আমার জব নেই, আমি অসুস্থ একেবারে নিঃস্ব হয়ে বাসায় বসে আছি
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া-বারাকাতুহু
আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তিনি এখনো আমাকে পৃথিবীর স্বাদ গ্রহণ করার তৌফিক দান করেছেন। তবে মানসিক দিক দিয়ে আমি মোটেও ভালো নেই। প্রতিনিয়ত মনের সাথে যুদ্ধ করছি কিন্তু ভালো থাকতে পারছিনা। মনের প্রভাবটা মনে হয় শরীরেও পড়েছে তাই শরীর ও ভালো যাচ্ছে না।
আমার এই পোস্টটি সম্পূর্ণ ব্যক্তি কেন্দ্রীক। পোস্টটি আপনাদের কার কাছে কিভাবে বিবেচিত হবে আমি জানিনা। তবে আশা করছি আপনারা আমাকে সাহায্য করবেন।
আজ সকাল সকালই ঘুম থেকে উঠেছি। নামাজ ও পড়েছি।তার পরের এই পর্যন্ত পুরো সময়টা মনের সাথে যুদ্ধ করে আমি শেষ মেষ লিখতে বসেছি আপনাদের উদ্দেশ্যে। আশা করছি আপনারা কেউ বিষয়টি গুরুত্বহীন ভাবে দেখবেন না। আমার মনে হয়েছে আপনাদের মধ্যে কেউ না কেউ আমাকে বাঁচতে সাহায্য করবেন। বাঁচার ইচ্ছে কার না থাকে বলেন? আমার ও আছে।
২০১৮ সাল থেকে আমি চট্টগ্রামে। পড়াশুনা আর টিউশন নিয়ে ছিলাম। নিজের খরচ পুরোপুরি নিজে বহন করেছি। কিন্তু আজকের দিনে এসে আমার কাছে কিছুই নেই।এই সময়ে এসে পরিবার থেকে নিজের খরচ চাওয়া যায় না।মধ্য খানে আমার ছোট্ট একটি জব ছিল।সাত মাস করেছি। অসুস্থ হওয়ার কারণে অতিরিক্ত ছুটি কাটানোর ফলে জব এ রিজাইন করতে হয়। এখন আমার কিছুই নেই। আছে শুধু বস্তা ভর্তি মানসিক টেনশন।যেটা প্রতিনিয়ত আমাকে নেগেটিভ চিন্তার দিকে অগ্রসর করছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি বাঁচতে চাই। বাঁচতে চাই।
আমার জব নেই, আমি অসুস্থ সব মিলিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে বাসায় বসে আছি। পরিবারের কাউকে জানাইনি আমার এই ব্যাপারটি।মা তো হার্টের পেসেন্ট। তাই বলিনি।
জীবনে অনেক দুঃসময় আমি পার করেছি।যেখানে থেকে আমি নিজেই বের হয়ে এসেছি। আজকের দিনে এসে আমি নিজেই নিজের কাছে বড্ড অসহায় হয়ে পড়েছি।কি করেছি এতদিন?কি করবো আমি? আমার কি করা উচিৎ?এই ধরনের প্রশ্ন আমার মাথার মগজকে তোলপাড় করছে।এই চাপ আমি নিতে পারছি না। বিশ্বাস করেন আমি কিছুতেই নিতে পারছি না।
বসন্তের রঙ কাকে রাঙ্গায় না বলেন? আমি নিজেও রঙিন হয়েছিলাম। কিন্তু রঙ টা ধূসর রঙে পরিনত হয়েছে।যে রঙ আমাকে আরো ভেঙ্গে দিচ্ছে। আমি জীবন থেকে বসন্ত হারিয়ে বুঝেছি যে পৃথিবীতে প্রেমিক প্রেমিকা নামক যে এক প্রকার ভালোবাসা পরিচিতি লাভ করেছে সেটা আপনার বাঁচার আগ্রহ কমিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।কথায় আছে অভাগা যেদিকে যায় সাগর ও শুকিয়ে যায়। আমার ও সব এক সাথে গেল।ভালোবাসা বড্ড যন্ত্রনাদায়ক।
আমার সময় কাটে এখন আমার বাসার পাশের ডোবাটার দিকে তাকিয়ে। জানালার গ্রিলের অপরপাশে যে ব্যস্তময় পরিবেশ আছে তা দেখে।অপলক দৃষ্টিতে সিলিং ফ্যানের ঘূর্নিপাক দেখে। ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে দুহাত দুই পাশে বিছিয়ে দিয়ে পানির স্রোতে ঝাপটে পড়ে নিজের ভাসমান দেহ কল্পনা করে। আমি জানি এই চিন্তা ধারা গুলো নিতান্তই ঘৃণিত কিছু বিষয়। কিন্তু আমার মাথায় ঘুরপাক করে।এই চিন্তা গুলোর সাথে যুদ্ধ করছি আমি। শেষ রেহাই হবে তো আমার?
