এই ছোট্র জীবনে আপনি যতই ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন মানুষই হন না কেন
................বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম..............
আসসালামু আলাইকুম
_______আল্লাহ তাআলার প্রসংশা_________
সকল প্রশংসা সেই মহান রাব্বুল আলামীন এর প্রতি যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন,এত সুন্দর চিন্তা ভাবনা করার ব্রেইন দিয়েছেন ,দুটো চোখ দিয়েছেন তাঁর অপরুপ মহিমা দেখার জন্য , দুটো হাত দুটো পা,দুটো কান ,শ্বাস এবং ঘ্রান নেওয়ার জন্য নাক দিয়েছেন।
সবি তার অপরুপ কারিস্মা সুবহানাল্লাহ। দিয়েছেন মা-বাবা , সন্তান ,ভাই-বোন ,আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু বান্ধব। আল্লাহ তাআলা র নেয়ামত পর্যবেক্ষণ করে আবারো বলছি আলহামদুলিল্লাহ।
_____বাবা মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন______
আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালা বাবা মায়ের আদরের মাধ্যমে বটগাছের ছায়ার মত ছায়া দিয়েছেন।সেই অমৃত সুধা যা বাবা মার কাছে থেকে পেয়েছি তার জন্য চির কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি। বাবা-মা না থাকলে পরগাছার মত থাকতে হতো আমাকে এই দুনিয়ায় ।আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সেই লান্ছনা থেকে রক্ষা পাওয়া আমি। আবার ও আলহামদুলিল্লাহ। বাবা - মায়ের যৌবনের ত্যাগের ফলই আমরা , আমাদের জন্য তাদের সারা জীবন উৎসর্গ করা। আবার ও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ ও ভালোবাসা প্রকাশ করছি ।
আল্লাহ তাআলা আমার বাবা -মা য়ের সাথে সাথে সকলের বাবা মা কে ভালো রাখুন। সুস্থ ও নিরাপদে রাখুক আমীন।
এই ছোট্র জীবনে আপনি যতই ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন মানুষই হন না কেন, যতক্ষন আপনার মন ভালো না থাকছে, ততক্ষণ আপনি নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন না ।
প্রতিটা মানুষের জীবেন, নিজের বলার মতো একটা গল্প থাকা প্রয়োজন, সেটা হতে পারে সফলতার, হতে পারে ব্যার্থতার, হতে পারে কষ্টের গল্প, সবাই চাই সফল হতে, আমি তার ব্যাতিক্রম নই - আমি ও সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি প্রতি নিয়তো। আশা করছি সকলের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে একদিন নিজের একটা অবস্থান তৈরী করবো ইনশাআল্লাহ।
আমি একজন প্রবাসী, আর আমি মনে করি প্রতিটা প্রবাসী ভাই ও বোনের নিজের বলার মতো একটা গল্প তৈরী হয়ে আছে।
আজ আমি আমার নিজের বাস্তব জীবনে গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম।
_____ #নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প ___
"জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভালো"
আমি শুরুতে আমার পরিচয় দিচ্ছি আমি আমি মাকসুদা আক্তার নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর একজন গর্বিত সদস্য ব্যাচ ১৬ তম
রেজিঃ নং ৭৬৭৫৪ স্থায়ী ঠিকানা- ঢাকা সাভার ।
বর্তমান অবস্থান- থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহর।
আমার আমার বাবা মাদ্রাসার শিক্ষক আলহামদুলিল্লাহ। যিনি ধর্ম বিষয়ে অগাধ জ্ঞানের অধিকারী। যার দরুন বিভিন্ন দেশে শুরু থেকেই ওয়াজ নসীহতের জন্য ভ্রমন করে থাকেন। যার দরুন আমার আম্মুই আমাদের কে সামলিয়েছেন বেশি ঘরে থেকে। তবে আমার আম্মুকে কখনো কোন ছেলে মানুষ দেখেন নি আলহামদুলিল্লাহ ।বাবা ঐ ব্যাবস্থা করেই রেখেছিলেন আমাদের পরিপূর্ণ পর্দার সহিত ছোট থেকে বড় করেছেন ।
আলহামদুলিল্লাহ আমার আম্মুও ছিলেন একজন আলিম ব্যাক্তির সন্তান।
আমরা পাচ বোন এক ভাই। বোনদের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। বাবার যেহেতু সরকারি চাকুরি নেই তাই এত বড় একটি সংসার চালাতে সভাবতৈ হিমশিম খেতে হত তারপর ও কখনো কোন ঋনের বোঝা মাথায় নেননি।যত কষ্টৈ হোক আমাদের বুঝতে দেন নি। আমাদেরকে উত্তমভাবে পড়ালেখা শেষ করিয়েছেন, বাবার সাধ্য মতো যতটুকু পেরেছেন।
আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি আমার মনে আছে আম্মুর সাথে রাগ করে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি সেই দিনই আব্বু বাসায় এসে আমার হাত ধরে বললো চলো মা ভাত খাবা তাতে আমার রাগ শেষ। বাবা আমাদের সবাইকে অনেক ভালোবাসতেন।
আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন কোন এক কারনে রাগ করেছি মা আমাকে আদর করে কোলে নিয়ে ভাত খাইয়ে দিয়েছে সেই সৃতি গুলো এখনো মনে পড়লে কান্না থামাতে পারিনা ।
আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন ঘরে বসেই হাতে সুই সুতো দিয়ে সেলাই করে ওয়ালম্যাট বানাতাম এবং পাঞ্জাবি ড্রেস যেগুলো আড়ং এ সেল হয় ওগুলোর উপর হাতের কাজ করতাম আমরা বোনরা সবাই মিলে।
আমি বড় বোনকে ছাড়া চলতে না পারার কারনে বড় আপুর ক্লাসে আমাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হল অর্থাৎ আমরা দুই বোন একই ক্লাসে পড়াশোনা করেছি।
আমরা ক্লাস এইটে পড়া অবস্থায় বড় বোনের বিয়ে হয়ে যায়। তার পর আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেওয়া হল। কারণ তখন আমি ঘরের বড় তাই আমার সেফটির জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি করা হল।
আলহামদুলিল্লাহ ঢাকা বোর্ড থেকে দাখিল কমপ্লিট করলাম এরপর আলিম কমপ্লিট করলাম।
দুঃখের বিষয় এর মধ্যেই আমার বিয়ে হয়ে গেল। দুঃখ বলছি এই কারণে যে তখন আমার সংসার সম্পর্কে তেমন কিছু বোঝার বয়স হয়নি। যখন আমি ফাজিল ফাস্ট ইয়ারের পরীক্ষার্থী তখন আমি অসুস্থ ।
যেটা সকল মেয়েদেরই অসুস্থতার কারণ হয় , অর্থাৎ আমাদের কোলজুড়ে চলে আসলো ফুটফুটে এক রাজপুত্র। দাম্পত্য জীবন মোটা মোটি ভালই চলছিলো,
________ আমার কর্মজীবন শুরু ________
ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিলো কিছু একটা করবো, নিজের পায়ে নিজে দাড়াবো, নিজের অবস্থান নিজেই তৈরী করবো সেই চিন্তা সব সময় মনে ভেতর ধারন করতাম । কিন্তু পড়ালেখা করে বেকার বসে থাকা মন চাচ্ছে না। ভাবলাম স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে নিজের জায়গা থেকে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এবং সেই লক্ষে কাজ করতে হবে। তাই আবারও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে লেগে পড়লাম,
ভর্তি হলাম প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে, দুঃখের বিষয় সেটাও কমপ্লিট হলো না ফাইনাল ইয়ার এ পরীক্ষায় যেয়ে আমার আর পরীক্ষা দেওয়া হলো না।😭
প্রিয় স্যারের গুরুত্বপূর্ণ বানী মনে পরে গেলো,
বৃষ্টি সবার জন্যই পড়ে,
তবে ভিজে কেউ কেউ ।
আমি আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি সেটা হয়নি তাই বলে আমি থেমে যাওয়ার মানুষ নই।
তখন থেকে আমার মনের একটা জিদ কাজ করছে যে আমার নিজের একটি পরিচয় লাগবে।
পরে কি করবো ভাবতে ভাবতে একটা ইস্কুলের টিচার হিসেবে জয়েন করলাম। এর পাশাপাশি কমপ্লিট করলাম প্যারামেডিক। আলহামদুলিল্লাহ 100 জন স্টুডেন্ট এর মধ্যে আমি প্রথম হয়েছিলাম। বরাবরই ভাল স্টুডেন্ট ছিলাম, সবারই আদর পেয়েছি যেখানেই পড়াশোনা করেছি।
__________২০২০ সালের চমক😭😭_______
অনেক চড়াই উতরাই পার করে শেষ মেষ ২০২০ সাল চলে আসলো যা কিনা আমার জীবনের ঘোর অন্ধকার সময় বলবো।
আবার আলো দেখার সময় বলবো। ২০২০ সালে রমজানের আগে মা বলল সবাইতো দেখি মোবাইলে কেনাবেচা করে তুইও চেষ্টা কর তোর একটা পরিচয় দরকার।
সেই মার উদ্যোগেই আমি হাতে নিয়েছি এই মোবাইল। এরপর থেকে দেশীয় পণ্য সেল করা শুরু করলাম অনলাইনে। তখন আমি এই প্রিয় ফাউন্ডেশনে যুক্ত ছিলাম কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। মায়ের ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে শুরু করা বিজনেস এখন চলছে কিন্তু মা পৃথিবীতে নেই। 😭 মাকে অনেক মিস করি, আল্লাহ মাকে জান্নাতের উচ্চ মকান দান করুক আমীন
____________মা চলে গেলেন__________
২০২০ সালেই আমার মা কোরবানি ঈদের আগেই চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে 🥺 যা কখনো ভুলার মত নয়। একটা মেয়ের জন্য সবচেয়ে কাছের মানুষ হচ্ছে তার মা। আমার হাতের উপর মাথা রেখে মা চলে গেলেন। সেটা ভাবতেই বুক পেটে কান্না আসে।
