একজন প্রবাসীর বাস্তবিক গল্প
"জীবনের এই যাত্রা বড়ই অদ্ভুত।"
আসসালামু আলাইকুম।
নিশ্চয়ই মহান রাব্বুল আলামিনের দয়ায় সকলেই ভালো আছেন।
সর্বপ্রথম মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি যিনি আমাদের অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
লাখো কোটি দরুদ প্রেরণ করছি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি। যার উছিলায় এই পৃথিবী সৃষ্টি ।
সেইসাথে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি।যার নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।যে ফাউন্ডেশনের হাত ধরে আজ অসংখ্য তরুণ তরুণী ঘুরে দাঁড়িয়েছে।অনেক পথহারা প্রতীক খুঁজে পেয়েছে নতুন পথ।
আজ আমি আপনাদের সম্মুখে আমার জীবনের বাস্তবিক কিছু গল্প সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
★★★সংক্ষিপ্ত পরিচিচিঃ
চট্রগ্রাম ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত বখতপুর নামের এক অজপাড়াগাঁয়ে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৯৭সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর আমার জন্ম।আমার পিতার নাম মুহাম্মদ আইয়ুব। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। আইয়ুব সওদাগর নামে তিনি পরিচিত। আমার মাতার নাম নিলু আক্তার। তিনি একজন গৃহিনী।আমরা ২ভাই,১বোন।আমি সবার ছোট। বড় ভাই কাতার প্রবাসী এবং বড় বোন বিবাহিতা।
২০১০সালে ৫ম শ্রেণী থেকে আমি সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করি।এরপর ২০১৩সালে জেএসসি পাশ এবং ২০১৫ সালে এসএসসি পাশ করে স্কুল জীবন শেষ করি।২০১৭সালের এইচএসসি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আমার পড়ালেখার সমাপ্তি ঘটে।সেইসাথে আমার লাইফ স্টাইলও চেঞ্জ হয়ে যায় তাবলীগে সময় লাগানোর মাধ্যমে। ২০১৮-২০১৯ সাল পর্যন্ত দুই বছর শিক্ষকতা করি।২০১৯সালের ৩১শে অক্টোবর শিক্ষকতা জীবন শেষ হয়।এরপর ১৬নভেম্বর ২০১৯সালে প্রবাসে পাড়ি জমায়।আজ পর্যন্ত ওমানে অবস্থানরত আছি।ইন শা আল্লাহ আগামী ৫এ নভেম্বর ২০২১ প্রবাস জীবনের ইতি টানতে যাচ্ছি।
★★★স্কুল জীবন।(৬ষষ্ঠ-১০ম)★★★
২০১০সালে সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হই ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে। খুব সুন্দর ভাবে পড়াশোনা করতে লাগলাম। পড়ালেখায় মোটামোটি খারাপ ছিলামনা।ভালোই ছিলাম।তখন থেকে আমার ধর্মীয় কাজে,দ্বীনের প্রতি আগ্রহটা খুব বেশি ছিল।৫ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম নিয়মিত ।গ্রামের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করা ছিল সবার আগে।প্রায় সময় বন্ধুদের নামাজের দিকে আহবান করতাম।যখন স্কুলে টিফিন ছুটি হতো আমি খুব দ্রুত মধ্যাহ্নভোজ শেষ করে স্কুলে চলে আসতাম। এরপর সব বন্ধু এবং ছোট ভাইদের নিয়ে দলবেঁধে মসজিদে যোহরের নামাজের উদ্দেশ্যে ছুটে যেতাম।স্কুল ছাত্রদের উপস্থিতিতে মসজিদ কানায় কানায় ভরে যেত।স্কুল বন্ধের সময়গুলা বন্ধুদের নিয়ে কাটাতাম তাবলীগের সফরে।এইভাবে ২০১৫সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। শেষ হয় স্কুল জীবন।
