জীবনের গল্প
#বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম
#কৃতজ্ঞতা ________
সেই আরশের মালিক মহান আল্লা্হর দরবারে যিনি এই করোনা কালিন সময়েও আমাকে সুস্থ্য ভাবে এবং ভাল অবস্থায় রেখেছেন।
#আলহামদুলিল্লাহ্ _______
এই কঠিন সময়েও সবাই কে সুস্থ্য রাখুন, সেই প্রত্যাশা করি। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি তে প্রিয়জনদের নিয়ে সকলে ভাল আছি। এই মহামারির মধ্যে ও আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন ভাল রেখেছেন, সুস্থ্য রেখেছেন সেই জন্য লহ্ম্য কোটি শুকরিয়া আদাই করছি।
#আলহামদুলিল্লাহ্ ______
লহ্ম্য কোটি সালাম এবং দূরুদ প্রেরণ করছি, মানবতার মুক্তির দূত উম্মতের কান্ডারী মহান রাব্বুল আলামিনের প্রিয় হাবিব, প্রিয় বন্ধু শেষ জামানার নবীদের সরদার, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর।
#শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি ___________
" নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্টাতা লহ্ম্য তরুণ/ তরুণীর আইডল, সকলের প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক, প্রিয় স্যার জনাব "ইকবাল বাহার জাহিদ " স্যার এর প্রতি যিনি আমাদের জন্য এতো সুন্দর একটা ভাল মানুষ হয়ে গড়ে উঠার প্লাটফর্ম তৈরী করে দিয়েছেন। এবং যে প্লাটফর্ম প্রতিনিয়ত তৈরী হচ্ছি ও হচ্ছেন, অসংখ্য নতুন / নতুন উদ্যোগতা ও ভাল মানুষ এবং ভাল মানষিকতা সমপন্ন মানুষ, যার চিন্তা চেতনা, আদর্শ সময়, প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমাদের দিয়েছেন এক নতুন জগতের (আলোর) সন্ধান।
#কৃতজ্ঞতা আবার ও________
মহান রবের দরবারে আরজী জানাই, আল্লাহ্ স্যার কে ও স্যারের পরিবারের সকল কে পুরোপুরি ভাবে সুস্থ্য করে দিন ও দীর্ঘ হায়াত দান করুন। যে ভাবে চলছে, সে ভাবে যেন নতুন হাজারো প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কে ভাল মানুষ হওয়ার, উদ্যোগক্তা হওয়ার, সঠিক পথ দেখাতে পারেন। আমিন।
আমি ও প্রতিদিন অনেক _ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে শিকছি ও জ্ঞান অর্জন করছি স্যারের সেশন গুলো থেকে...।
#আলহামদুলিল্লাহ্ _________
নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের সকল ভাল মানুষ গুলো ভাই ও বোনেরা ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্ পাক সকল কে সুস্থ্য রেখেছেন, এবং এই মহামারিতে সকল কে ভাল রাখুন, ও সুস্থ্য রাখুন, এই প্রত্যাশা আল্লাহর কাছে, সঙ্গে আমি ও দোয়া করি, ভাল আছি আমি ও ইনশাআল্লাহ।
#সম্মানিত বন্ধুগন _________
আমি আপনাদের সঙ্গে আজ আমার জীবনের বাস্তব গল্প শেয়ার করবো।
প্লিজ একটু সময় নিয়ে আমার জীবনের গল্পটা পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল সকলের নিকট।
#বাবাকে নিয়ে কথা _________
বাবার বয়স যখন (১২/১৩) তখনী দাদা মৃত্যু বরন করেন, (৭ ) ভাই (৬ ) বোন এক একান্নবর্তী অনেক বড় ফ্যামেলী। এখানে বলে রাখী দাদার ছিল দুটি সংসার, বাবা ও ছোট চাচারা কোন কিছু বুঝে উটার আগেই (সৎ) বড় ভাইগন (জেটারা) মিলে সংসার আলাদা করে দিল।
