পৃথিবীতে সব বাবারাই সন্তানের কাছে সেরা কিন্তু আমার বাবা সবার কাছেই অন্যরকম সেরা।
______বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম______
____আসসালামু ওয়ালাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ্____
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আল-আমিনের প্রতি যার দয়া ও করুনায় এই সংকটময় মুহূর্তের মধ্যে আজও আমরা সুস্থতার সহিত ভালোভাবে বেচেঁ আছি। লাখো কোটি শুকরিয়া মহান রবের দরবারে, আলহামদুলিল্লাহ্।
শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সহিত স্মরণ করছি প্রিয় শিক্ষক, মেন্টর, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর, জীবন্ত কিংবদন্তী, এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার জনাব,
ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যারকে যার অক্লান্ত পরিশ্রম, একাগ্রতা, সততা ও নিষ্ঠার ফসল হিসেবে আমরা পেয়েছি 'নিজের বলার মত একটি গল্প" ফাউন্ডেশন।
আজ আমি আমাদের এই ফাউন্ডেশন তথা আমার পরিবারের সকলের মাঝে আমি শেয়ার করবো আমার ছোট এই জীবনের কিছু কথা, কিছু গল্প। __________________________________________________________________________________________
সাফল্যের মতো ব্যর্থতাও একেকজনের কাছে একেকরকম কিন্তু ইতিবাচক মনোভাব থাকলে যে কোন ব্যর্থতা হতে পারে নতুন একটি শিক্ষা, যেই শিক্ষা যেকোন পরিস্থিতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে আমাদের জীবনের। আমরা উঠে দাঁড়াতে পারি নতুন সূত্র নিয়ে, আবার নতুন স্বপ্ন নিয়ে শুরু করার অনুপ্রেরণা পেতে পারি।
প্রতিটি মানুষের জীবনেই অনেক গল্প আছে লুকায়িত কিন্তু লেখার কোন প্ল্যাটফর্ম নেই বা গল্পগুলো শোনার মতো কোনো শুভাকাঙ্ক্ষী নেই।
কিন্তু আমাদের মেন্টর এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন সেই গল্পগুলো মন খুলে বলার। "নিজের বলার মতো একটা গল্প" লেখার উৎসাহ অনুপ্রেরণা জাগ্রত করে দিয়েছে নিঃসন্দেহে আমাদের সকলের মধ্যে। শুকরিয়া ও অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় স্যারকে।
যাইহোক, একটা জীবনের গল্প লিখে শেষ করা যায় না তাই সংক্ষিপ্তাকারে লিখলাম।
আমি আব্দুল হাকিম। আমি বর্তমানে একজন লেবানন প্রবাসী এবং উদ্যোক্তা। বাবা, মায়ের দ্বিতীয় সন্তান আমি। আমরা ৪ ভাই ও ১ বোন।
১৯৮৫ সালে শরীয়তপুরের সখিপুরের পূর্ব ঢালিকান্দি ছোট একটি গ্রামে মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করি আমি। আমার বাবা পেশায় একজন কৃষক এবং মা একজন গৃহিনী। আমাদের ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভালো ছিল না, মোটামুটিভাবে চলতো। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য জীবন জীবীকার একমাত্র উৎস ছিল কৃষি পন্য যেমন, ধান, গম, আলু এবং শাক সবজি খিরা, শসা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা বেশীরভাগ সময়ই শাক সবজি চাষ করতাম। আমার বাবা প্রতিদিন সকালে শাক সবজি মাথায় নিয়ে প্রায় ৪-৫ কিঃ দূরে গিয়ে বিভিন্ন বাজারে যেমন, কার্তিকপুর, গৌরঙ্গ, ঘড়িষার, সখিপুর বিক্রি করতেন। তারপর ঐ টাকা দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার বা বিভিন্ন খরচ চলতো।
অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে আমাদের সংসার চলে গেল প্রায় ১৭বছর। আমাদের সংসারের এক মাত্র ইনকাম করার একজনই ব্যক্তি ছিলেন, আমার বাবা। ৭ জন মানুষের খরচ বহন করতে হতো আমার বাবার একার। এতো কষ্টের পরও আমাদের ভাই-বোন সবাইকে আমার বাবা লেখাপড়া করিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ্।
