খুজি, কিভাবে কি করবো, কি নিয়ে কাজ করবো ইত্যাদি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাক্বাতুহু,
আলহামদুলিল্লাহ্, সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্ তায়া’লার ।
প্রিয় ফাউন্ডেশনের সকল প্রিয় ভাই-বোন আপনারা কেমন আছেন ? আশাকরি করোনার চলমান পেন্ডামিক পরিস্থিতির প্রতিকুলতা সত্বেও পরম দয়াময়, দয়ালু আল্লাহর অশেষ রহমত ও বরকতে সকলে অনেক ভালো ও সুস্থ্য আছেন।
ইনশা-আল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো এবং সুস্থ্য আছি, আলহামদুলিল্লাহ্।
শুকরিয়া আদায় করি, দয়াময় দয়ালু আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন সৃষ্টির সেরা জীব, মানুষ হিসাবে মর্যাদা দিয়ে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
প্রিয় রাসুল (সাঃ) এর প্রতি, অগণিত দুরুদ ও সালাম পাঠ করছি। যিনি সমগ্র সৃষ্টির শ্রেষ্ট মহামানব, স্বয়ং আল্লাহ্ নিজেও যার প্রশংসা করেন, যার সুপারিশ ব্যতিত কাল হাসরের দিনে আমরা সকলেই অসহায়, যিনি শায়িত আছেন পবিত্র ভূমি মদীনা মনোয়ারায়। আশা ও দোয়া করি সকলের যেন তৌফিক হয় জিয়ারতে মদীনা (সাঃ)।
প্রিয় মা-বাবার প্রতি পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা, যাদের উচিলায় এই ধরায় জন্ম নিয়ে আজ আমরা নিজের পরিচয়ে নিজেকে আলোকিত করতে ও জীবনকে রাঙ্গাতে নানান স্বপ্ন দেখার প্রয়াস পাচ্ছি।
গভীর শ্রদ্ধা ও হৃদয় নিংড়ানো আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই, শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আবিস্কারক, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ মেন্টর, আমাদের তথা বাংলাদেশের লক্ষলক্ষ তরুণ-তরুণীর হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নেয়া শ্রেষ্ঠ আইডল, ভালোমানুষ গড়ার শ্রেষ্ট কারিগর, উদীয়মান উদ্যোক্তাদের পথ প্রদর্শক, অনুপ্রেরণা ও স্বপ্ন দেখানো আলোর পথের দিশারী, জীবন্ত কিংবদন্তী, “নিজের বলার মতো একটি গল্প” ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ নায়ক, প্রাণপ্রিয় ‘জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ’ স্যার এর প্রতি।
আমার অনুভূতি, আশা ও প্রত্যাশা ভালোবেসে শেয়ার করলাম, সকলের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ কাম্য।
পারিবারিক পরিচিতিঃ
পারিবারিকভাবে নামের শেষে ঢালী ব্যবহার করি। এ বিষয়ে তেমন কোনো ইতিহাস আমার জানা নেই। প্রিয় স্যারের কথাই যদি প্রথমে বলি, “আমরা আমাদের কত পুরুষ পর্যন্ত, খবর রাখি বা রাখার চেষ্টা করি।”
আমার প্রয়াত প্রিয় বাবার কাছে জেনেছি, আমার দাদার বাবা (বড় বাপ-এর) ০২ ভাই ছিলো। তারপর দাদারা ০৫ ভাই। বাবার ০২ ভাই ও ০২ বোন (আরো ০৩ ভাই ছিলেন, যারা ১৯৪৫ সাল পরবর্তি সময়ে পরপর মৃত্যুবরণ করেন)। বাবা-মা’র সংসারে আমরা ১০ ভাই-বোন।
