আমি উদ্যোক্তা কিভাবে হলাম
আমার নিজের গল্প ,, আমি উদ্যোক্তা কিভাবে হলাম
উদ্যোক্তা হওয়া টা আমার অনেক আগে থেকেই একটা স্বপ্ন ছিল যে আমি নিজে কিছু করব আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন থেকে আমার মাথায় সবসময় ঘুরপাক খায় তো আমি যদি নিজের মতো করে কোন ব্যবসা করতে পারতাম বা কোন চাকরি করতে পারতাম তাহলে জীবনটা অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে পারতাম ।।
আসলে আমার পড়াশোনাতে তেমন কোনো মন বসতো না আমার একটা অভ্যাস কি যেটা একবার মাথায় ঢুকে যায় যে আমি এই কাজটা করব সেটা না করা পর্যন্ত আমার মাথা থেকে সে পরিকল্পনা নামে না দিনে পড়াশোনা করতাম রাত হলে বই সামনে নিয়ে নিয়ে ভাবতাম কিভাবে আমি একটা ব্যবসা করব তখন মাথায় একটা জিনিস কাজ করছিল যে যে কোন একটা কাজ করলেই হবে কেউ যদি টিউশনি পড়াতে চায় সেটাও হবে বা কোন ইস্কুলে যদি চাকরি দেয় মাসে যদি আমাকে বেতন নাও দেয় তাও সমস্যা নাই কিন্তু কোন একটা প্রতিষ্ঠান এ লেগে থাকলে ওই সূত্র ধরে অনেকদূর আগাতে পারবো এটা কাজ করত সবসময়
এরকম করতে করতে এসএসসি পরীক্ষা দিলাম মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করলাম এরপরে আমি টোটাল বসা কলেজে প্রতিদিন ওইভাবে ক্লাস হয় না নতুন অবস্থায় তখন ভাবলাম আমিতো হাতের কাজের কিছু কাজ পারি এটা দিয়ে যদি কাজ করতে পারি তাহলে কেমন হয় তখন আমার পাশে কেউ ছিল না আমি বাড়িতে বললাম যে আমাকে কিছু কাপড় কিনে দাও আমি সেলাই করব তখন ফ্যামিলি থেকে একটা উত্তর পাইছিলাম খেয়ে দেয়ে কোন কাজ নাই মেয়ে মানুষ হয়ে কাপড় বেচ চা খাবা এ কথাটা শোনার পর আমার ভিতরটা কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙে গেল কি করবো কিছুই ভাবতে পারছিলাম না এ পর ওইটা ছেড়ে দিলাম ।।। এর পর আমার এক ফ্রেন্ড এর সাথে যোগাযোগ হল আমাকে বলল আমি একটা কোম্পানিতে জব করি তুই কি সেটা করবি আমিতো খুশিতে আত্মহারা বললাম হ্যাঁ অবশ্যই করবো বলে যে আগে ইন্টারভিউ দিতে হবে ইন্টারভিউতে তুই যদি টিকতে পারিস তাহলে করতে পারবি ।।
এরপর বাসায় এসে পুরো ব্যাপারটা বললাম বাসার সবাই তো বলে তোর মাথায় কি চেপে বসছে যেত একবার ব্যবসা করতে হবে একবার চাকরি করতে হবে অনেক রকমের কথা বলল আমি বললাম সেলারি মোটামুটি অনেক ভালো আর কোম্পানিতে অনেক ব্র্যান্ডের কোম্পানি নেসলে কোম্পানি বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানো হয় এই ল্যাকটোজেন কোম্পানি তো বললাম যে কোম্পানিতে যদি টিকে থাকতে পারি ভবিষ্যতে একটা বড় কিছু করতে পারবো আমার কথা কি ওরা শুনলো অনেক কথা বলল যাই হোক আমি শুধু আমার মারে বললাম যে আমি চাকরিটা করব এতে যদি আমাকে ঘর ছাড়তে হয় সেটাও করব আমার আম্মা আর বাবাকে দেখে ভয় পাই তো সেও রীতিমতো না করলো আমি বললাম আমি আগে ইন্টারভিউটা দিয়ে আসি যদি টিকতে পারে কারো বাধা আমি মানবো না তিনদিন পর ইন্টারভিউ দিতে গেলাম চুরি করে
আমরা পাঁচজন সেখানে কোম্পানি সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন করল এক এক করে সবাই প্রশ্নের উত্তর দিছে এবার আমি দেওয়ার পালা আমাকে শুধু ধরল কয়েকটা ভালো ব্র্যান্ডের কোম্পানির নাম বলেন আমার জানামতে আমি 6 /7 টার নাম বলে দিলাম।। আলহামদুলিল্লাহ আমাকে একসেপ্ট করল পাঁচ জনের মধ্যে আমি টিকলাম
এবার জয়েন করার পালা । তিন দিন পর জয়েন কি করবো বুঝতে পারছি না বাসা থেকে বের হতে দিবে না