মনে হলো যেন মাথায় আকাঁশ ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা, আমার বাবারা আপন তিন ভাই বাবাসহ, বাবাই সকলের বড় ছিলেন, মেজ কাকা তখন (৪) বছরের ছোট কাকা তখন (৩) মাস বয়স কোলের শিশু, আপন কোন বোন নেই। জীবন যেন মৃত্যুর চেয়ে ও আরো ভয়ংকর, শুরু হলো জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ, লেখা পড়া করার মতো কোন উপায় ছিল না, সংসারে বাবা নেই (দাদা) বড় ভাই নেই, যে আছে তাও আবার সৎ ভাই, এই বয়সে ই পরিবারের দায়িত্ব নেয়া,যে কাজ পায় সেই কাজ ই করে। একদিন স্কুলে গেলে আরেক দিন যেতে পারতেন না, ধীরে ধীরে ভেরে উটা এবং অনেক কষ্টে (S S C) পাস করা। দাদীর চাপাচাপি তে অল্প বয়সে ই বিয়ে করেন,
#আমার মা________________
মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক সহজ, সরল, চঞ্চলা, নরম মানুষ, মা, ছিলেন এক সেনাবাহিনী ও মৌলভী সাহেব এর আদরের বড় কন্না, এতো বড় ফ্যামেলীতে মা যেন আগন্তুুক বেমামান, নানা সেনাবাহিনী তে চাকুরী করতেন, সেই সুবাদে আমার বাবাকে ও নানাই সেনাবাহিনী তে চাকুরী দিলেন।
#পরিবার নিয়ে কথা_________
আমাদের সংসারে ভাই আমি একা( ৬) বোন, আমার বড় দুই বোন আছে, পরিবারে আমার অবস্থান( ৩) এ...।
বাবার সেনাবাহিনী চাকুরীতে যোগদান, তখন সকল কিছু ই ভাল চলছিল ও সংসার ভাল চলছিল,তখন মনে হল, আশার আলো দেখেছি, না, তা আর হলনা, আমার বাবা ছিলেন অনেক রাগী এক মানুষ, টিউটি চলাকালীন সময় অন্য সেনা সদস্যের সঙ্গে মারামারি করার কারণে, বাবাকে সাস্তী দিল, সাস্তী মেনে নিতে পারবেন না বলে সেচ্চায় চাকুরী ছেড়ে চলে আসে। শুরু হল অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ, তখন পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৭ জন, দাদীস ৮ জন, হটাৎ যেন জীবনের সকল স্বপ্ন ও আশা ভেঙ্গে গেল। অনেক কষ্টে জীবন অতিবাহিত হতে লাগলো।
#গ্রামের মানুষ গুলো__________
গ্রামের মানুষ জন নানান কথা বলা বলি করছে, যে পারবে না সেও বলতে শুরু করলো। (বাবা) তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না, সরকারি চাকুরী ছেড়ে দিছে, আর কে তোকে চাকুরী দিবে? ছেলে _ মেয়েদের কে দেখবে, কে বরন পোষণ করবে? ছেলে _ মেয়েগুলোর আর লেখা পড়া হবেনা। কে দেখা শুনা করবে! কে আছে? দাদীর আহাজারি....।
মায়ের আর্থনাত, কষ্টের কান্নায় যেন আকাঁশ বাতাস সব একাকার, দেখার কেও নেই, বলার ও কেও নেই। কাকারা ও যে যার মতো, মেজ কাকা কে আমার বাবা ই সেনাবাহিনীতে চাকুরী দিয়েছে, সেই থেকে কাকা খাগড়াছড়িতে পরিবার সহ বসবাস করে। ছোট কাকা ব্যবসা করে বাজারে দোকান, উনারা সকলে ভাল আছে, আর আমরা যেন এদের চোঁখে নদী ভাঙ্গা মানুষের মতো যাদের আপনজন বলতে কেও নেই। তার মধ্যে নানা/ নানী যত টুকু সম্ভব সহযোগিতা করতেছে। ওনারা ও (নানা নানী) হতাশ বাবাকে নিয়ে যে মানুষ সেনাবাহিনীর সরকারি চাকুরী পায়না সে ছেড়ে দিয়ে চলে এলো!!!??