★★★কলেজ জীবন-(২০১৬-২০১৭)★★★
এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে ৪০দিনের সফরে যায় তাবলীগ জামাতে।এরপর থেকে মোটামুটি দাড়ি রেখে দিয়েছি।যদিও বা দাড়ি তখন ছোট ছিল।স্কুলে থাকাকালীন ৮ম শ্রেণীতে একটি মেয়ে বন্ধুর সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কে জড়িয়ে যায়।এরপর থেকে আমার লাইফটা অগোছালো হয়ে উঠে ।কলেজ লাইফে এসে তার প্রতি একদম দূর্বল হয়ে পড়ি।যা আমার জীবনের জন্য কালো একটি অধ্যায়। আমার ক্যারিয়ার,পড়াশোনা সব শেষ। এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আমি একদম ভেংগে পড়ি। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে দিশেহারা হয়ে যায়।নানারকম পেরেশানি আমাকে ঘিরে বসে।
★★★বদলে যাওয়া...★★★
এইচএসসি পরীক্ষার পর যখন আমি চরম হতাশাগ্রস্ত তখন আমার একমাত্র সাথী ছিল তাবলীগ জামাত।চরম হতাশা নিয়ে ৪মাসের লম্বা সফরে চলে যায় তাবলীগ জামাতে। যা আমার জীবনের সর্বপ্রথম লম্বা সফর। এরপর বদলে যায় আমার পুরো জীবন। চেঞ্জ হয়ে যায় লাইফ স্টাইল।মাথায় টুপি, মুখে দাড়ি, পরনে পাঞ্জাবি যেন এক মাদ্রাসায় পড়ুয়া মাওলানা। এলাকায় সবাই আমাকে নিয়ে প্রশংসা শুরু করলো।মুরুব্বিরা পর্যন্ত এখন আমাকে সালাম দেয়।এভাবেই রচিত হলো নতুন পথের যাত্রা। তাবলীগের ৪মাসের প্রতিটি মূহুর্ত আমার জীবনের জন্য সোনালি সময়।
★★★শিক্ষকতা জীবন★★★
৪মাসের সফর শেষে বাড়ি ফিরে আমি একদম বিকারগস্ত হয়ে যায়।পকেটে একটা টাকাও ছিলনা।এইদিকে আব্বুর ইনকামও বন্ধ হয়ে যায়।আব্বু দোকান বিক্রি করে দেয়ার পর আমরা অনেক বেকায়দায় পড়ে যায়।বড় ভাইয়া একাই পরিবার সামাল দিচ্ছেন।৪মাস সফরের সম্পূর্ণ খরচ ভাইয়া দিয়েছেন।
একদিন পাশের বাড়ীর এক ছেলেকে বল্লাম তোমার সাথে আমি পেইন্টের কাজ শিখবো।সে আমাকে বল্ল আগামীকাল সকাল ৮টায় রেড়ি থেকো।আমি কথামতো তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু সে আসেনি।ভাবলাম হইত এই কাজটা আমার জন্য না।
কিছুদিন যেতেই পাশের বাসার আমার এক চাচা আমাকে ডেকে নিয়ে একটি কে,জি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার জব দেন।আলহামদুলিল্লাহ তখন থেকে খুব ভালোই চলছিলাম।টিউশনসহ মিলে প্রতি মাসে প্রায় ১৫হাজার মত ইনকাম ছিল।এছাড়া সাপ্তাহিক ছুটি, অন্যান্য বন্ধের সময়গুলা খুব উপভোগ করতাম।আনন্দ, ফুর্তি,সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে কাটছিল প্রতিটা দিন।যা আজীবন স্মৃতির পাতায় স্বরণীয় হয়ে থাকবে।
দূর্ভাগ্য হলেও সত্য, আমি একটি পয়সাও সেভিংস করতে পারিনি।যার জন্য আমাকে প্রবাসে পাড়ি দিতে হয়।কিন্তু এই শিক্ষকতা জীবনে যা দিয়েছি তার চেয়ে বেশি আমি পেয়েছি।যা কোনদিন ভুলার নয়।পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সম্মানের এবং মহান এক পেশার নামশিক্ষকতা। শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়।আর এই শিক্ষা যারা দেন তাদের বলা হয় শিক্ষক। দু'বছরের এই শিক্ষকতা জীবন আমার পুরো জীবনকে ধন্য করে দিয়েছে।