আমার যে পরিবার আছে তাদের কাছে এগুলো খুলে বলার কোন সুযোগ নেই। তাদের কাছে আমি তখন হেরে যাওয়া পাবলিকের মতো হয়ে যাবো। জীবনে এমন কিছু দুঃসময় থাকে যে সময় আপনার পরিবার আপনার পাশে থাকবে ঠিকই। কিন্তু কথা শুনানোর ক্ষেত্রে ছাড় দিবে না।এটা আরও বেশি মানসিক চাপ।যেটা আরও বেশি বাঁচতে দেয় না।
বিশ্বাস করেন আমার বিছানার পাশ বালিশটাকে জড়িয়ে ধরে মুখ চেপে ধরে আর অঝরে কাঁদতে ইচ্ছে করে না। আমি ক্লান্ত। মানুষ না কি সুখেও কাঁদে আবার শোকেও কাঁদে। আমিতো সুখে কাঁদতে চেয়েছি। কিন্তু চোখের জল গুলো বড্ড অবাধ্য।
জীবনে এমন অনেক মানুষ আমি পেয়েছি।যাদের কাছে যখন নিজের খারাপ থাকার কথা জানায় না তখন আমাকে দোষারোপ করতে তারা ব্যস্ত।কেন জানাইনি?জানালে তো তারা নিশ্চয়ই সমাধান দিতো। কিন্তু যখন জানাতে চাই তখন তাদের কাছে আমার কথা শোনার মতো সময় নেই।কি অদ্ভুত তাই না?
একটা মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে আমি দিন পার করছি।যে কথা গুলো আমি বলেছি সব গুলোই ব্যক্তিগত। আমি ৫৫০০০০ মানুষের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করেছি। কারণ শুধু একটায় আমি বাঁচতে চাই। আমি চাই না আমার সেই দুর্বিষহ জল্পনা কল্পনা গুলো আমাকে গ্রাস করে নিক।এই গ্রুপে অনেকেই আছেন যারা আমার চেয়ে ভালো বুঝেন, ভালো জানেন। আমাকে বাঁচতে দিন।এই মানসিক চাপ থেকে আমাকে বের হতে সাহায্য করুণ। আপনারা আমাকে হয় বাঁচার উপায় বলে দিন না হয় কিভাবে সহজে পৃথিবীর বুকে নিস্তেজ হওয়া যায় তা বলে দিন।প্লীজ।
এই কথা গুলো কেউ নেগেটিভলি নিবেন না। আমি অনেক আশা নিয়ে প্রকাশ করেছি ।
বি: দ্র:-ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬০৯
Date:- ৩০/০৮/২০২১
নাম: ইসরাত জাহান
জেলা: কক্সবাজার
ব্যাচ:১২
রেজিঃ নং:৪৩৮৩৩
সদস্য: নিজের বলার মতো একটি গল্প প্লাটফর্ম