এ প্লাটফর্ম থেকে ভালো করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশে গিয়ে একজন উদ্যোগক্তা হব
☆বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম☆
💥 আমার জীবনের গল্প । 💥
☆আসসালামু আলাইকুম ওরহমাতুল্লাহ☆
সর্বপ্রথম ঐ মহান আল্লাহ তা'আলার প্রশংসায় সেজদায় অবনত হচ্ছি যিনি আমাকে আশরাফুল মিখলুকত তথা সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে পৃথিবীতে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন এবং মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে দান করেছেন। সেই সাথে লাখ-কোটি দুরুদ ও সালাম প্রেরণ করছি মানবতার মুক্তির পথ-প্রদর্শক পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ও নবীকুল শারমিন হযরত মুহাম্মদ (স:) এর উপর।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই মানুষটার প্রতি, যিনি সুখ খুঁজে না আপন নীড়ে, প্রাণের টানে এই আঙিনায় বারে বারে আসে ফিরে, যার চিন্তা ভাবনা এই স্বপ্নের প্ল্যাটফর্ম কে ঘিরে, যিনি সবসময় যুক্তিময় উক্তি দিয়ে আমাদের অনুপ্রাণিত করেন, তিনি হলেন আমাদের সকলের প্রিয় মানুষ,ভালোবসার মানুষ জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। যার অনুপ্রেরণায় আমরা সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজারো শুকরিয়া,স্যার সুস্থ হয়ে আমাদের কাছে ফিরে এসেছে ।
মুল গল্পে যাওয়ার আগে,
আশা করছি গল্প টি পড়ে আপনার অনুভূতী কমেন্ট করে জানবেন এবং ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমি শেখ মোঃ মোমিন উদ্দিন , আমার বাসা বাগেরহাট সদর উপজেলা। আমরা ২ভাই,২বোন।
ভাই বোনদের মধ্যে আমি সব থেকে ছোট।
*এবার মুল গল্পে ফিরে আসি।*
আমার ছোট বেলা অনেক আনন্দ উল্লাসে কেটেছে। আমি ইন্টারমিডিয়েট পড়া অবস্থায় ৮ম শ্রেণীর এক সুন্দরী মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়। আমরা দুজন-দুজনকে পছন্দ করে প্রেম করা শুরু করি।চারদিকে রটে গেল আমাদের প্রেমের কথা। যাইহোক একপর্যায়ে পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে যায়। এবং মেয়েটিকে তার পিতা বিবাহ দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু আমার দুজন-দুজনকে এতটাই ভালোবাসতাম যে ওর পিতা বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অবশেষে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শেষ করে দুই পরিবারের সম্মতিতে আমি মেয়েটিকে বিবাহ্ করি। কিন্তু বিবাহ করার পরে আমি জীবনের বাস্তবতা বুঝতে পারি। আর আমার জীবনে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। আমি বিবাহ করার পূর্বে আমার বড় ভাই আমাকে প্রতিমাসে ৩০০০ টাকা হাতখরচ দিত কিন্তু বিবাহ করার পর দেওয়া বন্ধ করে দেয়।যার ফলে আমি খুবই বিপদে পড়ে যায় কারন বিয়ে করার পর আমাকে সকলে খুব খারাপ চোখে দেখতে থাকে ।যাইহোক আমি আল্লাহর রহমতে ভালভাবেই ইন্টারমিডিয়েট পাশ করি । আমার ইচ্ছা ছিল ঢাকায় গিয়ে পড়াশোনা করব সেটা আর হল না কারন আমাকে নিয়ে কেউ আর ভালো কিছু আশা করে না। যাইহোক অবশেষে বাগেরহাট পি:সি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হই। কিন্তু বিয়ে করার কারনে আমি নিজে উপার্জন করার চিন্তা করি। অবশেষে গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় ইন্টারমিডিয়েট সনদপত্র দিয়ে আমি চাকরিতে যোগদান করি ।