কিন্তু আমি চাকরিটা করবই কিছু তো বলতে হবে এখন কি বলবো পরে ভাবলাম যেটা সত্যি সেটাই বলবো ।তো আমার বাবা কে বললাম যে আমার চাকরি হয়েছে সে আমাকে বলল চাকরি তো মগের মুল্লুক তুমি চাইলে আর চাকরি হয়ে গেল অনেক রকমের কথা বলছে অনেক গালিগালাজ পারল এবং কি আমার উপর হাত তুলছে আমি সেদিন অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম আমি নিজে কিছু করব সেটা তো অনেক বাধা এরপর আবার প্রচন্ড জেদ কাজ করলো আজ আমি চাকরিতে জয়েন করব করব শুধু বাড়ি থেকে একটা কথা বলে বের হয়েছি আমি যদি বেঁচে থাকি কিছু করে দেখাবো এ কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছিলাম গে জয়েন করলাম ওরা মাকে শুধুমাত্র একটা প্রোডাক্ট দিয়েছিল ওই প্রোডাক্টটা পুরো মার্কেট পরিচিতি করে দিতে হবে এমনভাবে পরিচিত করতে হবে সবার দোকানে যান এর প্রোডাক্ট থাকে মার্কেটপ্লেস কতটা কষ্ট হয়েছে আমি যার আন্ডারে কাজ করতাম আমার মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেছি কিভাবে তার মার্কেট টা জমে ওঠে যে কথা সেই কাজ গত দুই মাসের মধ্যে ওই প্রোডাক্ট দিয়ে সারতে পারেনা । আলহামদুলিল্লাহ আমার মিশন সাকসেসফুল ওরা আমার উপর অনেক খুশি ছিল। এই চাকরিটা মূলত তিন মাসের জন্য করছিলাম। এরপর বাসায় বসা আমারও চাকরির বেতনের পুরো টাকাটা আমার পরিবারে আমি খরচ করি আমার জন্য একটা টাকাও আমি রাখি নি । এরপর কিভাবে কাজ শুরু করব আমার কথা হলো আমি ব্যবসা করবো একজনের কাছে পনেরশো টাকা ধার নেই ওই পনেরশো টাকা দিয়ে পাঁচটা কাপড় কিনি এই পাঁচটা কাপড় কিনে আমি নিজে সেলাই করি করার পর বিক্রি করব কিভাবে কোন ভাবে বিক্রি হচ্ছিল না আমি কোন ভাবে পরিচিত হতে পারছিলাম না তখন আমার এন্ড্রয়েড ফোন ছিল না এ দোকানে যাইতাম গিয়ে বলতাম ভাই আমার কাছে কয়েকটা প্রোডাক্ট আছে দেখতে পারেন
ভালো লাগলে নিবেন কেউ কেউ বলছে এই পাঁচটা জামাতে কি করবেন আপনি আরো অনেক জামা নিয়ে আসেন আমি বললাম ভাইয়া এই পাঁচটা জামা আমাকে সেল করে দেন যদি আপনাদের সেল হয় আমি পাঁচটা কেন আরো অনেক জামা দিব। ওরা আমাকে অনেক ভাবে কথা সুনায় তাতেও কিছু বলি না হাসি মুখে চলে আসি চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ।
সেদিন আমি অনেক কষ্ট পাইছিলাম যা বলে বুঝাতে পারবো না ।তখন আমার আরো জেদ কাজ করে যে আমার পডাক্ট এই বাজারে সবাই নিবে ইনশাআল্লহ
এরপর বাসায় এসে একজন এর কে থেকে ৫০০০ টাকা নেই নিয়ে কাজ শুরু করে দেই । সারারাত ধরে কাজ করি কোন ঘুম নাই এই ভাবে ১৫ দিনে ১০ টা জামায় কাজ করি অনেক কষ্ট হয়েছিল কিন্তু হাল ছেড়ে দেইনি ।ওই জায়গাগুলো আমার রংপুর বিভাগ এ চলে যায় সব গুলো জামা ছেল হয় আলহামদুলিল্লাহ এর পর থেকে আর থেমে থাকিনি আল্লাহ রহমতে এখন অনেক টাকা ছেলে হয় আর যে দোকান দার আমাকে কাঁদিয়েছে ওরাও এখন আমার কাছে থেকে মাল নেয়
এই ছিল আমার জিবনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা ।।
সব শেষে একটাই কথা বলবো যারা উদ্যক্তা হতে চান
ধৈর্য সহকারে কাজ করবেন আরজে কাজে করেন না কেন কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে আর মেন্ জিনিস যেটা ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে তাহলে আপনি সেরা উদ্যোক্তা হতে পারবেন
অনেক বড় গল্প আমার জানিনা কেউ পড়বে কিনা অনুরোধ রইল আমার সবাই আমার গল্পটা পড়বেন উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে এ কথাগুলো শেয়ার করলাম আমার অনেক ভালো লাগলো কথাগুলো মনের মধ্যে চেপে রেখেছিলাম আজ প্রকাশ করলাম
এই প্লাটফর্মে নিজের মত করে আমার গল্প বলার সুযোগ পেয়েছি
,এখন কাজ করছি হাতের কাজের সব পন্য নিয়ে।। এবং কি একাই সব কাজ করি আমার কোন কর্মী নেই আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬২৩
Date:- ১৭/০৯/২০২১
রুবাইয়া ইসলাম
ব্যাচ নং ১৫
রেজিঃ ৭২৮৮০