কথা দিয়ে কথা রাখা ও সময়কে মূল্য দেওয়া।
🌿বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম🌿
🌼আসসালামু আলাইকুম রাহমাতুল্লাহ্ ওবারাকাতু।
🌹"আমার জীবনের গল্প"🌹
❤️আজ আমি আমার এই ছোট জীবনের গল্প আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করবো। আশা করি সবাই আমার জীবনের গল্পটি পড়বেন।
❤️প্রথমে শুকরিয়া জানাই মহান আল্লাহর দরবারে যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, এবং সাথে দিয়েছেন অনেক রকমের মেধা, যোগ্যতা ও দিয়েছেন ধৈর্য্য শক্তি। লক্ষ কোটি দরুদ ও শান্তি বষিত হোক প্রিয় নবী হরযত মোহাম্মদ(স:) এর প্রতি। এবং "নিজের বলার মতো একটি গল্প "ফাউন্ডেশন যুক্ত হওয়ার তৌফিক দান করেছেন।
❤️আমি কৃতজ্ঞতা জাপন করছি আমার জন্মদাতা পিতা মাতার প্রতি যারা অক্লান্ত পরিশ্রমে করে আমাকে লালন পালন করে বড় করেছেন।
❤️❤️❤️কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাই আমাদের সকলের প্রিয় শিক্ষক" জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ" স্যারকে। যিনি এতো সুন্দর একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছেন আমাদের মাঝে।
❤️আমি মহান আল্লাহর দরবারে স্যার সহ তার পরিবারের সকলের জন্য দোয়া করছি। আল্লাহ যেন সবাইকে সুস্থতা ও নেক হায়াত দান করেন।- আমিন "।
❤️আসলে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে কোন না কোন গল্প থাকে। সে গল্পে থাকে হাসি ,আনন্দ, বেদনা, পাওয়া না পাওয়া ইত্যাদি বিষয়। তার পরে ও আমার জীবনে কিছু কথা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।
🌹জন্ম পরিচয়:
আমি ফারজানা আক্তার। আমার জন্ম১৯৯২ সালে। আমার গ্রামের নাম-মাছিমপুর, জেলাঃ গাজীপুর, টঙ্গী থানায় অবস্থিত। আমাদের গ্রামে অতি সাধারণ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ে। আমরা ২বোন এক ভাই। আমি হচ্ছি বড় মেয়ে, আমার বাবার প্রথম কন্যা সন্তান হচ্ছে আমি। আল্লাহ তালার প্রথম নিয়ামত হিসেবে আমাকে দান করেছেন। আমার পিতা -মাতা, মাতৃত্ব ও পিতৃত্ব স্বাদ ভোগ করছে আমাকে দিয়ে। আমার বাবা একজন সাধারণ চাকরিজীবী। আমার মা একজন গৃহিনী। বোন বি বি এ পরীক্ষার্থী আর ছোট ভাই H.S.C.পরীক্ষা দিয়েছে।
🌹শৈশব কাল:
প্রতিটি মানুষের শৈশব কাল থাকে অনেক আনন্দময় ঠিক তেমনি আমার জীবনে শৈশব কাল ছিল আনন্দ মুখরিত। সুখে ,আনন্দে কেটেছে আমার জীবন। ছোট পরিবারের ,ছোট সংসারে আমার জীবন যাপন। কখন কোন অভাব বুঝতে পারিনি। হাসি আনন্দে বেড়ে ওঠা। ভাই বোনদের দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসায় আমার জীবন।
🌹কৈশোর কাল:
দাদার প্রতীক সম্পত্তি অনুসারে গাজীপুরে টঙ্গীতে আমাদের বাড়ি। জন্মের পর থেকেই দাদার বাড়িতে থাকা। সেখানে আমার জন্ম পরিচয়। আমার বাবা ছোট একটা চাকরিজীবী। তার বেতন খুব সীমিত কিন্তু আমার বাবা একজন সৎ মানুষ। আমার দাদা সম্পত্তি অনুসারে কিছু ঘর ভাড়া আর বাবার চাকরি টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। ছোটখাটো সংসারে সুন্দর মত দিন কাটে আমাদের।