বড় আপুদের লেখা পড়া বন্ধ প্রায়, আর আমি তখন ও প্রাইমারি শেষ করিনি, দু এক দিন স্কুলে গেলে ও ৫ দিন ই যাই না।
#খুব অভাবে যাচ্ছে দিন______
মানুষের কথায় অনেক কষ্ট পেল বাবা , যে কাজ পায়, সে কাজ ই করা শুরু করলো। দুঃখে, কষ্টে বাড়িতে আসে কম,আমাদের খোঁজ খবর নেন দূর থেকেই, মানুষের এতো কটু কথা মেনে নিতে পারেন না।
দাদী ও চাচাতো এক দাদা এবং (দাদীর ভাই বাবার মামার ) মাধ্যমে বাজারে এক দোকান নিয়ে ছোট ব্যবসা শুরু করলো, বাবাকে তখন খুব কম দেখতে পেতাম, কারণ বাবা ভোরে চলে যেত বাজারে, আর আসতো সেই রাতে।
#নানার অবধান______________
নানার মাধ্যমে আবারও বাবার চাকুরী হলো এশিয়ার বৃহত্তর জুট মিল, আদমজী জুট মিলে। সেনাবাহিনীর কাগজপত্র জমা দেয়ার কারণে ভাল পদে চাকুরী হলো সঙ্গে সরকারি কোয়ার্টার সহ থাকার জন্য দু তলা বাড়ি, আল্লাহ্ রহমতের বৃষ্টি বর্ষন করলেন। বর্তমানে ( আদমজী EPZ) সে থেকে সেখানে ই আমাদের বসবাস শুরু হল, বড় দুই বোন (বড় আপুদের) এবং আমার স্কুলে লেখা পড়া শুরু হল।
#আমার স্কুল জীবন__________
আমার লেখা পড়া শুরু হল, শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বর্তমানে আদমজী EPZ) মূল গেইট সংলগ্ন স্কুল টা, প্রচন্ড দুষ্টু প্রকৃতিক ছিলাম। কারোও স্কুল ব্যাগ, কারো ও বই সহ পানিতে ফেলে দিছি, কখনো,কখনো ব্যক্তিসহ পুকুরের পানিতে ফেলে দিছি। স্কুল এর পাশ দিয়ে ই আদমজী মিলের রেলপথ পথ ছিল, আমরা থাকতাম( ঢাকা বাজু) মিলের এরিয়ার মধ্যে, কখনো রেলপথ হয়ে স্কুলে যেতাম, কখনো থানা গেইট দিয়ে পুকুরের পার হয়ে। ছোট আর বড় নেই সকলকেই জ্বালাতন করতাম, কারো জামা ছিড়ে দিয়েছি, কারো বা শাটের ঘুতাম, কখনো শাট ও জুতা পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া।
এই নিয়ে স্কুলে রিতিমত স্যার ও ম্যাডামদের পিটানি খেতাম, সঙ্গে বাসায় ও বিচার যেত, বাবার ফুফাতো ভাই আমার (কাশেম কাকা) ওনার শাসন, বাবা ও মায়ের শাসন, যে দিন বকা দিত এবং পিটানি খেতাম এর পর দুই ( ৪ ) দিন আর স্কুলে যেতাম না।
এ নিয়ে সংসারে অশান্তি মা ও বাবার মধ্যে, এই ছেলের পড়া লেখা হবে না। তার মধ্যে দাদীর কাছে নিয়ে এসে গ্রামের স্কুলে ভর্তি করে দিল, এখানে ও একি অবস্থা, আবারও আদমজী স্কুলে, এভাবে চলতে থাকায়, বাবা বললেন এভাবে আর যাই হোক লেখা পড়া হবে না। এখানে কিছু দিন (আদমজী) আবার বাড়িতে, রাগান্বিত হয়ে অনেক মারধর করল এবং সঙ্গে বললেন লেখা পড়া না করলে কাজে দিয়ে দিবো। হঠাৎ ই আমি বল্লাম স্কুলে আর পড়বোনা, মাদ্রাসায় পড়বো, মনে করলাম, মাদ্রাসার কথা বল্লে হয় তো পড়তে হবে না।
#আমার মাদ্রাসায় পড়া_______
দাদীর কারণে মাদ্রাসায় পড়া,দাদী না থাকলে আমার লেখা পড়া হতো না, ওনার ই অবদান আমার লেখা পড়ার, আমার দাদী এই দুনিয়ায় নেই, আমার দাদীর জন্য সকলে দোয়া করবেন। আমিন।।
যে কথা সেই কাজ মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিল,( হাফেজ মাওঃ আতিকুর রহমান) সাহেব এর কাছে। ওনি বাড়ির পাশের কাকা সম্পর্কে, ঐ দিন ই বাবা এসে হুজুর কে বললেন, তোমার ছাএ যদি একদিন মাদ্রাসা বন্ধ করে, তবে তোমার একদিন কি আমার একদিন, আমার রাগ ওনার উপর দেখালেন বাবা। ঠিক আছে ভাই (খায়রুল বাশার ) আমার ছাএ আর বাড়িতে ই যাবেনা ইনশাআল্লাহ।
মাদ্রাসায় ও তেমন মনোযোগ নেই,ক' দিন বাড়িতে ক' দিন মাদ্রাসায় থাকা হয়। এই ছেলে কে দিয়ে কিচ্ছু হবে না! আবার লেখা পড়া!!! কাজে লাগাই দেন ভাই, টাকা পয়সা নষ্ট করে লাভ হবে না, আমার বড় (জেঠী) কথগুলো বললেন, আমার সামনে, তখন আমার খুব কষ্ট হলো, ঘৃণা ও হলো, জিদ ও হলো, ওনি আমাকে ও বাবাকে এতোগুলো কথা বললেন। সঙ্গে, সঙ্গে বাবা আমাকে মাদ্রাসায় রেখে, আমার সাথে কথা না বলে, চলে
আসছিল, বাবা বলে অনেক বার ডেকেছি, কেদেঁছি, বাবা পিছনে ফিরে একবার ও তাকায় নি। সেই থেকে আমার ও জিদ হলো লেখা পড়া নিয়ে, (৬) মাস হলো বাড়িতে যাইনি, মা খবর পাঠলো (১২) মাস বছর হয়ে যায়। (২) বছর মাদ্রাসায় থেকে হাফেজী পড়া শেষ করে, হাফেজ হয়ে, তার পর বাড়িতে গেলাম। সকলে তো অবাক, যে ছেলে মাদ্রাসায় যেত না সেই ই আজ হাফেজ!!!
