কুরীর পাশা পাশি উদ্যোক্তা হওয়ার কথা কখনো ভাবিনি, এ কথা মাথায়ও আসেনি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম____________
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ__
সকল প্রশংসা মহান রব্বুল আল-আমিনের, যিনি দয়া করে মায়া করে সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদেরকে সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রেখেছেন। সেই জন্য দিল থেকে কালিমাতুল শুকরিয়া আদায় করি।আলহামদুলিল্লাহ ।
🌺🌺🌺
শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সহিত স্মরণ করছি,
আমাদের সবার প্রিয় শিক্ষক,
মেন্টর, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর,
জীবন্ত কিংবদন্তী এ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার ,
সম্মানীত, #Iqbal_Bahar_Zahid স্যার কে।
যার শ্রম,মেধা, সততা ও যার অনুপ্রেরনায় আমরা অনুপ্রানীত, আমরা পেয়েছি নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের মত বড় একটি প্লাটফর্ম।
🌹🌺🥀 বাবা-মায়ের কষ্টে আমার বিবেক জাগ্রত হয়….
আমার অতীত জীবনের কিছু কথা তুলে ধরব।
আমি বড় হয়েছি গ্রামের বাড়ীতে সেই সময়টা ছিল ২০০৩ সাল।আমার বাবা একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করত । বাবার চাকরী নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকত । আমরা ছিলাম ৩, ভাই ২ বোন। ভাই বোনদের মধ্যে আমি ছিলাম বড়।বাবা প্রতিদিন বাই সাইকেলে ২৫কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অফিস করতো । যেহেতু বাবা অফিসের সময় ছিল সকাল ৮.৩০ হইতে সন্ধ্যা ৬. ০০টা। সাইকেল দিয়ে যাতায়াত করতে সময় লেগে যেত প্রায় ১ ঘন্টা , অফিসে লেট হলে হাজিরা কেটে দেওয়া হত। তাই সকালে অফিসে চলে যেত।আমি বাবাকে দেখেছি যখন বৃষ্টি পড়ত এক হাতে ছাতা অন্য হাতে সাইকেল চালিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে অফিসে যেতে ভেজা কাপড় পরে সারা দিন বাবা অফিস করত।
মা ফজরের নামাজ পরে রান্না করে বাবাকে প্রতিদিন খাবার দিয়ে দিত।আমাদেরকে কখনো কোন কিছুর অভাব বুঝতে দিতেননা। নিজের জন্য কখনো ভাল কিছু জামা কাপড় নিতেন না। বাবার সীমিত বেতন দিয়ে আমাদের মুখে খাবার তুলে দিতেন।কখনো কোন কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি।বাবা শুধু একটি কথা বলত আমার সম্পত্তির দরকার নেই, তোরাই আমার সম্পদ । তোরা লেখা পড়া শেষ করে যখন ভাল একটা পজিশনে যাবি আমার স্বপ্ন গুলো পূরন করবি, তখন আমার কোন কষ্ট আর থাকবেনা। বাবার কথার এতটা গুরুত্ব দিতাম না । লেখা পড়ায় মনোযোগি ছিলাম না, আমার চার পাশে সম-বয়সী যারা ছিল তারা তেমন লেখাপড়া করতনা। লেখা -পড়ার চর্চা না থাকায় সবাই বিদেশ চলে যাবে এই স্বপ্ন দেখত, আমিও তাই, লেখা পড়ার মুল্য কখনো বুঝিনি, লেখা পড়া প্রচুর ফাঁকি দিতাম। যখন ২০০৩ সালে এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছিলাম,
আমার যে দিন রেজাল্ট দিবে বাবা অধীর আগ্রহে ছিল।অফিসে বাবার কলিগরা বাবাকে বলতে লাগল আমাদের ভাতিজা রেজাল্ট দিবে মিষ্টি আনান,আমরা মিষ্টি খাব।কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আমার রেজাল্ট খারাপ আসে ,আমি গনিতে ফেল করি।
বাবা বাসায় এসে মাকে বলল, আমার কলিগের ছেলে পরীক্ষা পাশ করেছে,মিষ্টি খাইয়েছে।
আমাকে জিজ্ঞেস করল ছেলের রেজাল্টের কি খবর? বাবা লজ্জায় রেজাল্টের কথা কাউকে বলতে পারেনি।বাবা কোন কিছুর অভাব দেয়নি,কষ্টের প্রতিদান এরকম ?
স্বপ্ন ছিল আমার ছেলে কলেজে যাবে,লেখা-পড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাড়াবে ।
এই কথা গুলো বলে বাবা কে অনেক কাঁদতে দেখেছি।বাবার কান্না দেখে মা ও কেঁদেছে । বাবা মায়ের কান্না দেখে নিজের মনে অপরাধ বোধ কাজ করলো। অনেক অপরাধী মনে হল।
আমার জন্য বাবা মা এত কষ্ট পেল!