আমার বড় ভাই এস এস সি পর্যন্ত, আমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে আলিম অথবা এইচ এস সি পাস করেছি, আমার ছোট ভাই কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে দাওরায়ে হাদিস, ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স কমপ্লিট করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন এবং ছোট বোন বি-কম পাস করে সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করছেন।
অনেক কষ্ট, ত্যাগ স্বীকার করে আমাদেরকে মানুষ করেছেন বাবা। হয়তোবা কিছু সময় কৃষি কাজে বাবা-মায়ের সাথে আমরা সাহায্য করতাম।
কষ্টের কথা লিখতে গেলে কান্না চলে আসে।
বাবা মায়ের কথা লিখতে পারছিনা। তবুও কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমার বাবা-মা আমাদেরকে মানুষ করেছেন অনেক কষ্টের বিনিময়ে যা সমাজ ও আশে পাশের মানুষকে বুঝতে দেননি কখনো।
পৃথিবীতে সব বাবারাই সন্তানের কাছে সেরা কিন্তু আমার বাবা সবার কাছেই অন্যরকম সেরা।
বাবাকে সবাই ভালোবাসেন। আমার বাবা ন্যায়নিষ্ঠা, সততা, আদর্শবান, নিরিহ ও ভালো মনের একজন মানুষ। বাবা-মা এখনো বেঁচে আছেন আলহামদুলিল্লাহ্, এটা আমাদের জন্য আল্লাহ্ তায়ালার দেওয়া বিশাল একটা নিয়ামত।
আমার বাবা মায়ের জন্য দোয়া করবেন সবাই। পৃথিবীর কোন কিছু দিয়েই বাবা মায়ের ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। আমার বাবা-মা যতদিন বেঁচে থাকবেন সবার কাছে যেন সেরা হয়ে বাঁচতে পারেন সবসময় এই প্রার্থনাই করি। বাবার কাছ থেকে শিখেছি কিভাবে সৎ পথে চলতে হয়, সৎভাবে উপার্জন করতে হয়, কিভাবে মানুষের সাথে সদাচরণ করতে হয়, মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। বাবা শিখিয়েছেন কীভাবে উদ্যোক্তা হতে হবে এবং কীভাবে একজন সমাজসেবক হতে হবে।
শুধু পৃথিবীতে নিজের জন্য না অন্যের জন্যও কীভাবে বেঁচে থাকতে হবে সেটাও শিখিয়েছেন।স্যালুট তোমাকে প্রিয় বাবা। হাজার বছর আয়ু নিয়ে বেঁচে থাকো আমাদের মাঝে।
আমাদের গ্রামের মক্তব থেকে নূরানী কোরআন শিক্ষা অর্জন করি আমি। পাশাপাশি সরকারি প্রাইমারি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শেষ করি প্রাথমিক জীবন। এরপর বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে, ভেদরগঞ্জ আলীয়া মাদরাসায় ভর্তি হই। মানুষের বাড়ী লজিং থেকে, টিউশনী করে নিজের পড়া লেখার খরচ নিজেই চালিয়ে যেতাম। আমার ছাত্রজীবনে আমি কোন কোচিং অথবা প্রাইভেট পড়ি নাই কারন টাকা পয়সা তো ছিলোনা তেমন। যাইহোক, সেখান থেকে দাখিল (এস এস সি) ও আলিম (এইচ এস সি) পাস করি।
তারপর এমএ রেজা ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হই।
৭দিন ক্লাস করি এবং নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পড়ালেখা ছেড়ে দেই। ভাবলাম পড়ালেখা করেই বা কী হবে! বর্তমান বাজারে চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন। ঘুষ লাগে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। এতো টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য তো আমার নেই। তাহলে চাকরী কে দেবে। এখানেই অনেকে থমকে যান, কেননা বড় বড় শিক্ষিত লোকেরা প্রতিদিন সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে প্রতিটি কোম্পানি, অফিসের সামনে ঘুরে বেড়ায় কিন্তু কোন লাভ হয়না। চাকরির বাজার মন্দা, বর্তমানে সরকারি চাকরি একটি সোনার হরিণের চাইতেও অনেক বেশি, যা আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অভাবের সংসারে টানাটানির মাঝে বেড়ে ওঠা আমাদের, সেখানে এতো টাকা ঘুষ দেওয়া হয়তো কোনদিনই সম্ভব হতো না। তাছাড়া যত টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি নেব তত টাকা দিয়ে আমি নিজে একজন বড় উদ্যোক্তা হতে পারব এটাও ছিলো ভাবনাতে। হাজার রকম চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেতে শুরু করলো। কোন কিছু করার সাহস পাচ্ছিলাম না।
