সবার মতোই আমার শৈশব কাল ছিল অত্যন্ত দুরন্ত প্রকৃতির
🕌🕌বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম🕌🕌
~~~~ ~~~~~~~ ~~~~~~ ~~~~~~
🌼🌼আসসালামু আলাইকুম ওরহমাতুল্লাহ🌼🌼
সর্বপ্রথম ঐ মহান আল্লাহ তা'আলার প্রশংসায় সেজদায় অবনত হচ্ছি🕋, যিনি এই করোনা মহামারীতেও আমাদের এবং আমাদের পরিবারকে সুস্থ, সুন্দর রেখেছেন। তার জন্য মহান আল্লাহতালার দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি ,আলহামদুলিল্লাহ।
দুরুদ ও সালম পেশ করছি মানবতার মুক্তির দূত, দু জাহানের সরদার,সায়্যিদুস্সাক্বালাইন, খাতামুন্নাবিয়্যন হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মুবারকে,।
💐💐কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই মানুষটার প্রতি, যিনি সুখ খুঁজে না আপন নীড়ে, প্রাণের টানে এই আঙিনায় বারে বারে আসে ফিরে, যার চিন্তা ভাবনা এই স্বপ্নের প্ল্যাটফর্ম কে ঘিরে, যিনি সবসময় যুক্তিময় উক্তি দিয়ে আমাদের অনুপ্রাণিত করেন, তিনি হলেন আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। যার অনুপ্রেরণায় আমরা সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজারো শুকরিয়া,স্যার সুস্থ হয়ে আমাদের কাছে ফিরে এসেছে ❤️
🎉আমার ছেলেবেলা।
আমার শৈশব কালঃ-
সবার মতোই আমার শৈশব কাল ছিল অত্যন্ত দুরন্ত প্রকৃতির শৈশব থেকেই আমি ছিলাম একটু বেশি দুষ্ট তবে বেয়াদব নয় বড়দের সাথে বেয়াদবি করতাম না।
তবে রাগ করতাম তাদের সাথে যাক এ প্রসঙ্গে আর বলবো না।
আমার প্রথম স্কুলঃ-
আমার বয়স যখন ছয় তখন আমাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নিয়ে যান আমার মমতাময়ী মা। কিন্তু আমি একটু খাটো ছিলাম বিধায় আমার হাত মাথার উপর দিয়ে কান পর্যন্ত না আসায় আমাকে স্যারেরা ভর্তি নিলোনা। জাই হোক কি করার তারপর ফিরে আসলাম। আমার বড় এক বোন এবং বড় এক ভাই ছিল। বড় বোন স্কুলে পড়তো ভাইয়া তখন মাদ্রাসায় পড়তো। তাদের শিশু শ্রেণির বইগুলা আমাকে আমার মা বাসায় পড়াতেন এবং খুব সহজেই আমি শিশু শ্রেণীর বই গুলো ভালোভাবে কয়েকবার পড়ে নেই।
এর পরবর্তীতে কোনো এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমরা আমাদের নিজের বাড়ির অবস্থান ছেড়ে চলে আসি নানার বাড়িতে সেখানে নানার বাড়ির পাশেই মাদ্রাসা থাকায় বড় ভাইয়া এবং বড় আপু দু'জনকেই মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। আর আমাকে সেখানকার প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু আমার স্কুলে যাওয়া কেমন জানি ভালো লাগত না ছেলেমেয়েরা অনেক দুষ্ট, দুষ্টামি করত খুব। তো আমি যেহেতু শিশু শ্রেণির বইগুলো আগে থেকে পড়ছি তো একদিন এক মেম আমাকে একটি কবিতা বলার জন্য বলেন আমি আমার মায়ের শিক্ষা মত ছন্দে ছন্দে কবিতা বলি তখন ম্যাম আমাকে প্রচুর বাহবা দেয় পক্ষান্তরে ক্লাসের সকল ছাত্র ছাত্রীরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। এমনিতেই আমার স্কুল ভালো লাগতো না তার উপর সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। সেদিন থেকে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। যেহেতু বাড়ির পাশেই মাদ্রাসা ভাইয়ার সাথে তার মাদ্রাসা গিয়ে বসে থাকতাম ক্লাস ওয়ানে সেখানে তাদের সাথে পড়তাম আমার পড়ার আগ্রহ দেখে শিক্ষকেরা আমায় আদর করত একদিন এক হুজুর এর মুখে দ্বীনি ইলেম শিক্ষার গুরুত্ব জানতে পারলাম। এ দিকে আমার মা আমাকে স্কুলে দিয়ে আসতো আর আমি পালিয়ে মাদ্রাসায় যেতাম একদিন আামাকে স্কুলে যাওয়ার জন্য শাসন করলে আমি বলে উঠলাম বড় ভাইয়া আপুকে মাদ্রাসায় পড়ায় তারা জান্নাতে যাবে আর আমাকে স্কুলে দেয় দোজখে যাওয়ার জন্য। আমর মুখে এমন কথা শুনে সেদিন থেকে আর আমার মা আমাকে কখনো স্কুল যাওয়ার জন্য বলেন নাই, সেই সুবাদে আমিও ভাইয়ার সাথে সাথে আনন্দের বসে মাদ্রাসায় দুই তিন মাস কন্টিনিউ যাতায়াত করতে থাকে এবং যেহেতু পূর্বেই আমি শিশুর শ্রেণীর বই গুলো কমপ্লিট করি সেহেতু তখন সেখানে ক্লাস ওয়ানের বার্ষিক পরীক্ষায় আমি অংশগ্রহণ করি। এবং সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে প্রথম স্থান উত্তীর্ণ হই। এভাবে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করি মাদ্রাসায়।
