ডিভোর্সের পর থেকে সারাদিন একাই কাটাতাম
❤️❤️বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম❤️❤️ ❤️❤️আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহর নামে শুরু করছি।❤️❤️
🌺🌺শুরুতেই প্রাণপ্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সুস্থতা কামনা করছি। স্যারের সাথে থেকে যারা দায়িত্ব পালন করছে এডমিন ও মডারেটর ভাইয়া ও আপুদের জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।
🌺🌺ভালোবাসা কি শুধুমাত্র পরিবার বা বন্ধু মহলের মধ্যে সীমাবদ্ধ? না এটা প্রমান হলো আমাদের প্রিয় প্লাটফর্মে। চেনা অচেনা মানুষ মানুষের সাথে গড়ে উঠেছে এক আত্মিক সম্পর্ক সেই সম্পর্কের আন্তরিকতা থেকে শেয়ার করব আমার জীবনের কিছু গল্প।
🌺🌺শৈশবকালঃ
-----------------------------
আমার শৈশব, কৈশোর এবং বর্তমান সবই কেটেছে পিরোজপুর জেলা মঠবাড়িয়া উপজেলা। তবে এর মধ্যে কয়েকটা বছর কেটেছে বরগুনা জেলা এবং তালতলী উপজেলা তে। আমার বাবা একজন সরকারি কর্মচারী ছিলেন মঠবাড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিলেন। আমরা তিন ভাইবোন। একটা বোন ছিল তবে ছোটবেলায় তাকে হারিয়েছি। তখন আমি ছোট তবে খুব ভালোবাসতাম তাকে। এখনও খুব মিস করি বোনকে। বাবা মায়ের কোলে অতি আদরে বেড়ে উঠি আমি। বাবা মায়ের প্রথম সন্তান বলে অনেক ভালোবাসে আমাকে। আমার মা আমার একমাত্র বন্ধু যাকে আমি সব কিছু শেয়ার করি এখনও। ছোটবেলা থেকে কোনো আবদারই তারা অপূর্ন রাখেন নি আমার।কষ্ট কি তা ১৬ বছর পর্যন্ত বুঝিনি। এজন্য শুকরিয়া আল্লাহর কাছে।
🌺🌺লেখাপড়াঃ
---------------------------
আমাদের এখানকার একটা প্রাইমারি স্কুলেই আমার হাতে খড়ি হয়ে যায়। একদম খারাপ ছাত্র ছিলাম না আবার অতটাও ভালো ছিলাম না। ১ থেকে ১৫এর মধ্যে থাকতাম সব সময়। সবারই একটা স্বপ্ন থাকে আমার একটা স্বপ্ন ছিল। আমার শিক্ষকতা করার খুব ইচ্ছা ছিল। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল শিক্ষকতা। তবে সেটা স্বপ্নই রয়ে গেল। সেটা আর বাস্তবে পরিণত হলো না। মানুষের সব স্বপ্ন পূরণ হবার নয় তেমনি এটাও না হয় হলো না। তাই মনকে সবসময় বোঝাতাম। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিলে এমন হাজারো স্বপ্ন পূর্ণ থাকে এটাই বাস্তব।
🌺🌺বৈবাহিক জীবন/ব্যর্থতার জীবনঃ
------------------------------
আমার বাবা মায়ের ভূলে মাসুল আমি আজো বয়ে বেড়াচ্ছি।অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে। যে বয়সে লেখাপড়ার করার কথা ছিল সেই বিয়ে।পারিবারিকভাবেই ২০০৩ সালে এস.এস.সি পরীক্ষার একমাস পরে আমার বিয়ে হয়ে যায়।বরগুনা জেলাতে। অবশ্য যখন বিয়ে হয় তখন তারা তালতলী উপজেলাতে থাকতো।এখান থেকেই শুরু হল আমার ব্যর্থতার সময়। আমার বর তখন সেও স্টুডেন্ট ছিল। তখন সে বি,এ পড়তো।