💜💜 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম  💜💜

 আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু প্রিয় মেন্টর নিজের বলার মত গল্পের প্ল্যাটফর্মের ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে আন্তরিক সালাম ও অভিনন্দন। আমার নিজের বলার মত প্ল্যাটফর্ম এর সম্মানিত ভাই ও বোনদের সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন আমি ও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।

🌹🌹🌹🌹#####♦️♦️♦️♦️🌹🌹🌹

                            আমার পরিচিতি  

♥️♥️♥️  আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার বাড়ি  ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার বান্দুরা  গ্রামে অন্তর্গত। আমার বাবা একজন কৃষক।আমরা দুই বোন এক ভাই। ভাই বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট। আমি স্বতন্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। 

         🌹🌹🌹  আমার শিশুকাল ♥️♥️♥️

♥️♥️♥️ আমি পরিবারের সবার ছোট বলে সবার খুবই আদরের ছিলাম আমার বড় ভাইয়া সৌদি আরবের ছিল। আমার বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট  বলে আমি না চাইতেই সবকিছু পেয়ে গেছি। তাই কষ্ট কি জানিস আমি তেমন বুঝিনি। খুবই  আনন্দময় ছিল আমার ছোট বেলাটা।

     ♥️♥️♥️ আমার লেখাপড়া জীবন। 🌹🌹🌹

আমার প্রথমে লেখাপড়া শুরু হয় শিকারিপারা টি কে এম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এখানে আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করি তারপর আমাদের একটা নতুন বাসা নেয়া হয় নতুন বাসায় আসার পরে আমার স্কুলও পরিবর্তন হয়ে যায় তারপরে আমি দাউদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি। এসএসসি পাশ করার পর আমি দোহার নবাবগঞ্জ ডিএন কলেজে ভর্তি হই সেখান থেকে আমি ইন্টার পাস করি।

     ♥️♥️♥️ বিবাহিত জীবন ♥️♥️♥️

আমার জীবনের কাহিনী শুরু হয় বিয়ের পরে। আমার বাসায় আমরা তিনজন মেম্বার ছিলাম আমি আমার বাবা মা কারণ আমার বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই আর ভাইয়া বিদেশে থাকে তাই আমাদের পরিবারটা ছিল ছোট।আমার কোন কাজ করতে হতো না।আর আমার বিয়ে হয়েছে জয়েন ফ্যামেলিতে সেখানে ১৫ মেম্বার ছিল সে ফ্যামেলিতে একজাস্ট করতে অনেক কষ্ট হত তারপর আমি অনেক খুশি ছিলাম এই ভেবে যে আমি নতুন কিছু সম্পর্ক পেলাম। খুব ভালোই কাটছিল দিনগুলো।কিন্তু সব সুখ সবার ভাগ্যে সয়না বিয়ের ১৫ দিনপর আমার হাজবেন্ড সিঙ্গাপুর চলে যায়। তারপর থেকেই শুরু হয় আমার জীবন সংগ্রাম। যে মেয়েটা বাসায় কখনো কোনো কাজই করেনি সেই মেয়েটা একটা ফ্যামিলির সমস্ত কাজ করতে হতো ।নতুন ফ্যামিলি নতুন মানুষ সবাই কেমন জানি কেউ আমাকে সেভাবে আপন করতে চাচ্ছে না। আমি যতই তাদের আপন করতে চাই না কেন তারা আমাকে পরই ভাবে। যে মেয়েটা বাবার কাছে ছিল রাজকন্যার মত। বাবা-মা আমাকে সবসময় রাজকন্যার মত লালন-পালন করেছেন। সেই মেয়েটাই শ্বশুর বাড়ি এসে সব কাজ  করে ও সবাইকে ভালোবেসে আপন করে নেয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সেখানে সে অবহেলিত। আমার বড় ভাসুর সব সময় আমার পিছনে লেগে থাকত। আর আমার সবকিছু খুঁত  ধরতে থাকতো। আমি যতই সবার মন জয় করতে চেষ্টা করি না কেন সব কিছুতে আমার ভুলি ধরে শুধু। এভাবেই শুরু হয় মানসিক নির্যাতন।  আমি তেমন কিছু বুঝতাম না শুধু কান্না করতাম। আর বাবার বাড়ি বেশি থাকত। এখানে তেমন কেউ আমাকে পছন্দ করত না। এভাবে কেটে গেল দুইটা বছর।আমার হাজবেন্ড ছিল তিন ভাই ও ছিল সবার ছোট। বড় দুই ভাই দেশে থাকব তেমন কোন কিছু করত না। পুরা সংসারটা ছিল আমার হাজবেন্ডের উপর।