★হতাশায় ঘেরা ২বছরের প্রবাস জীবন।★
এলাকার নিকটবর্তী এক চাচার দোকানে ২০১৯সালের ১৬নভেম্বর প্রবাস জীবনে পাড়ি
জমায়।উনি আমাকে ২০১৫সালের দিকে আনতে চেয়েছেন।কিন্তু তখন সামনে এসএসসি পরীক্ষা বিধায়
আসা হইনি।তখন বড় ভাইয়া ডুবাই থেকে ফেরত এসেছেন। তবে আমার বড় ভাইয়াকে ভিসা দিবেন বলে আশা দেন।কিন্তু ভিসাটা তিনি দেন্নি ভাইয়ার প্রায় ১৫হাজার মতো ক্ষতি হয়।এইদিকে ভাইয়ার কাতারের ভিসা হয়ে যায়।পরবর্তীতে এখানে যখন আমি আসি তারপর বুঝতে পারি ভাইয়া তার কাছে প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন।
এখানে আমার বেতন ধার্য্য করা হয় ১০০রিয়াল।বাংলার ২০হাজার টাকা।দুবেলা নাস্তা সহ খানাপিনার সম্পূর্ণ খরচ আমার নিজের। উনি আমাকে বলেছিলেন প্রতি মাসে আমার ১৬-১৭হাজার টাকা ঠিকবে।কিন্তু আসার একমাস পর দেখি আমার ১২হাজার টাকা ঠিকাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।১২হাজারের বেশি আমি কোনভাবে বাচাতেই পারিনা।এই ১২হাজার টাকা বাচাতে আমার অনেক কষ্ট হতো।সকালে ১টা পরোটা দিয়ে চা খেতাম।সারাদিন আর কিছু খেতামনা।দুপুরে ভাত খেতাম।এইদিকে বিকালেও অল্প নাস্তা করতাম।আবার রাতে ভাত।এই বাইরে কিছু খেতে সাহস দিতোনা।মাঝেমধ্যে ফলের বাজারে গিয়েও ফিরে আসতাম।কিনতে সাহস দিতোনা।চেয়ে চেয়ে চলে আসতাম।এমন কি অসুস্থ হলে ঔষধ পর্যন্ত কিনতে সাহস দিতোনা।এভাবে করে ১২হাজার টাকা বাচাতাম।কয়েক মাস যাবার পর চিন্তা করলাম,এভাবেত জীবন চলেনা।খাওয়া দাওয়া ঠিকভাবে করতে হবে।নিজের উপর জুলুম করে কি লাভ।জীবনে বেচে থাকলে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবো।যে শরীরের মাধ্যমে আমি উপার্জন করবো অই শরীরকে কষ্ট দেয়া মানে জুলুম ছাড়া কিছুই না।এরপর থেকে খাওয়া দাওয়া ঠিকঠাক করি।এখন আর ১২হাজার টাকা ঠিকেনা।১০,০০০হাজারে চলে আসে।
এই টাকা দিয়ে কি আমি বাড়িতে দিবো!নাকি ভিসার টাকা পরিশোধ করব!নাকি নিজে সেভিংস করবো!কোন পথ দেখছিনা।নানা হতাশায় পতিত হলাম।তাছাড়া দোকানে কলিকদের সাথে মালিকের আচরণ দেখে আমি আরও বেশি হতাশ হয়ে পড়ি।এক পর্যায়ে দেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বড় ভাইয়া শান্তনা দেন এবং বলেন যে দেশে যাবার আগে কিছু করার প্ল্যান কর এবং দুই বছর থেকে ভিসার কিছু টাকা পরিশোধ করে তারপর চলে যাও।আমি তাই করি। চোখবুঁজে সব সহ্য করে যাচ্ছিলাম।
এরপর শুরু হলো হতাশার দ্বিতীয় ধাপ।
আমার মালিকের ৬টা দোকান।দোকানগুলা অনেক পুরনো আমলের হওয়ায় আমি আসার পর একেক করে সব দোকান মডিফাই এর কাজ শুরু করেন।প্রায় ৪মাস মতো কাজ চলে।এই চার মাসে মেশনের কাজ থেকে শুরু করে, ইলেকট্রনিক কাজ,পেইন্টের কাজ,তাবুক টানা,বালি টানা,দোকান থেকে আরবানারের মাধ্যমে সিমেন্ট আর টাইলস আনা ইত্যাদি। শুধুমাত্র যে কাজগুলা আমরা করতে পারতামনা সেগুলাই মিস্ত্রি দিয়ে করাতো। বাকি কাজগুলা আমাদের দিয়ে করাতো। এমনকি তার একটা কমপাউন্ড রয়েছে যেখানে মানুষ ভাড়ায় থাকে।সেখানেও আমাকে কাজ করতে হতো।আর এই ৪মাসের মধ্যে অনেক সময় নাইট ডিউটি করাতো। যারজন্য একটা পয়সাও পাইনি কোনদিন।
একদিন তার একটা বড় দোকানের ছাদ ভেংগে নতুন করে কাজ আরম্ভ করে।সারারাত ধরে আমরা ৪জন ছাদ ভাংগা পাথরগুলো ২টা ট্রাকে লোড করতে হয়েছে।কি পরিমাণ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে উপরওয়ালায় জানেন। যার বিন্ধু পরিমাণ পারিশ্রমিক কোনদিন দেয়নি।শুধুমাত্র আল্লাহকে বলেছি।যেই ছেলেটা জীবনে পড়ালেখা ব্যতিত কোন কাজই করেনি তার মাধ্যমে যদি এমন কাজ করানো হয় তাইলে কেমন হবে বলুন।আমার কাজতো এসব না।আমি সেলসম্যানের ভিসায় এসেছি। যদি এখানে এসে এই কাজগুলাই করতে হবে জানতাম তাইলে আমি অই ধরনের ভিসায় আসতামনা।
কাজের বিনিময়ে যদি পারিশ্রমিক দিতো তাহলে মনকে কিছুটা বুঝানো যেত যে কিছু টাকাত পেলাম।কিন্তু না। এবার বলুন একজন মানুষকে ১২হাজার বেতনের সেলসম্যান এর চাকরির বাইরে যদি অন্যান্য কাজ করানো হয় তাহলে সে কিভাবে শান্তিতে থাকবে।এছাড়া আরও অনেক সমস্যা যা বলতে আমার নিজের লজ্জাবোধ হচ্ছে বিধায় উল্লেখ করছিনা।
★★প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়া। ★★
এরপরে চিন্তা করলাম এভাবে চলেনা।দেশেই চলে যাবো।দেশে কিছু করবো।এরপর থেকে ইউটিউবে বিভিন্ন মোটিভেশনাল ভিডিও দেখা শুরু করি।একদিন স্যারের কোন এক ভিডিওর মাধ্যমে স্যারের ভক্ত হয়ে যায়।কিছুদিন পর ১২তম ব্যাচে রেজিষ্ট্রেশন করি।এবং নিয়মিত সময় দেয়া শুরু করি।তারপর গ্রুপে আমার মামা কামরুল ইসলামকে যুক্ত করি।এরপর থেকে আমরা দুজন মিলে গ্রুপে সময় দিচ্ছি।অনুপ্রাণিত হচ্ছি।স্যারের শিক্ষার আলোকে দুজন মিলে বিভিন্ন ব্যবসায়িক আলোচনা করতে থাকি।অনেকগুলা প্ল্যান করি।এভাবে একদিন ১হাজার তম দিন উপলক্ষে ওমানের অফলাইন মিট আপে অংশগ্রহণ করি।তারপর থেকে গ্রুপের প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়ে যায়।কিছুদিন পর স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে এর মাধ্যমে কমিউনিটি ভলান্টিয়ার নিযুক্ত হই।
আর কিছুদিন পর প্লাটফর্মে আমার ভাইয়া কাতার প্রবাসী জিয়া উদ্দীন বাবলুকে ১৪তম ব্যাচে রেজিষ্ট্রেশন করতে বলি।তিনিও সময় দিতে লাগলেন গ্রুপে।কিছুদিন পর স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে এর মাধ্যমে তিনি কমিউনিটি ভলান্টিয়ার নিযুক্ত হন।
★★★আয়োজন টিম গঠন★★★
অতপর আপনার শিক্ষার আলোকে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে থাকি।প্রায় এক বছর মেলামেশা,আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে এক ভ্রাতৃত্বের মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়।যা আগের তুলনায় বহুগুন বেশি।আগে মামা ভাগিনার সম্পর্ক থাকলে প্লাটফর্ম সুবাদে এখন সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর হয়ে গেছে।পরবর্তীতে আমাদের তিনজনের মধ্যে গঠন করি @AYOJON-আয়োজন নামের একটা টিম ।ধীরে ধীরে অনলাইনে রিসেলিং হিসেবে কাজ শুরু করি টি-শার্ট ব্যবসা।মোটা অংকের বিক্রি করতে না পারলেও আল্প কিছু টি-শার্ট বিক্রির মাধ্যমে শুরু হয় বিক্রয় যাত্রা। তবে আমি আশাবাদী, ইন শা আল্লাহ একদিন আমি লাখ টাকা সেল করবো।
আমরা এখন প্রতি সপ্তাহে একটা অনলাইন মিট আপ করি।।মিট আপের মধ্যে আমাদের আয়োজনের বিভিন্ন ভবিষ্যৎ প্ল্যানিং নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।পরবর্তীতে সবকিছু আমরা গুগল ডকুমেন্টসে সেইভ করে রাখি।ইতিমধ্যে দেশে গিয়ে কি করবো,কোথায় করবো, কেমনে করবো,মূলধন থেকে শুরু করে যাবতীয় সবকিছু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি। ।আমাদের ওয়াটস্ফ এবং গ্রুপও রয়েছে। যেখানে আমাদের স্বপ্নের আয়োজন নিয়ে নিয়মিত আলোচনা হয়। ইন শা আল্লাহ এখন শুধু শুরুর করার অপেক্ষায়। শীঘ্রই আপনাদের মাঝে নিত্যনতুন আয়োজন নিয়ে হাজির হবো।
★★★দেশে প্রত্যাবর্তনঃ★★★
ইন শা আল্লাহ আগামী মাসের ৫এ নভেম্বর আমি দেশে যাচ্ছি।২বছরের প্রবাস জীবনের ইতি টানছি।হাজারো কষ্ট বুকে চেপে বিশাল এক রিস্ক মাথায় নিয়ে, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য, সফল উদ্যোক্তা হবার লক্ষ্যে আমার দেশে যাওয়া।
প্রবাস করার ইচ্ছে আমার আগেও ছিলনা এখনো নাই।কিন্তু মহান রাব্বুল আলামিনের ফয়সালা অনুযায়ী চলে আসতে হলো।আসার পরেই শুরু হলো জীবন যুদ্ধের চরম বাস্তবতা।
যদিও প্রবাস এসে আমি হেরেছি কিন্তু হেরে গিয়েও আমি জিতেছি।কারণ আমি এখান থেকে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।নিজের জীবনের মূল্য বুঝেছি। দেশে থাকতে যে বিলাসিতায় ছিলাম এর পরিণাম পদে পদে উপলব্ধি করেছি।যা আমাকে ভবিষ্যৎ পথচলা সহজ করে দিবে।আর হইত প্রবাসে না আসলে আমি নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সন্ধান পেতামনা। বা আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন -জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সন্ধান পেতামনা। তাই আমি মনে করি প্রবাস এসে হেরে গিয়েও জিতেছি।জীবনের মানে বুঝেছি। আয়োজন নামের একটা টিম গঠন করতে পেরেছি। ইন শা আল্লাহ এভাবে আমাদের আয়োজনের রচিত হবে নিজের বলার মতো একটা গল্প।দেশে ফেরার পর জীবনের প্রতিটি পরতে পারতে স্যারের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যেন চলতে পারি এজন্য সবাই দোয়া করবেন।এই মূহুর্তে স্যারের একটি কথা খুব মনে পড়ে।
"যে জিতবে সে বারবার পড়বে,আবার উঠে দাঁড়াবে – বলবে আমি খেলবো,
যে পরার পর উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করবে না,সে কোন দিন জিতবে না।
৭-৮ বার চেষ্টা করেও যখন পারছেন না তখন নিজেকে বলবেন,
“আমি তো এখনো শুরু করিনি”
-জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার।
ইন শা আল্লাহ আমি জিতবো।ঘুরে দাড়াবো।বারবার চেষ্টা করবো।তবুও যদি না পারি নিজেকে বলবো আমি এখনো শুরুই করিনি।
" নিজের বলার মতো একটা গল্প থাকা দরকার।"
হইতো আমার গল্প এখান থেকেই শুরু।ধন্যবাদ।
( বিঃদ্রঃ সংক্ষেপে তুলে ধরেছি)
স্টাটাস অফ দি ডেঃ৬৫৭
তারিখঃ২৭-১০-২১
মোহাম্মদ জুবায়ের ইসলাম
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার।
কো-ফাউন্ডারঃ Ayojon-আয়োজন
চট্রগ্রাম / ওমান প্রবাসী
১২/৪০৩৫২