স্থানীয় ভাবে আমার বাবাকে সবাই একটু আলাদাভাবে সম্মান করতো। কারণ, কৈশরে বাবা ছিলেন গ্রামের একমাত্র মেট্রিক পাশ এবং তিনি ১৯৪৭ সালে তৎকালীন বৃটিশ রাজকীয় আর্মিতে চাকুরী পেয়েছিলেন। তখন থেকে সবাই ভালোবেসে বাবাকে “বাদশা” বলে ডাকতো বা সম্বোধন করতো। আর অন্যদিকে বাবাও ‘মা’কে তখন থেকে আমৃত্যু “রাণী” বলে ডেকেছেন। এখনো বাবার শুভানুধ্যায়ী সাথে দেখা হলে মাঝে মাঝে আলোচনা শুনি। বাবা ছিলেন খুবই নিরঃঅহংকার, অমায়িক ও সৎজ্জন একজন মানুষ। বাবার সান্নিধ্যে উপকৃত হয়েছেন, এমন বয়োস্কদের মুখে এখনো তার প্রশংসা শুনলে গর্বে বুকটা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠে।
আজ বাবা নেই। বাবার অনেক স্মৃতি মনেপড়ে চোখের কোনে জমে উঠা জলের ফোটা অশ্রু হয়ে ঝরে গেলো, লিখতে গিয়ে লেখাটাও থেমে যাচ্ছিল। বাবার নিকট শুনা স্মৃতি তথ্য, অন্য কোন এক সময় সবার মাঝে শেয়ার করবো, ইনশা-আল্লাহ।
জন্মঃ
আমার জন্ম ১৯৬৭ সালে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায়, যদিও কাগজে-কলমে পরে। সন্তানের জন্ম তারিখ লিখে রাখার বর্তমান আধুনিক রেওয়াজ আমাদের পরিবারে তখনও অভ্যাস হয়ে উঠেনি। ৫ সন্তানের পর (বর্তমানে ৩ জন জীবিত) আমার জন্ম হয়। অনেক আরাধনা ও আদরের ধন ছিলাম। শুনেছি জন্মের পর, আমি অনেক কঠিন অসুস্থ্যতার মধ্যে ছিলাম। আমার মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, ফুফা-ফুফি, খালা-খালু, বড়বোন, প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজন অনেককেই আমার জন্য বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। আমার প্রতি মায়ের রাগ হলে তিনি বলেন,“জন্মের পর হতে অদ্যাবধি নাকি আমার কিছু হলে মা অনেক কষ্ট পান”। মাঝে মধ্যে এমনও হয় যে, আমার খবর/ফোন পেতে দেরী হলে মা অনেক চিন্তা করেন। তখন আমরাও দেখি মায়ের প্রেসার অনেক বেশি, যা ডাক্তার দেখালে ঠিক পাই। তা্ই হয়তো মায়ের কোন কষ্ট হলে, এখন আমিও কষ্ট পাই। আমি মাঝে মাঝে মাকে বলি, “যত খুশি বকা দেন, শাসন করেন তবে বদদোয়া দিবেন না। বেশি বেশি দোয়া করেন যাতে সব ভাই-বোন “ভালো মানুষ হয়ে, ভালো ভালো কাজ করতে পারি।” যেমনটি আমার বাবাও তার জীবদ্দশায় মানুষের জন্য করে গেছেন। আমি ধন্য, মা এখনও আমাকে শাঁসায়। মায়ের শাসন আমাকে অনেক আনন্দও দেয়। আল্লাহর রহমতে আমাদের “মা”, আমার বেহেস্ত, এখনো বর্তমান আছেন, আলহামদুলিল্লাহ্।
আমরা ২ ভাই, ১ বোন এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে প্রিয় স্যারের দেয়া “প্রতিদিনের সেসন” অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেদেরকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করে যাচ্ছি, ইনশা-আল্লাহ্।
বাল্যকালঃ
মা-বাবার অনেক আরাধনার ধন হওয়ায় হয়তো আমার দুষ্টামি ছিলো অপ্রতিরোধ্য। একবার স্কুলে যাবার পথে মৌমাছির চাকে ঢিল মেরে মৌমাছির কামড়ে মরি মরি অবস্থা হয়। তারপর মায়ের আচল থেকে বাবা, তার হেফাজতে নিলেন কর্মস্থল ঘোড়াশাল, নরসিংদী। চিকিৎসা শেষে হেফজ্ খানায় ভর্তি করালেন হাফেজ হবো আশায়। কিন্তু অতিরিক্ত দুষ্টামির জন্য পিটুনি খেয়ে দুই, দুইবার পলায়ন করি। ১মবার নানান জায়গা ঘুরে সপ্তাহান্তে গ্রামে, আর ২য়বার ট্রেনে চড়ে সোজা চট্টগ্রাম, পতেঙ্গা বিমান বন্দর (বিনা ভাঁড়ায়)। সেখানে বড়বোনের জামাই বিমান বাহিনীতে চাকুরি করতেন, তিনি উদ্ধার করে বাড়িতে ফেরত দিয়ে দিলেন। আর হাফেজি পড়া হলো না, মাঝে ৩ বছর সময় নষ্ট করেছি।
শিক্ষা জীবনঃ
অবশেষে স্কুলে ভর্তি, দুষ্টামী নয়, সুবোধ বালক, খুব ভালোভাবেই লেখা-পড়ায় মনোনিবেশ করি। ১ম-৮ম শ্রেনী পর্যন্ত বরাবর ক্লাসে ১ম, ২য়, ৩য় স্থান দখলে থাকতো, কারন সহপাঠিরাও কম ছিলোনা। নবম শ্রেনীতে উঠার পর শুরু হলো জ্ঞান-বিজ্ঞানের গ্রুপিং, সেই সাথে নতুন বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে আবারো দুষ্টামি, ফাঁকিবাজি আর দুরন্তপণা। দিনদিন রেজাল্ট খারাপ করায় ’মা’ ধমক আর চোখ রাঙ্গানি দেয়। বাবা বাড়িতে না থাকায়, মায়ের কথার গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো রাগ করে লজিংয়ে চলে যাই। শাহেন-শাহী জগত, নিজেই রাজা। বাচ্চাদের সাথে মাতাব্বরী আর স্কুলে যাওয়া-আসা করি, লেখা-পড়া তেমন ভালো হচ্ছিলোনা।
মোটামুটি রেজাল্ট নিয়ে ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাশ করি। কলেজে পড়ার জন্য স্বনাম ধন্য “বিএএফ শাহীন কলেজ”, পতেংগা, চট্টগ্রামে গিয়ে ভর্তি হই। বোন-দুলাভাইয়ের নিকট থেকে অতিরিক্ত আদর-সোহাগ ও স্বাধীনতায় আবারো লেখা-পড়ায় ফাঁকি। বাড়ি থেকে খরচ আসেনা, ছোট ছোট ৪ ভাই-বোন তখন স্কুল পড়ুয়া। মা-বাবা খরচ চালাতে হিমসিম খান। যৎ-সামান্য পেনশন আর সামান্য সাংসারিক আয়ে বিরাট টানা-পোড়ন চলছিল। বাড়িতে থাকাকালীন টাকার ধান্ধায় সংসারের কিছু কিছু কাজ করতাম। শহরে এসে কলেজে ভর্তির পর ঐকাজগুলো কাজের লোক দিয়ে আর ভালো চলতোনা। আমাকে খরচ দিলে ছোট ভাই-বোনদের শিক্ষার খরচে টান পড়ে। অন্যদিকে বোন-দুলাভাইও সামাল দিতে হিমসীম খায়। দুলাভাইও পেনশনভোগী, সামান্য ব্যবসায় তাদের ৪ সন্তানের লেখা-পড়ার খরচ ও সংসার চলে। অবশেষে দুলাভাইর অনুপ্রেরণায় বিমান বাহিনীতে চাকুরির জন্য একই বৎসর চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এবং ঢাকায় গিয়ে পরপর ৩ বারের চেষ্টায় ইন্টারভিউতে টিকি। কলেজের পাঠ চুকিয়ে চলে এলাম সোনার হরিণ চরাতে সামরিক বন্দীশালায়, হয়ে গেলাম একজন বিমান বাহিনীর গর্বিত সামরিক সদস্য।
চাকুরিকালীন অনেক কষ্টের পর ডিগ্রী পরীক্ষাটা দিয়ে ছিলাম, কিন্তু ১ সাবজেক্টে মাত্র ৩ নাম্বারের জন্য ফেল করি, এরপর কষ্ট ও রাগে আর অবহেলায় পরীক্ষা দেইনি, যা এখনও আমাকে বিচলিত করে। প্রিয় স্যারের উক্তিও এখানে মিলে যায়, “রাগ করলে নিজেরই ক্ষতি হয়, করতে হবে নিজের সাথে জিদ”। তবে নিজের জন্য পড়া-লেখা না করলেও প্রতিনিয়ত অন্যকে নিঃবৃত্তে সহায়তা করেছি। তারা অনেকেই ভালো রেজাল্ট করে আজ ভালো পজিশনে, ভালো কাটছে তাদের দিন, কেউ তা মনেও করেনা। তবে, কোন অভিমান বা হিংসা নয়, আনন্দ পাই এই ভেবে যে, তারাতো ভালো আছে। প্রিয় স্যার বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করলে, জীবিকার জন্য কাজের অভাব হয় না”। এই হিসেবে আমার জীবিকায় আমি অনেক ভালো আছি, আল-হামদুলিল্লাহ্।