আমার পরিবার ও শশুর বাড়ির লোকেরা খুশি হয় চাকরি পাওয়ার পর। কিন্তু আল্লাহর কী ইচ্ছা আমি মাত্র আট মাস চাকরি করে আর করতে পারি না। কারন গ্রামীণব্যাংকে ফিল্ডে কাজ করা খুবই কঠিন। যা আমার পক্ষে সম্ভব হয় নি। এর পর চাকরি ছেড়ে দিলাম যার ফলে আমি আরও বিপদে পড়ে গেলাম। তারপর ইচ্ছা করলাম পল্লী চিকিৎসক হব এবং এর জন্য খুলনায় এক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলাম। সেখানে থেকে ছয় মাস প্রশিক্ষণ শেষ করে পল্লী চিকিৎসক হয়ে গেলাম । কিন্তু ঔষধ ও চেম্বার দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে টাকা দিতে রাজি হল না। বাড়ি থেকে বল্ল সৌদি আরব যেতে কিন্তু আমি রাজি হলাম না। এত দিনে আমার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেল। আমি সবসময় চিন্তা করতাম আমি কি করব? কারন আমার পাশে আমার মা এবং আমার স্ত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। কোন কিছু উপায় না দেখে এক বড় ভাইয়ের কম্পিউটারে দোকানে কাজ করতে লাগলাম। বলে রাখি আমি কম্পিউটার আগে থেকেই জানতাম ফলে এখান থেকে আমার কিছু আয় হতে লাগল।এবং এর পরে আমি আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ এ কম্পিউটারের কাজ করা শুরু করলাম। ফলে আরো কিছু আয় হতে লাগল। কিন্তু এটা করে আমার ভবিষ্যত কি হবে তাই চিন্তা করতে লাগলাম। এর মধ্যে বেশ কিছু সরকারি চাকরির কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলাম কিন্তু টাকার জন্য চাকরি হল না। এবং এক জায়গায় চাকরির জন্য এক লাখ টাকা দিলাম কিন্তু চাকরিত হলোই না বরং টাকা ও ফেরত পেলাম না। তারপর আমার পিতা ও বড় ভাই আমার চাকরির জন্য আর কোনো টাকা দিবে না বলে দিল। কারণ বড় ভাইয়ের ইচ্ছা আমাকে সৌদি আরব নিয়ে যাবে কিন্তু আমি যেতে রাজি হলাম না। এভাবে অনেক সময় পার হয়ে গেল কিন্তু কোন চাকরি হল না। অবশেষে আমার এক বন্ধুর পরামর্শে কোরিয়ান ভাষা শিখলাম এবং পাশ করলাম । আর ইতিমধ্যে আমি অর্থনীতি বিভাগ ছেড়ে পাশ কোর্সে ভর্তি হয়ে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে স্নাতক পাশ করলাম। এবার কোরিয়া যাব আমি খুব খুশি হলাম ।কিন্তু আমি আমার স্ত্রীকে ছেড়ে থাকব কিভাবে এ চিন্তা করে প্রাকটিজ করার জন্য ঢাকায় আসার চিন্তা করলাম।এবং ঢাকায় একটি ডাঁটা এন্ট্রি অফিসে যোগ দিলাম। এবং এর পাশাপাশি ঢাকা বাংলা কলেজ এ মাস্টার্স এ ভর্তি হলাম। এক বছর ঢাকায় থাকার পর দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য আমার ভিষা চলে আসে এবং আল্লাহর রহমতে আমি কোরিয়া চলে আসি। কোরিয়া আসার পর সকলে আমাকে ভালো চোখে দেখতে লাগে।তার পর আমি প্রথম পাঁচ বছর শেষ করে দেশে যায় ।
দেশে গিয়ে দেখলাম লেয়ার মুরগির ফার্ম করে অনেকে ভালো টাকা আয় করছে ।সুতরাং আমিও শুরু করে দিলাম মুরগির ফার্ম। কিন্তু আমি মুরগির ব্যবসায় লাভ করতে পারলাম না বরং অনেক টাকা ক্ষতি হল। তাই আবার দ্বিতীয় বার ভাষা পরীক্ষা দিয়ে কোরিয়া চলে আসি। এবং কোরিয়া আসার পর মডারেটর আহমেদ ফারুক ভায়ের মাধ্যমে প্রিয় প্লাটফর্ম " নিজেরবলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন " এর কথা জানতে পারি।
এবং ৭ম ব্যাচে রেজিস্ট্রেশন করি। সেই থেকে এ প্লাটফর্মকে ভালোবেসে এখন ও লেগে আছি। আল্লাহর রহমতে এখন আমার মোটামুটি ভালো মূলধন হয়েছে। ইচ্ছা আছে এ প্লাটফর্ম থেকে ভালো করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশে গিয়ে একজন উদ্যোগক্তা হব।এবং নিজে সফল হব ইনশাআল্লাহ আরও কিছু মানুষের কর্মসংস্থান
সৃষ্টি করব।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৭৫৫
তারিখ - ২৭-০২-২০২২
মো: মোমিন উদ্দিন।
ব্যাচ নং- ৭ম।
রেজিস্ট্রেশন নং- ৫৪৮৪।
জেলা- বাগেরহাট।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী।