জীবনের গল্প চলে একে বেকে
🖋🖋🖋আসসলামু আলাইকুম 🖋🖋🖋
🤲🤲সমস্ত প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে। যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমাকে হাজারো রোগ বালাই থেকে সুস্থ রেখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ। 🤲🤲
🕋🕋লাখোকোটি দূরুদ সালাম মক্কা মদিনার সেই বিশ্বস্ত ব্যাক্তির প্রতি। যার উপাধি ছিলো আল-আমীন। যিনি সৃষ্টি না হলে এই পৃথিবী সৃষ্টি হতো না। সেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহা মানব জনাব মোহাম্মদ মোস্তফা সাঃ এর উপর। সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
💙💜ভালোবাসা শ্রদ্ধা কৃতঙ্গতা বোধ ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যিনি আমাদের জন্য এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম তৈরী করেছেন। যার অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা সবাই নিজের একটা গল্প লিখার সুযোগ পেয়েছি ।যে মানুষটার চেষ্টা আজ বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে তৈরী করার প্রচেষ্টা। যিনি তৈরি করে যাচ্ছেন লাখো তরুণ তরুণী কে উদ্যোক্তা।
🍀🍀নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের সকল পরোপকারী আপু ভাইয়াকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন যারা নিজের অতি মূল্য বান সময় ব্যায় করে একজন অন্য জনকে সাহায্য করে ভালো মানুষীর চর্চা করে। যাদের ভালোবাসাপূর্ন সহোযোগিতায় হাজার তরুণ তরুণী নিজেকে উদোক্তা হিসেবে তৈরী করেছেন।
💜💜💜🖊🖊জীবন গল্প🖊🖊💙 💙💙
--------------_--------------------_-----------------------
জীবন গল্প লিখতে বসে আজ মনে হয় জীবন এতো বৃস্তিত যার একদিনের গল্প লিখে শেষ করা যাবে না।তবু জীবন থেকে নেওয়া কিছু অংশ তুলে ধরলাম। সবাই ভালো বেসে পড়বেন।
আমার শৈশব ::-
আমি শাহনাজ আক্তার ৫ ভাই বোন এর মধ্যে সবার বড়।আমার আগে আমার একটা ভাই পৃথিবী তে ক্ষনিকের জন্য এসে আবার পৃথিবীর মায়াত্যাগ করে চলে যান তাই স্বাভাবিক ভাবেই আমি বাবা মা এর আদরের সন্তান। সবাই খুব ভালোবাসা দিয়ে আমায় লালন পালব করতে লাগলো।
🖋🖋🖋আমার পড়াশোনা শুরু ::_
আমার প্রথম শিখক স্বাভাবত আমার মা ছিলেন। তবে মার মুখে শুনেছি আমার মা ক্লানডারের মাঝে আমার জন্য বই বানিয়েছেন নিজের হাতে সবগুলো শব্দ লিখে এবং সলা দিয়ে মাটিতে একেঁ একেঁ আমাকে লেখা শিখাইতেন। পরে অবশ্য বাবা বই খাতা কিনে দিয়েছে। কিন্তু এমন কথা মনে হলে খুব ভালো লাগে । কারণ মা আমাকে শিখাতে গিয়ে কত কিছুই না করেছেন।
যাই হোক পড়াশোনা আমি খুব ভালো ছিলাম তাই কিছু দিন এর মাঝে আমার হাতে খড়ি শেষ হয় এবং একাডেমিক শিক্ষা শুরু হয়।
বরাবর আমি ক্লাসে ভালো ছাত্রীদের একজন ছিলাম। কখনো কোনো শিখকের তেমন মাইর খেতাম না।
আমার পড়াশোনার দূদান্ত প্রতিভা দেখে আমার বাবা আমার মা কে বলতে শুনেছি আমার যতটুকু পড়তে মন চায় বাবা আমাকে ততটুকু পড়াবে।
😭😭😭আমার জীবনের কষ্টের অধ্যায়গুলো::-