অবশেষে আবার ফিরে আসে নিজেদের বাড়িতে নিজেদের বাড়ি থেকে মাদ্রাসা অনেক দূরে হওয়ায় মা আমাকে নিয়ে যান একটা কিন্টারগার্ডেন স্কুলে টু তে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু আমার সেখানে ভাল লাগেনাই পরদিন থেকে আমি আর কিন্টারগার্ডেন ইস্কুলের কাছেও যাই নাই। তাই বাধ্য হয়ে মা আমাকে আবার পুনরায় একটা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন সেখানে আমি ক্লাস টু তে ভর্তি হই এবং পড়াশোনা রানিং করতে থাকি।
আমার প্রতি আমার মায়ের ভালোবাসার একটি দৃষ্টান্তঃ
আমি যখন ক্লাস ফোর এ আমার বার্ষিক পরীক্ষার আগ মুহূর্তে আমার প্রচন্ড জ্বর টানা ১০ দিন জ্বরে আক্রান্ত যেমন একটা রাত আমি ঘুমাতে পারিনি তেমনি একটা রাত ও ঘুমায়নি আমার মা। আমার পাশে থেকে আমাকে সেবা করে খাইয়ে ঘুমাইতে দিয়ে তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে থাকতেন ও নামাজ শেষে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তেন, উনার কান্নার আওয়াজ যেনো এখনো আমার কানে আসে। এরি মাঝে আমার পরীক্ষা চলে আসে আমি কিছুটা সুস্থতা বোধ করি স্যারেরা পরীক্ষা দিতে বললো আমার সাথে প্রতিদিন মা আসতো আমার পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতো, একদিন তো স্যালাইন হাতে করে মা আর আমি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আসি মা পুরো সময় স্যালাইন হাতে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতেন। আমি দুর্বলতার জন্য লিখতে কষ্ট হতো কিন্তু সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পারতাম একবার এক বড় ভাইকে বললাম ভাইয়া আমি মুখে বলে দিব আপনি আমায় লিখে দিবেন? কিন্তু তা অসম্ভব কারন তার ও পরীক্ষা দিতে হবে। যাইহোক পরীক্ষা শেষ করলাম, আলহামদুলিল্লাহ রেজাল্টে আমার প্রথম স্থান বহাল রইলো। সুস্থ হওয়ার পর জানতে পারলাম আমার টাই পয়েড জ্বর হইছিল আর আমার বড় মামার ও নাকি টাই পয়েডে বাকশক্তি হারাইছে তাই আমার মায়ের এত পেরেশানি করছে আমার জন্য।
আমার লক্ষ্য উদ্দেশ্যঃ-
পড়াশোনা রানিং করলেও আমার খুব ইচ্ছে ছিল নিজে কিছু একটা করার আমি এমন কিছু করতে চাচ্ছিলাম যাতে অনেকের উপকার হবে, যতই মা বাবা বলতো তুমি একজন মাওলানা হবে ওয়াজ করবে, ইত্যাদি ইত্যাদি কিন্তু আমি ভাবতাম পড়ালেখা করবো জ্ঞান অর্জন করার জন্য। বাট আমাকে একজন উদ্যোক্তা হতে হবে।
😢জীবনের কিছু কষ্টের কথাঃ-
আমার বাবা একজন প্রবাসী ছিলেন তার উপার্জনকৃত অর্থ দিয়ে আমাদের সংসার ও সবার পড়ালেখার খরচ চলতো, হঠাৎ করেই আমার বাবার পায়ে একটা রোগ দেখা দেয় তাই বাধ্য হয়ে তাকে একবারে দেশে চলে আসতে হয়। দেশে এসে যা টাকা ছিল তা দিয়ে ওনার চিকিৎসার খরচ বহন করা হয়। এর পরবর্তীতে বাবা অনেকটা সুস্থতা বোধ করলো। এরই মাঝে আমাদের সবার পড়ার খরচ ও সংসার খরচ চালানো বাবার পক্ষে সম্ভব হয়নি তাই বড় ভাই পড়া লেখা ছেড়ে দিল কিন্তু কোন প্রকার কাজ নাই বেকার চলতে থাকে আমি তখন ক্লাস এইট এ পড়ি। এলাকার এক বড় ভাই এর সহযোগিতায় টিউশনি শুরু করি। আমার টিউশনির টাকা দিয়ে আমার নিজের ও পড়াশোনার খরচ চলতো, তো যখন আমার জেডিসি পরীক্ষার ফরমফিলাপ তখন আমার কাছে টাকা নেই বাবা অন্যের কাছ থেকে ধার করে আমার ফরম ফিলাপের টাকা জোগাড় করে, আমি দেখেছি তখন আমার বাবার সেই কষ্টের দৃশ্য।
বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য আমি টিউশনি বাড়িয়ে দিই তখন থেকে আমার টিউশনির টাকা জমিয়ে কিছু কিছু করে সংসারে সহযোগিতা শুরু করি কিন্তু বাবাকে বুজতে দেইনি। এভাবে আমার পড়াশোনা চলতে থাকে তবে সেন্টার পরীক্ষার সময় ফরম ফিলাপের সময় হয় মায়ের জমানো টাকা না হয় বাবার কারো কাছ থেকে ধার করা নতুবা দাদির জমানো টাকা নিতে হতো।
এভাবেই আমার পড়াশোনা চলতে থাকে তবে সবার দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে প্রতিবারই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতাম আলীমে আমি আমাদের প্রতিষ্ঠান এ একমাত্র এ+ প্রাপ্ত হই। আমাকে নিয়ে আমার পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সবার অনেক আশা চিল। কিন্তু আমার আসা ও স্বপ্ন ছিল সফল ব্যবসায়ি বা উদ্যোক্তা হওয়ার তাই আমি পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যের দোকানে পার্টটাইম সময় দিতাম প্রায় ৩বছর টানা সম্পূর্ণ বিনা বেতনে একটা দোকানে সময় দিয়েছি।
যদিও আমার স্বপ্ন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য তার পরেও জ্ঞান অর্জন করার আমার প্রচুর ইচ্ছে ছিল, তাই এখন আমি বর্তমানে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি ও ফাজিল ৩য় বর্ষের ছাত্র পাশাপাশি অনার্স ২য় বর্ষের ও ছাত্র। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি।
এখন বলবো নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমার অনুভূতি। আসলে এই ফাউন্ডেশন এর একজন নিয়মিত ছাত্র হতে পেরে আমি খুবই গর্বিত ও আনন্দিত।
🎄 এখানে আশার ফলে আমি আজকে লিখতে পারছি আামার ছেলেবেলা ও জিবনের গল্প।
🎄প্রতিনিয়ত শিখছি আমার প্রিয় সহযোদ্ধাদের জীবনের গল্প থেকে। ডা,মো,শহিদুল্লাহ এর আমার ছেলেবেলা নামক গল্প গ্রন্থ যদি ক্লাশের পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত হয় সেটা থেকে আমাদের শিখার থাকে তাহলে কেন হাজারো সফল ও ব্যর্থ মানুষের জীবনী আমাদের শিখার বিষয় হবেনা।
🎄প্রতিনিয়ত স্যারের সেশন ও সেশন চর্চা থেকে শিখতে পারছি।
🎄জীবনে ভালো মানুষ হওয়ার চর্চা করছি পজিটিভ থাকার চেষ্টা করছি।
🎄সিনিয়রদের পরামর্শ ও ভালোবাসা পাচ্ছি।
🎄 একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করছি ব্যবসায়িক পরামর্শ পাচ্ছি।
আর কি পাওয়ার বাকি।
আসলে আমি লেখায় এতটা পারদর্শী নই তাইতো আমার ছেলেবেলার এই গল্পটা আমি যখন ক্লাস ফাইভে চিলাম তখন লিখছি কিন্তু আমার বন্ধুদের হাসি তামাসার কারনে তা পানিতে ফেলে দিই। কিন্তু এই গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে আমি আবারও লিখলাম আমার ছেলেবেলা নামক গল্প কারন আমি জানি এখানে সবাই ভালো মানুষ ও পজিটিভ মানুষ তাই এই গ্রুপের প্রিয় ভাই আপুদের কথায় আবার লিখলাম। আমি জানি আমার ভুল হলে সিনিয়রদের সু পরামর্শ পাবো। আর আমি এখনো ছাত্র তাই জীবনের গল্প নয় ছেলেবেলার কথা লিখতে চেষ্টা করছি যদিও মনের ভাব ভালো করে লিখতে পারিনি।।
স্যারের একটা শ্লোগান যা আমাকে সাহস যোগায়ঃ
৷৷ স্বপ্ন দেখুন সাহস করুন ও লেগে থাকুন সফলতা আসবেই।।
তাইতো প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখছি শুরু করছি প্রাথমিকভাবে ইনশাআল্লাহ লেগে থাকার চেষ্টায় আছি।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬১৮
Date:- ০৮/০৯/২০২১
মোঃ রমজান আলী।
জেলা লক্ষীপুর।
থানা চন্দ্রগঞ্জ।
বর্তমানে বেগমগঞ্জ নোয়াখালী।
ব্যাচ ১৪
রেজিঃ ৬৭৩৩৯
পেশায় স্টুডেন্ট পাশাপাশি বিজনেস।