একটা বেকার মানুষের সাথে বিয়ে হলো আমার কষ্ট হলো না আমার ভাবতাম জীবন তো শুরু ইনশাল্লাহ ভালো কিছু হবে। আমার বিয়ের কয়েকমাস পড়ে আমার আব্বা টাকা দেয় এবং তা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলো। কিন্তু তা ধরে রাখতে পারলোনা বেশি দিন।কয়েক মাস পড়ে ব্যবসা বাদ দিয়ে জব নিলো ঔষধ কোম্পানিতে। সেটাই করতে থাকলো।কয়েকমাস পরপর কোম্পানি চেন্জ করতো আর দেনা করতো প্রত্যেক কোম্পানিতে এভাবেই চলতে থাকলো আমার সংসারের শুরুটা। আমার শ্বশুর হয়তো তার বেকার অল্প বয়সী নেশাগ্রস্থ ছেলেকে বিয়ে দিয়েছিলো কারন বিয়ে করলে তার ছেলে যদি ভালো হয় এই আশায়।আমার বিয়ের আগে থেকেই সে নেশা করতো কিন্তু তা জানতাম না আমরা।আমার বিয়ের প্রায় চার বছর পরে জানতে পারলাম।কারন আমাকে তাদের বাড়ি নেয়নি বিয়ের পরে।এখানে আসতো মাঝে মাঝে তাতে কি করে বুঝবো। কারন নেশাগ্রস্থ লোক কেমন হয় তা তো জানতাম না আদৌ।আর যখন বুঝতে পারি তখন আমি প্রেগন্যান্ট। আমার পরিবার তখন তার কাছে আমাকে দেবেনা বলেই জানিয়ে দিলো কিন্তু আমি তাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিলাম বলেই রাজি হয়নি তাকে ছেড়ে আসতে।
🌺🌺২০০৭ সালে ১১ই ডিসেম্বর আমার মেয়ে আসে এই পৃথিবীতে যার জন্য আমি পেয়েছি মা হওয়ার স্বার্থকতা। অটিতে যখন আমায় নেয় তখন খুব ঐ মানুষটার কথা খুব মনে পড়ছিলো আর দেখা হবে তো তার সাথে এসব অনেক কিছু ভাবলাম খুব ভয় হচ্ছিলো আমার ঐ সময়ে। কিন্তু আমার মেয়েকে যখন নার্স নিয়ে আসে আমার কাছে সব কষ্ট তখন ভূলে গেলাম। কিন্তু ওর বাবা তখনও এসে পৌছাতে পারিনি ওরা তখন তালতলী থাকতো। মেয়ে হওয়ার পর থেকে আবার মঠাবাড়ীয়াতে থাকা শুরু হয়। আর সেও চলে আসে জব নিয়ে এখানে। আর তার পরিবার তাদের বাড়িতে চলে যায় তালতলী থেকে।
ও চলে আাসর কারন হলো আমার বাবা ২০০৭ সালে তার জব ছেড়ে সবার অনিচ্ছা সত্যেও বিদেশে চলে যায় এবং সেখানে সে ৯ মাস থেকে চলে আসে। এখান থেকেই শুরু হলো আমার বাবা বাড়ীর অবস্থার পরিবর্তন। আমার বাবা না থাকার জন্য সে এখানে এসে জব শুরু করে মোটামুটি ভালোই চলছিলো কিন্তু তার নেশা করার কারনে সে এখানে এসেও একি কাজ করে কোম্পানিতে দেনা। আর কোম্পানি চেন্জ শুধু। প্যাথেডিন, গাজা, সিগারেট, সবই চলতো আমার চোখের আড়ালে। একটা নেশা করা লোকের সাথে কতোটা মানিয়ে চলা যায়। তাও চেষ্টা করতাম চলার আর আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতাম। আল্লাহর সাথে কান্নাকাটি করতাম তাকে ভালো পথে আনার জন্য কি কিন্তু এলো না।
এভাবেই চলতে থাকে আমার দিনগুলো। মেয়েও আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে তবে তাকে খুব ভালোবাসতো মেয়েকে আর মেয়ে ও বাবা পাগল ছিলো।
