মাঝে  মাঝে  মনে হয় ; বাঁচার জন্য  জীবনটা অনেক  ছোট।  আবার মাঝে  মাঝে  এমন মনে হয়  যে, জীবনটা অনেক  বড়। 

জীবন  বড়ো  মনে হয় তখনই,,,  যখন  বার্ধক্য আসে ; যখন  কেউ  সময় দিতে চায় না ; যখন  সেই  মানুষগুলোই তাকে বোঝা মনে করে,,,  একদিন যার জন্য  তার জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত ব্যয় করেছে ।  

হুম,  আমাদের  মধ্যে কারে কারো জীবনে  এমন কিছু  সময় এসে পড়ে।  আমার নিজের  চোখে  কতো কিছুই  না দেখলাম,,,,,  

সত্তরোর্ধ বৃদ্ধ  কোন এক বাবাকে বলতে  শুনেছি,,,,  " এখন ফল খেতে  পারবো,  আমার ছেলেরা শহরে  থাকে,  কেউ  আমায় ফল কিনে নিয়ে  দেখতে  আসে  না ।  যখন  অসুস্থ  হয়ে  যাব, খেতে  পারবো না; তখন হয়তো আমার মাথার  কাছে  কত ফল পড়ে থাকবে,,,,  কিন্তু  তাতে লাভ কি,  আমি তো খেতে  পারবো না । " 

হুম, আমি সেই  বৃদ্ধ বাবার  মৃত্যুর সময়টুকু দেখেছি, তাঁর  শহরের  চারতলা বাড়ির মালিক  ছেলে,,,  বাবার মুখে  বেদানার বিজগুলো পুড়ে  দিচ্ছে,,,,  বাবার গায়ে শক্তি  হবে!! কিন্তু  -----

আজ সেই  বাবার কোন খাবার  চিবানোর শেষ শক্তি  টুকুও নেই 😢😢😢

আমি  বৃদ্ধ  অসহায়  অনেক  মা কে দেখেছি।  যে একদিন  এই সংসারের  মালিক  ছিল ,,,,  আজ তাকে সময় করে  খাবারও দেয়া হয় না ; 

বিছানা  নষ্ট  হবে  😢😢😢

এই মা' একদিন  সন্তানের  পেট ভরাতে গিয়ে  কত রাত পানি খেয়ে ঘুমুতে  গেছে ।  তার হাতে  কত সময় টাকা হলে আগলে রেখেছে ,,,,  এবার হয়তো হাতের  বালা জোড়া  ছাড়িয় আনতে পারবে,,,  যা বড়ো  ছেলের  পরীক্ষার  ফী জোগাতে  গিয়ে  বন্ধক রেখেছিল!! 

-------- সেই  টাকাটা হয়তো আরেক সন্তানের  পরীক্ষার  ফী  দিতে চলে গেছে ।  মা-বাবা  যা দিলো,,,,  তা উজার করেই দিলো!

বড়ো  ছেলেটা যখন  শহরে আসে,,,,  চাকরির খোঁজে!  মায়ের  চোখের পানি গাল গড়িয়ে  পড়ে ,,,,  শাড়ির ছেঁড়া  আঁচলে সেই  অশ্রু

  মুছে। 

------- আর আশায় বুক বাঁধে,,,,,  বাছা আমার যেনো ভালো  একটা  চাকরি  পায়!  তবে  আর দুঃখ  থাকবে না।  হাতের  বালা জোড়া  ছাডিয়ে আনবো,,, নতুন  শাড়িও পড়তে  পারবো ☺️☺️ 

হুম,  বাবা-মায়ের দোয়া  সাথে  থাকলে,  সন্তানেরা একসময় অনেক  ভালো  করে ।  সেদিনের জামিল সাহেবের  মায়ের স্বপ্ন  কিছুটা সত্যি  হয়েছিল!  ছেলের  ভালো  চাকরি ------- 

নতুন  শাড়ি,,,  গহনা,,,,  সবই ছেলে কিনেছেন,,, 

কিন্তু,  সেগুলো মায়ের  জন্য  নয় ; মিসেস জামিলের  জন্য।  

তবুও  মায়ের মুখে  সেকি মধুর  হাসি!! 

ছেলে তার মস্ত অফিসার।  শহরে থাকে,,,,  মাঝে মাঝে বাড়ি  আসে ।  মিসেস. জামিলের হাত ভর্তি সোনার  বালা,,, চুড়ি -----

মায়ের  বালাগুলো সুদে-আসলে  পাওনাদারের হাতেই  রয়ে গেছে!!  