🌹শিক্ষাগত জীবন:
আমি S.S.C পাস করি২০১০ সালে।আশরাফ টেক্সটাইল মিলস হাই স্কুল থেকে।H.S.C পাস করে ২০১২ সালে পাইলট স্কুল হ্যান্ড গার্লস কলেজ থেকে। জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু ভর্তি হতে পারিনি। কারণ আমি সন্তান সম্ভবা ছিলাম।পরবর্তীতে আমি টঙ্গী কলেজ থেকে B.B S পাস করেছি২০১৯ সালে। এখন আমি মাস্টার্স ভর্তি হয়েছি।
🌹বিবাহিত জীবন:
আমি যখন H.S.C দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, তখন আমার বিবাহ হয়ে যায়। বিয়ের পর আমি H.S.C পাস করি। আমার স্বামী একজন প্রবাসী। বিয়ের সাত দিন পরে প্রবাসে চলে যায়। এর জন্য আমার বাবার বাড়িতে থাকতে হয়। বাবার বাড়িতে থেকে H.S.C পাস করি। বিয়ের ঠিক এক বছর পর দেশে ফিরে আসে। তার পর থেকে আমি একটি নতুন সংসারে পা দিলাম। সংসার জীবনে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি। নতুন একটি পরিবারকে নিজের পরিবার হিসেবে মেনে নেই। তারা আমাকে অনেক আপন করে নেয়। এবং আমিও তাদেরকে অনেক আপন করে নেই।২০১৩ সালে আমার প্রথম সন্তান হয়। তখন যেন আমি পৃথিবীর সবটুকু সুখ গ্রহণ করতে পারে। সন্তান হওয়ার কারণে পড়ালেখা করতে পারি নাই।২০১৫ সালে আমার শ্রদ্ধাভাজন শশুর মৃত্যুবরণ করে। আমি সংসারে বড় বউ হওয়ার কারণে আমার এবং আমার স্বামীর প্রতি দায়িত্ব এসে পড়ে। আমাদের সংসারেটা পরিচালনা করতে হয়, এবং দেবরের দায়িত্ব পালন করতে হয় ছোট ভাইয়ের মতো করে। বয়সে ছোট হলেও আমার দায়িত্ব ছিল অনেক বেশি।
🌹আমার স্বপ্ন:
আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন একজন আদর্শ শিক্ষিকা হওয়ার। তার জন্য আামি২০১৬ সালে শিক্ষাগত জগতে পা ফেলি, এবং সাফল্যের সাথে পেশাটাকে ধরে রাখতে পারে। শিক্ষাগত পেশা থাকার সময় আমার মাঝে ব্যবসার প্রতি আগ্রহ জাগে। তার জন্য আমি নিজে উদ্যোগে এবং স্বামী ও বাবা অনুপ্রেরণায় নিজেই উদ্যোগটি শুরু করি। অনেক সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারে এবং কি শিক্ষাগত পেশাটাকে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আমার উদ্যোক্তা হচ্ছে রেডিমেড পোশাক মেয়েদের এবং বাচ্চাদের। তার মাঝে আমিB.B.S পড়া চালিয়ে যাই। সব মিলিয়ে ভালোই চলছিল।২০১৭ সালে আমার কন্যা সন্তান জন্ম হয় এর ফলে আমার ব্যবসাটা কে সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারিনা। তার কারণে এই ব্যবসাটা আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যেতে লাগে।২০১৭ সালে আমাদের সংসারে আরেকটি ঝড় নেমে আছে। সেটা হচ্ছে মায়ের মত প্রিয় শাশুড়ি মা মৃত্যুবরণ করে।তার ফলে আমাকে আমার বাবার বাড়িতে থাকতে হয়।
"আমরা নারী, আমরা পারি।"
নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এখন আমি আবার আমার ব্যবসাটাকে পরিচালনা করার চেষ্টা করছি।
"আমরা নারী, আমরা পারি,
আমরা দেশের ভবিষ্যৎ।
দেশের তরে সংগ্রামী মরা,