🌺🌺২০০৮ সালে বাবা চলে আসে বাড়িতে বিদেশ থেকে, কারন হলো তাকে যে কাজের কথা বলা হয়েছে তা দেয়নি দিয়েছে অন্য কাজ। তা করতে পারেনা আর মূলত বাবা কোন কষ্টকর কাজই করতে পারেনা। তাহলে সে কাজ করবে কিভাবে। দেশে আসার পরে আমাদের বসত বাড়ি ছাড়া আরো জমি ছিলো ওটা বিক্রি করে দেয় আর মালবাহী পিকআপ কিনে একটা। ড্রাইভার ছিলো সে চালাতো। কিন্তু অন্য লোক দিয়ে কি সব কাজ হয় ঐ লোক গাড়ির টাকা মেরে খেতো। নিজে বাড়া ঠিক করতো কিন্তু বাবাকে জানাতোনা।এভাবেই শুরু হয় সংসারের অবনতি। ভাইয়ারও বড় হতে থাকে পড়ালেখার খরচ আমরা থাকি সংসারে তার খরচ। আমার বরের তো ঐ অবস্থা। আগে শুধু ফেমিলিতে ক'জন জানতো নেশা করে আর পড়ে সবাই জানা শুরু করলো। একটা মেয়ের জীবনে বাবার পরের স্থানটাই হলো তার স্বামীর। তার স্বামীর চরিএ নিয়ে যদি কেউ কথা বলে এরচেয়ে লজ্জাজনক আর কি হতে পারে।
🌺🌺২০১১ সালে সে আবার চলে যায় বরগুনাতে এবং জব ছেড়ে ফার্মেসি দেয়া শুরু করে। ভালোই চলছিলো শুরুর দিকে। কিন্তু যখন থেকে প্যাথেডিন নেয়া শুরু করলো তারপর থেকে আস্তে আস্তে তার কাস্টমার হারতে থাকলো। ওদের বাড়ি থেকে বরগুনা যেতে আসতে আধাঘন্টা লাগতো। তাই সে প্রতিদিন বাড়ি যেতোনা। আমি বাড়ি থাকতাম।আর সে বাড়িতে গেলেও আমার সাথে তেমন কথা বলতো কেমন করতো এভাবে আর কতে সহ্য করা যায়। ২০১২ সালে বরগুনাতে বাসা করে আমায় নিলো কারন মেয়েকে স্কুলে দিতে হবে তাই।
🌺🌺গ্রামে স্কুল ছিলোনা তেমন তাই আমি জোর করেই ভালো স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য। আমার লাইফ তো শেষ মেয়ের লাইফ কেনো নষ্ট করবো।এই মেয়েকে ভর্তি করানো নিয়ে শুরু হলো আরেক যুদ্ধ শ্বশুর বাড়ির মানুষের সাথে।কারন তারা চায়না তাদের বাড়ি ছেড়ে বাসা ভাড়া করে থাকি।কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এটুকু যুদ্ধ করতেই হলো সবার সাথে। এখানেও বেশি দিন থাকা হলোনা কারন ঐ মানুষটার জন্য সে দিন দিন আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো। একবছর না ঘুরতেই আবার শুরু হলো বাসা, ব্যবসা ছাড়ার প্লান। কারন দেনা বেড়েই যাচ্ছে। প্যাথেডিন নিতো যেহেতু দোকানেই তো ওষুধ ওখান থেকেই নিতো প্রতিদিন নিতো এগুলো।এই নেশাই আমার জীবন শেষ করে দিলো। এই নেশার কারনে আমার মতো হাজারো সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে। তিনি সংসারের খরচ আর বহন করতে পারছিলোনা কারন দেনা বেড়ে যাচ্ছিলো তাই পড়ে আবার চলে আসি ডিসেম্বর এ মঠবাড়ীয়া তে।আর সে ওখানে আবার জব নেয় ব্যবসা ছেড়ে।
আমি বলতাম তোমার টাকা-পয়সা কম আমার কোন সমস্যা নেই কিন্তু তোমার চরিত্র টা ঠিক করো। জীবন যুদ্ধে পরাজিত একজন মানুষ আমি।যে পারলো না তার জীবন সঙ্গীকে ভালো পথে ফিরিয়ে আনতে ভালোবাসা টাকা-পয়সা কোন কিছুর বিনিময়। হয়তো আমার ভাগ্যেই লেখা আছে এমনটা নইলে এমন হবে কেন। এভাবেই চলতে থাকে দিনগুলো।কিন্তু আর আর কতো মানিয়ে চলবো, আর কতো সহ্য করবো অবশেষে হেরেই গেলাম নিয়তির কাছে।
