হারিয়ে গেলো যৌথ পরিবার গুলো
সফলতার গল্প সবাই শুনলেও, ব্যর্থতার গল্প কেউ শুনতে চাই না✍️
হারিয়ে গেলো যৌথ পরিবার গুলো😶
প্রায় ৮বছর পরে নিজের হাতের রান্না😊
অগুছালো হলেও সম্পূর্ণ লেখা পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো🥰
মা বাসায় থাকা অবস্থায় সহজে রান্না করতে দেননা। তবে অসুস্থ হলে আবার বারণও করেন না। সে কখন নিজের হাতে রান্না করেছি মনে পড়ছে না। তবে ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য চকবাজার থাকা অবস্থায় ৬জনের জন্য রান্না করেছিলাম। সেই স্মৃতি এখনো চোখে ভাসছে। চকবাজার থাকা অবস্থায় প্রথম কয় একদিন সবাই রান্না করে খাওয়ালেও, পরে নিজেকে রান্না করা লাগে। সে হিসেবে অবিজ্ঞতা বেশী না হলেও অল্প আছে। এই মুহূর্তে ছোট বেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। বাবাদের ৭ভাইদের মধ্যে আমার "মা" সংগ্রামের জীবন যাপন করেছেন। বাবারা ৭ভাই প্লাস দাদা, আমরা চাচাতো ভাই বোন সহো যৌথ পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৮জন। খেলাধুলা, খাওয়া ধাওয়া উঠা বসা, ঘুম বলতে গেলে সবকিছু এক সাথে ছিলো। রক্তের সম্পর্ক যাকে বলে এক কথায়। সারাদিন ছোট খাটো ঝগড়া, রাত হলে আবার সবাই এক সাথে।
বলতে গেলে খুব সুখের ছিলো সেই সময় টা। চাওয়া পাওয়া, স্বার্থের চেয়ে ভালোবাসাটা ছিলো বেশী। কেউ কারু প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো না, ছিলেন সহযোগী হিসেবে। দাদী বেঁচে না থাকায় দাদার ভালোবাসা ছিলো সবচেয়ে বেশী। মাদ্রাসায় দিয়ে আসা, আবার ছুটির সময় সাথে করে নিয়ে আসা, সব যেনো আমার ভাগ্যে জুটে।
ভাগ্যের পরিহাস, দাদার মৃত্যুর পরে সব এলো মেলো হয়ে যায়। পরিবারকে সুন্দর করে সাজানোর জন্য নিয়ে আসা হয় চাচাদের জন্য নতুন অতিথি। কে জানতো তারা এসে সাজানো বাগানে ভাইদের রক্তের সম্পর্কে পৃথক করে দেবে। কতো সুন্দর পরিবার, যেখানে ছিলো না হিংসা, অহংকার, গৌরব, ছিলো আন্তরিকতা মহব্বত ভালোবাসা।
নতুন অতিথি গুলো ছিলো গরীব পরিবারের, হঠাৎ বড় পরিবারে আসাতে সব ভুলে যায়। আর নিজেদের স্বার্থ হাছিল করার লক্ষ্যে ভাইদের সম্পর্কে তছনছ করে দেয়। আমার ২০বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলি কি, "অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী", কথাটি যথার্থই।
অর্থ বিত্ত, ধন সম্পদ, বাড়ি গাড়ি, সবই সীমিত সময়ের জন্য। আজ আছে কাল নাও থাকতে পারে। আর আন্তরিকতা মহব্বত ভালোবাসা মানুষ চলে গেলেও মানুষের মুখে মুখে থেকে যায়। চাচারা চাইতেন সবসময় আগলে রাখতে কিন্তু তাদের জন্য আনা অতিথি বৃন্দ যে ছোট মনঃমানষিকতার, তাই তো সুন্দর বাগান এলোমেলো হয়ে যায় অল্পতে।
আমি জানি না আজকে কেন, এতো স্মৃতি মনে পড়ছে, সাথে চোখের অশ্রুও ঝড়ছে। জানি আমি একদিন থাকবো না, থাকবে না আমার পথচলা, থাকবে একমাত্র স্মৃতিগুলো। যে স্মৃতিতে আমাকে খুঁজে পাবে।
জীবন সংগ্রামের মায়ের পরে আমি মনে হয় ২য়, যে কি না পরীক্ষা দিতে দিতে এই পর্যন্ত আসা। ঝড় তুফান কতো যে এলো গেলো, সামনে আরো কতো আসবে যাবে একমাত্র উপরওয়ালা জানেন।
তবে আমি হাল ছাড়িনি ইনশাআল্লাহ অদূর ভবিষ্যতেও ছাড়বো না। হয় জিতবো না হয় শিখবো।
যারা পাশে থেকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং অফুরন্ত ভালোবাসা। আপনাদের কাছে আমি ঋণি হয়ে রয়ে গেলাম।
এস.এস.সি পরীক্ষার সময়ের স্মৃতি আমি যাতে পরীক্ষায় পাস হতে না পারি তার জন্য "ছক্কা খেলার" আয়োজন করতো, টিভির ভলিয়াম বাড়িয়ে দিতো, তখনও ছিলাম সবাই যৌথভাবে। আর আমাদের বাসাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মতো পাশাপাশি থাকায় একজনে কথা বল্লে অন্যজনে শুনতো। সেহিসেবেও আমাকে ফেল করানোর জন্য চেষ্টার কমতি ছিলো না। মা বাবার দোয়া আমাকে এস.এস.সি পরীক্ষায় সফলতার সাথে কৃতকার্য হতে সহায় করে।
