আপেল সিডার ভিনেগার উইথ দা মাদার নিয়ে কাজ করছি "।
#অনলাইন হাটবার # সেল পোস্ট ।
সেল পোস্ট --- সেল পোস্ট ।
# গল্পে গল্পে সেল পোস্ট ।
আদাব --- সালাম --- নমস্কার ।
"আপেল সিডার ভিনেগার উইথ দা মাদার নিয়ে কাজ করছি "।
আমার পরিচিত দের মধ্যে কম বেশি সবাই জানেন যে, আমি হোম মেড আপেল সিডার ভিনেগার উইথ দা মাদার নিয়ে কাজ করছি।
ফরিদ- ( ছদ্মনাম) ছোট ভাই আগে কয়েক বার আমার কাছ থেকে আমার হোম মেড প্রডাক্ট নিয়েছে। নিয়ে উপকার পেয়েছে। ফরিদ খাই ওজন কমানোর জন্য। একবারেই ও তখন ৪ বোতল নেই আমার কাছ থেকে । খেয়ে ওজন কমিয়েছে। মাঝে কিছু দিন ফরিদের সঙ্গে যোগাযোগ নাই ৩/৪ মাস হবে হয়তো। হঠাৎ সেদিন রাত প্রায় ৮.১০হবে। আমার যশোরের সেশন চর্চা ক্লাস চলে। বার বার কল দিচ্ছিল একটা মেসেজ দিয়ে রাখে দিদি জরুরি কথা কল দিয়েন ।
আমি সেশন চর্চা ক্লাস শেষ করে ফরিদ কে কল দেই।
ভাই, কেমন আছো ? তোমার বাড়িতে সবাই কেমন আছেন ?
ফরিদ - দিদি সবাই ভালো আছে কিন্তু আমি ভালো নাই। আমার ওজন আবার বেড়ে গেছে । অনেক ওজন বেড়ে গেছে দিদি আবারো। আপনার সাথে প্রায় ৩/৪ মাস যোগাযোগ নাই একটু ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আপনার হোম মেড এ্যাপেল সিডর ভিনেগার উইথ দা মাদার খাইনা ৪ মাস মতো। এদিকে কেক, পিৎজা, কোক,মিষ্টি, পুড়ি, মুরগীর গ্রীল কোনোটাই বাদ দেইনি খেতে। সবাই বলছে, আমি ও বুঝতে পারছি ওজন মেপে দেখি আজকে অনেক বেড়ে গেছে। দিদি যে ভাবেই পারেন আমাকে হোম মেড আপেল সিডার ভিনেগার উইথ দা মাদার অবশ্যই পাঠাবেন।
৫/৬ দিনের মধ্যে পাঠালেই হবে দিদি। ৫০০ মিলির দাম কতো পরবে দিদি বলবেন? আমি ৬ বোতল নেবো দিদি।
আমি -ঠিক আছে ভাই ৬ বোতলই পাঠাবো। ৫০০ মিলি লিটারের দাম ৪০৫ টাকা করে। তবে তুমি তো ৬ বোতল এক সাথে নেবে। আমি পাইকারি দাম রাখবো। চিন্তা করো না।
ফরিদ - দিদি ৫/৬ দিনের মধ্যে পাঠালেই হবে।
আমি -ঠিক আছে ভাই ভালো থেকো। আবার পরে কথা হবে। ভালো থেকো বলে কল কেটে দেই।
রাত প্রায় ১০.১০ রুমি আপু (ছদ্ম নাম) কল দিলেন।
আপু কেমন আছেন সবাই ?
রুমি - আপু সবাই ভালো আছি । একটা ভালো খবর তাই রাতে কল দিয়েছি। বিরক্ত হচ্ছেন না তো?
আমি - না আপু বিরক্ত হবো কেনো? আপু আগে ভালো খবর টা কি সেটা বলেন???
