আমার মামাতো বোনের কাছ থেকে 4000 টাকা নিয়ে একটি ইনকিউবেটরের মেশিন ক্রয় করলাম
🕌বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
🌺আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
প্রিয় ফাউন্ডেশনের ভাই ও বোনেরা আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি সবাই আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্ আমিও আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি সুস্থ আছি।
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আল-আমিনের দুরুদ ও সালাম মানবতার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) উপর দুরুদ প্রেরন করি। এ কঠিন বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যে আমাদের সুস্থ রেখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ্।
❤️হ্রদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এ মাটির গবির্ত সন্তান আমার আপনাদের অত্যান্ত শ্রদ্ধাভাজক দিক হারা মানুষদের প্রিয় অভিবাবক জনাব" ইকবাল বাহার জাহিদ" স্যারের প্রতি। যেখানে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা,ভালো মানুষ হওয়া, এবং একটি সুশীল উদ্যোক্তা সমাজ ও পরিবেশ।
কৃতজ্ঞতা জানাই আমার বন্ধু মোঃশহিদুল ইসলাম খান যার মাধ্যমে আমি এই প্ল্যাটফর্মের সন্ধান পাই এবং তার মুখে প্ল্যাটফর্মের প্রশংসা শুনে আমি এই গ্রুপে যুক্ত হই । যুক্ত হওয়ার পরে আমি রেজিস্টেশন এর জন্য একটি পোস্টে কমেন্ট করি ।আমাকে Rich MD Hakim ভাই সাহায্য করেন। তার মাধ্যমে আমি রেজিস্ট্রেশন করি ১৫ তম ব্যাচের শেষের দিকে ৮৭ তম দিনে।১৬ তম ব্যাচের রেজিস্ট্রেশন আমার ।
সেই ১৫ তম ব্যাচের ৮৭ তম দিন থেকে আজ ১৬ তম ব্যাচের দিন ৯০ সেশন ৯০ এই পর্যন্ত মাত্র একটি ক্লাস মিস করেছি তাও অনিচ্ছাসত্বে খুবই ব্যস্ততার কারণে।
আমি এই গ্রুপে এসে এত ভাল মানুষের সাথে পরিচিত হয়েছি এবং একজন ভালো মানুষ কিভাবে হওয়া যায় তা শিখেছি। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আমাদের প্রিয় #ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যারের তার জন্য আমি আজকে ভালো মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। স্যারের যতগুলো সেশন শেষ করেছি প্রত্যেকটা সেশন থেকে ব্যবসায়িক বিষয়ে কতটুকু শিখেছি তা বলতে পারব না তার থেকে বেশি শিখেছি ভালো মানুষ কিভাবে হওয়া যায়। মানুষকে কিভাবে ভালোবাসা যায়। আরো শিখেছি অসহায় মানুষের পাশে কিভাবে দাড়ানো যায়। শিখেছি মানুষকে কিভাবে ভালোবাসা যায়। এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত না হলে এসব আমার শেখা হতো না। আজ আমি গুছিয়ে কথা বলতে পারি। পূর্ণ কৃতিত্ব প্রিয় ফাউন্ডেশনের এবং প্রিয় স্যারের।
🧍আমার ফ্যামিলি সদস্য গন,,,,
আমরা পাঁচ ভাই-বোন, চার বোন ও ভাই আমি একা । আমার বড় তিন বোন তারপরে আমি এবং আমার পরে ছোট এক বোন আছে। আমার বড় তিন বোনের বিবাহ হয়েছে।
আমার বাবা চাকরি করতো বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন এর একাউন্টস অফিসার পদে। মা গৃহিনী। বাবা মারা গেছে 2008 সালে এখন বাসায় আমি আমার ছোট বোন এবং আম্মু থাকি।
__স্টুডেন্ট লাইফ ___
আমি মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করেছি ।
