মানুষ চাইলে পাড়েনা এমন কিছুই নেই,চাইলে সবই সম্ভব
🌺হ্যাঁ সত্যিই চাইলে সবই সম্ভব🌺
আমি আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো এমনই একটা চাওয়া এবং পাওয়া গল্প
💿এটা কিন্তু গল্প নয় বাস্তব জীবনের গল্প...💿
🔸🔸কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই সংসারের টানাপোড়েনে বাবা আমার পাড়ি জমান প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর দেশে অর্থাৎ সৌদি আরবে।
আমার বয়স তখন মাত্র ৪ বছর
সেই ছেলে বেলার কথা গুলা মনে নেই তবে যখন বুঝতে শিখেছি আমাদের পরিবারের অবস্থা তখন আলহামদুলিল্লাহ অনেকটাই ভালো
বাবা বিদেশ থেকে ভালো এমাউন্টের টাকাই ইনকাম করেন সংসারের খরচ বাদে ভালো টাকাই জমা করা সম্ভব হয়।
আর আমাদের জমানো টাকা দিয়ে আমারা গ্রামে জমিজমা রাখতে শুরু করি।
গ্রামে কেউ কোন কিছু বিক্রি করলেই আমাদের আগে জানান, আর জানাবেনই বা না কেন.? সবাই জানতেন বাবা আমার অনেক টাকাই ইনকাম করেন
সবাই মুখে মুখে বাবার কথা শুনি,সবাই বাবাকে নিয়ে অনেক ভালো ভালো কথা বলেন। শুনে প্রানের ভেতরে আন্দদের জোয়াড় ভেসে আসে
আমার এখনো মনে পড়ে আমর বাবার সাথে কথা বলতাম ল্যান্ড ফোনে তাও আবার দুই তিন মাস পর পর একবার। তখন তো আর স্মার্টফোন ছিলো না
আমাদের উপজেলায় পরিচিত এক কাকার দোকানে ল্যান্ড ফোন ছিলো আমরা সেই ফোনেই কথা বলতাম..
এভাবেই দেখতে দেখতে প্রায় ৬ বছর পর বাবা বাড়িতে আসলেন।
বাবাকে নিয়ে কতো আনন্দ ছিলো সেদিন আমার মনে বলে বুঝতে পারবো না।।
বাবার সাথে ছোট্ট বেলায় তেমন একটা সময় কাটাতে পারিনি আর কাটালেও হয়তো মনে নেই।
বাবাকে পেয়ে বাবার সাথে হাটে, বাজারে এবং মেলায় যেতাম।
এভাবেই কাটছিলো আমার আনন্দ মাখা দিন গুলা দেখতে দেখতে তিন মাস পর বাবা আবার চলে গেলেন তাই কর্মজীবনে....
🌺🌺পরিবারে আমি, মা এবং বড় বোন ছাড়া কেউই ছিলেন না আমাদের। তবে হ্যাঁ মেজো কাকা ছিলেন তিনিই আমাদের সমস্ত কিছু দেখাশোনা করতেন🌺🌺
বাবা যখন টাকা পাঠাতেন কাকা সব সময়ই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আমার হাতে তুলে দিতেন সেই ছোট্ট সময় থেকেই।
ছোট্ট সময় থেকেই টাকা চিনতে পেড়েচ্ছি ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট, আর আমার কাছে ৫শ এবং ১ হাজার টাকা কোন টাকাই মনো হতো না। কেননা ছোট্ট সময় থেকেই যে এই নোট গুলার সাথে পরিচিত ছিলাম।
দিন যতই যেতে শুরু করেন টাকার হিসাব ততই আমার কাছে আসতে শুরু করেন।
এখনো মনে পড়ে আমার বন্ধুদের কাছে যখন ১০০ টাকা থাকতো আমার কাছে তখন থাকতো ১০০০ বা দুই হাজার।
এভাবেই চলতে থাকেন আমার শৈশব।
🍀আজও মনে পড়ে স্কুনে যখন পড়াশোনা করতাম, কতো ভাবে যে মায়ের থেকে মিথ্যা বলে টাকা মেড়েছি।
স্কুলের বেতন ১০০ টাকা হলে আমি নিতাম ২০০ টাকা তাও আবার চোরের উপর বাটপারি করে। চোরের উপর বাটপারি বলতে মাসের শুরুতে একবার এবং শেষ একবার মোট দুইবার স্কুল এবং কি প্রাইভেট টিচারেরও বেতন একই ভাবে নিতাম।।
দুইবার নিয়েও আমি থেমে থাকিনি প্রাইভেট যদি দুইটা পড়তাম মা কে বলতাম চারটা পড়ি।।
মা-ও মাঝে মাঝে বুঝতে পেড়ে বাবাকে বলে দিতেন, বাবা শুধু একটা কথাই বলতেন নিক কয় টাকাই নেবে।
আমি তো ওদের জন্যেই বিদেশের মাটিতে পড়ে আছি।
বাবা আরও মাকে বলতেন তুমি শুধু খেয়াল রেখো পড়াশোনা যেনো ঠিক মতো করে।
পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই ছিলাম শুধু অযথা টাকা নষ্ট করতাম।
বাজে কোন নেশাও ছিলো না কিন্তু কিভাবে যে টাকা গুলা খরচ করেছি আমি নিজেও জানিনা।।
বাবা দীর্ঘ দিন বিদেশ থেকে ভালোই জমিজমা কিনেছেন। আর আমরা যেহেতু গ্রামের ছেলে তাই চাষাবাদ আমরা নিজেরাই করতাম।
চাষাবাদ নিজেরা করলে-ও আমি কখনো জমির কাছ দিয়েও যাইনি।
মা এবং বাবা বার বারই বলতেন অন্তত জমিগুলা দেখতে যাইও কিন্তু কে শুনে কার কথা।।
