ভাল থাকুক পৃথিবীর সমস্ত বাবা।
পোস্ট নংঃ ৩
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুললাহি ওয়াবারকাতুহু
আজ লিখব আমার দয়ালু বাবার ত্যাগ, তিতিক্ষা, সংগ্রাম,ব্যবসার উওান পতন। সর্বোপুরি আজ পর্যনত উপসংহারে তার বিজয়ের গল্প। অনেক কিছুই শিক্ষণীয় আছে আমার বাবার এই গল্প থেকে আশা করি সবাই অবশ্যই পড়বেন।
শুরু করেছি পরম করুণাময় রাব্বুল আলামিনের দরবারে শুকরিয়া জঞাপনের মাধ্যমে, যিনি এই মহামারির মধ্যে ও আমার বাবাকে সহ আমাদের সবাইকে এখনও সুস্থ রেখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানাই প্রিয় মেন্টরের প্রতি, যিনি আমাদের সবাইকে বাবা মাকে ভালোবাসার কথা বারংবার বলে যাচ্ছেন। উনার সেশনটা করার পর বাবার প্রতি ভালোবাসা আমার ২গুণ বেড়ে গেল।
আমার বাবারা ছিল ৫ ভাই। তাদের কোন বোন ছিল না। বাবা ছিলেন ৫ ভাইয়ের মধ্যে ২ নং। মেজ ছেলে হলেও বাবা বড় ছেলের দায়িত্ব পালন করতেন। সব সময় দাদা দাদীর অনেক খেয়াল রাখতেন। উনি ছিলেন একদম পারফেক্ট ব্যবসায়ী তাই আমার দাদা দাদী উনাকে অনেক বেশি আদর করতেন। যেহেতু আমার বাবাকে অনেক দেখতে পারতেন সেহেতু আমি ওনার মেয়ে তাই আমাকেও নাকি অনেক আদর করতেন। এতই আদর করতেন যে, আমার একবার অনেক বেশি অসুখ হয়েছিল। ডাক্তারের কাছ থেকে বাসায় এনে আমাকে সামনে রেখে পশ্চিম দিকে রেখে উনি সিজদাহ্ কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন হে আললাহ আমার নাতনীর অসুখ আমার কাছে পার করে দাও আর আমার হায়াত আমার নাতনীকে দাও। এইটা বলার ১ সপ্তাহর মধ্যে উনি মারা যান। আর আমার বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলেন আমার ছোট ২ চাচাকে। তাদেরকে যেন কোন দিন আলাদা না করে হাত ধরে সেটাই বলেছিলেন। আমার দাদা বেঁচেছিলেন অনেক বছর। দাদা আমাকে সব সময় বলতেন তোর জন্য তোর দাদী মারা গেছে। খাগড়াছড়িতে ছিল দাদার ব্যবসা। একদিন দাদা অনেক বড় accident করে সেই থেকে আমার বাবা দাদার দোকান দেখাশুনা করত। তারপর অনেক ধুম ধাম করে আমার সেজ আব্বুর বিয়ে দেয়। একসাথে বড় করে বিল্ডিং করে। যাতে করে কোনদিন আলাদা হতে না হয়। হঠাৎ করে আমাদের পরিবারে নেমে এলো অন্ধকারের কালো ছায়া, সবকিছু উলোট পালোট হয়ে গেল। আমার এই বাবা কোন দিন কোন কিছুর অভাব আমাদের বুঝতে দেয় নি। আমরা ৫ বোন ১ ভাই। কখনও বাবার কাছে কিছু চায় নি। না চাইতেই সবকিছু আমাদের সামনে হাজির করে দিতেন। যখন কোন নতুন জ্যামিতি বক্র বের হত, কাপড় বের হত, জুতা বের হত সবার আগে গ্রামে আমাদের জন্য পাঠিয়ে দিত খাগড়াছড়ি থেকে, আমি এ অনুভূতি গুলো ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা। কোটিপতি হলেও অনেক বাবাই আমার বাবার মত করে না। আজ আমার একটা জিনিস লাগবে কিন্তু পাইনি এমন কোন ঘটনা আমার জীবনে নাই। তাই আমার বাবা পৃথিবীর শ্রেষঠ বাবা। আমি ইমোশনাল হয়ে পড়েছি আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
উপসংহারে বলেছিলাম আমার বাবার বিজয়। এটা হচছে সেই বিজয়। এখন ছোট আব্বু আমার বাবাকে তার বাবার মত করে দেখে,খেয়াল রাখে এখন বুঝতে পারছে খী অন্যায় আমার বাবার সাথে তারা করেছিল। স্যারের কথার প্রতিফলন আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি। কেউ তোমাকে আঘাত করলে মুখ দিয়ে জবাব না দিয়ে কা দিয়ে জবাব দাও। তোমার কাজে মানুষ এমনিতেই বিমোহিত হবে। ভাল থাকুক পৃথিবীর সমস্ত বাবা। হে আললাহ যাদের বাবারা হসপিটালের বেডে শুয়ে আছেন তাদেরকে সুস্থতা দান করুন। আর যাদের বাবা আমার বাবার মত সুসথ আছেন। তাদেরকে আললাহ তায়ালা নেক হায়াত দান করুন। আর যাদের বাবা মৃত্যুবরন করেছেন তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন।
দান,সদকা পরোপকার, দয়া সবকিছুই আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি।বাবা আমার জীবনের একজন আদর্শ শিক্ষক। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আললাহ যেন আমার বাবাকে আমাদের কাছে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখে। অবশেষে সবাইকে অনুরোধ জানাই যাদের বাবা বেঁচে আছেন তারা এখন থেকেই তাদের যনত নেন। মৃত্যুর পর হাজার ইচ্ছা করলেও কিছুই করতে পারবেন না। তাই স্যারের কথা মত আজকে থেকেই যতন নিন আপনার বাবা মার। কারন সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না।
✌️স্টঢাটাস অব দ্যা ডে নং ৬২৯.
তারিখ ঃ ২৬/৯/২০২১.
উম্মে জান্নাত সুমি
ব্যাচ নংঃ ১৫
রেজিষ্ট্রেশন নংঃ ৬৮৬৮৭
ব্লাড গ্রুপঃ "এ" পজেটিভ
জেলাঃ চট্টগ্রাম
কাজ করছি ফ্যাশন ডিজাইন, ফার্ণিচার এন্ড ফুড নিয়ে।