আমার স্বামী সন্তানদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেন
🕌বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 🕌
🎤আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ,
🤲সর্বপ্রথম আমি মহান আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'আলার প্রশংসা করছি, যিনি আমাকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন এবং মানব কুলের শ্রেষ্ঠ মানব হযরত( মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর উম্মতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন,আলহামদুলিল্লাহ,,,,।
🕌দুরুদ এবং সালাম পেশ করছি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর প্রতি।
💗কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সেই মহান ব্যক্তিত্বের প্রতি,যিনি লক্ষ লক্ষ স্বপ্নবাজ তরুণ তরুণীর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে, সমাজকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য,অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।সকল স্বপ্নবাজদের কে একই ছায়ায় নিয়ে আসার জন্য তৈরী করেছেন একটি প্লাটফর্ম,যার নাম ''নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন''।তিনি হচ্ছেন আমাদের প্রিয় মেন্টর প্রিয় স্যার জনাব
🌺Iqbal Bahar Jahid 🌺স্যার।
💝অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি সেইসব আপু এবং ভাইয়া দের প্রতি,যারা শুরু থেকে এই পর্যন্ত ফাউন্ডেশনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রিয় স্যারের কাজকে সহজ করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।আল্লাহ যেন তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করেন।
💗প্রিয় গ্রুপের প্রিয় আপুরা এবং ভাইয়ারা, সবাইকে জানাচ্ছি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ।
😔আমি আবারও আপনাদের সাথে গল্প করতে চলে এলাম,আসলে এই প্লাটফর্ম আমার কাছে এতোটাই আপন হয়ে গেছে যে, আমার যেকোনো কথাই এইখানে শেয়ার করতে চলে আসি।
#আজ আমি আপনাদের সাথে আমার ভাঙা চুড়া সপ্নের কথা শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ,,,। আল্লাহ যেন আমাকে তৌফিক দান করেন,,,।
আপনাদের হাতে যদি সময়, থাকে তাহলে পুরো লেখাটি পড়বেন ইনশাআল্লাহ,,,,
তাহলেই আমার লেখাটা সার্থক হবে।
#আমার আগের পোস্টে আমি আমার পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছুই শেয়ার করেছিলাম।আমরা তিন ভাই বোনের মধ্যে আমি পরিবারের বড় মেয়ে।আমার ছোট বেলা থেকেই সপ্ন ছিলো, আমি বড়ো হয়ে শিক্ষিকা হবো।কারণ, যখন আমি কিন্ডারগার্টেনে পড়তে যেতাম, স্কুলের ম্যামদেরকে আমার অনেক ভালো লাগতো,ওনারা আমাদের খুব সুন্দর ভাবে পড়া বুঝয়ি দিতেন, সেই থেকেই আমার ছোট্ট হৃদয়ে সপ্নের বাসা বুনি,যে আমিও একদিন টিচার হবো।🥰
তার আরও একটা কারণ হলো আমি তেমন বুঝিয়ে কথা বলতে পারি না, তাই হয়তো আমার এমন একটা সপ্ন ছিলো। তবে বড়ো হওয়ার সাথে সাথে আমার সপ্নও বড়ো হতে লাগলো,আমি বাবার বড় মেয়ে তাই আমাকে বাবা মায়ের পাশে দাড়াতে হবে, আমি অনেক লেখা পড়া করবো ইত্যাদি ইত্যাদি,,,। কিন্ত আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে,মেয়েদের এতো সপ্ন দেখতে নেই,,,, 😔