রুমি -আপু গত মাসে ২ বোতল হোম মেড আপেল সিডার ভিনেগার উইথ দা মাদার নিয়েছি আপনার থেকে। খেয়ে ওজন কলেছে এই মাসে চার কেজি। এক বোতল তো শেষ আরেক বতলের অল্প আছে । হয়তো ৭/৮ দিনের মধ্যে শেষ হবে। আপু আমার আপেল সিডার ভিনেগার লাগবে।
আমার বড় আপু, আমার এক চাচাতো ফুফু সেও নিতে চাই । আমি ৮ বোতল নেবো আপু। দামটা বলবেন।
আমি - সমস্যা নাই দেওয়া যাবে ৫০০ মিলি ৪০৫ টাকা খুচরা মূল্য। আপু আপনি ৮ বোতল নিবেন। অবশ্যই কম দাম রাখবো। পাইকারি দামে দেবো আপু৷ আর একটু কথা বলে কল কেটে দেওয়া হলো।
বড়ো বড়ো জ্বারে সব আপেল সিডার ভিনেগার উইথ দা মাদার রয়েছে । কোনো বোতলে ভরা নাই । মাএ ১২ বোতল ভরা রয়েছে সেটা কাল সকালেই ও গুলো পাঠাতে হবে অডার নেওয়া রয়েছে । এদিকে কাচের বোতল ও শেষ । কি করি?
সঙ্গে সঙ্গে খায়ের ভাই কে কল দিই। ও বলা হয়নি। খায়ের ভাই, নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের গর্বিত সদস্য । কল দিয়ে বলি ভাইয়া আমার ৫০ পিস কাচের বোতল লাগবে।
খায়ের ভাই - ঠিক আছে আপু দেওয়া যাবে আমি কাল সকালেই পাঠিয়ে দিচ্ছি ।
আমি - ভাইয়া সকালেই আমার বোতল কুরিয়ার করেছেন। সকালেই কল দিলেন ভাইয়া বললেন আপু কুরিয়ার করেছি । আমি বললাম ঠিক আছে ভাই টাকাটা বিকাশে আমি দিয়ে দিচ্ছি কোন নম্বরে দেবো। নম্বর দিলেন ভাইয়া। আমার মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি পর্যাপ্ত টাকা নাই কিছু টাকা শর্ট পরছে। কি করি বাইরে যেতে হবে। এদিকে কঠোর লকডাউন চলে। ভোর থেকেই মুষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে যশোরে। বাইরে বের হতে কোনো মতেই পারছি না।
প্রিয় ভাইকে বললাম। ভাই টাকা পাঠাব বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি বের হতেই পারছি না। ভাই বললেন দিদি ব্যাস্ত হবেন না পরে টাকা পাঠালেও হবে। যায় হোক আমি তো ব্যাস্ত হয়ে গেছি। মনে মনে লজ্জা ও পাচ্ছি । লজ্জা পাচ্ছি এই কারনে ভাই কি মনে করছে। ভাইয়া কুরিয়ার করলেন অথচো আমি তার টাকা পাঠাতে দেরি হচ্ছে । কঠর লকডাউন চলে। সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। এদিকে আবার ওলি গলি জাগায় জাগায় বাঁশ দিয়ে বেধে বেধে রাখা। বিকালের দিকে বৃষ্টি কম।আমি বিকাল ৪.৪৫ বের হয়ে দেখি গলি মাথায় হাঁটু জল বেঁধে আছে। একে তো বাঁশ দিয়ে বেধে রাখা তারপর আবার রাস্তায় জল বেঁধে আছে । দোকান পাঠ সব বন্ধ। চিন্তা করলাম বের হয়ে দেখি টাকাটা কোনো ভাবে পাঠাতে পারি কিনা। কিছুই করার নাই ওই জলের মধ্যে দিয়েই যেতে হবে। হাঁটতে শুরু করলাম কিন্তু দুঃখজনক । কিছু একটায় ঘা খেয়ে পায়ের হিল ছিড়ে গেলো। জলে ভেতর