গল্পের_চলে_পণ্য_বিক্রয়
#গল্পের_চলে_পণ্য_বিক্রয়
"""আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ"""
আশা করি সবাই আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন।শুকরিয়া আল্লাহর নিকট যিনি আবারও আরেকটা হাটে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন।
যাকে ধন্যবাদ না দিলেই নয় তিনি হলেন আমাদের কিংবদন্তী, মেন্টর,শিক্ষক #ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যার।
#নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প প্লাটফর্মের সকল আজীবন সদস্যের জানাই ৭০ তম হাটে স্বাগতম 🌹
হাটে তাড়াতাড়ি আসার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য দেরি হয়ে গেলো। ইদানিং হাটে অনেক মানুষ আসে জায়গায় পাই না।আর আমরা কিন্তু হাটের নিয়ম মেনে হাটে আসব এবং সেল পোস্ট দিব।
❣️আমি তাহামিনা আক্তার। লক্ষ্মীপুর জেলার গর্বিত সন্তান।স্যার এর নিয়মিত ছাত্রী। প্রতিদিন স্যার এর সেশন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবন কে আলোকিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। পড়াশোনার পাশাপাশি বিজনেস করতে নেমে পড়েছি।করণ স্যার বলেছেন ছাত্র জীবনেই ঝুঁকি নিতে শিখতে হবে।
❣#আমার_উদ্যোগের_প্রথম_অনুপ্রেরণা
আমি ছোট বেলা থেকে অনেক ঘুম পাগল ছিলাম।এখনও ঘুমের জন্য পাগল।কিন্তু পড়ার জন্য খুব কম সময় পেতাম ঘুমের।কোনো কাজই জান্তাম না।হাতের কাজ তো ভুলেও করি নাই।এসএসসি পরীক্ষা শেষ তখন তো ফ্রি কি কাজ শিখা যায় ভাবছিলাম।আম্মুর অনেক দিন থেকে শখ ছিলো আমি সেলাই শিখি।তখন আমারও একটু আগ্রহ হলো শিখব। বাড়ির পাশের এক ফুফু ছিলো অনেক ভালো সেলাই পারত। ছেলে টেইলারের কাছে শিখব না বলে ফুফুর কাছে শিখা শুরু করলাম।ফুফু কে নিয়ে কিছু কথা বলি।উনার থেকে অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমি।ফুফু কে উনার বাবা মা খুব ছোট বেলায় একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেই।উনার হাজবেন্ড কয়েক মাস ফুফুদের বাড়িতে ছিলো পরে উনাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। এর মাঝে ফুফুর একটা ছেলে হয়।ঢাকায় গিয়ে দেখেন উনার হাজবেন্ড রা বিয়ের সময় যে ভাবে বলছে সব ভুল তথ্য দিছে।উনাদের কিচ্ছু নাই।এর পর অনেক টাকা চাইতো। অনেক নির্যাতন এর স্বীকার হয়ে ফুফু ঢাকা থেকে চলে আসেন।বাড়িতে এসে উনি কি করবেন অনেক চিন্তায় ছিলেন।উনি আগে থেকে সেলাই জানতেন তাই একটা মেশিন কিনে সেলাই এর কাজ শুরু করেন।আস্তে আস্তে অনেক অর্ডার আশা শুরু হয়।সেলাই করতেন আমার নকশি কাঁথা ও সেলাই করতেন।দুইটা কাজ করে অনেক টাকা ইনকাম হতো। উনার সংসার টা সুন্দর করে চলে যেতো বাবা মা কেও হেল্প করতে পারতেন।
ফুফুর থেকে শিখলাম মেয়েরা কখনও হেরে যায় না।উনার হাজবেন্ড চলে গেছে তো কি হইছে উনি নিজের দক্ষতা দিয়ে কাজ করে সবার প্রিয় হয়েছে এবং নিজের সংসার টা খুব সুন্দর করে চালাচ্ছে।এখনও উনি একই কাজ করে যাচ্ছেন এবং নিজের ছেলে কে হাফেজি পড়াচ্ছেন।সব থেকে কষ্টের হচ্ছে উনার ছেলেটা যখন বাবা বাবা বলে কান্না করত তখন উনি তার বাবা কে দেখাতে বা বাবা কথা বলতে পারত না।কি ভাবে বলবে বাবা তো বিয়ে করে অন্য জায়গায় সংসার করতেছে।কাছ থেকে উনার জীবন টা দেখে আসলাম।অনেক কথা বলত আমার সাথে।তখন উনার যত কাঁথার অর্ডার আসত সব কাঁথা আমি একেঁ দিতাম।আগে উনি কারো কাছে আকঁতে নিলে যে আকঁতো সে টাকা নিতো।কিন্তু আমার সাথে ভালো সম্পর্ক হওয়ার পর থেকে আমি উনার কাঁথা গুলা এঁকে দিতাম।উনি অনেক ভালো করে আমাকে সেলাই শিখাত।বন্ধুর মত একটা সম্পর্কে হয়ে যায় উনার সাথে যদিও উনি আমার অনেক বড়।১মাসের মধ্যে আমাকে সেলাই এর কাজ শিখিয়ে দেন।প্রতিদিন আমাকে দেখতে আসতেন উনি।অনেক আদর করতেন।আমি যে উনার কাঁথা গুলা একে দিতাম উনার কাস্টমার রা অনেক প্রসংশা করতেন।তখন আমি বুজলাম যে ছোট বেলা থেকে যে এতো আঁকা আঁকি করতাম কাজে আসছে।
২০২০ সালে করোনা আসার পর থেকে গৃহে বন্ধি এর পর যখন আম্মুকে বললাম আম্মু আমি বেবি দের নকশি কাঁথা নিয়ে কাজ করব ছোট থেকে শুরু করি পরে বড় কাঁথা করব।আমার আম্মু তো অবাক। বলতেছে তুই পারবি?? আম্মুর কোমরে সমস্যা তাই উনি বলতেছে যে আমি তো বেশি সময় বসতে পারব না।তার পরেও একটা পেইজ খুলি।কিন্তু ভয়ে কাজই শুরু করি নাই।
২০২১ সালের প্রথমে পেইজ খুলি জুন মাসে নিজের বলার মত একটা গল্প প্লাটফর্ম এ যুক্ত হই। নিয়মিত সেশন চর্চা করি।স্যার এর ইউটিউব ভিডিও গুলা দেখি।স্যার এর শিক্ষা নিয়ে আমার লক্ষ্মীপুর জেলার আপু ভাইয়াদের সাহস নিয়ে কাজ শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ প্রথম সেল পোস্টেই আমার সেল হয়।
আমার আম্মু আমার পাশে ছিলেন। অনেক সাহায্য করছেন।আমার আব্বু বিদেশ থেকে বলত তুই এতো কষ্ট কেনো করিস।এগুলা কে নিবে তোর থেকে আব্বুর অনলাইন সম্পর্কে ভুল ধারণা উনি ভাবে যে এখানে প্রতারণা হয়।কিন্তু আমার সেল দেখে উনি নিজেও অনেক খুশি এই ভেবে যে আমার মেয়েটা আজ কত কাজের হয়েছে।যে মেয়ে কিছুই পারত না সে আজ কাঁথা নিয়ে কাজ করে।কাজ টা সবার কাছে ছোট মনে হলেও আমার কাছে অনেক কিছু।আমার পরিবারের সবাই অবাক হয় আমার কাজ দেখে।কারন তারা শুধু আমাকে পড়ার মধ্যেই দেখেছে।কাজ করতে দেখেনি।
স্যার এর শিক্ষা পেয়ে ইনশাআল্লাহ আরও নতুন কিছু নিয়ে আসব আপনাদের সামনে।
স্যার বলছেন,, আপনার জন্ম একটা মাত্র কাজ করার জন্য হয়নি।
আজ আমি এই কাজ টা দিয়ে আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেছি বলেই আমি অন্য আরেকটা কাজ করার সাহস পাচ্ছি যদি আমি কাজ কে ছোট ভেবে ঘরে বসে থাকতাম তাহলে অন্য কাজ টা করার সাহস আমার মাথায় আসত না।
🍀#নকশি কাঁথা আমাদের দেশের ঐতিয্য কিন্তু আজ তা হারিয়ে যাচ্ছে।তাই আমার জীবনের প্রথম উদ্যোগ টা আমি ঐতিয্যবাহী পণ্য নিয়ে শুরু করেছি।আমি মনে করি আমার মত অন্যরাও যদি দেশের ঐতিয্যের কথা চিন্তা করে কাজ শুরু করে তাহলে হারাবে না আমাদের ঐতিয্য।আলহামদুলিল্লাহ এখন আমার পণ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ পাইকারিতে নিয়ে বিজনেস করতেছে।ইন্ডিয়া থেকে এক ভাই অর্ডার করতে চাচ্ছে কিন্তু কিভাবে পাঠাব সেই মাধ্যম আমি ভালো ভাবে জেনে আমার কাঁথা ইন্ডিয়া পাঠাব।
এভাবে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভালোবাসার কাজ গুলো দিয়ে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করে তাহলে আমাদের প্রিয় স্যার এর দেওয়া #চাকরি_করব_না_চাকরি_দিব স্লোগান এর পূর্ণতা পাবে।
(বিঃদ্রঃ পণ্যের সাইজ ও ডিজাইন এর উপর দাম নির্ধারণ করা হয়)
স্টাটাস অফ দি ডেঃ৬৫৬
তারিখঃ২৬-১০-২১
👩🎓আমি তাহামিনা আক্তার
🏅কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
🎗️ব্যাচঃ১৪
✍️রেজিষ্ট্রেশনঃ৬৬৩৯৩
🇧🇩জেলাঃ লক্ষ্মীপুর
🏡বর্তমান অবস্থানঃ নোয়াখালী
🎨কাজ করছিঃ বেবি কাঁথা নিয়ে
🎀পেইজঃhttps://www.facebook.com/অনলাইন-বেবি-কাঁথা-হাউজ-110173391120586/