ব্যর্থতার ভিড়ে সফলতার দিকে হাত বাড়ানো দুর্বিষহ। অনেক কল্পনা জল্পনার পরে সিদ্ধান্ত নিলাম দেশের বাহিরে চলে যাবো। বাবা-মা কে রাজি করালাম।
শুরু হলো প্রবাস জীবনঃ-
বিদেশ যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেই। বাড়ি থেকে ৫০,০০০ টাকা জোগাড় করি এবং কৃষি ব্যাংক থেকে ৫০,০০০টাকা লোন করি। তারপর ১ লক্ষ দশ হাজার টাকা জমা দিয়ে metco travel এর মাধ্যমে ২০০৪ সালের ১৫ই এপ্রিল জর্ডান যাই, নিজেকে এবং ফ্যামিলীকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোম্পানির বেতন ভাল ছিলনা। তারপরও ধৈর্য ধরে ৫বছর কাটিয়ে দেই। কিন্তু পরিবর্তন না হওয়ার কারনে তারপর সিদ্ধান্ত নেই ইউরোপের দেশ গ্রিসে যাওয়ার জন্য। গ্রীসে রাস্তা গেইমস কন্টাক সমস্যা থাকার কারনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে লেবানন ডুকার প্রস্তুতি নেই। তারপর বায় রোডে সিরিয়ার সিমান্তে আটকে পরেছিলাম। প্রায়১২দিন আটকে ছিলাম, ১২দিনের খাবার ছিল ১৮টা রুটি ও টমেটো সস সাথে পানি। একমাত্র এটা একটা ইতিহাস আমার জীবনের যেটা মনে থাকবে আজীবন।
সময় কেটেছে না খেয়ে, কোনমতে বেঁচে থাকার আশ্বাস নিয়ে স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার।
তারপর আমার একজন ঘণিষ্ঠ বন্ধু "এনামুল হক বাদল" এর সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে সিরিয়ান এক নাগরিকের সাথে সন্ধ্যা ৭ টা ৩৫ মিনিটের দিকে সিরিয়া সীমান্ত থেকে ৭-৮ ঘন্টা জঙ্গল, পাহাড় দিয়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে লেবানন ঢুকে পরলাম। তার ৬ দিন পরে একটা জিমের ক্লাবে কাজ পাই। বেতন ছিলো ৫০০ ডলার,১৬ঘন্টা ডিউটিতে। পরিশ্রম, কষ্ট ছিল অনেক কিন্তু আমার কাছে কিছুই মনে হতো না।
এক বছর কাজ করার পরে কিছু টাকা জমিয়ে ২৫০০ শত ডলার দিয়ে একটি কোম্পানিতে কাগজপত্র করলাম। এরপর ২০১২-২০১৮ সাল পর্যন্ত আমি ভালোই ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ্।
২০১৮ সালে প্রায় এক বছর কাজ করে সাত লক্ষ টাকা জোগাড় করি। তারপর সাভারের আশুলিয়ায় কিছু জমি কিনে একটা বাড়ি করার সিদ্ধান্ত নেই।
বাড়ি করার কাজ ধরি। ৪টি রুমের অর্ধেক কাজ করি বাকী কাজগুলো অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেলো করোনার অশান্তি।
লকডাউনে কাজকর্ম বন্ধ, বাকী জীবনে এই কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পারবো কিনা জানিনা। এখন শুধুমাএ আল্লাহর উপর ভরষা রেখে আছি। ২০২০-২০২১ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছি বালাদেশে। দুই বছর ধরে ডলার সংকট। কোন রকম কাজ করে খেয়ে দেয়ে বেঁচে আছি।
তার ওপরে লেবাননে একের পর এক সমস্যা। করোনার জন্য লকডাউনে দোকানপাট, ব্যবসা- বাণিজ্য, রেস্টুরেন্ট, সিভিকস,বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সব বন্ধ। দেশের অবস্থা খারাপ, রাজনৈতিক সমস্যা, অর্থনৈতিক সমস্যা, ডলার সংকট ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এখন লেবানন। ভেবেছিলাম দেশ ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু দেখতে দেখতে দুইটি বছর কেটে গেলো জীবন থেকে।
দুটি বছর অনেক মূল্যবান ছিল কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না। চিন্তায় দিশেহারা হয়ে গেছি, অন্ধকার দেখছি সামনের সবকিছু। কিছুই ভাবতে পারছি না। কী করব হাতে কোন টাকা পয়সা নেই! কীভাবে জীবন চালাবো!