তার পরে ঢাকা নর্দা বিজ্ঞান প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেছি ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজির উপরে। এই হলো আমার ইনস্টিটিউট লাইভ।
#ছাত্রজীবনে আমি কিছু টেকনিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স অর্জন করেছি তা হল কম্পিউটারের ,বেসিক কম্পিউটার শিক্ষা, এম এস এক্সেল , এম এস এক্সেস, এম এস ওয়ার্ড, জিমেইল অপারেটিং ইত্যাদি
°জীবনের শুরুর দিকের গল্প °
আমার জীবনের শুরুর দিকের গল্পটা অনেক সুন্দর ও আনন্দময় ছিল তার কারন ছিলো তখন আমার বাবা বেঁচে ছিলো।
জীবনের যুদ্ধটা শুরু হলো 2008 সালের বাবা মারা যাওয়ার পরে ।
আব্বু মারা যাওয়ার পর থেকে আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম। এখনো পড়ি কিন্তু মাঝেসাঝে গ্যাপ যায়।
আমি ছিলাম আমাদের ফ্যামিলির অনেক আদরের কারন আমার আগে আর একটা ভাই ছিলো সে ছোট বেলায় মারা গেছে ।তাই আমি খুবি আদরের সাথে ছোট বেলা পার করছি।আমার চাচা ,চাচাতো ভাই ও বোন এরাও আমাকে অনেক আদর করতো খুবি আদরের ছিলাম আমি।
এখন বাস্তবতায় পা দেয়ার পরে সবাই দূরে চলে গেছে।
°আমার সখ °
আমার মানুষকে সাহায্য করতে ভালো লাগে । অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, দেশের জন্য কাজ করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ইত্যাদি আমার ভালো লাগে ।আমার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কাজ করতে ভালো লাগে, সমাজ সেবা করতে ভালো লাগে।
এখন আমি ব্লাড ফাউন্ডেশন এর সাথে কাজ করি এবং বিডি ক্লিন বাংলাদেশের সাথে কাজ করি।
°ছাত্র জীবন শেষ করার পরে °
ডিপ্লোমা শেষ করার পরে আমার চাকরি করতে ভালো লাগছিল না ।তার একটি কারণ বর্তমান সমাজে চাকরি করতে গেলে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে হবে এবং পরবর্তীতে ঘুষ খেতে হবে যদি চাকরি টিকিয়ে রাখতে হয়। তাই ডিসিশন নিলাম চাকরি করব না চাকরি দেব। পরবর্তীতে ফ্যামিলির চাপে ডিপ্লোমা শেষ করার পর চাকরির অ্যাপ্লিকেশন করলাম ।একটা চাকরি হয়েছিল এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইলেকট্রিশিয়ান পদে। কিছুদিন চাকরি করার পরে দেখলাম আমার যোগ্যতা সাথে চাকরিটা যায় না পরবর্তীতে চাকরিটা ছেড়ে দিলাম । এর পরে আবারো ফ্যামিলির চাপে রেলওয়েতে চাকরির জন্য আবেদন করলাম। এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে তিনি বলল কিছু টাকা ঘুষ দিতে হবে দিয়েছিলাম 1 লক্ষ টাকা ।কিন্তু আমার মনে হল ওই পদে চাকরি নিলে আমাকে চাকরি বাঁচাতে ঘুষ খেতে হবে ।তাই পরবর্তীতে ডিসিশন নিলাম ওখানেও চাকরি করব না ।বড় ভাইকে বলেছিলাম চাকরি করব না । এরপর শুরু হল ব্যবসায়িক চিন্তা ভাবনা।
°ব্যবসায়িক জীবন °
এর পরে শুরু হল আমার ব্যবসায়িক জীবন ।
চিন্তা ভাবনা করি কি ব্যবসা করব খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
একবার দোকান দেয়ার চিন্তা করলাম। পরবর্তীতে দেখলাম ফার্মিং সিস্টেমটা মোটামুটি ভালো ।