চাকুরী কালঃ
লেখা-পড়া ছেড়ে চাকুরিতে এসে মহাবিপদ। কারণ, বিমান বাহিনীর ট্রেনিংয়ে বিমান সংক্রান্ত অনেক লেখা-পড়া, তাও আবার বাংলায় না, ৯৯% ইংরেজী ধারায়। হায়রে কপাল, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। এখানে কঠিন শৃংখলাবদ্ধ জীবন। যদিও নিজের খাওয়া-দাওয়া ও টাকা-পয়সার জন্য আর চিন্তা রইল না।
প্রথম যেদিন ট্রেনিং সেন্টারে আসি, সেদিন প্রশিক্ষক হাসির ছলে প্রত্যেককেই সাথের ব্যাগসহ (১০ কেজি) প্রায় ৫০ গজ পথ ব্যাঙ্গ লাফ দিয়ে অতিক্রম করান। এটা এক ধরনের প্রারম্ভিক সাজাও বলতে পারেন। সেই সাথে সতর্ক করেন যে, “এটা সামরিক ট্রেনিং সেন্টার, বাবার হোটেল না”। একটানা ১৮ মাস ট্রেনিং করেছি, কোনদিন কেনো, আজও ভুলিনি, মনে আছে সেই কষ্টের দিনগুলোর কথা, তাই শেয়ার করলাম। আরো অনেক কঠিন কঠিন প্রক্রিয়ার ট্রেনিং হয়। তখন ট্রেনিংয়ের মাঝেও ফাঁকি দেয়ার সুযোগ খুজেছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করলে রিলাক্স পাওয়া যায়। আমি প্রতিযোগিতা নাম লেখাই আর ট্রেনিং থেকে নিজেকে রিলাক্সের সুযোগও পাই।
সামরিক বাহিনীতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সুযোগ আছে। পরবর্তীতে সম্মিলিত বাহিনীতে ১৯৯৫ সালে (ক্বোরআন) ক্বেরাত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১ম হই। তখন আমি ১ম পুরস্কার হিসেবে সরকারী খরচে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করি। অতঃপর আর কোনদিন প্রতিযোগিতার জন্য সেভাবে ক্বোরআন শরীফ পড়িনি বা তেমন পড়ার চেষ্টাও করিনি।
আল-হামদুলিল্লাহ্, এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে আবার “এসো ক্বোরান শিখি” কাফেলার ক্লাসে যুক্ত হয়ে পবিত্র ক্বোরআন শরীফ চর্চার পূণঃপ্রেরণা পাই এবং মজার বিষয়, “এসো ক্বোরান শিখি” কাফেলার তৃতীয় ব্যাচেও পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি। শুকরিয়া, আমি এখন নিয়মিত অর্ধ থেকে ১ পারা পর্যন্ত ক্বোরআন শরীফ প্রতিদিন পাঠ করে থাকি। আন্তরিক দোয়া ও ধন্যবাদ, প্রিয় স্যারকে এবং “এসো ক্বোরান শিখি” কাফেলার সকল শিক্ষকবৃন্ধকে।
২০০৫ সালে আমার বাবা মারা যান। ঘোর অন্ধকার নেমে আসে আমার চারিদিকে। যতদিন বাবা ছিলেন, কোন দিন ঠিকমতো সংসারের খোজও নিতাম না। শুধু মাসে মাসে সামান্য কিছু টাকা পাঠিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছি। কিছু বললেও গায়ে মাখিনি। বাবা মৃত্যুর পর দায়িত্ববোধ থেকে সংসার, মা, ভাই-বোনসহ সবারই খোজ-খবর নিতে থাকি। বাবার মৃত্যুকালে আমি বাবার বিছানায় পাশেই ছিলাম। প্রসঙ্গঃত, বাবাকে কথা দিয়েছিলাম, মায়ের কথা শুনবো আর ভাই-বোনের খেয়াল রাখবো। জানিনা সেদিন বাবা খুশি হয়েছিলেন কিনা। বাবার সাথে কথা বলার সময় আমি ঝিমুচ্ছিলাম, বাবা দেখে বললেন, আমার পাশে শুয়ে একটু রেস্ট নেও। কারন আমি ছিলাম, ঐ রাতে জার্নি করে ক্লান্ত । বাবার কথামতো পাশে শুয়েও ছিলাম। কিছুক্ষন পর হঠাৎ উঠে দেখি, বাবা কেমন জানি করছে, বুঝতে বাকি রইলনা। সাহস নিয়ে মা’সহ সবাইকে ডেকে আনি এবং কলেমা ও কোরান শরীফ পাঠ করতে থাকি। এরই মধ্যে বাবা নিস্তব্দ হয়ে যায় (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিয়ুন)। সবাই কান্নাকাটি শুরু করে, আমি তাদের শান্তনা দিয়ে বিলাপ করে কান্না না করে বাবার জন্য দোয়া করতে বলি।