🌺🌺তাই ২০১৫ সালে আমরা আলাদা হয়ে যাই।থাক সে তার মতো আর আমি আমার মতো।খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম সেই সময়টায় কারন মেয়েটা বাবাছাড়া হলো আর আমি হলাম সংসার ছাড়া।
🌺🌺সমাজের চোখে একজন ডিভোর্সী নারী। যাকে সমাজ কখনো ভালো চোখে দেখেনা। মেয়েটাও বাবর জন্য কান্না কাটি করতো খুজতো বাবাকে। কিন্তু সে খোজ নিতো না বা এখনো নেয়না। আজও মেয়ে মন খারাপ করে বলছিলো আল্লাহ আমার আব্বুকেই কেন এমন বানালো আম্মু।কেন আমার আব্বু আমার কাছে থাকে না।তখন আমি তাকে বলি মামুনি আমাদের নবীজী এতিম ছিলেন। তিনি তো বাবা কি কেমন হয় জানতোইনা। তাও তুমি তোমার বাবাকে কয়েক বছর পেয়েছো। জীবনে চলার পথে এভাবে অনেক না পাওয়া থাকবে। মন খারাপ করোনা সোনা।এভাবেই তাকে বুঝাই আমি কি বা করার আছে আমার।আমিও ভাবি কেন আমার সাথেই এমন হলো।
🌺🌺হতাশময় জীবন/ মেয়ের পড়ালেখাঃ
-------------------
ডিভোর্সের পর থেকে সারাদিন একাই কাটাতাম। কারো সাথে মিশতাম না কথা বলতাম না একঘেয়ে হয়ে গিয়েছিলাম। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম কোন দিকেই খেয়াল ছিলনা।এমনকি মেয়ের দিকে খেয়াল ছিলোনা। আমার মা ওর দেখাশুনা করতো।মাঝে মাঝে মনে হতো জীবনটা শেষ করে দেই এভাবে থাকা যায়না। একটা সংসার ১২ বছর করার পরে সেটা ভেঙে যাওয়া কতোটা কষ্টকর তা শুধু একটা মেয়েই জানে। কতো স্বপ্ন,আশা ভরসা নিয়ে একটা মেয়ে সংসার শুরু করে আর তা যদি এভাবে মাঝপথে হারিয়ে ফেলে তাহলে সে কিভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করে।
🌺🌺এভাবে চলতে থাকে দিনগুলো আমার পরিবারের সার্পোটের কারনে নিজেকে আস্তে আস্তে কন্ট্রোল করা শুরু শুরু করলাম মেয়ের দিকে খেয়াল রাখা শুরু করলাম। যখন ডিভোর্স হয় তখন আমার মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে ফাইনাল পরীক্ষা দেয়। কিছুই বোঝেনা ওর মায়ের জীবনে কি হচ্ছে। ভাবতে শুরু করলাম এভাবে থাকলে আমি বাঁচবো না আমাকে কিছু একটা করতে হবে আমাকে তো মেয়ের জন্য বাচতে হবে।।
🌺🌺 ২০০৩ সালে বিয়ের পর বাবা বাড়িতে থাকতাম বলেই শখের বসে মেশিনের কাছে শিখেছিলাম।অবশেষে সেটাই যে আমার বিপদে কাজে লাগবে বুঝিনি সেটা দিয়ে প্রথম কাজ শুরু করলাম।টুকটাক অর্ডারি কাজ শুরু করলাম। ২০১৭ সালে আমি একটা জব নেই বিকাশ অফিসে। এরপর থেকে ভালই চলছিল কাজের মধ্যে থাকতাম মানসিক কষ্ট হতো না। তাও মন তো অবুঝ তাই স্মৃতিগুলো এখনো মনের গহীনে জেগে ওঠে।তিন বছর চাকরি করার সুযোগ হয় ওখানে।তখন মেয়ের লেখাপড়ার সব খরচ আমি বহন করি।২০২০ সাল থেকে আমি আবার বেকার হয়ে যাই।আমি যে কাজ করতাম সেটা অনলাইন হয়ে যায় এই কারনে।এরপর থেকে আবার হতাশা করোনাভাইরাস এর জন্য বাবার ব্যবসা-বাণিজ্য তেমন ছিল না। এমনিতেই টানা পড়া ছিল সংসারে।