সেই মূহুর্তে আমার বাবা, ছোট ভাই, আমার ছেলে সাথে ছিলো, মা হাড়ানোর বেদনা যে কতটা কষ্টকর তা ভাষায় বুঝানোর মতো নয়।
সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি আমার আম্মুর জন্য।
আপনারা আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
"রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানী ছগীরাহ"
__________ভিনদেশে পা বারানো________
আমার স্বামি থাইল্যান্ডেই অবস্থান করছিল যার কারনে ওর ও সমস্যা হচ্ছিল পরিবার থেকে দূরে থাকাটা। তাই থাইল্যান্ডে পারি জমাই যা ছিল আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ 🥺।
একদিকে মা হারানোর বেদনা অপর দিকে ভাইবোন বাবা কে ছেড়ে বিদেশে যাত্রাটা আমার জন্য সহজ ছিলো না । আপনজনদের ছেড় যারা প্রবাসে থাকে তারাই বলতে পারবে।
যখন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক ঢাকা এয়ারপোর্ট আসলাম যেন অন্তর ছিরে যাচ্ছিল।
কান্না তো ধরে রাখতে পারছিলাম না 😭
এরপর দোয়া দরুদ পাঠ করে প্লেনে উঠলাম আকাশে অনেক বার উড়েছি তবে এইবার যেন অন্য রকম অনুভুতি 😭😭।
২০২১ এর ফেব্রুয়ারি তে আসলাম।
থাইল্যান্ডের মত দেশে এসে বসে থাকলে কি হবে ? বিদেশে আসা মানেই কঠিন যুদ্ধ শুরু হওয়া । ভাষা না জানায় হাসপাতালের জবে গিয়েও সমস্যা । কাউকে ঠিক মতো মনের কথা বলতে পারছি না বুঝাতে পারছি না 🥴 নতুন প্রবাসে আসলে যা হয় তা আমার বেলাও হয়েছে।
কিছু কিনতে গেলেও বাঁধা। 🤭 থাইল্যান্ডের মানুষ রা ইংলিশ কম বুঝে । ওদের নিজস্ব ভাষা থাই।
এই কষ্টের মধ্যে এখন ও আছি। এরপর আমার বাবুর আব্বু র এক্সপোর্ট ইমপোর্ট বিজনেস এ হাত দেই ।শুরু হয় অনলাইনের প্রতিযোগীতা।🥺
আমার এক ছেলে তাকে মানুষ করতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে । আপনাদের সকলের দোয়া করবেন আমার ছেলের জন্য ছেলেটাকে যেন একজন ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।
সবাই ভালোবেসে পাশে থাকবেন ইনশাল্লাহ।
_______আমাদের প্রিয় স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা_____
আমাদের সকলের প্রিয় ভাজন এবং আমাদের মেন্টর জনাব #ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যার এর প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা যিনি আমাদের জীবনের কঠিন এবং বাস্তব সময়কে সাহসের সাথে সম্মুখীন করা এবং তা সকলের মাঝে উপস্থাপন করে নিজের পরিচয় তুলে ধরা এবং সেই সাথে ব্যাবসায়ীক পরিধী বৃদ্ধির জন্য সকল ভালো মানুষদের মিলনমেলার জন্য একটি বিশাল প্লাটফর্ম #নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশন
তৈরি করেছেন। এই প্লাটফর্মে দেশ ও দেশের বাহিরের ৫০ টি দেশের মানুষ যুক্ত আছেন যা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
আমাদের এই মহান ব্যক্তিত্ব এর জন্য রইলো অগাধ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং অসংখ্য দোয়া।
পরিশেষে,
এই টুকু বলতে চাই, জীবনে বড় হতে হলে রিক্স নিতে হবে। আর রিক্স না নিলে কখনো সফল হতে পারবো না। জীবনে নানা রকম সমস্যা উথ্যান পতন থাকবেই, সব কিছু সাহসের সাথে মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করছি। আশা করছি আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে নিজ লক্ষে পৌছাতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার আাস্তব জীবনের গল্পটা পরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের সকলের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো আল্লাহ যেন সকলের মনের আশা পুরুন করেন আমীন।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে - ৭১৮
তারিখ ৮-০১-২০২২
আমি মাকসুদা আক্তার
ব্যাচ ১৬ তম
রেজিঃ নং ৭৬৭৫৪
স্থায়ী ঠিকানা- সাভার ঢাকা।
বর্তমান অবস্থান- থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহর।
পেজ লিংক
https://www.facebook.com/RoyalThaiBeauties/