্য একটা লেখার মধ্যে অভিনন্দন জানানোর কি আছে।
তারপর একটা ইমেজ কমেন্ট আসলো আপনাকে" স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে" ঘোষণা করা হয়েছে। তখন সবকিছু ক্লিয়ার হয়ে গেল।আর আগে যাদের পাগল ভেবেছিলাম এখন তারাই শুদ্ধ আমিই বোকার রাজ্যে বাস করছি।
তারপরও অনেক কিছু শেখার বাকি রয়ে গেছে কিভাবে কি করতে হবে জানা নাই।ইনবক্সে ম্যাসেজ আসে কমিউনিটি ভলান্টিয়ার গ্রুপ থেকে। তারপর একটু একটু ভয় করছিল যে কমিউনিটি ভলান্টিয়ার আসলে কি এর কাজ বা কি।
তখন এক ভাইয়া বুঝিয়ে দিল।তারপর আস্তে আস্তে সাহস বাড়তে থাকে আমিও এক পা এক পা করে আগাতে থাকি।তারপর যুক্ত হলাম নিজ জেলা ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে।সেখানে যুক্ত হতে পেরে পরিচিতি হলাম সবার সাথে। তারপর দেখলাম মিট আপের লিংক।
সেখানে যুক্ত হলাম।ঘন্টার পর ঘন্টা থেকে সবার কথা শুনতাম কে কিভাবে কথা বলছে।কে কি নিয়ে কাজ করছে।
কিন্তু কোনদিন কথা বলিনি।
আর সেই মিট আপ থেকেই আমার ধৈর্য ধরার ক্ষমতা তৈরি হয়। তারপর দেখলাম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থেকেও অনেকে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। শুধু পরিচয় টুকু দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সেই অসীম ধৈর্য দেখে আমিও শিখতে লাগলাম।
এভাবেই যখনি কোন লিংক পেতাম সাথে সাথেই ডুকে পরতাম।আর কানে হেডফোন লাগিয়ে সবার কথাগুলো মনযোগ সহকারে শুনতাম।
একেকজন এতো সুন্দর আলোচনা করছেন। তখন ইচ্ছে হত ইস আমিও যদি এই রকম সুন্দর করে কথা বলতে পারতাম।তারপর ভাবলাম এতো দূর যখন আসতে পেরেছি। আরো কিছুক্ষণ থাকি।কি রকম একটা নেশার মতো হয়ে গেছিল। সবাই সুন্দর সুন্দর আলোচনা করছেন।
সবার আলোচনা থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। উপলব্ধি করতে পেরেছি। যে আগে টিভিতে এতো বিজ্ঞাপন কেন দিত। তখন বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব না বুঝলেও এখন বুঝতে পেরেছি বিজ্ঞাপন কি জিনিস এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু পণ্যের ক্ষেত্রে নয় মানুষের জীবনে বিজ্ঞাপন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। কেননা আমি যত এক্টিভ থাকবো। যত জায়গায় উপস্থিত থাকবো মিট আপে।
ততই মানুষ আমাকে চিনবে। এটাই হচ্ছে ব্রান্ডিংয়ের প্রথম ধাপ এবং নিজের উপস্থিতিতেই নিজের বিজ্ঞাপন করা।
আরকেটা বিজ্ঞাপন হচ্ছে অন্য পোস্টে সুন্দর একটা গঠনমূলক কমেন্ট। কেননা অনলাইনে পণ্যের চেয়ে নিজের ব্রান্ডিং টা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।
সেক্ষেত্রে সুন্দর একটা গঠনমূলক কমেন্টে নিজের যোগ্যতা,নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয়, নিজের সম্মান,নিজের লেখার দক্ষতা এই সবকিছুই ফোটে উঠে।
এবং সেই সাথে আরও শিখতে পেরেছি কি করে সমস্যা থেকে সমস্যার সমাধান বের করে নিতে হয়। তার প্রিতিটি ধাপ প্রিয় মেন্টর পয়েন্টে পয়েন্টে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আগে যেখানে সমস্যা দেখলে ভয় হতো আর এখন সমস্যা দেখলে বুঝতে চেষ্টা করি কেন সমস্যা হচ্ছে। তার কারণ খুঁজে বের করে সমাধানের পথ খুঁজে নিচ্ছি।
আগে যেখানে কোন কাজ করার ফলে যখন সফলতা আসতো না তখন কাজ করার সাহসটা হারিয়ে ফেলতাম। আজ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মনে হয় এই কাজের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ছিল।আমি আমার ভুলের পরিমাণ টা বুঝতে শিখে গেছি।
এই যে পরিবর্তন টা চলে আসছে মেনে নেওয়ার। তার জন্য শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহর দরবারে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মেন্টরের প্রতি।