আমায় নিয়ে মা-বাবার অনেক স্বপ্ন ছিলেন আমিও কম স্বপ্ন দেখিনি মাকে সব সময় বলতাম মা আমার জন্য টাকা জমিয়ে রেখো আমি কিন্তু বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া করবো, মা প্রতিবারই বলতেন টাকার চিন্তা তোমায় করতে হবে না।
তুমি ঠিক মতো পড়াশোনা করো বাবা। আর এখনো তোমার বাবা তো তোমাদের জন্যেই নিজেই ইচ্ছে গুলা বাদ দিয়ে বিদেশের মাটিতে পড়ে আছেন যেন তুমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হয়ে দেশ এবং দশের এক জন হয়ে সমাজে মাথা তুলে ধারাতে পারো।
আমিও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু কিভাবে কেমন করে যেন মাথার মধ্যে বুৎ চেপে বসলো কিছুই বুঝলাম না।।
বুৎ চাপলেও তখন আমি স্বপ্ন দেখতাম উচ্চতর ডিগ্রির জন্য আমি বিদেশে যাবোই।।
এস এস সি পাশ করে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য ঢাকায় ভর্তি হলাম।
ঢাকায় ভর্তি হবার পর থেকেই শুরু হলো আমার অন্য এক জগৎ
সেই স্কুলের মতোই মায়ের মাথায় কাঠাল ভাঙ্গার মতো করে চলতে থাকেন আমার বিলাসিতা
বাবাকে টাকা চাইতে দেরি হলেও দিতে দেড়ি নেই,বাবা যেন টাকার মেশিন কিভাবে কেমনি টাকা দিতেন কখনো বুঝতে চেষ্টা করতাম না।।
আজ বুঝি টাকা কামানো কতোটা কঠিন। কিন্তু আজ বুঝেই বা লাভ কি সব তো শেষ, শেষ বাবা মায়ের স্বপ্ন শেষ নিজের ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন গুলাও।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার কিছুদিন পর বিয়ের পীড়িতে বসে পড়ি নিজের ইচ্ছেতেই বাবা-মায়ের মতামতের ভিত্তিতে।
ডিপ্লোমা চলাকালীন সময়ে কতো টাকা যে মিথ্যা বলে বাবা মায়ের থেকে নিয়েছি তার কোন হিসাবেই নেই।
তখন বড় বড় রেস্টুরেন্টে ছাড়া খেতেই পাড়তাম না,নামি-দামি ব্যান্ড ছাড়া জামা কাপড় ক্রয় করতাম না। কতো কতো ধরনের ফুটানি তার কোন হিসাবই নেই।
বাবা প্রায়ই কল দিয়ে বলতেন বাবা আমার কষ্টে উপার্যন করা টাকা নষ্ট করে দিও না।।
সাধুর মতো কথা বলতাম বাস্তবে করতাম তার উল্টো..
যাইহোক সেদিনের কথা আজ না-ই বললাম, বলে শেষ করা যাবে না।।
বিয়ের পর শুরু হয় আমার বাস্তব জীবন
বিয়ে করার মাস খানেক পরেই একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে যোগদান করি।
চাকুরীটা বেশ আরামের হলেও বেতনের দিগ দিয়ে খুবই অল্প.....
কথাই আছে, নেই মামার চেয়ে কানা মামাই ভালো।
তাই তো চাকুরীটা করা।
যেহেতু বিয়ে করেছি তাই বউয়ের দায়িত্বটা আমারই, চাকুরীতে যে সীমিত সম্মানিটা পেতাম সেটা দিয়ে নিজের খরচই চলত না বউকে কিভাবে খরচ দেবো সেই চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেলো।
এখন যেহেতু ইন্টারনেটের যুগ তাই বিভিন্ন সময় ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করতাম কিভাবে বাড়তি টাকা ইনকাম করা যায়।
সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই ইন্টারনেট ঘাটতে ঘাটতেই সন্ধান পেলাম প্রিয় এই প্লাটফর্ম "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের"
প্রিয় ফাউন্ডেশনের সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই আমার জীবনের চাকা যেন ঘুরতে শুরু করে দিলেন।
যেহেতু গার্মেন্টসে জব করি তাই উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হওয়া বা কোন পথ প্রর্দশকের সন্ধান পাওয়া বা সন্ধান পেলেও তার সাথে ঘুরে ঘুরে তার থেকে শিক্ষা নেওয়া সম্ভব ছিলো না।
আর আমাদের প্লাটফর্মের কার্যক্রম যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক তাই প্রিয় ফাউন্ডেশনের সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই কেন জানি মনে হতো বিধাতা বোধহয় আমার জন্য এই প্লাটফর্ম প্রিয় শিক্ষকের মাধ্যমে তৈরি করে দিয়েছেন।
বাবা-মায়ের সমস্ত স্বপ্ন ভঙ্গ হবার পর মনে মনে নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করলাম, উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হওয়ার। প্রিয় ফাউন্ডেশনে এসে ৯০ দিনের কর্মশালা সম্পূর্ণ করে..
নিজের কোন অর্থ না থাকায়, নিজের স্বপ্ন গুলার কথা বাবা মাকে বলার সাহস পেতাম না।
অনেক ভাবেই বাবা-মায়ের থেকে টাকা নিয়েছি তাই আর বলার সাহস পাইনি, তাই নিজের কাজ নিজেকে গুছিয়ে বাবা এবং মাকে দেখানোর প্রত্যয়ে অল্প কিছু পুজি নিয়ে পার্টনারশিপে দুইজনে গার্মেন্টস আইটেম নিয়ে কাজ শুরু করে দেই চাকুরির পাশাপাশি।
আলহামদুলিল্লাহ মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে এবং বাবা-মায়ের দোয়ায় ও আপনাদের সাপোর্টে প্রথম থেকেই অনেক ভালো সারা পাই এবং আজ অবধি পেয়ে যাচ্ছি...
আজ প্রায় চার বছর হলো জব করছি এবং প্রায় দুই বছর ধরে বিজনেস পরিচালনা করে যাচ্ছি।
আপনাদের ভালোবাসায় অনলাইন থেকে অফলাইনে চলে এসেছি।
প্রথমেই বলেছিলাম না_______ "চাইলেই সব-ই সম্ভব"
হ্যাঁ চাইলেই সব ই সম্ভব এর জন্য প্রয়োজন কোন একটা মাধ্যম অর্থাৎ অনুপ্রেরণা দেওয়ার মতো কেউ একজন।
জীবনটা ছিলো যখন ছন্নছাড়া, তখন দেখা পেলাম প্রান প্রিয় মেন্টর জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারকে এবং To Be an Entrepreneur নিজের বলার মত একটা গল্প Foundation কে।
প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটা কথায় অনুপ্রেরণা পেয়ে লেগে আছি সেটা হচ্ছে
"স্বপ্ন দেখুন,সাহস করুন,শুরু করুন এবং লেগে থাকুন সাফল্য আসবেই।
আমার ছন্দ ছাড়া জীবনের মোড় ঘুরিয়েছেন প্রিয় এই প্লাটফর্ম " নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন"
আজ যদি আমি এই গ্রুপের সন্ধান না পেতাম তাহলে হয়তোবা অনেক বছর পিছিয়ে যেতাম।
নতুন করে আর "ঘুরে দাড়াতে পারতাম না"
✍️লিখতে গেলে লিখে শেষ করা যাবে না। তবে একটা কথাই বলতে চাই জীবনে যদি একটা ভালো মেন্টর বা শিক্ষক থাকেন তাহলে আর পেছনে ফিরতে হবে না।
চাইলেই সবই করে দেখানো সম্ভব
আমি যেমন একজন মেন্টর পেয়েছি সে হচ্ছেন আমাদের সকলের প্রিয় শিক্ষক Iqbal Bahar Zahid স্যার।
মৃত্যুর আগ প্রর্যন্ত প্রিয় স্যার এবং প্রিয় প্লাটফর্মের সাথে এক ছাতায় থাকবো ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় এই প্লাটফর্ম থেকেই শিক্ষা নিয়ে আমার জীবনের সব চেয়ে বড় অর্জনঃ- ছাত্র অবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি এবং গার্মেন্টস আইটেম নিয়ে কাজ করছি
যদি কখনো সুযোগ হয় গল্প শুনানোর ইনশাআল্লাহ শুনাবো, আজ এই এই প্রর্যন্ত আল্লাহ হাফেজ
সবাই ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।।
স্টাটাস অফ দি ডেঃ৬৫৭
তারিখঃ২৭-১০-২১
মোঃ সোহেল রানা
ক্যাম্পাস এম্বাসেডর (NPI University Of Bangladesh)
সদস্যঃ ক্যাম্পাস অর্গানাইজ টিম
টপ_২০ ক্লাব মেম্বার।
ব্যাচ ৮ম,রেজিঃ৫০০২
জেলাঃ টাংগাইল
বর্তমান অবস্থানঃ গাজীপুর
ব্যবসায়ী পেজঃ https://www.facebook.com/ekhaneache.com.bd/
🏠আমাদের অফিসের ঠিকানাঃ ২ং ডিবিএল গ্রেট, সারদাগঞ্জ,কাশিমপুর, গাজীপুর।