চাকরি করে যে টাকা পাচ্ছি তা দিয়ে সংসারের খরচ আমার খরচ সবমিলিয়ে হচ্ছে না
🌹আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু🌹
🥀আলহামদুলিল্লাহ,আল্লাহ পাকের দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া,যিনি আমাদের সুস্থ রেখেছেন।🥀
☘️কৃতজ্ঞতা জানাই প্রিয় মেন্টর,প্রিয় শিক্ষক,লাখো তরুণ তরুণীর হৃদয়ের স্পন্দন জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি,যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি আজকে ভালবাসার প্ল্যাটফর্ম""নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন।☘️
🌹ভালবাসার এই গ্রুপের সকল মডারেটর,ভলান্টিয়ার,আজীবন মেম্বার ভাই ও বোনদের প্রতি রইলো অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।🌹
✍️আজকে আমার জীবনের কিছু কথা শেয়ার করতে এসেছি....✍️
🍀আমি মমিনুল ইসলাম সরকার,টাংগাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার ছেলে🍀
🌿ছোট বেলা থেকেই সবার থেকে একটু আলাদা থাকতাম,তার কারণ হচ্ছে...সবার সাথে আমার মিলতো না,দেখা যেত সবার পরিবার সচ্ছল ছিল,আমার পরিবার একটু অসচ্ছল ছিল।🌿
🥀আমাদের ১ ভাই ২ বোনের সংসার এবং লেখাপড়ার খরচ চালাতে আমার মা বাবা একটু হিমশিম খেতেন,তাই ছোট বেলা থেকেই বাবার সাথে মাঠে কাজ করতাম,গরু পালন করতাম,ছাগল পালন করতাম,গরুর দুধ বাজারে বিক্রি করতাম,আমাদের নিজস্ব জমিতে ধান আবাদ করতাম, সবজি উৎপাদন করতাম এবং সেগুলো বাজারে বিক্রি করে মোটামুটি ভাবে আমাদের তিন ভাইবোন লেখাপড়ার খরচ এবং সংসারের খরচ চালাতে হতো।☘️
🌱গরুর দুধ নিয়ে বাজারে যাওয়া,🌱মাঠে বাবার সাথে কাজ করা, 🌱সবজি বিক্রি করতে বাজারে যাওয়া,🌱 এগুলো আমার কাছে খুব খারাপ লাগত,🌱 কারণ আমি যখন এই কাজগুলো করতাম,তখন আমার সব বন্ধুরা খেলাধুলায় ব্যাস্ত থাকতো না হলে আড্ডা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। আমি যদি খেলাধুলা করতাম তাহলে আমাকে যেতে হতো পালিয়ে পালিয়ে এবং মাগরিবের আগে বাড়িতে ফিরতে হত।🌱
❤️আমার বাবা অসাধারণ সৎ এবং কর্মঠ ব্যক্তি, খুবই সহজ সরল এবং একজন ভাল মানুষ, তিনি কোনোভাবেই দুই নম্বরি পছন্দ করেন না,যিনি বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের জন্য। তিনি এসব আড্ডাবাজি কখনো পছন্দ করতেন না, খুব কড়া শাসনের মধ্য দিয়ে আমি বড় হয়েছি❤️
🥀এই ভাবেই এস এস সি পাস করলাম ২০০৯ সালে,তখন আমার এক বোন ক্লাস সেভেন এ পড়ে,আরেক বোন ক্লাস ফোরে পড়ে🥀
☘️এস এস সি পাশ করার পর ভর্তি হলাম ইন্টারে, পাশ করলাম ২০১১ সালে। ইতিমধ্যে আমার বাবা প্রচুর অসুস্থ হয়ে পড়েন,বাবার পিছনে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়।লেখাপড়ার চিন্তা বাদ দিয়ে সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি🌿
🌱ইন্টারপাশ করার পর ডিগ্রিতে ভর্তিহব এমন সময়, একজন নিকটাত্মীয় বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেয় আমার মা বাবাকে এবং আমাকে। যদিও প্রথমে মা বাবা রাজি ছিলেন না, তারপর তাদেরকে অনেক বোঝানোর পর,ছোট বোনদের কথা ভেবে আমার ভবিষ্যতের চিন্তা করে রাজি হলেন🌱