আগে যেখানে স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিয়েছিলাম আজ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি নিজের একটা প্রতিষ্ঠান হবে।নিজের উপার্জিত টাকা দিয়ে বাবা-মাকে হজ পালন করতে পাঠাবো।
আর স্বপ্ন তখনই সত্যি হবে যখন আমি আমার কাজের মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে নিতে পারবো।
আর সেই সাহসটা পেয়েছি প্রিয় মেন্টরের বাণী থেকে "
স্বপ্ন দেখুন,
সাহস করুন,
শুরু করুন এবং
লেগে থাকুন সাফল্য আসবেই ইনশাআল্লাহ "
কেননা প্রিয় মেন্টর প্রতিদিন শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন কি করে ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করে নিতে হয়।
তা নিজের সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে, সততা ও কমিটমেন্ট রাখার মাধ্যমে।
এইযে পরিবর্তন টা হয়েছে নিজেকে ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছি তার জন্য আবারও মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে বলি আলহামদুলিল্লাহ। কেননা আল্লাহর নিয়ামতের মধ্যে আরেকটা নিয়ামত হচ্ছেন আমাদের প্রিয় মেন্টর।
যার সান্নিধ্যে আসতে পারে শিখতে পেরেছি কি করে নিজেকে ব্রান্ডিং করতে হয়,কি করে সুন্দর করে কথা বলতে হয়,কি করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হয়,কি করে অন্যের খুশিতে খুশি থাকতে হয়।
আর কিভাবে নিজের ব্রান্ডিংয়ের কারণে নিজের পণ্যেরও ব্রান্ডিং করা যায়। কেননা আমার পরিচয় আমার কর্মকে তুলে ধরবে। আমার সাথে পরিচিত হবার জন্য এসে কৌতূহল বশত আমাকে জিজ্ঞেস করছে আমি কি নিয়ে কাজ করছি।
সেক্ষেত্রে আমার ভালো ব্যবহার এবং সেরাটা যদি উপহার দিতে পারি তাহলে সেখান থেকেই আমার পণ্যের সেল বাড়ছে।আমার প্রতি মানুষের যে সম্মান যে আস্থা বা ভালোবাসা তৈরি হয়েছে। সেটাই হচ্ছে নিজের ব্রান্ডিং।
তাই আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি পণ্য নয় নিজেকে ব্রান্ডিং করবো। নিজে ব্রান্ডিং হলে আমার পণ্যেরও ব্রান্ডিং হবে।
তার জন্য ধৈর্য সহকারে লেগে থাকতে হবে। এবং সবচেয়ে সেরা পণ্যটা উপহার দিতে হবে।সেক্ষেত্রে নিজের পরিবর্তন টা আগে দরকার। যেটা স্যার প্রতিনিয়ত আমাদের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন।
আর লেগে থেকে কিভাবে শিখতে হয় সেটাও আমরা স্যারের কাছ থেকে শিখছি।কেননা লেগে থাকার কোন বিকল্প নেই। আর তার একমাত্র উদাহরণ হচ্ছে আমাদের এই ফাউন্ডেশন। যেখানে প্রিয় মেন্টর ৬৪ জেলা থেকে ১৬৪ জন দিয়ে শুরু করে ছিলেন আজ সেটা ৩ লক্ষ প্লাস।এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কি হতে পারে।
আমরাও লেগে থাকবো ধৈর্য সহকারে । আজ নাহলে কি হবে ভবিষ্যতে একদিন সফল হবো ইনশাআল্লাহ। আর তার জন্য একটু একটু করে শিখে নিতে হবে।
আর সেক্ষেত্রে আমাদের প্লাটফর্ম টা হচ্ছে শেখার জায়গা, নিজেকে পরিবর্তন করার জায়গা।
আর এই পুরো শেখার কার্যকম তৈরি করে দিয়েছেন আমাদের সবার প্রিয় মেন্টর জনাব #ইকবাল_বাহার_জাহিদ_স্যার।
তার জন্য স্যারের প্রতি আবারো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবং নিজেকে একজন গর্বিত মানুষ হিসেবে মনে করছি স্যারের মতো একজন আর্দশ শিক্ষকের সান্নিধ্যে আসতে পেরে।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭১২
Date:- ০১/০১/২০২২ইং
রুনু বেগম
সোশ্যাল মিডিয়া ফিডব্যাক টিম
রেজিষ্ট্রেশন টিম মেম্বার
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
ব্যাচ১২/৪৪৪৮২
জেলা - মৌলভীবাজার।