কিশে যে ঘা খেলাম আমি বুঝতে পারিনি৷ উল্টে বাসায় আসবো??? তাও আর আসিনি অনেক দুর হেঁটে গিয়েছি। তখন ভাবছি আবার বাসায় গিয়ে কি করবো খালি পায়ে হাটা শুরু করি। সামনে কোনো রিকশা ও পাচ্ছি না । আবার বৃষ্টি নামছে খালি পায়েই হাটা শুরু ১০ মিনিট হাটছি। অনেক কষ্ট হচ্ছিল খালি পায়ে হাটা জীবনে প্রথম এভাবে ইট সুরকীর রাস্তায় খালি পায়ে হাটা ।
একটা এজেন্ট পয়েন্ট দোকানের সামনে যায়। একজন মুরুব্বি কে বলি কাকা,আমার জরুরি টাকা দিতে হবে বিকাশে। ওই কাকার ছেলের দোকান থেকে আগেও আমি টাকা পাঠিয়েছি । মুরুব্বি বললেন মা দাঁড়াও দেখছি, বলেই তার ছেলেকে ডেকে দিলেন। তার ছেলে এসে টাকাটা পাঠিয়ে দিলেন ভাইয়ের নম্বরে। তখন একটা কথা বার বার মনে হচ্ছিল।
আমি হরবো না। হেরে যেতে শিখিনি।
প্রিয় স্যারের কথাটা বার বার মনে হচ্ছিল।
হয় জিতবেন
অথবা শিখবেন
হারবেন না
কখনো
সুতরাং কখনোই থেমে যাওয়া যাবেনা।
খায়ের ভাইয়া কে কল দিলাম। ভাইয়া টাকাটা কি পেয়েছেন ? ভাই বললো আপু টাকা পেয়েছি। কিন্তু এতো বৃষ্টির মধ্যে বের হলেন কেনো? পরে দিতেন টাকাটা। আমি বললাম ঠিক আছে ভাইয়া সমস্যা নাই । টাকা দিয়ে আবারো খালি পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরি। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে রিক্সাও নাই কোথাও। অনেক অনেক কষ্ট হচ্ছিল খালি পায়ে হেঁটে আসতে।তবে কষ্টকে কষ্ট মনে হচ্ছিলনা। কারন উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছেটা বেশি কাজ করছিল তাই মনের কষ্ট ছিলোনা।
স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন শুরু করুন, লেগে থাকুন সফলতা আসবেই।
প্রিয় শিক্ষকের বানী মাথায় আসছিল বারবার ।
২য় দিন হাতে বতল পেয়ে গেলাম। প্যাক করে পাঠিয়ে দিলাম ৬+৮ বেতল সবই পাইকারী দাম নিলাম।
ফরিদ ছোট ভাই ও রুমি আপু হাতে পেয়ে গেছে ২ দিনের মধ্যে । সবাই আমাকে কল দিয়ে ধন্যবাদ জানালো। সবার হাতে পৌঁছাতে পেরে আমার ভালো লেগেছে।
তাই কোনো কাজ করতে গেলে আগেই হতাশ হওয়া যাবেনা। আমি যদি সততার সাথে কাজ করি ভালো প্রডাক্ট দেই রিপিট কাস্টমার বারবার পাবো। এটা আমার বিশ্বাস ।
আমি বিশ্বাস করি । আমি একজন ভালো মানুষ। আমার প্রডাক্টটা সেরা প্রডাক্ট।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬০৫**
Date:- ২৪/০৮/২০২১
নিবেদিতা মল্লিক
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার।
ব্যাচ- ১৪
রেজিষ্ট্রেশন - ৬৬০৯১
জেলা - যশোহর।
কাজ করছি হোম মেড - APPLE CIDER VINEGAR
With The 'Mother' নিয়ে।
আমার পরিবারের জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করবেন ।