🌹পাসপোর্ট করলাম,মেডিকেল করলাম,কিন্তু বিদেশ আর যাওয়া হলো না,কারণ যার মাধ্যমে যাব,তিনি সঠিক ভিসা না দিয়েই আমাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ধান্দা করছিলেন।যাইহোক,সেটা ধরতে পারার কারণে বিশাল ক্ষতি থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন,এভাবেই সময় চলে গেলো প্রায় দুই বছর☘️
☘️এরপর বাবা অসুস্থ থাকার কারণে, আমাদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে, এমতাবস্থায় একটা চাকরি আমার খুবই প্রয়োজন,কিন্তু কোথাও কোন চাকরি হচ্ছে না বা পাচ্ছিনা। অনেক রিলেটিভ দের বলার পরেও কোন চাকরি হচ্ছে না, খুবই কষ্টের মধ্যে দিন পার করছিলাম, অভাব জিনিসটা ঘিরে ধরেছে চারদিকে,না পারি মা-বাবার কাছে কিছু চাইতে না পারি মা-বাবাকে কিছু দিতে।একটা সংসারের বড় ছেলের কাছে এটা খুবই লজ্জাজনক বিষয় এবং ছোট বোনদের কাছে খুবই লজ্জার বিষয়☘️
🥀২০১৩ সাল আমার এক বিয়াই, আমাকে একটি চাকরি নিয়ে দেয় টেক্সটাইল মিলে ডাইং হেল্পার হিসেবে, মাসিক বেতন 4200 টাকা বেতনে। চাকরিতে জয়েন করার তিন মাস পর আমার ১ বোনের বিয়ে হয়।আমার ছোট এক বোন তখন এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছে🍀
🌹ইতিমধ্যে আমার ছোট বোনটার বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ে হওয়ার পরে সে এস এস সি পরীক্ষায় পাস করলো গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে🌹
🌹অফিসের সব বস আমাকে খুবই ভালবাসত, তার একটাই কারণ কারো সাথে আমি কোনদিন খারাপ ব্যবহার করিনি সে আমার চেয়ে কম কাজ বুঝলে তার সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করিনি। কারন আমার মা বাবা সবসময় বলতেন সব সময় বিনয় থাকতে হবে, তোর শালা বলে গালি দিলে তাকে ভাই বলতে হবে তাকে গালি দেয়া যাবে না, মা বাবার দেয়া এই শিক্ষা নিয়েই আমি এগিয়ে যেতে থাকলাম🌹
🌿কিছুদিন পর আমাকে প্রমোশন দেয়া হলো,
দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছি সবকিছুরই মূল কারণ হচ্ছে মনোযোগ দিয়ে কাজ করা ও বিনয়ী হয়ে থাকা
এবং সৎ থাকা🌿
🍀চাকরি করে যে টাকা পাচ্ছি তা দিয়ে সংসারের খরচ আমার খরচ সবমিলিয়ে হচ্ছে না ।এমতাবস্থায় চিন্তা করলাম চাকরির পাশাপাশি আরো কিছু একটা করা দরকার, কিন্তু কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না🍀
🌿ইতিমধ্যে আমার বোন আমাকে বলে যে ভাই অনলাইনে বিজনেস করা যায়, তুমি যদি চাও তাহলে করতে পারো ও আমাকে কিছু নিয়ম শিখিয়ে দিল,আমি সেইভাবে একটা পেজ খুললাম,কিছু সেলার নিলাম, দুই ভাইবোন মিলে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করলাম অনলাইনে, মোটামুটি ভালই চলছিল ব্যবসা🍀