🌹♥️♥️আমার প্রথম মা হওয়া♥️♥️🌹

২বছর পরে যখন আমার হাজব্যান্ড বাসায় আসলো। তখন আমি কনসিভ করলাম। শুরু হলো নতুন যুদ্ধ সবার মনে হলো আমার সন্তান মানে নতুন সম্পত্তির মালিক। এটা নিয়ে আমার শ্বশুরবাড়ির কেউ  খুশি ছিলনা। বিশেষ করে আমার শাশুড়ি। সে কখনো চাইবো না যে আমার সন্তান আসুক।  সন্তান হলে সন্তানের খরচ দিতে হবে তাদের বড় ও মেজো ছেলের সন্তানদের কম পরবে।আর সেই সন্তান যদি হয় ছেলে তাহলে সমস্যা আরো বেশি।এখন আমাদের দুজনের খরচ দিতে হবে।

🌹♥️♥️দ্বিতীয়বার মা হওয়া♥️♥️🌹

আমার হাসবেন্ড সবসময় তার মায়ের কথা শুনতে। কখনো কোন কিছু যাচাই করতে না। তিন বছর পর যখন দেশে আসে আবার আমি তখন কনসিভ করলাম।এখনতো সমস্যা আরো বাড়তে থাকে। এটা আমার শাশুড়ি মেনে নিতে পারেনি। এখন যদি আবার সন্তান হয় তাহলে আবার খরচ বেশি দিতে হবে। এমকি আমার সন্তানকে দেখতে যেয়ে ও অনেক রাগারাগী করছে।একটু দূরের হাসপাতালে নিছে বলে।  তাদের যেতে অনেক কষ্ট হয়েছে বলে । হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরে আমাদের বাসায় যতদিন ছিলাম কোনো খোঁজখবর নেয়নি। আমি যখন তাদের বাসায় ফিরতে চাইলাম তখনো আমাকে আনতে চাইনি।তার আমাদের প্রয়োজন ছিল না প্রয়োজন ছিল টাকার।যেটা সে প্রতিমাসে পেয়ে যেত।

♥️♥️আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের সময়♥️♥️🌹

করোনাভাইরাস আমার জীবনটা পাল্টে দিল। আমার হাজবেন্ডের করুণা পজিটিভ ধরা পরল। বাসার সবাই মনে করল করুণা হয়েছে তো মৃত্যু নিশ্চিত। ছেলে যদি মারা যায় তাহলে আর টাকা পয়সা পাওয়ার কোন আশা থাকে না। তাই আমরা তাদের বোঝা হয়ে যাব। তারা ভেবেই নিয়েছে যে বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই। মনে করলো যে তার ছেলে যদি মারা যায় তাহলে আমার আর আমার ছেলের দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। যতদিন চিকিৎসা অবস্থায় ছিল কোনদিন এই পরিবারে একটা মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে নাই যে আমি খাইছি কিনা কিংবা তাদের সন্তানের শরীর অবস্থা কেমন আছে এখন শরীর সুস্থ হয়েছে কি না আরো অসুস্থ হয়েছে কি না বেঁচে আছে না মরে গেছে। অথচ হাসপাতাল থেকে প্রতিমাসে তাদের জন্য টাকা দিত তার মা টাকা  খরচ করত। আমাদের বাসা থেকে খোঁজখবর  নেয়ার জন্য ফোন দিত তখন তারা বলল যে মার চাইতে নাকি মাসির দরদ বেশি। আমি কিছুই বলতাম না শুধু কান্না করতাম  একজন অসহায় মানুষের মত আর আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম। আমি নিজেও চিন্তা করতাম যে আজ আমার হাজবেন্ডের টাকা পয়সা আছে। প্রতি মাসে টাকা দিচ্ছে তারপরও তার আমাদের কোনো খবর নেয় না যদি  সত্যিই তাদের ছেলে না থাকে তাহলে আমার কি হবে আমার সন্তানের কি হবে। এ কথা চিন্তা করতে করতে আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। স্মৃতিশক্তি কমে যায় আমি বুঝতে পারি না যে কি করব। ওইখানে তাদের ছেলে হাসপাতালের কষ্ট পায় এখানে সবাই   আনন্দ উৎসব পালন করে । এইসব দেখে আমার শুধু কান্নাই পাইত।  আমার কারো সাথে কথা বলতে ভালো লাগতো না। খাবারও খেতে ভালো লাগত না। বাচ্চাদের কোন কথা ভালো লাগতো না । শুধু চিন্তা করতাম যে কবে সুস্থ হয়ে বাসায় আসবে। এভাবে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে যাই। কেউ ছিল না আমার পাশে শুধুমাত্র আল্লাহ ছিল। কেউ আমার পাশে এসে একটা কথা দিয়েও সান্তনা দেয় নি। আরো নানা মানুষের নানা কথায় আমি অনেকটা পাগলের মত হয়ে যাই ।