আমি তখনই মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরন করব। নতুন করে আমি পড়া লেখা শুরু করি ।
এই জিদ নিয়ে ২০০৪ সালে গণীত পরীক্ষা দিয়ে ভাল ভাবে পাশ করি।
২০০৬ এইচ এস. সি,২০০৯ বি.বি.এস পাশ সহ হিসাব বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাশ করি।সেই সাথে আমরা ৩ ভাই হিসাব বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাশ
করি।
বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরন করেছি আলহাদুলিল্লাহ,
আমাদের পরিবার ছিল একটি শিক্ষিত পরিবার।
সমাজের মানুষের এত ভালবাসা, সম্মান পাই সব কিছু সম্ভব হয়েছে,পরিশ্রম ও বাবা -মা দোয়ার বরকতে।
🌺🌺🌺
🌹🌺🥀 জীবনে কঠিন বাস্তবতার লড়াই………
সংসার চলত বাবার সমান্য বেতনের টাকা দিয়ে।
২০১২ সালে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে জয়েন করি। দু বোনের বিয়ের পর মায়ের শরীরের অবস্থা বেশী ভাল থাকতোনা।
মা আমার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলে।
মার কথায় ২০১৩ইং বিয়ে করি,
২০১৪ সালে আমাদের সংসারে পুএ সন্তান জন্ম নেয়।
সংসারের খরচ একটু বেড়ে গেল।যেহেতু বাবা সংসারে খরচ চালাত আমি মাঝে মাঝে সাপোর্ট দিতাম। ছেলের খাবারের দুধের খরচ মাসে ৩ (তিন) হাজের টাকা লেগে যেত ,আমার অফিসে যাতায়াত খরচ হয়ে অবশিষ্ট যা থাকত তা সংসারে দিয়ে দিতাম।আমার ছোট দুই ভাই মাস্টার্স পাশ করে বেকার।চাকরি চেষ্টা করেও পাচ্ছেনা।
আমি যখন অফিসে ছিলাম, হঠাৎ বাবা কল দিয়ে আমাকে বলল , মিলের অবস্থা ভাল না থাকায় বাবাকে চাকুরী হতে অব্যহতি দিয়েছে।খবরটা শুনার পর আমার মাথায় যেন আকাশ টা ভেঙ্গে পড়ল।বাবাকে কোন রকম শান্তনা দিয়ে ফোন টা রাখলাম। অফিস থেকে যখন বাসায় ফিরলাম সবার মন খারাপ। মা আমাকে জরিয়ে ধরে অঝরে কাঁদতে লাগল।যেহেতু আমি বড় ছেলে আমি ভেঙ্গে পড়লে চলবেনা। আমাকে শক্ত হতে হবে, সবাইকে শান্তনা দিয়ে সংসারের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিলাম।আমি এত অল্প বেতনের টাকা দিয়ে সংসার কি ভাবে চালাব,যখন ভাবতাম দু চোখ বন্ধ হয়ে যেত,বাবার সাপোর্ট আমাদের সংসারে কত বড় অবদান ছিল আমি হারে হারে টের পেয়েছি আল্লাহর উপর সব সময় ভরসা রাখতাম।আল্লাহ বান্দাদের কে মাঝে মধ্যে বিপদ আপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। জীবনে চলতে গেলে অনেক ঝড় বাদা আসবে ভেঙ্গে পরলে চলবেনা অন্য কোথায় ভাল বেতনের জব খুজতে হবে অনেক চেষ্টার পরে আমার অন্য একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে প্রায় ৩(তিন) গুণ বেশি সেলারী পেয়ে একাউন্স অফিসার হিসেবে জয়েন করি।কঠিন বাস্তবতায় লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি।
🌺🌺🌺
🌹🌺🥀 জীবনে সফলতা.......
আমি ২০০৯ সালে বি,বি,এস পাশ করেই, একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে হিসাব বিভাগে ,সহকারী অফিসার হিসেবে জয়েন করি । চাকরীর পাশা পাশি হিসাব বিজ্ঞানে সফলভাবে মাস্টার্স পাশ করি।
৪ বছর চাকুরীর পর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে, অন্য আরেকটি কোম্পানীতে একাউন্স অফিসার হিসেবে বেশী বেতনে জয়েন করি।তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমি একাউন্স ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি।পাশা পাশি এক জন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।রেজাল্ট খারাপ হওয়াতে বাবা মা যদি সে দিন কষ্ট না পেত তা হলে আমার বিবেক কে জাগ্রত করতে পারতাম না। সেই দিনের জিদ আজ আমাকে সুন্দর ভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে সক্ষম করেছে ।
🌺🌺🌺
🌹🌺🥀 উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন……….