আব্বুর আমার উপর কোন ভরসাই ছিলো না। যদিও আব্বু আমাদের তিন ভাই বোনকেই সমান ভালো বাসতো। আমার মনে আছে, আমি যখন ছোট ছিলাম, আব্বু আমাকে কাঁধে করে নানু বাড়ি থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতো, মাঝে মাঝে মসজিদে নিয়ে যেতো,আমাকে পাশে বসিয়ে রেখে আব্বু নামাজ পড়তো।অনেক সময় আমি মসজিদের বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে থাকতাম, আব্বু নামাজ শেষ হলে আমাকে নিয়ে নানু বাড়িতে দিয়ে আসতো।
সত্যি কথা বলতে, প্রথম সন্তান মেয়ে হয়েছি বলে আমার বাবার বাড়ির অনেকেই একটু অবহেলার চোখে দেখতো,বলতো মেয়ে না হয়ে যদি ছেলে হতাম তাহলে আব্বুর পাশে দাড়াতে পারতাম,,,। একদম সামনাসামনিই বলতো।তখন খুব কষ্ট হতো,মনে মনে ভাবতাম মেয়ে হয়েছি তো কি হইছে আমিই আব্বু আম্মুর দায়িত্ব নিবো ইনশাআল্লাহ,,,,। তবে আব্বু আম্মু কোন দিনই আমাদের তিন ভাই বোনদের আলাদা চোখে দেখেনি।আব্বুতো আমাদেরকে কখনো নাম ধরে ডাকে না, আব্বুও আমাদেরকে আব্বু বলেই ডাকে।এখনো ফোন দিলে আমি কিছু বলার আগেই, আব্বু বলে ফেলে যে,আব্বু,,, তোমার শরীরটা ভালোনি,,,বলেই আগে একটা হাসি☺। তারপর অন্য কথা।
কিন্তু তারপরও আব্বু আমার পড়া লেখার ব্যাপারটা গুরুত্ব দেয়নি,যদিও আমি আমার মামার বাড়িতে থেকে লেখা পড়া করছিলাম,খরচও মামারাই বহন করতেন।
আমি যখন ক্লাস নাইনে উঠি, তখনই সবাই বিয়ের জন্য উঠে পরে লাগলো, বলতে লাগলো মেয়েদের বিশি লেখা পড়া করার কি দরকার,,, 😔।পড়ে কোন রকমে SSC পর্যন্ত উপনীত হতে পেরেছি, আর সম্ভব হয়নি।রেজাল্টের একদিন আগেই বিয়ে হয়ে যায়।মামারা অনেক চেষ্টা করেছে বিয়ে আটকানোর,কিন্তু সম্ভব হয়নি।আমার মামারাও চেয়েছিলো আমি আরও লেখাপড়া করি,তাছাড়া আমি ছাত্রী হিসেবেও খারাপ ছিলামনা,আলহামদুলিল্লাহ,,,।আমার মামারা আমার জন্য যা-কিছুই করুক, আমার ব্যাপারে সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার শুধু আমার আব্বু কাকাদের,এটাই সমাজের নিয়ম। বরপক্ষ অবশ্য বলেছিলো রেজাল্ট ভালো হলে আমাকে পড়তে দিবে। কিন্তু বিয়ের পর দিন যখন রেজাল্ট বের হলো, সব কথা উল্টো হয়ে গেলো।তারপর অনেক কান্না কাটি করেও কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা রাজি করানো সম্ভব হয়নি।কিছু দিন কান্না কাটি করার পর সপ্নগুলো দূর্বল হয়ে মরে গেলো।😢
বিয়ের পর কয়েক মাস ভালই চলছিল, কিন্তু পরে শুরু হল যুদ্ধ, টিকে থাকার যুদ্ধ।
আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমার বয়স ষোল, কিন্তু তারপরও আমি সংসারের মানে বুঝতামনা, এখন যেমনটা বুঝতে পারি।আমি আসলে একটু সান্ত সভাবের মেয়ে ছিলাম। বাবার বড় মেয়ে এবং বিয়েও হয়েছে পরিবারের বড় ছেলের সঙ্গে, তারমানে পরিবারের বড় বউ হয়েছি।
হারতে হারতে অনেকবার আত্মহত্মাও করতে গিয়েলাম,কিন্তু আল্লাহ আমাকে এই ফিতনা থেকে বাচিয়েছেন এবং বারবার বাচিয়েছেন,আলহামদুলিল্লাহ,,,, 🤲
এভাবেই প্রায় পাঁচ বছর কেটে যায়। তারমধ্যে আমি আবার ছেলে সন্তানের মা,ও হয়ে গেছি।তারপর দ্বিতীয় সন্তানের মা হবো যখন, একদিন ডক্টর বলেন যে আমাদের মেয়ে সন্তান হবে, আর সেদিন থেকেই যেন আমার জীবনের নতুন মোড় নিতে শুরু করলো এবং ছোট মেয়ে হওয়া পর্যন্ত আমার জীবনটা যেন পুরোপুরি বদলে গেল আলহামদুলিল্লাহ,,,,।জীবনের সকল নেগেটিভ ছায়াগুলো পজিটিভ এ পরিণত হল।তার পর থেকে আমাকে আর বড় কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি, আলহামদুলিল্লাহ,,,। 🤲