আমার জীবনে অনেকের অনেক কষ্ট  খুব  কাছে  থেকে  দেখেছি,,,,,,,  😢😢

কখনো  প্রতিবাদ করার ভাষা  পাই নি,,,,,,,,,

🌿🌷 আমরা যখন  কোন ঘটনা  বা দুর্ঘটনা  দেখি তা থেকেই শিক্ষা  গ্রহন  করতে  পারি ।  

🍀🌼 মানুষের  জীবনটা নদীর  মতো।  নদীর চলার পথে যখন  বাঁধা  আসে তখন  নদী তার গতি পথ বদলায়!  

----------মেয়েদের বয়স বলতে নেই 🙈🙈--------

তবুও আমার  বয়সটা এখানে  উল্লেখ  করবো,,,  

কি জানি,,,  হয়তোবা  আমার এই গল্পটা  কারোর  জন্য  শিক্ষনীয়  হতে পারে!!  

🌿 চার বোন,  তিন ভাইয়ের সংসারে  আমিই বড়। তাই  এস,এস,সি পাশ করার পর বিয়ের প্রস্তাব  আসলে বাবা বিয়ে  দিয়ে  দেন।  

লেখাপড়ার  ঝোঁক  ছিল  প্রচুর !!  

পড়াটা বন্ধ  হয়ে গেলো,,,  খুব  কষ্ট  পেতাম,,,  লুকিয়ে  লুকিয়ে অনেক  কেঁদেছিও😢😢😢

আমার  এস,এস,সি ' ভালো  রেজাল্ট  আর পড়াশোনার প্রতি আকর্ষন  দেখে,,,  আমার কর্তা মশায় আমাকে কলেজে ভর্তি  করিয়ে দিলেন।  ততদিনে  আমি প্রথম  সন্তানের  জননী।  ভিষণ  ভালো  লাগতো কলেজ জীবন!  

প্রথম  বিভাগ (মানবিক)  পেয়ে পাশ করলাম।  

ভর্তি হলাম  বদরুন্নেসা  সরকারি  মহিলা  কলেজে  পাসকোর্স,,,,  দ্বিতীয়  বিভাগে  পাশ করে ।  বাংলা'য় একই   কলেজে  মাস্টার্স  প্রিলীমিনারি দ্বিতীয়  বিভাগে  পাশ করলাম !  

-------+ মেঘে মেঘে  অনেক  বেলা গেলো------ 

🌿 বড়ো  ছেলের  লেখাপড়া  শুরু  হয়েছে  আরও অনেক  আগেই ।  প্রথম দিকে  ভালো  করলেও,,,,  খেয়াল  করলাম  চতুর্থ  শ্রেণির  দিকে এসে রেজাল্ট  খারাপ  করছে।  শেরেবাংলা  বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো।  রেজাল্ট  খারাপ  করছে  জানলে,, তার বাবার দু-চার কথা  শুনতে হবে,,,  তা না হয় মেনে নিলাম ,,,,,  

কিন্তু ,  নিজেকে  অপরাধী মনে হতে  লাগলো,,, আমি সময় দিলে,,,  ছেলের  রেজাল্ট  খারাপ  হতো না!!  তাই  নিজের  লেখাপড়ার পাশাপাশি  একটা  প্রাইভেট  ফার্মে  জবও করতাম  ---- সব ছেড়ে  ঘরে  বসলাম!! 😢😢 

🌿🌼🔰 তবুও  ছেলেটা ভালো  থাকুক!!  

সত্যি কার অর্থেই,,,  বাবা-মা  তাদের  সন্তানকে সময় দিতে না পারলে,,,  তখন  সন্তান  বখে যায়।  

✌️✌️ ভালো  করতে  লাগলো,,,  আমার ছেলে। এর মধ্যে  বড়ো ছেলের  প্রায়  সতেরো বছর  পর  ------- 

----- অনেক  আকাঙ্খার পর আমার ঘরে  এলো আমার  ছোট  ছেলে ।  

🔰🌿 কীভাবে  যে সময়গুলো  পার হয়ে গেছে ,  বুঝতেই পারি নি 🌿🌿🌿🌿

🔰🌿 ঐ যে প্রথম দিকে কথা গুলো  বললাম,  সেই  স্মৃতিগুলো আমার চোখে  দেখা  কিছু  ঘটনা।  যা,,,,  আমার মনে বার বার খোঁচা মারতো!! 

🔰🌿 নিজেকে  সেই  স্হানে দার করালাম।  ভাবলাম,,,,  সেই  অসহায়  সময়গুলের কথা! 