☘️মার্কেটে গিয়ে পোশাকের ছবি তুলে সেগুলো পোস্ট করতাম এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে অর্ডারকৃত প্রোডাক্ট গুলো সেল করতাম। কিছু কাস্টমার থাকতো যারা অর্ডার করতো কিন্তু কুরিয়ার থেকে ফোন দিলে তারা প্রোডাক্ট রিসিভ করত না, ফলে সেটা আমার কাছে রিটার্ন চলে আসতো। এরকম মাঝে মাঝে হয়েছে,এরকম হলে তো আর ব্যবসা করা যায় না🍀
🌹ব্যবসা শুরু করলাম কিন্তু ব্যবসায় কোন উন্নতি হচ্ছে না, আমি বুঝতে পারছি না আসলে কিজন্য হচ্ছে না,সঠিক একটা গাইড লাইন পাচ্ছিলাম না যার কারণে বন্ধ করে দিলাম আমার ব্যবসা ।আর ভাবতে থাকলাম যদি কোনদিন সুযোগ হয় তাহলে ব্যবসা শিখে তারপর করব🍀
🍀পণ্যের প্রোডাক্ট এর ছবি কালেক্ট করে পোস্ট করতাম, কিন্তু মাঝে মাঝে দেখা যেত কাস্টমার যেটা অর্ডার করেছে খুঁজতে খুঁজতে আমার দুদিন চলে যেত, শেষে অর্ডার বাতিল হয়ে যেত।এভাবে আর চলছেনা ,ভাবতে থাকলাম নিজ উদ্যোগে কিছু একটা করতে হবে কিন্তু কি করব মাথায় কিছুই ধরেনা🌿
☘️স্বপ্ন দেখতাম কিন্তু সাহস করতাম না কারণ আবার যদি অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ত হই, এক পা এগুলে দুই পা পেছাতাম🌿
🌱এর কারন একটাই অনুপ্রেরণা দেওয়ার মত মানুষ ছিলনা,কেউ বলতো না যে স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, শুরু করুন এবং লেগে থাকুন সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ🌱
🌹হেরেও জয়ী হওয়া যায় এই কথাগুলো জানতাম না,একবার পড়ে গেলে আবার উঠে দাড়াতে হবে,এই কথাটা বলার মত কেউ ছিলো না🌹
🌹কোন উদ্যোগ শুরু করলে ব্যাপক ভাবে লেগে থাকতে হয় সেটা জানতাম না🌹
🌹কিভাবে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এবং পণ্যের ব্র্যান্ডিং কিভাবে করতে হয় সেটা জানতাম না 🌹
🌹কমদামে ভালমানের পণ্য কোথায় পাওয়া যায় সেটা জানতাম না🌹
🌹কাস্টমার কোথায় পাওয়া যায় সেটা জানতাম না।
🌹কিভাবে বিজনেসের জন্য টাকা সেইফ করা যায় বা মূলধন জোগাড় করতে হয় সেটা জানতাম না🌹
🌹কিভাবে সেল বাড়ানো যায় সেটা জানতাম না,কিভাবে কাস্টমারদের সাথে কথা বলতে হয় সেটা জানতাম না🌹
🌹কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হয় সেটা জানতাম না।
🌹রাগ না করে কাজের মাধ্যমে কিভাবে মানুষের কথার জবাব দিতে হয় সেটা জানতাম না।
🌹অযথা আড্ডা দিয়ে সময় নস্ট না করে,সময়কে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় সেটা জানতাম না।
🌹কথা বলার জড়তা কিভাবে কাটাতে হবে সেটা জানতাম না।
🌹আর মোট কথা হচ্ছে যে আমাদের সোনার বাংলাদেশে এখনো যে এত ভালো মানুষ আছে সেটা জানতাম না🌹
🌹এভাবেই হতাশার মধ্যে দিয়ে সময় কাটছিল আমার,
🌹এর মধ্যে আমি পেয়ে গেলাম
#নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প_প্ল্যাটফর্মের দেখা, কে বা কারা আমাকে ইনভাইট করেছে তা আমি জানিনা🌹
🌹স্যারের সেশন গুলো নিয়মিত দেখতে থাকলাম। তবে রেজিস্ট্রেশন করিনি শুধু দেখছি ৪০/৪৫ টা সেশন শেষ করলাম,এতটাই সাহস পেলাম যেটা ভাষায় প্রকাশ করার মত না☘️কারন আমি এতদিন যাবত এমন একটা কিছু খুঁজছিলাম...