#আদমজী মিল বন্ধ, বাবার চাকুরী চলে গেল________
আবারও বাবার চাকুরী চলে গেল, আদমজী জুট মিল বন্ধ হয়ে গেল। কষ্ট মনে হয় পিছু ছাড়েনা আমাদের, আদমজী মিল বন্ধ হলো, বর্তমান( EPZ) তখন সংসার আরো বড় সদস্য সংখ্যা( ১০) জন, কোন কুল কিনারা খুজে না পেয়ে, অভাবের কারণে, ক্লাস সেবেন এ পড়া অবস্থায়, মসজিদে ঈমামতীর চাকুরী নিলাম। সঙ্গে সকালে মক্তব পড়াতে হয়, ঈমামতী ও মক্তব শেষ করে নিজের পড়ার জন্য মাদ্রাসায় যেতাম, এভাবেই চলতে থাকে আমার জীবন।
# ব্যবসা শুরু করলাম_________
সংসারের অভাব দেখে পাশাপাশি ছোট ব্যবসা শুরু করলাম। বাবা তখন তেমন কোন কাজ করতে পারতেন না, শুরু হল ব্যবসায়ীর খাতায় নাম লেখা, মোবাইল এক্সসরিস এর দোকান। কোন রকম কষ্ট করে পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করা, ছোট বোনদের লেখা পড়া, বড় আপুদের বিয়ে দেয়া। দুই বছরের মাথায় আরেকটি দোকান নিলাম একি আইটেম, ভাল ই চলছিল ব্যবসা ও সংসার, হঠাৎই আরো বড় ব্যবসার স্বপ্ন দেখলাম, সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে দুটি দোকান ছেড়ে দিলাম।
#বড় ব্যবসা শুরু_____________
আলহামদুলিল্লাহ্ খুব ভাল চলতেছে জীবন ও সংসার, ছোট বোনদের লেখা পড়া, সঙ্গে আমার ও (S S C,HSC) দাখিল ও আলিম শেষ করলাম। পাঁচ বছর ব্যবসা ভাল ই চলতেছিল, এরি মাঝে ছোট বোন একজনের বিয়ে দিলাম।
মা অসুস্থ্য হলো হঠাৎ, মায়ের( RBS) ডায়াবেটিস ধরা পড়ল, সঙ্গে দুটি কিডনি (৫০%) ডেমেজ হয়ে গেছে। ব্যবসার অনেক ব্যবস্তা বেড়েছে, ব্যবসার পরিধি বেড়েছে, সকাল থেকে রাএী( ১১/১২) টা পর্যন্ত, কখনো আরো ও বেশি ও হয়। মা অসুস্থ্যার মাঝে ও ফোন দিয়ে খোঁজ খবর নেন আমার, আমি ও ঔষাধ খেলো কিনা খবর নেই। সকালে দেখে গেলে আবার রাএে এসে দেখা করি, এবার সেটি যত রাএী ই হোক না কেন। এভাবেই চলতে থাকে।
#মা খুব অসুস্থ্য______________
আমি ঢাকার বাহিরে বাবা ফোন করলো হঠাৎই খারাপ সংবাদ, মা হাসপাতালে বাবার কান্না জরিত কন্ঠে আমাকে বললেন, মা কে দেখার হলে আজকেই চলে আয় ঢাকায়....।
আমি তখন বরিশালের উজিরপুর অবস্থান, প্রচুর বৃষ্টি সঙ্গে ঝড় তুফান। যেখানে ছিলাম ওখানে সঙ্গে আরো দু'জন ছিল, ওনাদের কে রেখে ই আমি রওনা দিলাম এর মধ্যেই।
মাওয়াতে এসে জানতে পারি, স্পীট বোর্ড চলেনা, ঝড় ও তুফান এর কারণে, ফেরী চলে এবং লঞ্চ চলে।
#লঞ্চে উঠলাম_____________
প্রচণ্ড তুফান আর বৃষ্টি, লঞ্চে উঠলাম (২৫/৩০) মিঃ ভাল ই চলছিল, তার পরে ই লঞ্চটা ঝড়ের কবলে পড়ল। বাবাকে ফোন করলাম আমি মাওয়াতে আছি আসতেছি, প্রচণ্ড ঝড় তুফান এর কারণে নদীতে উক্তাল ডেউ, লঞ্চ ডুলতে শুরু হলো।