মনে হলো,,, আমারও কিছু  একটা  করা  দরকার ।  

 নিজের  একটা  আলাদা  পরিচয়  তৈরি  করতে  চাই 

 কিন্তু  কি করতে  পারি? 

 ইউটিউবে  মোটিভেশনাল স্পীচ  দেখতাম।  হঠাৎ  একদিন  চোখে  পড়লো প্রিয়  মেন্টরের একটা  প্রোগ্রাম।  মনের লুকানো স্বপ্নগুলো যেনো পাখা মেলে উড়ার ডানা পেলো!  

------ কাপড় সেলাই  করার অভিজ্ঞতা  আগে  থেকেই ছিল  ------ 

 তাই  শুরু  করলাম  কাপড় নিয়ে  অন লাইন  বিজনেস। কিন্তু ,  অন লাইনের  'অ' ওতো বুঝি  না।  ভাইকে ধরে  পেজ খুললাম,,,  কখনো  বড়ো  ছেলেকে ধরি,,,কখনো  ছোট  ছেলেকে ধরি,,,,  এখনো  শিখছি,,,,  

এদিকে বয়স তো বাড়তে বাড়তে কখন যে পঞ্চাশ,,,,  বুঝতেই পারি নি

 তবুও  সামনে এগিয়ে  যাওয়ার তীব্র  বাসনা,,,, একটা  শপ হবে,,,,  একটা  ফ্যাশন হাউজ( টেইলারিং)  হবে।  

 প্রিয়  মেন্টরের সেশনগুলো আমাকে প্রতিদিন  একটু একটু করে  এগিয়ে  নিয়ে  যাচ্ছে!  কারো দয়া চাই  না!  নিজের  যোগ্যতা নিয়ে ,  মেধার বিকাশ  ঘটিয়ে ,,,  জীবনকে নতুন  ভাবে  আবিষ্কার  করতে  চাই।  বাঁচতে  চাই  নিজের  নামকে পরিচিত  করে ,,,  বাঁচতে  চাই  নিজের  অস্তিত্ব  নিয়ে ।  কারো কাছে  নিগৃহীত  হয়ে  নয় ; মাথা  উঁচু  করে ।  

 আমি চাই ,  আমাকে দেখে  আরও দু' জন শিখুক,,,,  কারো কাছে  ছোট  হয়ে থাকার  নাম জীবন  নয় ; নিজেকে প্রকাশ  করার নামই জীবন!  কারো দ্বারস্থ  হয়ে বেঁচে  থাকা  নয় ; নিজের  মতো বেঁচে  থাকাই জীবন। 

 ভালো  ভাবে  বাঁচতে  চাওয়ার  নাম জীবন!  নিজেকে বিলিয়ে  দিয়ে  নিঃস্ব হওয়ার নাম জীবন  নয়; 

 কোনো কাজ  শুরু  করতে বয়স কোন বাঁধা  নয়।  মানুষের  মনের  জোরটাই আসল। লজ্জারও কিছু  নেই!!  আমার মেয়ের বয়সী  মেয়েদেরও আমি 'আপু' বলে সম্মোধন  করি।  আমার মোটেও লজ্জা  লাগে  না ।  বরং ভালো  লাগে ,  গর্ব বোধ  করি ,,,,  আমি তাদের  সমসাময়ীক  হয়ে কাজ করতে  পারছি,,,,,  ✌️

 আমার জন্য  সবাই  দোয়া  করবেন ।  আপনাদের  শুভকামনাই  আমার জন্য  অনুপ্রেরণা 

📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭১৪

Date:- ০৩/০১/২০২২ইং

Rahima Akther  

ব্যাচ-১৫

রেজিস্ট্রেশন-৭৪৪৩২

ব্লাডগ্রুপ O+

নিজ জেলা- কুমিল্লা 

বর্তমান  অবস্থান  -মিরপুর,  ঢাকা।  

মিরপুর  জোন  

কমিউনিটি  ভলান্টিয়ার  

পেজের  নামঃ Rahima Collections  

বিজনেসের পণ্যঃ মনিপুরী তাঁত শিল্প,  বাটিক শিল্প, সিরাজগঞ্জের তাঁত,  দেশীয়  মিল  কটন  থ্রি পিছ,  বুটিকস থ্রি পিছ ইত্যাদি।  

 ✌️✌️প্রিয়  মেন্টরের প্রিয় শ্লোগান  দিয়ে  শেষ করছি-- স্বপ্ন  দেখুন,  সাহস করুন, শুরু করুন এবং  লেগে  থাকুন,,,,,,  সফলতা আসবেই।