বাবার মৃত্যুর পর অনেকেই আমাকে জায়গা-সম্পত্তি ভাগা-ভাগি করতে বলাবলি করে। তখন আমি ভাই-বোনদের সাথে একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নেই যে, যতদিন মা আছেন, ততদিন কোনো ভাগাভাগি হবেনা, আজো ভাগাভাগি করিনি। সবাই মায়ের সঠিক সেবা-যত্ন ও কথা মেনে চলবো। তারপরও কে শুনে কার কথা, অন্য ভাইগন যে যার মতো নিজেদের গুছিয়ে চলেছেন। কিন্তু আমি আজ অবধি চেষ্টা করেও দেখিনি এবং নিজের বলে কোন কিছু আজও দাবি করিনি। যেতেতু চাকুরি করি, তাই স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকি। কিন্তু মা, আমার জন্য আজো ভাগ করে যা কিছু রাখে, আমি সব আমার মায়ের জিম্মায় রেখে দেই। যতদিন আমার মা জীবিত আছেন, মায়ের কথাই আমার প্রথম আর মা’য়ের কথাই আমার শেষ কথা। তারপর হতে মায়ের সাথে সংসারের খুটিনাটি বিষয়ে সহযোগিতা শুরু করি। ৪ ভাই প্রবাসী হয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর ছোট ১ ভাই, ১ বোন, ২টা ভাগনির বিয়ের ব্যবস্থায় শরীক হই। ভাইদেরকে বিদেশ প্রেরণে সহায়তা করি, বোন ও ভাগনির লেখা-পড়া ও বিয়ের ব্যবস্থায় নিজেকে সম্পৃক্ত করি। আমাকে সর্বদা ৪ ভাই প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তানদের খোজ-খবর নিতেও সতর্ক থাকতে হয়। আমি ও ভাইয়েরা কেউ বাড়িতে না থাকায় প্রতিবেশিদের দ্বারা প্রতিনিয়ত ঝামেলা বাধানোর পাঁয়তারা সৃষ্টি হয় আর তার সমাধানের জন্য আমাকে সদা কড়া নজরদারী করতে হয়। পরিনামে মামলার হুমকি, এমনকি আসামী পর্যন্ত হয়েছি এবং ঢাকায় থেকেও বাড়ীতে যেতে পারিনি। তারপরও মাথা ঠান্ডা রেখে বাবাকে দেয়া ওয়াদা আজও নিয়ন্ত্রণে রেখে চলছি, ইনশা-আল্লাহ। প্রিয় স্যারের সাথে সাথে আমারও সবার প্রতি অনুরোধ, মা-বাবাকে কেউ অবহেলা করবেন না যেনো।
১৯৮৮ সালে চাকুরিতে যোগ দিয়ে মাত্র ৫৫০/- টাকা বেতন পাই। যেহেতু সে সময় বাবা জীবিত ছিলেন, বাড়িতে বেশি টাকা দিতাম না। যে টাকা পাঠাতাম, স্বল্প বলে তার গ্রহন যোগ্যতাও তেমন ছিলনা। তবুও প্রতিমাসে নিয়মিত সাধ্যমত পাঠাতাম। এখন শুধু মায়ের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে টাকা দেই। সাংসারিক কোন ঝামেলা হলেই সব দায়িত্ব যেনো আমারই, কারন ভাইয়েরা সবাই প্রবাসী, সাংসারিক ঝামেলায় তাদের কারো যেনো কোনো মাথা-ব্যথা নেই। এনিয়ে মাঝে মধ্যে আমার সংসারেও সৃষ্টি হয় তুমুল হাঙ্গামা। কিন্তু তারপরও সর্বদাই শাখের করাত আমার দিকে। ভাই-বোন সবাই কিন্তু হিসাব করে চলে, শুধু আমি হিসাব করতেই কেমন যেনো একটা আলাদা পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যা আমারও বুঝতে কষ্ট লাগে। কারো প্রয়োজন হলেই আমাকে খোজে, সায় দিলে ভালো, না দিলে শুনতে হয় তিরস্কার। কিন্তু আমার প্রয়োজেনে কেউ কোথাও নেই। মনে হয়, প্রয়োজনেই, আমি প্রিয়জন।