মানুষ জন এক পাশ থেকে অন্য পাশে দৌড়া_ দৌড়ীর কারণে। সঙ্গে ছিল ১টি লেফটপ, মোবাইল, ক্যাশ টাকা (৮০.০০০/= হাজার ) ব্যবসার টাকা, অফিস ডেস কোর্ড পড়া অবস্থায় ছিলাম, গায়ের সার্ট, পায়ের সু'জ খুলে ফেলে দিলাম।
লঞ্চটা বেশি দুর দিয়ে চলছিলোনা, নদী পাড়ের কাছাকাছি চলছে দেখা যায়। লঞ্চটা হেলে গেছে, ডুবে যাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে পানিতে লাফ দিলাম, লেফটপের ব্যাগ কোথায় খোঁজার মত মানষিকতা ছিল না।
পরনে ফুল প্যান্ট থাকায় সাতরাতে পারতেছিলাম না, প্যান্ট খুলে ফেলে দিলাম। ৩০ মিঃ মতো সাতরাতে সাতরাতে পাড়ে পৌছালাম, গায়ে সেন্টু গেঞ্জি আর পরনে সট প্যান্ট পড়া অবস্থায়। আল্লাহর রহমতে ও মা, বাবার দোয়ায় বেছে গেলাম।
পাড়ে ওঠে (২৫/৩০) দিশাহারার মতো ছিলাম, ঘন ঘন নিঃশাষ নিচ্ছিলাম, হ্রদপিন্ডটা প্রচণ্ড জোরে উঠানামা করতেছিল, ঠান্ডায় শীতল হয়ে গেল পুরো শরীলটা, শরীল তখন কাপতেছিল, তেমন জ্ঞান ছিলোনা, কি করবো বুঝে উঠে পারতেছিলাম না।
এই সময়ের মধ্যে অন্য লঞ্চ ও বোর্ড এবং অসংখ্য নৌকা এসে হাজির নদীর পাড়ে, সঙ্গে শত শত মানুষের আহাজারি চিল্লাচিল্লি, আমি তখন অসহাদের মতো রাস্তা ধরে হাটতে হাটতে বড় রাস্তায় চলে এলাম।
এক চায়ের দোকানে যেয়ে বললাম কাকা চা দেন, তখন মনে হলো পাগল আমাকে, চায়ের দোকানদার কাকা আমার দিকে তাকায়, আমার চেহারার দিকে তাকায়, গায়ে সেন্টু গেঞ্জি, পরনে সট প্যান্ট, চায়ের দোকানদার কাকাকে সকল( লঞ্চ ডুবে যাওয়ার ঘটনা) বললাম।
সঙ্গে সঙ্গে ওনি একটা পুরাতন লুঙ্গি দিল, পাশের এক দোকানদার ভাই একটি গুল গলা গেঞ্জি দিল, কিছু বিক্টুট সঙ্গে চা (৮/১০ ) চা হবে খেয়েছি।
আমার সঙ্গে টাকা ছিল, লেফটপ ছিল, এখন বাড়িতে যাওয়ার ভাড়া ও নেই, এক ভাই যাএাবাড়ীর গাড়িতে তুলে দিলো এবং (৫০) টাকা আমাকে দিলো, বাড়িতে এলাম, সঙ্গে সঙ্গে কিছু ই বললাম না।
গোছল করে মায়ের কাছে হাসপাতালে চলে গেলাম। ঐ দিন ই ঢাকা মেডিক্যাল নিলাম, ১৭ দিন মেডিকেলে ছিল, ১৮ দিনের দিন, মা' আমাদের কে এতিম করে কাঁদিয়ে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন,,,,।
#মায়ের মৃত্যু _____________
পরিবারের শোক শেষ না হতেই দুই মাসের সময় ছোট এক বোনকে বিয়ে দিলাম।
আমার ব্যবসায় অনেক বড় ধরনের হ্মতি( লোকসান) লস হলো, দোকান টা ছেড়ে দিলাম।
সংসারে অভাব সঙ্গে অশান্তি ও শুরু হলো, মানুষ কিছু টাকা পেতো, বাবার চাষের জমি বিঞী করে ঋন দিলাম, তখন সংসারের খুব খারাপ অবস্থা, ঘরে উপযুক্ত( বিবাহ যোগ্য) বোন, অনেক কষ্টে চলতেছিলাম।