আজকের দিন পর্যন্ত আমি সফল কি না জানি না, তবে সফলতার দারপ্রান্তে। কারণ জীবন সংগ্রামে ঠিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছি। পরিবার থেকে এইচএসসির পরে বলে দেয় তুর ইচ্ছে হলে পর আবার ইচ্ছে না হলে পড়িস না। আমিও সেদিন হাল না ছেড়ে লেগেছিলাম, যার ফলস্রোতে আজকের আমি বিবিএস ভালো রেজাল্ট করে বর্তমানে মাস্টার্স এ অধ্যায়ন রতো।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ৬বছরে আলহামদুলিল্লাহ ৭৩লাখ সেলস হয়। যা আমার জন্য অনেক বড়ো চ্যালেঞ্জ।
আজকে মা বাসায় নেই, নানুর বাসায় গিয়েছেন, সেখান থেকে না হলে ১০বার কল দিয়েছেন, কি করছি খাইছি কি না এইসব প্রশ্ন বার বার। তবে মা নানুর বাসায় গেলেও নানা নানু বেঁচে না থাকায় খুব কষ্ট পাচ্ছেন জানি। ১বছর হয়ে গেলো ওনারা ৫মাসের ব্যবধানে দু'জনি দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন। গতবছর ঈদের সময় নানু আমাকে সালামী দিচ্ছেন আর আমি নানুকে রেখে দিতে বলছি, তখন নানু বলেন, নাতি আগামী বছর যদি আমি না থাকি কে দেবে সালামী, সত্যি সত্যি নানুর কথা ঠিক হলো। সামনে রমজান তারপর ঈদ। আর এইবার ঈদে নানা নানুকে খুব বেশী মিস করবো। নানুর বাসায় ছেলে মেয়ের মধ্যে সবার বড় আমার মা, নানা সবসময় বলতেন আমার মেয়েকে দেখে রেখো, আমার মেয়ে বিয়ের পর থেকে খুব কষ্ট করেছেন। একি কথা আমার এলাকার মুরুব্বি দাদার বন্ধুর মুখে প্রায় সময় বলতে শুনি। আমি জানি না মা বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো কি না? তবে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাদের সুখের জন্য লড়াই করে যাবো।
মা বাবার প্রতি অনেক বেশী কৃতজ্ঞ তাদের দোয়া আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।
আর প্রিয় প্লাটফর্ম "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন" সফলতার গল্পের পাশাপাশি ব্যর্থতার গল্প শুনেন। সবকিছুর মূলে একমাত্র অবদান শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক, লাখো যুবকের স্বপ্নদ্রষ্টা, নতুন প্রজম্মের আইডল জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের। স্যারের প্রতি অনেক বেশী কৃতজ্ঞ। মহান প্রভু স্যারের নেক হায়াত বাড়িয়ে দিন। পরিবারের সবাইকে সুস্থ ও নিরাপদ জীবন দান করুন।
চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল, এবং গ্রুপের সকল আজীবন সদস্যবৃন্দের প্রতি রইলো রক্তিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন🌺🌺🌺
সকলের ভালোবাসায় প্রিয় প্লাটফর্ম অনেকদূর এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আমার অগুছালো লেখা পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও স্বাগতম।
সকলের ভালোবাসা নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই।
আলহামদুলিল্লাহ আমাদের পরিবারের মাধ্যমে একটি "মাদ্রাসা" পরিচালিত হয়ে আসছে প্রায় ১৬বছর। কারো থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয় না, সবাইকে ফ্রিতে পড়ানো হয়। দোয়া করবেন এই মানবিক কাজ গুলো সামনেও যেনো অব্যাহত রাখতে পারি। তাছাড়া রমজান মাস সহো সারাবছর বিভিন্ন দান অনুদান প্রদান করে আসছেন পরিবারের সদস্যবৃন্দ। এইসব প্রকাশ্যের চেয়ে গোপনে দেওয়া হয়, যাতে গরীব অসহায়দের হাতে হাতে পৌঁছে যায়।
আজকে এই পর্যন্ত সকলের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করি।
পরবর্তীতে আমার "শ্রদ্ধেয় বাবার" সংগ্রামী জীবন তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে - ৭৫৭
তারিখ- ২/০৩/২০২২
মোহাম্মদঃ ফয়েজ
"ফটিকছড়ি উপজেলা এম্বাসেডর" এবং
"কমিউনিটি ভলান্টিয়ার" নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
ব্যাচঃ ১০ম
সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৭৩৮৭
অধ্যায়নঃ সরকারী কর্মাস কলেজ, ব্যবস্থাপনা বিভাগ(এমবিএ)
উপজেলাঃ ফটিকছড়ি
জেলাঃ চট্টগ্রাম
রক্তের গ্রুপঃ O+
প্রতিষ্ঠানঃ M.R Enterprise
https://www.facebook.com/MR-Enterprise-101644829017300/
আমার প্রতিষ্ঠান মূলত হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিক, গ্যাস,