রেমিটেন্স যোদ্ধা গল্প
♥️রেমিটেন্স যোদ্ধা বাবার গল্প♥️
❣প্রতিটি মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনের পেছনে রয়েছে জানা -অজানা ,সুখ -দুঃখ,মেশানো অনেক গল্প।
কোন গল্প দুঃখের, কোন গল্প হাসির,কোন গল্প অনুপ্রেরনামুলক। কিন্তু সব গল্প থেকে আমরা এটাই শিক্ষা পাই যে জীবনের যেকোনো পরিস্থিতি চিরস্থায়ী নয় ,,আর কোন সমস্যা যেন আমাদের জীবনের গতি থামিয়ে দিতে না পারে।কারণ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন।
স্বপ্ন দেখুন সাহস করুন
শুরু করুন
লেগে খাকুন
সফলতা আসবেই ----------
শ্রদ্ধেয় জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের কালজয়ী বাণী বুকে ধারণ করে আমি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।
আমার প্রাণ প্রিয় শিক্ষক, মেন্টর, আলোর দিশারী,আমার পথ প্রদর্শকের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ,মনে মনে অনেক সাহস সঞ্চয় করে আজ আমি আমার জীবনের গল্প লিখতে বসলাম।
আজ আমি লিখবো,,,,
দীর্ঘ ১৯ বছর প্রবাসে কাটিয়ে দেওয়া,,,
জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত,রেমিটেন্স যোদ্ধা বাবার গল্প,,,,,
আমি লিখবো আমার জীবনে দেখা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী মায়ের কথা যে সারা জীবন খুব নিখুত ভাবে সুখে থাকার অভিনয় করে যাচ্ছেন।
আর লিখতে চাই অবুঝ শিশুর বাবাকে কাছে না পাওয়া ও না বলা কষ্টের সৃতি গুলোর কথা ।
🙏সবাই অনুগ্রহ করে পড়বেন প্লিজ🙏
👩আমি তাহমিনা খানম লিজা,
গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম ।
আমার ছোট বেলা আর পাঁচটি সাধারণ বাচ্চার মত ছিল না। যখন থেকে আমি বুঝতে শিখেছি, দেখেছি আমাদের পরিবারের সদস্য
আমরা দুইবোন ও আমার মা।
এছাড়াও আরও ছিল আমার দাদু, বড় চাচা ,বড় চাচী ও চাচাতো ভাই-বোন।
কিন্ত বাবা নামক মানুষটি আমার পরিবারে অনুপস্থিত ছিল।
মায়ের কাছে বাবার কথা জানতে চাইলে মা বলতেন তোর বাবা "সৌদী আরব "থাকেন ।
সাধারণত একটা ছোট বাচ্চা বাবার কাছ থেকে যে স্নেহ -ভালবাসা পায় তা আমি কখনোই পাইনি।কারন ছোট বেলার আমি আমার বাবাকে কাছেই পাইনি।
তখন বাবাকে নিয়ে মায়ের কাছে হাজারটা প্রশ্ন করতাম । সৌদি আরব কেনো থাকে ,কতদূর ?আমরা সেখানে যাই না কেন? বাবা কবে আসবে?আমার মা উত্তরের বলতো সৌদি আরব অনেক দূর ,সেখান থেকে এত সহজে আসা যায় না। আর সেই সময় যোগাযোগ একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। চিঠি যেতে -আসতে অনেক দিন সময় লাগত ।আর বাবা দেশেও আসতো অনেক দিন পর পর। কিন্ত এখন বুঝি আমার বাবা কতটা কষ্ট করেছেন আমাদেরকে ভাল রাখার জন্য।
ছোট বেলা থেকে আমার লেখাপড়া অনেক অগ্রহ ছিল।আমার মাকে কখনোই আমাকে পড়তে বসার কথা বলতে হয়নি।লেখা পড়ার যেহেতু ভাল ছিলাম ,তাই সব শিক্ষক আমাকে খুব ভালবাসতেন❣।
কিন্ত কিছু বিষয় আমাকে খুবই কষ্ট দিত😭😭😭। তার মধ্যে প্রথম ছিল স্কুলের গার্জিয়ান কল করলে আমার পক্ষ থেকে যাওয়ার মত কেউ ছিলনা। মিটিং এর দিনে সবার বাবা অথবা মা উপস্থিত থাকলেও আমার পক্ষ থেকে কখনোই কেউ থাকেনি। স্কুলের শিক্ষকরা সবার বাড়িতে মিটিংয়ে চিঠি পাঠাতেন। মিটিং এর চিঠি মাকে দিলে তিনি বলতেন যে ,,আমি যেতে পারব না কারণ , বাড়ির বউ হয়ে স্কুলের মিটিংয়ে গেলে পরিবারের লোকজন ও পাড়া-প্রতিবেশী সবাই কি বলবে। আর তাঁর অন্যতম কারণ আমার বাবা দেশের বাইরে থাকে । আমাদের যদি কেউ কোন খারাপ কথা বলে তার প্রতিবাদ করার মতো কেউ নেই।
সেই দিন গুলোতে বাবাকে খুব মিস করতাম,,
আর মনে মনে খুব রাগও হতো😡। মাকে অনেক বার বলেছি সবার বাবা দেশে থাকে ,আমার বাবাকে কোন বিদেশ যেতে হবে?