আলহামদুলিল্লাহ্ আমার চাকুরী হলো, হাসপাতালে ১ সপ্তাহ নাইট ১ সপ্তাহ ডে, প্রয়োজন চাকুরী, এটাই করলাম দুই বছর...। বর্তমানে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি তে চাকুরী করছি।
#পরম শ্রদ্ধার ও ভালোবাসা____
পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পথ প্রদর্শক, প্রিয় স্যার, প্রিয় শিক্ষক, প্রিয় মেন্টর, জনাব "ইকবাল বাহার জাহিদ " স্যার, অনেক আগে থেকে ই স্যারের ফলোয়ার ছিলাম। প্রাথমিকভাবে স্যার কে জানলাম, এর পর থেকে প্রতিদিন স্যারের সেশন গুলো ফলো করি, এবং ১ থেকে ৯০ পর্যন্ত সকল সেশন ফলো করি, ভিডিও গুলো দেখি, দেখতে দেখতে অনেক দিন অতিবাহিত হলো।
হঠাৎ একদিন (রিয়ন ভাই) রংপুরের, শাড়ি পছন্দ হয়, মেসেঞ্জারে অনেক কথা হয়, রেজিষ্টেশন এর ব্যাপারে জানতে পারি।
১৩ তম ব্যাচ সময় ভাবলাম এই লাখো ভাল মানুষের ফাউন্ডেশনে কি ভাবে যুক্ত হওয়া যায়।
১৪ তম ব্যাচে রেজিষ্টেশন করে ফেলি, পরিচিত পোষ্ট দিলাম, অনেক ভাল মানুষ ও বন্ধু পেলাম। জেলা মেসেঞ্জারে এড হলাম, কয়েকটি মিটআপে যুক্ত হয়ে আরো অনেক ভাই ও বোনদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, অনেকের সহযোগিতায় এতোটুকু আসা, সকল ভাই ও বোনদের প্রতি রইল আমার অফুরন্ত এবং আন্তরিক ভালোবাসা ও দোয়া....।
#ফাউন্ডেশন থেকে যা পেলাম___________
এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি, প্রিয় শিক্ষক এর কাছ থেকে,কি ভাবে ভাল মানুষ হওয়া যায়, উদ্যোগক্তা কি ভাবে হবো,
এটি এমন একটি ফাউন্ডেশন, যেখানে যুক্ত না হলে, নতুন অনেক কিছু শিহ্মার বাহিরে থাকত।
অনেক কিছুই জানতে পারতাম না, পরিশেষে বলব, একজন ভাল মানুষ হয়ে, বহু দুর যেতে চাই। আশা রাখি চলার পথে প্রিয় সকল ভাই বোনদের কে সব সময় পাশে পাব ইনশাআল্লাহ।
সকলের সহযোগিতায় ভাল মানুষ হয়ে, প্রিয় ফাউন্ডেশনে আজীবন থাকতে চাই, সকলের দোয়া ও ভালোবাসা সঙ্গে নিয়ে সকলে বহুদুর এগিয়ে যেতে চাই।।
#অসংখ্য ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল সকলের প্রতি, আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে, আমার জীবনের গল্পটা পড়ার জন্য। ভুল হলে হ্মমা সুন্দর দৃষ্টি তে দেখবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬১৩
Date:- ০৩/০৯/২০২১
খায়রুল বাশার
ব্যাচঃ 14
রেজিঃ 67731
উপজেলাঃ সোনারগাঁও
জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