পরবর্তীতে ছোট পরিসরে একটি দেশি মুরগির ফার্ম শুরু করি। তাও আবার 4000 টাকা ধার করে। আমার মামাতো বোনের কাছ থেকে 4000 টাকা নিয়ে একটি ইনকিউবেটরের মেশিন ক্রয় করলাম। এখান থেকেই আমার ব্যবসায়িক জীবন শুরু। আমার চাচীর কাছ থেকে কিছু দেশি মুরগির ডিম সংগ্রহ করলাম ইনকিউবেটরে বসালাম অল্পকিছু বাচ্চা বের হলো কিন্তু একটি বাচ্চাও বাঁচাতে পারিনি। থেমে যাইনি লেগে ছিলাম। পরবর্তীতে আরও বাড়ানোর চিন্তা করলাম একটি সেট তৈরি করলাম এক হাজার মুরগির। আরো কিছু ডিম সংগ্রহ করে কিছু বীজ ডিমের মুরগি তৈরি করলাম সেখান থেকে মুরগিগুলো ডিম দেয়া শুরু করেছে তা থেকেই এখন ডিম ইনকিউবেটর বসাতে পারছি। প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে মুরগি গুলো পালন করতে থাকি অল্প পরিসরে 2020 সালের ঈদে 10 হাজার টাকার মুরগি বিক্রি করলাম। তারপর থেকে অল্প অল্প করে মুরগি সেল দিতে থাকলাম এবং বীজ ডিমের মুরগি বাড়াতে থাকলাম।
তবে এখনো সফলতার মুখ দেখেনি কিন্তু স্যারের একটি কথা মাথায় রাখলাম শুরু করুন লেগে থাকুন সফলতা আসবেই। সেই চিন্তা করে এখনো লেগে আছি। চার হাজার টাকা দিয়ে ফার্ম শুরু করার পরে কৃষি ব্যাংকে থেকে 1 লক্ষ টাকা লোন নেই একটা সেট তৈরি করি এবং কিছু ইনকিউবেটর তৈরি করি। যেহেতু আমি ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছি তাই নিজেই সার্কিট কিনে ইনকিউবেটর তৈরি করি। তারপরে আরেকটু বড় পরিসরে ফার্ম করি ।এরপর এখানে অনেক বেগ পেতে হয়েছে আবারও রিক এনজিও থেকে 50 হাজার টাকা লোন নেই। এখন আশা করি আমার ব্যবসাটা হয়তো আল্লাহ চাইলে ভালো পজিশনে যাবে। কিন্তু আমি আশা হারায়নি এখনো লেগে আছি সফলতা একদিন আসবেই সেই আশায়।
@যখন আমি ফার্মিং সেকশনে যাওয়ার চিন্তা করি তখন মানুষের কাছ থেকে পরামর্শ নেই। ম্যাক্সিমাম লোকই আমাকে বলল এটা তুমি পারবে না। আমরা আজকে অনেক টাকা ইনভেস্ট করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি ।
❤️ভালোবাসার প্লাটফর্ম,, ❤️
আমি যখন মোটামুটি হতাসার মধ্যো দিয়ে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি নিজের বলার মতো একটা গল্প,,ফাউন্ডেশন আমার নজরে আসে।তার পরে প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরণা মূলক সেশন গুলো আমার মনে সাহস যোগায়।আমি নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের একজন সদস্য হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করি।
মানুষের কথায় কান না দিয়ে প্রিয় স্যারের উক্তি মাথায় রেখে আমি শুরু করি এবং এখন পর্যন্ত লেগে আছি।
@ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সামনে পরিকল্পনা আরো বড় পরিসরে মুরগির জন্য তিনটি শেড নির্মাণ করবো। প্রত্যেকটি সেটে থাকবে তিন থেকে চার হাজার মুরগি এবং বীজ ডিমের জন্য 220 মুরগির একটি শেড নির্মাণ করবো এখন পর্যন্ত আমার 120 পিচ বীজ ডিমের মুরগি আছে ।তবে এখনো কোনো বড় এমাউন্টের লাভ না হলেও আমি মনে করি আমার ফার্ম এখন দাঁড়িয়ে গেছে ।কারণ আমার কিছু বীজ ডিমের মুরগি রয়েছে যেগুলো আমার সম্পদ সবার উদ্দেশ্যে বলবো আর কিছুদিন পরে আমি নতুন এবং বড় পরিসরে মুরগির ফার্ম এর সেট নির্মাণ করতে যাচ্ছি সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
সর্বপরি সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৩২
Date:- ২৮/০১/২০২২ইং
মো: শাওন হোসেন
ব্যাচ নং :১৬
রেজিস্ট্রেশন নং : ৭৬০১০
জেলা: বরগুনা
থানা:বেতাগী
বর্তমান অবস্থান : বেতাগী