মা তখন সেই প্রশ্নের উত্তর দেন নি,,,,,কিন্ত আজ আমি নিজের প্রশ্নের উত্তর নিজেই খুঁজে পেয়েছি।আমার বাবা শুধুমাত্র আমাদের জন্যই, নিজের পরিবার, আত্মীয় স্বজন ,দেশ ,ছেড়ে শুদূর বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
স্কুলের সহপাঠী যখন তাদের বাবাকে নিয়ে গল্প করতো তখন আমার খুবই খারাপ লাগতো😔😔 😔,কারণ আমার বাবাকে নিয়ে গল্প করার মত আমার কাছে কোন গল্পই ছিল না। আমি শুধু একটা কথাই জানতাম যে ,আমার বাবা বিদেশ থাকেন । আর ক্লাস থ্রি তে পড়া পর্যন্ত বাবার নাম শুনেছি ,ছবিতে দেখেছি,কিন্ত সামনা সামনি দেখা হয়নি। মা বলতো আমার যখন দুই বছর বয়স, বাবা তখন দেশে এসেছিলো। কিন্ত দুই বছর বয়সী মেয়ের পক্ষে তা মনে রাখা কখনো সম্ভব নয়।
আমি যখন ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ি তখন আমার বাবা একেবারে বিদেশের কাজের পালা শেষ করে দেশে ফিরে আসেন। তখন বাবাকে নিয়ে সব কৌতুহল মিটলো কিন্ত সাথে আমার আর একটা নতুন সমস্যা দেখা দিল। মা-মেয়ের সংসারে বাবাকে একটা বাড়তি মানুষ মনে হতে লাগল। সেই সময় বাবাকে পেয়ে আমার খুশি হওয়ার কথা ছিলো, কিন্ত কেন জানিনা ততটা খুশি হতে পারলাম না। হয়তো ততদিনে বাবা মেয়ের মধ্যে মানসিক দূরত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছিলো। বাবাকে দেখে অনেক ভয় পেতাম। বাবা যেখানে থাকতো যেখান থেকে দূরে থাকতে বেশি স্বাছন্দবোধ করতাম। বাবা অল্পতেই রাগারাগি করতেন সে কারণেই দিনে দিনে ভয়ের এর পরিমান বাড়তে থাকে।
আমি খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম তাই এসব কথা কখনো কাউকে বলিনি। এভাবে আমার দিন কাটছিল। বাবা যেহেতু একেবারে দেশে চলে এসেছিল। তাই বাবাকে দেশেই কোন কাজ করতে হবে। বেশ কিছুদিন চিন্তাভাবনা করে তিনি ব্যবসা শুরু করলেন। এরমধ্যে আমার ছোট বোনের জন্ম হলো ,আমরা দুই বোন থেকে তিন বোন হয়ে গেলাম।
যখন কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করতো যে তোমরা কয় ভাই-বোন, উত্তরে আমি বলতাম আমরা তিন বোন, তখন তাদের আফসোসের সীমা থাকতো না। বলতো "আহারে তিন বোন একটাও ভাই নেই , মেয়েগুলোর বিয়ে হলে বাবা মাকে কে দেখবে" এই কথাগুলো যে জীবনে কতবার শুনেছি তার কোনো হিসাব নেই ।তখন থেকেই ভাবতাম জীবনে একটা কিছু করবো, মা-বাবার পাশে দাঁড়াবো।
দুই থেকে তিন বছর আমার বাবার ব্যবসা ভালোই চলছিল ,ব্যবসায় লাভ হতো ভালোই। কিন্ত সেই সুখ আমাদের কপালে বেশিদিন টেকেনি। ব্যবসায় এমন লস হলো, যে আমার বাবার সঞ্চিত সব মূলধন এক নিমিষেই শূন্য(0) হয়ে গেলো।
তিন মেয়ে আর মা-বাবা মোট পাঁচ জন্য সংসার কিভাবে চলবে এই চিন্তায় আমার বাবার দিশেহারা হয়ে গেলেন। শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না পেয়ে ঢাকায় আমাদের একটা জমি ছিল সেটা বিক্রি করে দিয়ে বাবা আবার বিদেশে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। যেই কথা সেই কাজ ,,আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন তিনি " দুবাই"চলে গেলেন। আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশী সবাই বলেছিলো মেয়ে বড় হয়েছে আর এখন তুমি বিদেশ চলে যাচ্ছো ওদের দেখাশোনা করবে কে?