 🌹♥️♥️ নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া♥️♥️🌹

আমি যখন মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলাম। তখন আমি চিন্তা করি আমার কিছু একটা করার দরকার। আমার নিজের জন্য আমার সন্তানের জন্য আমি জীবনের কাছে হেরে যাবো না আমি ঘুরে দাঁড়াবো। এই ভেবে ইউটিউবে  নানা ধরনের ভিডিও দেখতে থাকি কি করতে পারি। দেখতে দেখতে আমাদের প্রিয় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটা ভিডিও আমার চোখে পড়ে। আমার ভিডিওটা অনেক ভালো লাগে। আমি গুরুপে রেজিস্ট্রেশন করতে অনেক চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনা পরে খিলক্ষেতের একটা আপু ইউটিউব এ কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় ভিডিও দেখে আমি রেজিস্ট্রেশন করি।🌹

🌹🌹🌹আমার উদ্যোক্তা জীবন🌹🌹🌹

গ্রুপে এড হওয়ার পরেই আমি সবার সাথে পরিচিত হতে থাকি। দেখতে থাকি কে কি পণ্য নিয়ে কাজ করে।সবার সাথে কথা বলতে বলতে আমার যে মানসিক সমস্যা টা সেটা আস্তে আস্তে কমতে থাকে। আস্তে আস্তে আমি স্বাভাবিক হতে থাকি। আমার হাজব্যান্ড সুস্থ হয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ।আমার ছোট বাচ্চা আছে তাদের রেখে আমি কিভাবে পণ্য ডেলিভারি দিব বুঝতে পারছিলাম না।  অনেক ভাইয়া ও আপু আমাকে পরামর্শ দেন।  আমি ডেলিভারি দিতে পারব না তাহলে আমি তাদের পণ্য নিয়ে রিসেলার হিসেবে কাজ করতে পারি। তখন আমি ভাইয়াদের কাছ থেকে কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে সেল শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ আমার সেল হয় কম বেশি। পরবর্তীতে আমি আমার নিজের  প্রোডাক্ট তৈরি করি। তাদের প্রোডাক্ট এর সাথে আমার প্রোডাক্ট সেল শুরু করি। এভাবেই শুরু হলো আমার উদ্যোক্তা জীবন। আমি একদিন সফল উদ্যোক্তা হয়ে সব কষ্টের সব অপমানের জবাব দিতে চাই আমার কাজের ধারা। যারা আমাকে একদিন অবহেলা করেছে তারাই একদিন আমাকে মাথায় করে রাখবে। যতদিন আমি সফল না হতে পারব ততদিন আমি হাল ছাড়বো না। ♥️♥️স্যারের উক্তি♥️♥️

🌹স্বপ্ন দেখুন

           🌹সাহস করুন

                      🌹  শুরু করুন

                                 🌹লেগে থাকুন

                                            🌹সফলতা আসবেই।

আমি স্বপ্ন দেখেছি সাহসও করেছি শুরু করেছেন।

লেগে থাকব যতদিন সফল না হব। আমি প্রমাণ করে দিতে চাই একটা নারী যদি চায় সে সব করতে পারে। নারীরা শুধু অবহেলার বস্তু নয়। আমার নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাস আছে একটু সময় বেশি লাগলেও আমি একদিন সফল হব আমাকে সফল হতে হবে। আমার নিজের প্রতি বিশ্বাস আমি পারি আমি পারবো আর আমি সফল হব ইনশাল্লাহ।

🌹অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে যার জন্য আজ লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণীর জীবন পাল্টে গেছে। আমার মত মেয়েরাও কিছু করার স্বপ্ন দেখছেন। সেটা বাস্তবায়ন করার সাহস করছে। আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি এত ভালো একটা পরিবার পেয়ে।♥️♥️

"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭২৩ Date:- ১৫/০১/২০২২ইং

🌹নাম পারুল আক্তার 

🌹রেজিস্ট্রেশন নং74623

🌹ব্যাচ নং 15 

 🌹কেরানীগঞ্জ জোন

আমি কাজ করছি খাঁটি সরিষার তেল বিভিন্ন ধরনের মসলা বেবি ব্ল্যাঙ্কেট ও পাঞ্জাবি নিয়ে।

আমার একটা পেইজ আছে সবাই ভালোবেসে ঘুরে আসবেন।♥️♥️

     https://www.facebook.com/JPRBazar/