বাবা_মা কখনোই সন্তানের অমঙ্গল চায় না। সব বাবা-মা'ই চায় তার সন্তান জীবনে সফল হোক, সার্থক হোক। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আমি নিজেই তার বাস্তব প্রমাণ।
২০২০ সালের মার্চ মাসের দিকে লেবাননের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায় এটা আমি আমার বাবাকে বলছিলাম। বাবা আমাকে বলল, লেবানন আর পরিবর্তন হবে না দেশে এসে পরো। এখানে কিছু একটা কর ইনশাআল্লাহ্ পরিবর্তন হয়ে যাবে।
কিন্তু আমি আমার বাবাকে বুঝ দিলাম কিছুলদিন পরে আসতেছি। এই বলে প্রায় ২ বছর কাটিয়ে দিলাম কোন প্রকার লাভ হলোনা। কিছুই করতে পারিনি বরং আমার জীবনের বড়ই মূল্যবান সময়গুলো আমি নষ্ট করে ফেলেছি।
মা-বাবার পরামর্শ নিয়ে যেই কাজগুলোই করেছিলাম সাকসেসফুল হয়েছিলাম সেগুলোতে। তবে মা-বাবা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সম্পদ এর বিকল্প কোন পথ নেই। বিররুল অলিদাইন, পিতা মাতার আনুগত্য করতে হবে, পিতা মাতার পরামর্শ হচ্ছে সাফল্যের মূল চাবি কাঠি এটা আমাদের মেনে সেই অনুযায়ী সবকিছু করতে হবে।
জীবনে এখন একটাই স্বপ্ন আমি একজন উদ্যেক্তা হবো। তাই প্রতিদিন ইউটিউবে মোটিভেশনাল কিছু ভিডিও দেখতাম হঠাৎ করে চোখ পড়ল জনাব, ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটি পোস্ট।
কিছু স্লোগান ছিলো এরকম, "মানুষের জন্য কাজ করলে, জীবিকার জন্য কাজের অভাব হয় না"। প্রতিযোগিতা করুন কে কার চেয়ে বেশি বিনয়ী হতে পারেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
কয়েকবার লাইনগুলো পড়লাম আর চিন্তা করলাম এই পৃথিবীর মানুষগুলো অনেক স্বার্থপর কেউ কারো ভালো চায় না কিন্তু এ-কেমন একজন ব্যক্তি যে অন্যকে ভাল হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।
খুঁজতে শুরু করলাম কে এই ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। খুঁজতে খুঁজতে ইউটিউবে প্রিয় স্যারের অনেক ভিডিও পেয়ে গেলাম, ফলো করা শুরু করলাম এবং কীভাবে যুক্ত হওয়া যায় খোঁজা শুরু করলাম।
প্রিয় প্ল্যাটফর্মের ভালো বাসায় পাগলপারা হয়ে উঠলাম। প্রতিনিয়ত স্যারের সেশনগুলো ফলো করছি, সকলের পোস্টে লাইক কমেন্ট করে যাচ্ছি কিন্তু কীভাবে যুক্ত হবো সেটাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ করে আমার পরিচয় হয় আমার আশেপাশের কয়েকজন বন্ধুদের সাথে। তাদের সাথে কথা গুলো শেয়ার করি, শেয়ার করতে গিয়ে দেখি তারাও এই প্ল্যাটফর্মের সদস্য এন,আর,বি লেবানন টিমের। একদিন তাদের অফলাইন মিটআপের আয়োজন চলছিলো আমাকেও সেখানে নিয়ে যায়।
সেই মিটআপের উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন বর্তমানে এনআরবি লেবানন টিমের গর্বিত সম্মানিত কান্ট্রি অ্যাম্বেসেডর এবং মডারেটর প্রিয় সাবিনা অপি আপু। তাঁর উপস্থাপনায় আমি আরো মুগ্ধ হয়ে যাই। তাদের মিটআপ শেষ হওয়ার পরে আমি পার্সোনালি সাবিনা আপুর সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। এরপর প্রিয় সাবিনা আপুকে বললাম, আপু আমি আপনাদের প্লাটফর্মে যুক্ত হতে চাই আপনি এখনি আমাকে রেজিস্ট্রেশন করে দেন। যেই কথা সেই কাজ। সাবিনা আপু দেরি না করে সেই মুহূর্তেই আমাকে "নিজের বলার মত একটা গল্প" ফাউন্ডেশনে রেজিস্ট্রেশন করে দেন।