আমার মা তখন বাবাকে ভরসা দিয়েছিলেন কোন সমস্যা হবেনা, আমরা ঠিক থাকবে ইনশাআল্লাহ তুমি কোন চিন্তা করোনা।
সারাটা জীবন আমার মা আমাদের জন্য শুধু কষ্টই
করে গেলেন, কখনোই নিজের সুখের কথা চিন্তাও করেন নি।
বাবা কষ্ট করেছে দেশের বাইরে থেকে আর মা তিনটি মেয়েকে কি ভাবে মানুষের মত মানুষ করবেন সেই চেষ্টাই করে গেছেন।
বাবা যেহেতু দেশে থাকতো না ,তাই অনেক অল্প সমস্যাও আমাদের কাছে অনেক বড় মনে হতো।
আমাদের চলাফেরা ,কথাবার্তা সব কিছুই অনেক হিসাব করে করতে হতো।
নিজের মানুষ গুলোর কাছ থেকে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি পেয়েছি। সব সময় ভয়ে ভয়ে থেকেছি ,কেউ যদি কোন খারাপ কথা বলে ,তখন কি করবো। চারপাশের মানুষেরা তো আমাকেই খারাপ বলবে।
আর যাদের বাবা দেশের বাইরে থাকে ,তাদের পরিবারের যে প্রতিনিয়ত কত ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ,একমাত্র তারাই জানেন এবং আমাদের পরিবারের মত যদি কোন ছেলে সদস্য না থাকে, তাহলেতো কোন কথাই নেই।
সুই থেকে শুরু করে চাল,ডাল মাছ,সবজি সব কিছু কেনার জন্য মানুষের দারস্ত হতে হতো ।
অনেক ভাবতে পারেন যে ,নিজেরা গেলেই তো হয় তাহলেও কোন সমস্যাই থাকে না। কিন্ত না ,গ্রামের পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা। বাড়ির মেয়ে অথবা বউ যদি বাজারে গেলে গ্রামের মানুষ স্বাভাবিকভাবে নিতে চায় না।
এভাবেই আমাদের তিন বোনকে নিয়ে আমার স্নেহময়ী মায়ের জীবন যুদ্ধ চলতে লাগলো।এর মধ্যেই আমি SSC পরীক্ষায় মানবিক শাখা থেকে পাশ করলাম। তখন আমার দুই বোন ও লেখাপড়া করছে।আমার অনেক স্বপ্ন ছিল আমি ডাক্তার হবো, কিন্ত পারিবারিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এই কথাটি আমি কখনো কাউকে বলিনি।এর পর অবারো মানবিক শাখা থেকে HSC পাশ করলাম এবং "রাজবাড়ী সরকারি কলেজে " অর্থনীতি নিয়ে অনার্স ভর্তি হলাম ।
কিছু দিন পর আমার মা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পরলেন। সমস্যা শ্বাসকষ্ট ও প্রচণ্ড কাশি ।ডাক্তারের কাছে অনেক দোড়াদোড়ী করেছি ,,কিন্ত ডাক্তার বল্লল এটা এত দ্রুত সারানো যাবে না ,অনেক সময় লাগবো , মায়ের চিকিৎসা চলছিল।এর মধ্যে যুক্ত হলো আরো নতুন সমস্যা।আস্তে আস্তে মায়ের খাওয়া দাওয়া একে বারে বন্ধ হয়ে গেল,সাথে বমি ও পেট ফুলে যেতে লাগলো। মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে গেলাম। ডাক্তার দেখানোর পর অনেক টেস্ট করানো হল কিন্ত রিপোর্টে কিছুই পাওয়া গেল না। একমাস ধরে এই অবস্থা চলতে থাকে। পরে ধরা পরল মায়ের পিত্তি থলিতে পাথর হয়েছে ।