পড়ালেখা স্বাভাবিক চলতে লাগলো। আমি যখন ক্লাস নাইনে তখন আমার চাচা বলিতেছে আমাকে আর পড়তে হবে না। কারন আমার চাচা ধর্মভিরু মানুষ ছিলেন। যানি আপনারা পড়ে হাসবেন কারন ধর্মেতে তো আর লিখাপড়া নিশেধ নেই। কিন্তু তিনি মনে করতেন যেখানে ছেলে মেয়ে একসাথে পড়ালেখা করে সেখানে আমাকে পড়তে দিবে না।আপনাদের মতো আমার ও অবাক লাগতো কারন আমি বোরকা পরে মাদ্রাসা যেতাম। তারপর কেনো আমি পড়তে পারবোনা। কিন্তু আরেক টা বিষয় আপনাদের জানা দরকার আমার চাচা ছিলো অনেক ডিগ্রি দ্বারী এবং প্রভাবশালী তিনি বিয়ে করে নাই। যার কারনে চাচা তার পিতার সম্পত্তির অংশ বাবার থেকে নেন নাই।এই সুবাদে চাচা আমার বাবাকে তার হুকুম মতো চলতে বাদ্য করতেন। আর বাবা মনে করতো চাচা শিখিত মানুষ যা বলে সবই ঠিক। আমার সহজ সরল বাবাটাকে তার দলে করে নিলো আমার মা কত কেঁদেছে আমাকে পড়ালেখা করানোর জন্য। তার পর বহু কষ্টে আমি বাবা মা কে রাজি করিয়ে বলেছি আমি অন্তত
s s c পরিক্ষা দি। বহু চোখের পানি নিরবে চোখ থেকে নিরবে বয়ে জাওয়ার ফল স্বরূপ আমি s s c পরিক্ষা দিতে পারলাম।এবং আমার রেজাল্ট ছিলো। গোল্ডেন A+
আরেক টা কথা আমার পড়ালেখা ভালো হওয়া আমার স্যার বাড়িতে এসে আমার বাবা কে বুঝিয়েছে আমাকে পড়ানোর জন্য।স্যার আজও আপনার কথা খুব স্বরন পড়ে যেখানে আছেন দোয়া করি সবসময় ভালো থাকেন।
ভেবেছিলাম এক দাপ শেষ করেছি আস্তে আস্তে জীবনের বাকী স্বপ্ন গুলো পুরোন করবো ইন্টারে ভর্তী হবার জন্য যখন বললাম তখন আর কেউ আমার পাশে নেই খুব যোর করে নিজের পাইভেট পড়ানো কিছু টাকা দিয়ে লুকিয়ে ভর্তী হলাম। ভাবছি চুরি করে পড়াশোনা করবো।কারন আমি তখন প্রাইভেট পড়িয়ে মাস শেষে একটা ভালো একাউন্ট পেতাম।
সেটা দিয়ে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম কিন্তু।সমস্যা হয়ে দাড়ালো চারপাশে কিছু মানুষ নামের পশু যারা আমি পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি সেটা বাবা চাচা কে ইনফরমেশন দিতো আবারও আমার পড়ালেখা নিয়ে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হলো। বাবা প্রথমে বুঝাতে চেষ্টা করেছে আমাকে না পড়ার জন্য। কিন্তু আমি বুঝ মানি নাই মাঝে মাঝে ক্লাস করতে চলে যেতাম মাদ্রাসা। একদিন বাবা আমার সব বই পুকুরে ফেলে দিয়েছে।আমি কান্না করতে করতে বইগুলো আবার পানি থেকে তুলেছি একটা বই খুঁজে পাই নাই। তারপর রৌদ্রে বসে বসে বইগুলো।
শুখিয়েছি। আবার ও একদিন বাবার চোখে দরা খেয়ে গেলাম। কিছু বলে নাই চুপচাপ ছিলো। কিন্তু কখোন আমার অজান্তেই আমার বইগুলো লুকিয়ে পেলেছে আমি বুঝতে পারি নাই।আমি যখন মাদ্রাসা যাওয়ার জন্য বই খুজতে থাকি তখন আর বই পাই না। আমার মনে জেদ চেপে যায় আমি বই খাতা গুলে যে করে হোক বের করবো ঘরে যেকোন যায়গায় আছে হয়তো এই ভেবে আমি প্রতি টি কোনা খুঁজে বেড়াতে লাগলাম। কিন্তু আপছুস সেই দিন আমি কান্না করতে করতে বইগুলো খুঁজেছি কিন্তু খুঁজে পাই নাই। আজও লিখতে বসে আমার সে কান্নার প্রতি শব্দ আমার কানে বাঝে।আমি লিখাটা লিখতে গিয়ে কত বার চোখগুলো কান্না ভুজে আসছে মনে হলো পুরনো কষ্ট গুলো লিখার মাধ্যমে আমি নতুন করতে ছি।
বই গুলো কোথায় ছিলো সেটা সম্ভবত ৬/৭
পর জানতে পারলাম যে আমাদের ঘরের পাশের ঘরের মানুষ গুলোর কাছে নিয়ে রেখেছে। কারণ আমি ঘরে বিন্দু পরিমাণ জায়গায় বাদ রাখি নাই খুঁজতে। একদিন এক গরীব শিক্ষাথীর জন্য আমার বই গুলো নিতে আসলো আমার এক শিক্ষক। তখোন বই গুলো পাশের ঘর থেকে নিয়ে এসে শিক্ষকে দিলো আর আমি তক্ষুনি জানতে পারলাম বই গুলো ঐই বাসায় ছিলো।