সৈনিক জীবন কতোটা কঠিন, তা শুধু সৈনিক মাত্রই বুঝেন, যেমন- মাকাল ফল। বাকিরা শুধু বাহিরটা দেখেন, ভেতরটা কেউ কোন দিনই দেখতে বা দেখার সুযোগও নেই। কথায় আছে--- সাধ থাকে অনেক, কিন্তু সাধ্য হয়ে উঠেনা। এভাবেই দেখতে দেখতে ১, ২ করে ৩৪ বৎসর চাকুরি শেষ বর্তমানে আমি এখন অবসরপ্রাপ্ত একজন মানুষ হয়ে গেছি।
প্রেম, বিবাহ ও সংসারঃ
চাকুরিজীবি ছেলের বিয়ে কোনো বাবা-মা কখনোই মনেহয় আটকাতে পারেনা, তেমনটি হয়তো ঘটেছিল আমার জীবনেও। সবেমাত্র একজনকে পছন্দ (প্রেম) করতে মনের মধ্যে আশা জেগেছে। এমন সময় কানে আসে, ঘটক ঘুরঘুর করছে। দুলাভাইকে জানাই, বাবা তাকে নিয়ে সোজা কনের পিত্রালয়ে হাজির। বললেন, কনে আমার চাই-ই-চাই। কনের পিতা-বরের পিতা একসময়ের অন্তরাত্মা বন্ধু। উভয়ে হতবাক, পরিশেষে যা হবার তাই হলো, আরজি মন্জুর, শুভক্ষনে বিবাহ সুসম্পন্ন। প্রথমে অবশ্য বলেছিল, এখুনি এত তাড়া কেন ? আমার উত্তর ছিলো একটু দেখে আসুন, পছন্দ না হয়, পরেই হবে। আর হলোনা প্রেম নিবেদন, রয়ে গেলো বিরহভরা মন।
কিছু বুঝতে না বুঝতেই স্বামী নামের আসামী। বধু বেশে আমার মেধাবী মানুষটা, গোঁ-ধরলেন, লেখা-পড়া চালাতে হবে। আমার উত্তর আকাশে তখন দেখা দিলো কালো মেঘ, কাল-বৈশাখী ঝড়ের উপক্রম। চাকুরির বয়স মাত্র ৪ বৎসর। পারিবারিক টানাপোড়েন, নববিবাহিত জীবন। সমাধানঃ- শশুরের বাসার পাশেই ছিলো কলেজ, “মাত্রতো ২ বছর? বাবা নিরাশ করোনা”। পাত্র বেচারা ছিলো কিনা আবার শশুরের প্রাক্তন ছাত্রও বটে, একান্ত বাধ্যগত,না বলার সাহস হয়? শ্রদ্ধায় অবনত মস্তক, ভক্তিতে মুক্তি।
তারপর? গ্রামীন সমাজ, পাছে লোকে কিছু বলে। স্ত্রীকে নিয়ে ক্রমাগত সংসারে দুরত্ব তৈরী হয়। কুল রাখি, না জাত রাখি। চলি নিজের সিদ্ধান্তে, না পারি পাখি, খাঁচায় বন্ধি করতে, না পারি পারিবারিক কন্ট্রোল মানাতে ও মানতে। নিরবে আত্মযুদ্ধ চলে, যা শান্তিচুক্তিরও আওতা বহিঃর্ভূত। অদ্যাবধি চলছি, কখনো মেনে, কখনো মানিয়ে। মাঝে মাঝে এখনো স্তব্ধ হয়ে যাই। তবে চলার পথে পাশ কাটিয়ে যেতে কখনো কোনো বড় দুর্ঘটনার স্বীকার আজ অবধি হয়নি, আলহামদুলিল্লাহ।
আমার স্ত্রীও চাকুরি করে। তারপরও মাঝে মাঝে---(মানুষের মন? অনেক কঠিন লেসন?)। অনেক ভালো আছি, শুকরিয়া মহান রবের দরবারে। বিয়ের পর সবাই যেভাবে সংসার করে, তার চেয়ে অনেক ভিন্নতায় চলছে আমার সংসার জীবন। যদি ভাবি সূখী, সুখের কোন কমতি নাই। আর যদি ভাবি দুঃখী, তাতেও কুল কিনারা নাই। মন মাঝি তোর বৈঠা নেরে আমি আর------ এমনও পরিস্থিতি এসে ধোকা দেয় মনে। মন ঠিক, তো সবই ঠিক। মনের সূখই, আসল সুখ। কারন দুঃখ যার বেশী, তার চাইতেতো ভালোই আছি, তাতেই কি শুকরিয়া করা ভালো নয়? আমার মতে--- দাম্পত্য জীবণ, দুর্ভেধ্য এক কৃষ্ণগহবর। আমরা দাম্পত্য জীবনে একমাত্র কন্যা সন্তানের জনক-জননী।
প্রিয় স্যার বলেন --- সময় নিন, সময় দিন, সময় বদলাবে, সময়ই একদিন সব ঠিক করে দিবে। আমিও সেইদিনের প্রতিক্ষায়, ইনশা-আল্লাহ্।
চাকুরী শেষ, কি করবো?