এরপর ঢাকাতে অপারেশন করাবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম ।আমার নানুর কাছে বোনদের রেখে ছোট খালা ও মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে গেলাম। মায়ের এজ্যামা থাকায় ডাক্তার অপারেশন করতে ভয় পাচ্ছিলেন। মায়ের অপারেশন করা হলে কিন্ত ডাক্তার যে ভয় পাচ্ছিলেন, সেটাই হল। মায়ের প্রচুর শ্বাসকষ্ট ও কাশি শুরু হলে। বাবা দেশে নেই মায়ের এমন খারাপ অবস্থা কি করবো কিছুই মাথায় আসছিল না। প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছিলাম এবং ভেঙে পড়েছিলাম। আল্লাহর কাছে শুধু এই দোয়াই করছিলাম হে আল্লাহ্"তুমি আমাদের তিন বোনকে মা হারা করোনা।"
মহান আল্লাহ্ আমার দোয়া কবুল করেন, মা অস্তে অস্তে সুস্থ হতে থাকে। আমাদের জীবন থেকে সেই দুঃসময় কেটে যায়। কিন্ত সামনে আরও বড় বিপদ আপেক্ষা করছিল।
কিছু দিন পর শারিরীক অসুস্থতার কারণে বাবা দেশে ফিরে আসেন। আবার শুরু হলে ডাক্তারের কাছে দৌড়াদৌড়ি ,,,সমস্যা কোমরে ব্যথা। অনেকবার ডাক্তারের কাছে গিয়ে ওষুধ খেয়ে কোন কাজই হলো না । শেষ পর্যন্ত ডাক্তার বল্লেন অপারেশন করতে হবে। কোন উপায় না পেয়ে বাবা অপারেশনের জন্য রাজি হলেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে দেশে অপারেশন না করিয়ে, ইন্ডিয়া থেকে অপারেশন করাবো। সেই অনুযায়ী ইন্ডিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হলো মা ও বাবা দুজনই ইন্ডিয়ায় চলে গেলেন। আল্লাহর রহমতে অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছিল। 18 দিন পর মা অসুস্থ বাবাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরলেল। বাবাও দিন দিন সুস্থ হতে লাগল। অনার্স ২য় বর্ষে থাকাকালীন আমার বিয়ে হয়ে যায়। আমার শশুর বাড়ির মানুষ গুলো অনেক ভালো এবং তার আমাকে খুব ভালোবাসেন। লেখা -পড়া, শশুরবাড়ি , বাবার বাড়ি সবমিলিয়ে দিন গুলো ভালোই কটছিল,,অনার্সের রেজাল্ট বের হল ফাস্ট ক্লাস পেলাম। মাস্টার্সে ভর্তি হওয়ার পর আমার সংসারে নতুন সদস্য আমার ছোট্ট রাজপুত্র আগমন হলো।ছোট শিশুটিকে নিয়ে সবাই অনেক আনন্দেই ছিলাম🥰🥰🥰।কিন্ত সেই আনন্দোও বেশিদিন কপালে সইল না।আমার বাবা আবার অসুস্থ হলেন।বাবাকে ডাক্তারের কাছে যেতে বল্লে তিন কখনোই নিজের ইচ্ছায় ডাক্তারের কাছে যেতে চাইতো না। আমরা দুই বোন ও মা, ডাক্তারের কাছে নেওয়ার জন্য বাবার সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়।
বাবার শরীর খুবই খারাপ হয়ে যায় । দ্রুত বাবাকে ফরিদপুর নেয়া হল, বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করার পর রিপোর্ট আসলো,বাবার হার্টে তিনটা ব্লক।ফরিদপুরে ৫ দিন রাখার পর ঢাকা " ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে নেয়া হল। ডাক্তার রিপোর্ট দেখে বল্লেন ইমারজেন্সী হার্টের "বাই পাস সার্জারি" করতে হবে কিন্ত সমস্যা হলে বাবার পেশার ,ডায়াবেটিস দুইটাই বেশি । এগুলো কন্ট্রোল না করে অপারেশন করা কোন ভাবেই সম্ভব নয় ।