চাকুরীর পাশা পাশি উদ্যোক্তা হওয়ার কথা কখনো ভাবিনি, এ কথা মাথায়ও আসেনি। আমার বন্ধু ইকবাল সে সৌদিআরব থেকে আমাকে নিজের বলার মতো একটা গল্পের ফাউন্ডেশনে কথা বলে, রেজিস্টেশন করতে বলে,পাশা পাশি ৯০ দিনের সেশন ক্লাস করতে।আমি যখন সেশনে স্যার এর কথা গুলো শুনতাম মনের ভিতরে স্যার এর কথা গুলো নাড়া দিয়ে উঠত।যে কেউই নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করবে। স্যারের কথা গুলো আমাকে নতুন করে মনের মাঝে সাহস দিতে থাকে । স্বপ্ন আমাকে রাতে ঘুমাতে দিতনা। স্যার এর কথা গুলো সব সময় আমাকে শক্তি জোগাত, স্বপ্ন নিয়ে প্রতিদিন সেশন ক্লাস মনোযোগ দিয়ে শুনি, পাশাপাশি আমরা প্রতিদিন রাএ ৯ ঘটিকায় আমাদের জেলা টিমের সদস্যদের নিয়ে সেশন চর্চা করি। সেশন চর্চার মাধ্যমে নিজের কথা বলার জড়তা কাটাচ্ছি,অনেক কিছু শিখার আছে,এ এক বিশাল জ্ঞান ভান্ডার।
🌺🌺🌺
🌹🌺🥀 কৃতজ্ঞতা প্রকাশঃ
আপনার নিজের বলার মতো একটা গল্পের ফাউন্ডেশনে সন্ধান না পেলে, আজ হয়ত আমি নতুন উদ্যোক্তা হওয়া স্বপ্ন দেখতাম না ।এত সুন্দর একটি পরিবার পেতাম না
আমি নিজেকে ধন্য মনে করি প্লাটফর্মের আজীবন সদস্য হতে পেরে।আমাদের কে নিয়ে আপনার মনে যে সুপ্ত প্রেমের বীজ বপন করেছেন তা আমরা যেন পূরন করতে পারি।আমরা যেন বিশ্বের দরবারে আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারি।
কৃতজ্ঞতা :
প্রিয় বন্ধু ইকবালঃ ১৬-তম ব্যাচে নিবন্ধন করে দেওয়ার জন্য,আমাকে আলোকিত মানুষের পাশে থাকার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।
কৃতজ্ঞতা #
প্রিয় ভাই রায়হানুর রহমান ,প্রিয় আপু তাজরীন চৌধুরী চম্পা আপনাদের সহযোগিতা না পেলে আমি এই প্লাটফর্ম এর সদস্যদের ভালবাসা পেতাম না।নিজেকে সবার কাছে পরিচিতি হওয়ার এত বড় সুযোগ পেতাম না। -আমার প্রিয় বড় ভাই ও বন্ধুবর #মোস্তাক আহমেদ মৃধা , #সাব্বির আহমেদ, #লোকমান , #ফেরদৌস ভাই, #সুমন ভূইয়া #এম কে ঈসমাইল,সাজ্জাদ হোসেন ভুইয়া ভাই সহ নরসিংদী টিমের প্রিয় ভাই ও বোনদের প্রতি কৃতজ্ঞ ।
যারা প্রতিদিন আমাকে সাথে নিয়ে সেশন চর্চা ক্লাস করেন ।নরসিংদী টিমের সকল ভাই বোনের প্রতি আমি অনেক ঋণী তারা যদি ভালোবেসে আমাকে সামনে এগিয়ে না দিতেন আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব হত না আজ এ পর্যন্ত আসা। আপনাদের সকলের অনুপ্রেরণায় আজ আমি অনুপ্রানীত।
🌺🌺🌺
🌹🌺🥀 শ্রদ্ধেয় লিডার এর ভালবাসায় সিক্তঃ
আপনি শিখিয়েছেন কি ভাবে পরিবারের সাথে, বাবা মার সাথে কথা বলতে হয়, কি ভাবে সম্মান করতে হয়,কি ভাবে ভাল মানুষ হওয়া যায়, বিপদে মানুষ এর পাশে দাঁড়াতে হয়।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পরেও কিভাবে সততা,মেধা শ্রম দিয়ে নিজেকে তৈরি করা যায়, ভালোবাসা দিয়ে ভালো বাসা আদায় করা যায়, সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায়, ভালো মানুষ হওয়া যায়,সবগুলো সম্ভব হয়েছে নিজের বলার মতো একটা গল্পের ফাউন্ডেশনের জন্য। আপনি বেঁচে থাকবেন কোটি কোটি মানুষের মনের গহিনে।কোটি কোটি মানুষের অফুরন্ত ভালবাসা নিয়ে।
স্ট্যাটাস দ্যা ডে - ৭১৬
তারিখ ৬-০১-২০২২
🌸 💐 🌸 💐 সদস্য 💐 🌸 💐 🌸 💐
🌹❇️🌿নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন
🌹❇️🌿আবদুল্লাহ আল মামুন
🌹❇️🌿ব্যাচঃ --নং-- ১৩
🌹❇️🌿রেজিঃ--নং-- ৫৫৮৪৬
🌹❇️🌿জেলাঃ-- নরসিংদী সদর
🌹❇️🌿উপজেলাঃ-- পলাশ
🌹❇️🌿বিভাগঃ ঢাকা
🌹❇️🌿ব্লাড -গ্রুপ- B+