🌿যেখানে কোন প্রতারনা থাকবে না,থাকবে না আরেক জনের প্রতি হিংসা🌹একটা সময় দেখলাম স্যারের একটা প্রিয় বাণী.... #বৃষ্টি_সবার_জন্য_পড়ে_তবে_ভিজে_কেউ_কেউ"
☘️এই কথাটা আমি গভীরভাবে চিন্তা করলাম বৃষ্টি তো পরছে অনেক ভাই বোনেরা ভিজতেছে,আমিও তো ভিজেতে পারি ,বৃষ্টি তো তাদের জন্য একা পরছে না☘️
🌹খোঁজ নিয়ে দেখলাম আমাদের এই প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে অনেক ভাই বোনেরা অনেক দূরে এগিয়ে গেছেn🍀
🌹ভুল ধারণা গুলো কেটে গেল,মনের ভিতর সাহস ফিরে পেলাম🌿
☘️ভাবতে থাকলাম, আমি আরো আগে কেন এই প্ল্যাটফর্মের দেখা পেলাম না, তাহলে আমার ব্যবসাটা নষ্ট হতো না।
🌿সাথে সাথেই রেজিস্ট্রেশন টা কমপ্লিট করে ফেললাম 12 তম ব্যাচ থেকে যুক্ত আছি প্রিয় ফাউন্ডেশন এর সাথে🌿
🍀ব্যবসা না শিখে কিছু স্কিলস না শিখে কখনোই হুট করে ব্যবসা করতে যাওয়া উচিত না,আমাদের প্রিয় স্যার আমাদের এত সুন্দর সুযোগ করে দিয়েছেন,যাতে আমরা ধোঁকা না খাই এবং ধোঁকা না দেই,সব সময় পজিটিভ চিন্তা করি🌹
🍀বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে একটিভ থাকতে পারিনি প্রথম থেকে 13 তম ব্যাচ,তারপর 14 তম ব্যাচ ,15 তম ব্যাচ ,16 তম ব্যাচ চলছে ইতিমধ্যে অনেক কিছুই শিখছি বুঝতেছি এবং ভাবতেছি হয়তো আরো আগে যদি জয়েন করতাম আমাদের ভালোবাসার গ্রুপে তাহলে আমিও হয়তো এগিয়ে যেতে পারতাম বহুদূর🌿
🥀 তবে সময় শেষ হয়নি, আমাদের প্রিয় স্যার বলেছেন সময় নষ্ট করা যাবে না শুরু করে দিন এখনই🍀
🌹 মাশাআল্লাহ আমার দুই বোনও এখন উদ্যোক্তার পথে হাঁটছে, একজন হোমমেইড হেয়ার অয়েল নিয়ে কাজ করছে, আরেকজন হ্যান্ড পেইন্ট নিয়ে কাজ করছে, ওদেরকেও আমি প্রিয় ফাউন্ডেশনে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিয়েছি🌹
🌹 সবার কাছে অনেক অনেক দোয়া চাই আমরা তিন ভাইবোন ই যেন একদিন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি🍀
❤️সবশেষে বলতে হয় আমার মা-বাবার কথা, যাদের ঘরে আল্লাহপাক আমাদেরকে জন্ম দিয়েছেন, এমন মা বাবা পেয়ে সত্যিই আমরা গর্বিত।যারা আমাদেরকে সবসময়ই অনুপ্রাণিত করেন, কখনো ভালো কাজ করতে নিষেধ করেননি, সব সময় খারাপ কাজ করতে নিষেধ করেছেন এবং ভালো বন্ধুদের সাথে মিশতে বলেছেন। অনেক অনেক দোয়া আমার মা-বাবার জন্য আল্লাহ যেন তাদের নেক হায়াত দান করেন এবং সুস্থ রাখেন❤️আমার বাবা এখন খুব অসুস্থ অবস্থায় আছেন,সবার কাছে দোয়া চাই🌹
🌹লেগে আছি প্রিয় ফাউন্ডেশন এর সাথে , একজন সফল উদ্যোক্তা তৈরি হব,এবং নিজের বলার মত একটা গল্প তৈরি করে দেশের সেবা করবো ইনশাআল্লাহ🌹
🍀আমার অগোছালো কথার ভিতর, কোন ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন🍀
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭২৯
Date:- ২৪/০১/২০২২ইং
🌹মমিনুল ইসলাম সরকার
🌹ব্যাচ নাম্বার 12
🌹রেজিস্ট্রেশন নং ৩৬৬৬৬
🌹নিজ জেলা টাঙ্গাইল
🌹উপজেলা দেলদুয়ার
🌹নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর আজীবন সদস্য।