ডাক্তার আমার মাকে বলেই দিলেন আপনার আল্লাহকে ডাকেন,আল্লাহ একমাত্র ভারসা । বাবা কে ওটি তে নেয়া হলো দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা অপারেশনের পর অপারেশন সাকসেসফুল হলো।
বাবা সুস্থ হলেন বটে কিন্ত সুস্থ জীবন যাপন আর করতে পারেন না।
বর্তমানে সারা বছরই বাবা- মা দুজনেই কেউ না কেউ অসুস্থ থাকেন।তবে মায়ের থেকে বাবাই বেশি অসুস্থ থাকেন। বাবার হাই পেশার, কিডনির সমস্যা,হার্টের সমস্যা,কোমড়ে সমস্যা ,ডায়াবেটিস এতগুলো রোগ কারনে প্রচুর পরিমাণে ওষুধ খেতে হয় । শেষ পর্যন্ত করোনার হাত থেকেও তারা রেহাই পাইনি।
ছোটবেলায় বাবার গুরুত্ব অতটা বুঝতে পারিনি বাবা নামের বটবৃক্ষটি প্রত্যেকটা সন্তানের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। একটা বাবা তার জীবনের শেষ অর্জিত সম্পদ টুকু দিয়ে তার নিজের সন্তান পরিবারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে পৃথিবীতে বাবা,মা ছাড় এত ত্যাগ স্বীকার করার ক্ষমতা আল্লাহ কাউকে দেয়নি। তাই প্রত্যেকটা মানুষের উচিত তার জীবিত বাবা মাকে সম্মান করা ভালোবাসা। ছোটবেলায় আপনাকে যেভাবে যত্ন করে ,আদর করে ,ভালোবেসে ,আগলে রেখেছে তাদের কেউ ঠিক এভাবেই আগলে রাখার চেষ্টা করুন।
আমার অসুস্থ বাবা মার জন্য দোয়া করবেন।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা,মা ।
২০১৯ সালের শেষের দিকে মাস্টার্সের রেজাল্ট বের হল।চিন্তা করেছিলাম চাকরি করবো, কিন্ত বর্তমানে চাকরির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আমার,অভিজ্ঞতা শূন্য (0) বললেই চলে ।অন্য দিকে বাচ্চা ছোট আর বাচ্চা দেখার কেউ না থাকায় বাধ্য হয়েই চাকরির চিন্তা তখন বাদ দিতে হল।
কিন্ত বাবা সব সময় চাইতেন যেন আমি কিছু একটা করি। কি ভাবে বাবার স্বপ্ন পূরণ করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
আমি কোন পথে যাব,কি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করবো সব সময় সেই চিন্তায় করতাম। তখন আমার হাজবেন্ড আমাকে "নিজের বলার মত একটা গল্প "ফাউন্ডেশনের কথা বলে এবং সেও এই গ্রুপে একজন সদস্য।
রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথমে একটা ফেসবুক আইডি দরকার কিন্ত তখন আমার কোন ফেসবুক আইডি ছিল না। ও আমাকে ফেসবুক আইডি খুলে ১১তম ব্যাচে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়।
সংসার, ছোট বাচ্চা আর হাঠাৎ করে নিজে ভীষণ অসুস্থ হওয়ায় গ্রুপে তেমন একটিভ থাকতে পারিনি।
♥️ সবচেয় প্রথম আমার চোখ পড়ে ♥️,,,
চাকরি করবো না ,
চাকরি দিব
স্যারের এই ভিডিওটি।
আর এই ভিডিওটি দেখার পর থেকেই "নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতি আমার ভাললাগা ও ভালবাসা তৈরি হতে থাকে।