আরও সমস্যা বেড়ে গেছে করোনার জন্য। অসহায় মানুষের পাশে আল্লাহ থাকে সবসময় আর কিছু ভালো মানুষ তারাও থাকে পাশে। মেয়েকে ক্লাস থ্রি থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত একজন শিক্ষক বিনা খরচে পড়াতো কোন টাকা পয়সা নেয় নি। আরো স্কুল থেকে যতো প্রকার সাহায্য করতো সে।আলহামদুলিল্লাহ মেয়ের মেধা ভাল ছিল বলে ক্লাস ফাইভে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পায়।সে পেইন্টিং খুব ভালো করে তাই তাকে আমি পড়ালেখার পাশাপাশি এটাও শিখিয়ে ফেলি। আর এখন সেই মেয়ে আমাকে সাহায্য করছে লেখাপড়ার পাশে আমার উদ্যোক্তা হওয়ার সাপোর্টার সেই একমাত্র। তার পেইন্টিং করা মাস্কগুলো নিয়েই আমার উদ্দোক্তা জীবন শুরু হয়।
🌺🌺উদ্দোক্তা জীবন শুরুঃ
---------------------------
২০২০সালে মাঝামাঝি উদ্যোক্তা জীবন শুরু হয়েছিল কুশন কভারের মাধ্যমে। উই গ্রুপের হাত ধরে। কিন্তু কোন সাড়া পাচ্ছিলাম না বলে আবার থেমে যাই। এ বছরে আবার শুরু করি জুলাই মাসে। আমাকে আমার পরিচিত ব সাতক্ষীরার এক ভাই @Md shamim নামের। এই গ্রুপে জয়েন করিয়ে দেয়। আমি তখনও বেশি একটিভ ছিলাম না বা এভাবে আবার শুরু করব তাও ভাবিনি। ইনিয়া ইসলাম বৃষ্টি নামের এক আপু আমাকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেন গ্রুপে। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই তাকে। এর কিছুদিন পরে আমাকে@ এ এম সাইফুল ভাইয়া পিরোজপুর জেলা মেসেজন্জার গ্রুপে এড করিয়ে দেন আন্তরিক কৃতজ্ঞতা রইলো তার প্রতি। ওখানে আমি প্রতিদিনের সেশন গুলো নিয়মিতো করি এখন। এই গ্রুপের প্রত্যেক ভাইয়া ও আপু অনেক ভালো যাদের কাছ থেকে আমি বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান পাই
সবসময়। জি এম, সাকিল ভাই, ইমরান হোসেন ভাই,সোহেল রানা ভাই, আব্দুল্লাহ হাসান ভাই বশির ভাই,সালমা আপু,মারজানা আপু মাহমুদা আপু আর ছোট বোন মিষ্টি আরো অনেকেই আছেন সবার সহযোগিতাই পাই সবসময় তাই তাদের কাছে অনেক কৃতঙ্গ। ১৫ তম ব্যাচের আজকেই আমার ৯০ দিনের সেশন শেষ হলো।আমি এখন কাজ করতেছি কুশন কভার পেইন্টিং মাস্ক, শাড়ি, শীতের শাল ও পাঞ্জাবি নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ মাস্ক নিয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর এ কাজে পড়ালেখার পাশাপাশি আমার মেয়ে সাহায্য করছে। শূন্য থেকে শুরু হয় আমার উদ্যোক্তা জীবন। ১ গজ কাপড় কিনে নিজের হাতে বানাই মাস্ক এবং মেয়ে পেইন্টিং করে তাতে।এরপরে আস্তে আস্তে অন্য সব আইটেম আনি যদিও সব আনা হয়নি এখনো তারপর ও এই অল্প আইটেম নিয়ে শুরু করি।আমাদের এখানে সদরে আমি নিজেই ডেলিভারি দিতে যাই।যদিও কষ্ট হয় অনেক তারপরও প্রশান্তি যে কিছু একটা করা শুরু করেছি। পিছুটান নিয়ে পড়ে থাকবো না আর এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।