🌿🌿🌿
#আমর জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার আচ্ছন্ন দিন আসে সেই দিন,যেদিন আমার আম্মু আমাদের ছেড়ে চলে গেছে,,,, 😢😢
৬/৮/২০২০ইং
আর সেই কষ্ট কখনো ভুলা যাবে না,মৃত্যুর আগ মূহুর্তেও না,,,😢
তারপরও কিছুটা ভুলে থাকার জন্যও আমার বিজনেস জীবনের গল্প শুরু হয়।
UTV লাইভ শো দেখে আমি "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন " সম্পর্কে জানতে পারি। গ্রুপের সদস্য হতে পেরেছি এবং রেজিষ্ট্রেশন করে ফেললাম ১৪ তম ব্যাচে।এই প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে আমি নিজেকে অনেকটাই বদলাতে পেরেছি, যেমন, আমি অনেকটা অনুপ্রেরণা পেলাম স্যারের সেশনগুলো পড়ে। যেমনটা আম্মু আমাকে দিতো, সেশন চর্চা মিটআপে যুক্ত হওয়ার পরে আমার কথা বলার জড়তা অনেকটা কেটে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ,,,।
আমি আমার মনের অনেক কথা প্রিয় প্লাটফর্মের ভাই বোনদের সাথে শেয়ার করতে পারছি, এটা আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া। আমি আগের পোস্টে বলেছিলাম যে আমি চাপা সভাবের মেয়ে, কাউকে সহজে কোন কথা শেয়ার করতাম না, যার কারণে আমার খুব কষ্ট হতো। এখন কষ্ট হলেই গ্রুপে চলে আসি,,,🤗🤗।
গ্রুপে অবশ্য এখনো আমার কোন সেল হয় নাই, তবে সপ্ন দেখছি আগামীতে হবে, ইনশাআল্লাহ,,,
এই প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার পরে এখন নতুন করে সপ্ন দেখছি, আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হবো ইনশাআল্লাহ,,,,।
আমি ইসলামের গন্ডির মধ্যে থেকে পর্দা রেখে, হালাল রুজি এবং রিজিকের সন্ধান করবো,দ্বীনের পথে ব্যায় করবো ইনশাআল্লাহ,,,। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন একদিন আমার ঘুরে দাড়ানোর গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি,ইনশাআল্লাহ,,,।
আল্লাহ যেন আমাকে, আমার স্বামী সন্তানদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেন। আমার আব্বুর জন্যও দোয়া করবেন। আমিও সবার জন্য দোয়া করবো ইনশাআল্লাহ,,, আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ ঈমানদার না করে মৃত্যু না দেন। শুনেছি প্লাটফর্মের অনেক ভাইয়া আপুরা অসুস্থ, আল্লাহ যেন সবাইকে সুস্থতার নেয়ামত দান করেন। আমার পুরো লিখাটা যারা কষ্ট করে ধৈর্য্য নিয়ে পড়েছেন,আল্লাহ যেন সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করেন, তাদের রুজি এবং রিজিকের বরকত দান করেন।
আমার লেখায় যদি কোথাও ভুল হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ।
আর হ্যা,একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, আমার স্বামীও এই গ্রুপের ১৬ ব্যাচের সদস্য, সবাই তার জন্যও দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ,,,।
আমার বিজনেস পেইজে ঘুরে আসার আমন্ত্রণ রইলো, সবাই আমার পাশে থাকবেন ইনশাআল্লাহ,,,। আমার পেইজের নাম MS Dream Collection.
স্ট্যাটাস দ্যা ডে - ৭১৬
তারিখ ৬-০১-২০২২
🌸মাহমুদা আক্তার স্বর্ণা।
🌸কমিউনিটি ভলান্টিয়ার।
🌸ব্যাচ-১৪,
🌸রেজিঃ৬৭০০৭,
🌸জেলা-কুমিল্লা।
🌸বর্তমান অবস্থান -লক্ষীপুর।
পেইজ লিংক -https://www.facebook.com/MS-Dream-Collection-112746844184515/
🌿🌿🌿