আর এজন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সবার প্রাণ প্রিয় ও ভালবাসার শিক্ষক, মেন্টর, আলোর দীশারি ,পথ প্রদশক, শ্রদ্ধেয় "জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের" প্রতি যিনি আমাদের এত সুন্দর একটা পরিবার উপহার দিয়েছেন।
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন আমার কাছে অক্সিজেনের মত। কারণ আমি যখন অসুস্থ ছিলাম তখন আমার মানসিক অবস্থা দিন দিন অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। আমি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখলাম যে এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমার বেঁচে থাকাই আর সম্ভব হবে না । আর তখন আমি নিজেকে বাঁচানোর জন্য "নিজের বলার মত একটা গল্প "ফাউন্ডেশন নামক "অক্সিজেনকে "আকড়ে ধরেছিলাম। আজও হয়তো শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি,,কিন্ত,,আল্লাহর অশেষ রহমতে, আলহামদুলিল্লাহ আমি মানসিক ভাবে পুরোপুরিই সুস্থ।
আমাদের প্রিয় মেন্টর, আমাদের জন্য এমন একটা সুবিশাল বট বৃক্ষের মত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছেন, যার ছায়া তলে আমরা সবাই স্বস্তি, শান্তি ,নিরাপত্তা ও ভরসা পাই ।প্রতিনিয়ত জীবনের নানা সমস্যা ও ঝড় ঝাপটা থেকে এই বটবৃক্ষ আমাদেরকে আগলে রাখছে।
আমাদের প্রিয় স্যার আমাকে এমন একটি পরিবার উপহার দিয়েছেন যেখান শুধু পজিটিভিটি রয়েছে, নেগেটিভ কোন কিছুর জায়গা নেই। আমার পরিবারের কাছে আমি যেমন নিরাপত্তা বোধ করি আমার "নিজের বলার মত একটা গল্প "ফাউন্ডেশনে আমি ঠিক একই নিরাপত্তা বোধ করি। আর কোন সমস্যা হলেই ভয় কি ,আমার ভাই-বোনেরা সব সময় ,সব ধরণের সমস্যায় আমার পাশে রয়েছে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে সেই নিঃস্বার্থ ও বড় মনের মানুষ "শ্রদ্ধেয় জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের" "নিরলস পরিশ্রমে ফলে।
আজ আমার পথ হারা জীবন সঠিক পথের দিশা খুজে পেয়েছে।প্রিয় স্যারের প্রতিটি কথায় মনে সাহস পাই ,নতুন করে পথ চলার শক্তি পাই।আর এভাবেই হয়তো একদিন আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
জীবনে কখনোই লেখা লেখির অভ্যাস ছিল না ।আমার প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরনায় আজ প্রথম লিখলাম ।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন🙏🙏🙏। আর এতখন যে সব ভাই-বোনেরা ধৈর্য সহকারে আমার লেখাটি পড়েছেন তাদের জন্য রইল অনেক অনেক শুভ কামনা ও ভালবাসা ❣❣❣।
👩আমি "তাহমিনা খানম লিজা "কাজ করছি নিজেদের তৈরিকৃত গহনা ও মেয়েদের সব ধরনের পোশাক নিয়ে।
পেজ,,👇
Www.fb.com/queenpointbd
www.fb.com/hatimbd24
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬০৭
Date:- ২৬/০৮/২০২১
💢 নাম-তাহমিনা খানম লিজা
💢রেজিস্ট্রেশন নং-২৮৭০৯
💢 ব্যাচ নং-১১ তম
💢ব্লাড গ্রুপ-O পজেটিভ
💢 জেলা- রাজবাড়ী
💢বর্তমান অবস্থান - ঢাকা মিরপুর