ততদিনে আমি লিখাপড়ার চেষ্টা ছেড়ে দিলাম। আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমি কখনো চিন্তা করতাম পালিয়ে গিয়ে পড়ালেখা করবো কিন্তু বিবেকের কাছে সায় পেলাম না কারন আমি মেয়ে কোথায় যাবো।আমার যে কোন গন্তব্য ছিলো না।
কখনো মনে হতো কোন এক জন রুপকথার গল্পর মতো যদি আমর জীবনে এসে আমাকে বিয়ে করে নিয়ে গিয়ে আমাকে পড়াতো।
কিন্তু সেখানে আমার জন্য সিমারেখা ছিলো কারন কাকা বলেছিলো আলেম দেখে আমাকে বিয়ে দিবে আর যাদের কাছে বিয়ে দিবে তারা বৌকে পড়ালেখা করাতে পারবেনা।
সবমিলিয়ে আমি হেরে গেছি আমার যুদ্ধে।সবার কাছে একটা বিনিত অনুরোধ করছি আমার লেখাগুলো পড়ে কেউ আমার বাবা -মা কে কোন বাজে কমেন্ট করবেন। আমি এই কথা মনে প্রানে বিশ্বাস করি বাবা মা সন্তানের কখনো খারাপ চায় না।আর আমার ভাগ্যে ছিল না যায় তা নিয়ে কখনো বাবা মা কে কোন দোষ দিবো আমার ভাগ্যো যদি আমরা সঙ্গী হতো তাহলে এমনটা আমার সাথে হতো না।
পড়ালেখার যুদ্ধে পুরোপুরি হেরে শুরু হলো আমার জীবনের নতুন পথচলা এবার নিজের অসহায় এর জায়গা বুঝতে পারছিলাম। কারন আমি নারী আমি চাইলে টাকা পয়শা রোজগার করতে পারবোনা তারপর বুঝতে পারছেন ধর্মভীরু আমার পরিবার।তাই ঘরে বসে সেলাইয়ের কাজ শিখলাম। প্রাইভেট পড়ানো টাকা দিয়ে মেসিন কিনলাম।
জামা কাপড় সেলানোর ওডার নিতে লাগলাম। তারপর ধীরে ধীরে হাতের কাজের অনেক গুলো আইটেম তৈরি করা শিখে নিলাম যেমন ফুলকারি বিচানা চাদর, নকশিকাঁথা,নকশি শীতল পাটি, বাঁসের মোড়া,ফুতির ব্যাগ, ইত্যাদি
এই কাজগুলো শিখেছি শখ করে কিন্তু কখনো এগুলো নিয়ে ব্যবসায় করা যায় সেটা ভাবি নাই। নিজেদের প্রয়োজনে বা সখের বসে তৈরী করা।
কিন্তু যখন আমি অনলাইনে নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হলাম তখন থেকে মনে হলো স্যার বলেছে শখ থেকে ব্যবসায় করা যায়। আর আমার যেহেতু বিষয়গুলো জানা আছে তাই আমি চিন্তা করলাম এগুলো দিয়ে আমাকে কিছু করতে হবে।
💛💛💛নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনে আমার পথচলা :-
আমি ১৫ তম ব্যাচ থেকে প্রিয় ফ্লাটপর্মে যুক্ত আছি তাই আমি একেবারে নতুন। প্রতি দিনের সেশন চর্চা আর কিছু নতুন আপু ভাইয়ার সাতে পরিচিত হওয়া। এইগুলা নিয়ে খুব চমৎকার কাটছে আমার দিন গুলো। প্রতিদিন এই প্লাটফর্ম থেকে অনেক অজানা বিষয় জানতেছি।যেগুলো হয়তো উদ্যেকৃতা হবার জন্য খুব কাজে লাগবে।ভালো বেসে প্রিয় প্লাটফর্মে আছি থাকবো ইনশাআল্লাহ।
সর্বশেষ আমার প্রিয় ভাই বোনের প্রতি অনেক ভালো বাসা যারা আমার গল্পটা পড়েছেন। এবং যারা ভালো বেসে প্রতি দিন অনেক কিছু শিখিয়ে যাচ্ছেন যাদের অনুপ্রেরণা আমি আমার গল্প লিখার সাহস করেছি।
🤲🤲আমরা সকলে জানি কিছু দিন আগে স্যার খুব অসুস্থ ছিলো। তাই ভালো বেসে স্যারের জন্য আমার সকলে দোয়া করেছি। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে স্যার সুস্থ হয়েছে। আমরা সর্বঅবস্থায় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর জন্য দোয়া করে যাবো ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের স্যার কে সর্বঅবস্থা সুস্থ দান করুক আমিন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬০৮
Date:- ২৯/০৮/২০২১
👰শাহনাজ আক্তার
🖋ব্যাচ ১৫
🖊রেজিষ্ট্রেশন ৭৬৯৭৫
🏦জেলা লক্ষীপুর
🏚থানা রামগঞ্জ
🍷ব্লাডগ্রুপ o+
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের একজন নিয়মিত সদস্য।