আমি খুজে পেলাম, নতুন ভাবনা, নতুন ঠিকানাঃ--“নিজের বলার মতো একটা গল্প” ফাউন্ডেশন। এখানে আমি খুজে পাই শান্তনা, খুজে পেয়েছি অনেক বিরাট একটা আশার স্থল, অনেক অনেক ভালো মানুষদের ভালোবাসা।
২০১১ সালে একবার মাছ চাষের উদ্যোগ নিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ্য টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। শুধুমাত্র জ্ঞান ও বিচক্ষনতার অভাবে এবং কতিপয় মানুষের অসহযোগিতা ও প্রতারণার ফাঁদে সমূলে চালান হারানোর পরিস্থিতি হতে কোন মতে নিজেকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিলাম। পক্ষান্তরে তারা ক্ষনকালে লাভবান হলেও, আজও সফলতার দেখা পায়নি। মাঝে হতাশ ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি আমি।
ধন্যবাদ প্রিয় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে, ভালোবাসার এই “নিজের বলার মতো একটি গল্প” ফাউন্ডেশনের সন্ধান আমাকে সচেতন থাকার জন্য আজ অনেক সাহস যুগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন কিছু না কিছু জানছি, আর শিখছি।
চাকুরি শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিছুদিন আগেও যখন এমন চিন্তায় হতাশাচ্ছন্ন। কি করবো-না করবো, ভাবতে-ভাবতে ইন্টারনেট, ফেইসবুক, ইউটিউবপ্রভৃতি – খুজি, কিভাবে কি করবো, কি নিয়ে কাজ করবো ইত্যাদি। তখনই আমার মনে পড়ে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসেপ্রবাসে বসে টিভিতে দেখেছি প্রিয় স্যারের; “চাকুরি করবো না, চাকুরি দেবো,” এমন এক আলোচনা, আসুন তৈরী করি প্রত্যেকে “নিজের বলার মতো একটি গল্প” এমন কিছু। তখন আমি, “আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশন, ডিআর কঙ্গো”তে কর্মরত ছিলাম। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে দেশে ফিরে ইন্টারনেট খুজতেই পেয়ে যাই প্রিয় স্যারের কিছু ভিডিওএবং সেসন।
একদিন একটা ভিডিওতে দেখি, প্রিয় মেন্টর “ইকবাল বাহার জাহিদ” স্যারের সাথে আমার চাঁদপুর জেলার “ইসমাইল হোসেন ইমতিয়াজ ভাই তার- নগদ বাজার.কম” এর কর্মময় জীবনের গল্প শুনাচ্ছেন । সে দিনের গল্প শুনে আমি অভিভূত হই এবং মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই যে, অবসর পরবর্তী বাকি জীবনে একজন ভালো মানুষ হয়ে কিছু সামাজিক ও মানবিক কাজ করবো. ইনশা-আল্লাহ্। আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে ভালোবাসার এই ফাউন্ডেশনের শিক্ষা গ্রহনের সিদ্ধান্তে উপণীত হই।
সেই থেকে প্রতিনিয়ত শ্রদ্ধেয় মেন্টর ও প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের ইউটিউব এর ভিডিও দেখা শুরু করি। আমি আগে জানতাম না যে, “নিজের বলার মতো একটি গল্প” ফাউন্ডেশন নামে গ্রুপ আছে। এখানে ভিডিওগুলো অনেক ভালো লাগে, অনেক দিন ধরে দেখছি, যা আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে, তাই প্রতিদিন লেগে আছি। প্রথমে ভিডিওগুলোতে লাইক দেই, সাবস্ক্রাইব করি, নোটিফিকেশন আসতে থাকে, ফাউন্ডেশন সম্পর্কে জানতে থাকি এবং এরই মধ্যে নিজে নিজেই গ্রুপে রেজিস্ট্রেশন করে একজনআজীবন সদস্য হতে সমর্থ হই।
গ্রুপে একদিন কমেন্টস করি চাঁদপুর জেলা টিমে যুক্ত হতে চাই। মিনিটের মধ্যেইরিপ্লাই দেন, প্রিয় Mehedi Munshi ভাই। লিখেন- “আপনি কি প্রতিদিন ১ ঘন্টা সময় দিতে পারবেন?” পরে গ্রুপ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত অবগত হই। অবশেষে, মার্চ ২০২১ -এ “চাঁদপুর জেলাটিমের” সুপার একটিভ জনাব মেহেদী মুন্সি ও মেজবাহ আহমেদ –ভাইয়ের আন্তরিক সহযোগিতায় চাঁদপুর জেলা” মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হই (আল-হামদুলিল্লাহ্)।
তখন থেকেই “নিজের বলার মতো একটি গল্প” ফাউন্ডেশনে যুক্ত থেকে প্রতিনিয়ত স্যারের দেয়া প্রতিদিনের সেসন হতে সম্যক শিক্ষা অর্জন করে যাচ্ছি। প্রতিদিনই একটু একটু করে জানতেছি, শিখতেছি, মানার ইচ্ছা ও চেষ্টা করে যাচ্ছি। ফাউন্ডেশনে যুক্ত হবার পর জানার আগ্রহ বেড়েই যাচ্ছে এবং আশা আছে নতুন কোন উদ্যোগ বা ব্যবসা নিয়ে সহসাই কাজ শুরু করতে পারবো, ইনশা-আল্লাহ।
আলহামদুলিল্লাহ্, ইতোঃমধ্যে স্বল্প পরিসরে খাটি পণ্য (সরিষার তেল, ঘি, মধু, কালো জিরার তেল, নারিকেল তেল, সিয়া সীড, এমসিটি ওয়েল, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার প্রভৃতি) নিয়ে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করেছি। এতদিন শুরু করিনি কারন আমি একজন সক্রিয় সামরিক কর্মচারী ছিলাম তাই।