মেয়ের জন্য এই লড়াইটা করতেই হবে। হয়তো এই সাড়ে পাচ বছরে আমি আমার জীবনকে অন্যভাবে সাজাতে পারতাম নতুন করে কিন্তু করিনি শুধুমাত্র মেয়ের জন্য। ও বাবা হারিয়েছে আবার মাকে ও যদি হারায় তাহলে ওর লাইফটা শেষ কি করে আমি মা হয়ে এটা করতাম। ও বাবা ডাকতে পারেনা বলে আমিও ওর সামনে আমার বাবাকে ডাকিনা ওর কষ্ট হবে বলে। আমার মেয়েটা এখন ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন আমি যেন ওকে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। এখন উদ্দোক্তা হওয়ার পিছনে একটাই কারন আমার মেয়েকে ভালো রাখা তার পড়াশোনা খরচ বহন করা। তার পুরো দ্বায়িত্বই যে আমার।এটা একটা সিঙ্গেল মায়ের যুদ্ধ তার নিজের সাথে।তবে হ্যা এখন আর হতাশা আমায় গ্রাস করে না। যেখানে পথ দেখানোর জন্য ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে পেয়েছি। তার এই তিলে তিলে গড়ে ওঠা ভালো মানুষের পরিবার টা পেয়েছি। তাই ইনশাআল্লাহ পারবো আমি তবে তাড়াহুড়ো করে নয় ধৈর্য ধরে লেগে থেকে ইনশাআল্লাহ এগিয়ে যাবো আমি।
🌺🌺কৃতজ্ঞতা প্রকাশঃ
---------------------
রক্তের সম্পর্ক মাঝে মাঝে বেইমানি।তবে আমার সাথে এমনটা হয়নি। কিন্তু যাদের সাথে দেখা হয়না কথা হয়না তারাও অনেক আপন হয়। এই মানুষ গুলোর প্রতি সত্যি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তারা বিভিন্ন ভাবে আমাকে সাহায্য করে যাচ্ছে। অনেক ভালোবাসা রইলো তাদের জন্য।
🌺🌺গ্রুপ থেকে কি পেয়েছি আমিঃ
--------------------------
যদিও গ্রুপে দুমাস হলো জয়েন তাও এই অল্প সময়ে অনেক কিছু পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। কিভাবে উঠে দাড়াতে হয় হতাশাময় জীবন থেকে। ধৈর্য ধরে লেগে থেকে।এখন আর নিজেকে একা লাগেনা। কারন এই ভালোমানুষের পরিবারটা যে আমার সাথে আছে।অসংখ্য কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের পথপ্রদর্শক প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে কারন এতো সুন্দর এই প্লাটফর্ম উপহার দেয়ার জন্য।
🌺🌺যারা আমার গল্পটা কষ্ট করে ধৈর্য সহাকরে পড়েছেন তাদের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা রইলো।আমি গুছিয়ে লিখতে পারিনি আর লেখায় ভূল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেম।নিজের অতিতটা লিখতে গিয়ে নিজের চোখ দুটো আর কন্ট্রোল করতে পারিনি।তাও জীবন কারো জন্য থেমে থাকেনি আর থাকবে ও না। তাই নতুন করে আবার এই উদ্দোক্তা জীবন শুরু।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে - ৬৬০
৩১/১০/২০২১
🌷আমি অহিদা মনি।
🌷 জেলাঃ পিরোজপুর।
🌷বর্তমান অবস্থানঃ মঠবাড়ীয়া সদর।
🌷ব্যাচঃ ১৫ তম
🌷রেজিষ্ট্রেশন নাম্বারঃ৭১৩৫৭
🌷পেইজঃ Tahira's Handicrafts