আলহামদুলিল্লাহ্ আমি ১২ তম ব্যাচে রেজিস্ট্রেশন করতে সক্ষম হই। প্রিয় প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে একটি বিশাল বড় পরিবার পেয়েছি। পেয়েছি একজন সৎ আদর্শবান শিক্ষক, পেয়েছি অনেক কলিজার টুকরা ভাই ও বোনদেরকে। লেবানন টিমের যুক্ত হতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত, কেননা এই টিমটি পরিচালনা করে আমাদের সকলের প্রিয় সাবিনা অপি আপু। প্রিয় বোন সব সময় সবাইকে ভালোবেসে একসাথে বেঁধে রাখার চেষ্টা করেন। কীভাবে এন,আর,বি লেবানন এগিয়ে যাবে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা সকলে তার সাথে হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এন,আর,বি লেবানন টিমকে। প্রতিদিন সেশন ক্লাস গুলো ফলো করে আসছি।
এর পর গ্রুপের মাধ্যমে পরিচিত হই জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক বোনের সাথে এবং শরীয়তপুর গ্রুপে আমাকে অ্যাড করে দেয় উনি।
নিয়মিত সেশন চর্চা ক্লাস করি তাদের সাথে। এখানে সকলের সু সম্পর্ক, সুপরিচিতি, সুন্দর আচার-আচরণ মাধুর্য ব্যবহারে আমি মুগ্ধ হই আরো। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি শরিয়তপুর গ্রুপের সম্মানিত ব্যক্তি বর্গের প্রতি, আমাদের সবার প্রিয় সুপার এ্যাক্টিভ মডারেটর জাহাঙ্গীর খান ভাইয়া, সিরাজ আঙ্কেল, দুলাল আঙ্কেল, রাবেয়া আপু, শান্তা আপু ,আলী আকবর ভাইয়া, ইমাম হোসেন ভাইয়া, মাঝি শওকত, সোহেল রহমান ভাইয়া, সালমা আপু, আমির হামজা ভাইয়া সহ শরিয়তপুরের প্রতিটি সদস্যের প্রতি।
প্রতিনিয়ত প্রিয় মেন্টরের দেওয়া ভিডিও গুলো দেখছি। নিজেকে প্রতিদিন একটু একটু করে তৈরি করছি। হাজারো হতাশার ভিতরেও উদ্যোক্তা হওয়ার রাস্তা খুঁজছি। অনেক ভেবে চিন্তে একটি উদ্যোগ নিয়েছি। আমি সকল প্রকার মসল্লা নিয়ে কাজ করতে চাই। আলহামদুলিল্লাহ্ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে আমার কাজ। অতি শীঘ্রই বাংলাদেশে চলে আসবো এবং প্রিয় স্যারের শিক্ষা বুকে নিয়ে আমি একজন উদ্যোক্তা হবো। ছোট পরিসরে শুরু করব প্রথমে। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই।
আর কথা বাড়াবো না অনেক বলে ফেলেছি। যারা আমার এই দীর্ঘ লেখাটি সময় নিয়ে পড়বেন তাদেরকে অগ্রিম অনেক অনেক ধন্যবাদ ও ভালবাসা অবিরাম।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬১৫
Date:- ০৫/০৯/২০২১
আব্দুল হাকিম
ব্যাচঃ- ১২
রেজিস্ট্রেশনঃ- ৪০১৯৭
জন্মস্থানঃ- সখিপুর
জেলাঃ- শরিয়তপুর
বিভাগঃ- ঢাকা
ব্লাড গ্রুপঃ- O+
বর্তমানেঃ- একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা, লেবানন প্রবাসী।
মোবাইলঃ- 96171250830