দেশ আমাদের অহংকার।
আমরা নারী ,আমরা জয়ী,
নারী সকল উদ্যোক্তা"
🌹প্লাটফর্মে যুক্ত হবার গল্প:
আমার স্বামী একজন প্রবাসী। তার ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকার সত্ত্বেও প্রবাসে পা ফেলতে হয়। প্রবাসে থাকলে কি হবে ব্যবসার প্রতি তার অনেক মনোযোগ।ব্যবসার সম্বন্ধে ধারণা নেওয়ার জন্য ইউটিউব ঘাটাঘাটি শুরু করে। হঠাৎ করে ইউটিউবে দেখতে পায় "জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ "স্যারের ব্যবসায়িক আলোচনা। স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, শুরু করুন এবং লেগে থাকুন---- সাফল্য আসবেই ।এই জাতীয় আলোচনা দেখতে পায়। তার কাছে খুব ভালো লাগে, এবং কি আমাকেও দেখার জন্য আগ্রহী করে তোলে। আমিও স্যারের আলোচনা গুলো শুনি আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।
"বৃষ্টি সবার জন্যই পরে, তবে ভিজে কেউ কেউ।" স্যারের আলোচনার মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রভাত আছে সেগুলো অনেক তাৎপর্য সম্পন্ন । স্যারের ভিডিও আলোচনার মাধ্যমে আমি বুঝতে পেরেছি। স্যারে শুধু উদ্যোক্তা হতে শেখায় না যে একজন মানবিক মানুষ হতে শেখান। তাই আমি এই প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে পরি। একদিন আমার স্বামী দেখে ফেসবুকে রেজিষ্ট্রেশন করানো হচ্ছে। সে নিজেই রেজিস্ট্রেশন করে এবং আমাকে রেজিষ্ট্রেশন করতে বলেন। এবং আমি রেজিষ্ট্রেশন করি।
আমি ফাউন্ডেশন ১৬তম ব্যাচ রেজিষ্ট্রেশন করি। রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সহযোগিতা করেন গাজীপুর জেলার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জহির ভাই মাধ্যমে যুক্ত হতে পারি। এবং কি গাজীপুর মেসেঞ্জারের টিমে যুক্ত হতে সাহায্য করে আশরাফুল আলম ভাই ও সুবর্ণা আক্তার ঝর্ণা আপু মাধ্যমে। আল্লাহ তাদের মনের আশা পূরণ করুক এই দোয়ায় সব সময় করি।
"নিজের বলার মত একটা গল্প" প্লাটফর্মে থেকে যা শিখেছি-
# ভালো মানুষ হওয়া ও জীবনের সংগ্রাম করা।
# মানুষের প্রতি মানুষের মূল্যবোধ তৈরি করা।
# কথা দিয়ে কথা রাখা ও সময়কে মূল্য দেওয়া।
# ধৈর্য্যশীল হয়ে কাজের প্রতি লেগে থাকা।
# মা-বাবার যত্ন ও সেবা করা।
# মনে সাহস জেগানো।
# নিজেকে ভালোবাসতে শিখা।
🌹আমার জীবনের গল্প লিখতে গিয়ে খুঁজে পেলাম "নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন" আমি জনাব "ইকবাল বাহার জাহিদ "স্যারের প্রতিটি কথাগুলো বুকে ধারণ করে চলতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
🌹যারা ধৈর্য্যসহকারে আমার এই লেখাটি সম্পূর্ন পড়ছেন ।তাদের প্রতি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল, সাধুবাদ, মোবারক বাদ আন্তরিক ভালোবাসা ও অসংখ্য ধন্যবাদ রইল। সেই সাথে ভাই ও বোনদের সুস্থতা কামনা করছি। সুস্থতার কোন বিকল্প নেই।
ধন্যবাদ সবাইকে।
স্ট্যাটাস দ্যা ডে - ৭১৬
তারিখ ৬-০১-২০২২
🌿ফারজানা আক্তার।
ব্যাচ নং-১৬।
রেজিষ্ট্রেশন নং-৭৮২৫৬।
জেলা -গাজীপুর। 🌿