তবে সবার আগে একজন ভালো মানুষ হতে চাই। সবার সাথে মিলেমিশে ভালো কাজ করতে চাই। এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হবার পর হতে বুঝতেছি যে, জীবনে যা পাইনি, যে স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু এখনো পূরণ করতে পারিনি, প্রিয় স্যারের দেয়া শিক্ষায় পজিটিভিটি চর্চা বা উত্তম অনুশীলনকরা শিখছি। প্রিয় স্যারের কথায় প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত হচ্ছি। মানুষের জন্য কাজ করলে, টাকা বা রিজিকের অভাব হয় না। এখানে প্রিয় স্যারের দিক-নির্দেশনা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ-সমন্বয়ের একটা সুন্দর মিল পাওয়া যায়। প্রতিদিন এভাবে সেসন চর্চা করলে কারো পক্ষেই কখনো বিপথে যাবার বা চিন্তা করারও সুযোগ নেই। কারন এখানে সবার আগে নিজেকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত করার শিক্ষা পাওয়া যায়।
বর্তমানে আমি চাঁদপুর জেলার মেসেঞ্জার গ্রুপে যু্ক্ত আছি, প্রতিদিন অনলাইনে সেসন-চর্চা ক্লাসে যুক্ত হই। অনলাইন মিট-আপ সম্পর্কে আগে কিছুই জানতাম না, এখানেই প্রথম শুনেছি। গুগল মিট ইনস্টল করে প্রথম দিন মিটা-আপে পরিচয় দিতে গিয়ে ইতস্ততঃ বোধ করি। ইনশা-আল্লাহ, এখন অনেক মিট-আপেই যুক্ত হয়ে সবার সাথে পরিচিত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনেকরি। চাঁদপুর জেলায় স্যারের দেয়া, সেসন নিয়ে প্রতিদিন ১ ঘন্টা আলোচনা হয়। এখানে অনেকেই ভালো ভালো পরামর্শ প্রদান করেন, যা অনেক ভালো লাগে।
আলহামদুলিল্লাহ, মাঝে মাঝে বিভিন্ন জেলা ও দেশের মিট-আপেও যুক্ত হতে পারছি। চাঁদপুর জেলা টিমের ৫০০তম সেসন চর্চা পূর্তি উদযাপনের স্বাক্ষী হতে পেরেছি। প্রিয় স্যারের সাথেও সরাসরি দেখা করতে পেরেছি। যা আমাকে প্রতিনিয়ত আরো ভালো থাকার উপায় খুজতে সাহস যুগিয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলা টিমের প্রতিটি সদস্য একে অপরকে অনেক স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে গর্বের সাথে নতুন পুরাতন মিলে সম্পর্ক উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকেন। প্রিয় ফাউন্ডেশনের কল্যাণে প্রতিনিয়ত নিজেকে পরিবর্তনে সমৃদ্ধ হচ্ছেন এবং বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় এই ভালো মানুষদের ভালো ভালো কাজের অনুশীলন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিটি ভাই-বোন তাদের ভালো মনের পরিচয় দিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, তবে আমি কেনো পিছিয়ে থাকবো?
চাঁদপুর জেলার প্রিয় মডারেটর ও জেলা এম্বাসেডর জনাব Mezbah Ahamed ভাইয়াসহ চাঁদপুরের প্রতিটি সদস্য একে অন্যকে অনেক মূল্যবান পরামর্শ ও সহযোগগিতা করে থাকেন, আলহামদুলিল্লাহ্।
চাঁদপুর জেলা টিমের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইল। ভালোবাসার এই ফাউন্ডেশনে যু্ক্ত ৬৪ জেলা ও ৫০টি দেশে অবস্থারতপ্রবাসীসহ বাংলাদেশী সকল ভাই-বোনদের জন্যেও অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা। তারাও একে-অন্যকে অনেক বেশি মূল্যায়ন করেন, সকলের প্রতি আন্তরিক শুভ কামনা। আলহামদুলিল্লাহ, “নিজের বলার মতো একটি গল্প” ফাউন্ডেশনের বদৌলতে অনেকের সাথেই পরিচিত হতে পেরেছি ও পারতেছে। অনেকেই আমাকে ভালোবাসেন ও শ্রদ্ধা করেন। এ যেন এক আলাদা আনন্দঘন আত্মার পরিবার। আমিও সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।
আমাদের প্রাণের স্পন্দন, প্রিয় মেন্টর ও প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এবং এই ফাউন্ডেনের সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত মডারেটর, কোর ভলান্টিয়ার, কান্ট্রি এম্বাসেডর, জেলা এম্বাসেডর, উপজেলা/থানা এম্বাসেডর, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার ও অন্যান্য সকল আজিবন সদস্য সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করছি এবং সকলের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হবার পর থেকে প্রিয় স্যারের প্রতি আমি অন্যরকম একটা প্রীতি ও ভালোবাসা অনুভব করছি। প্রিয় স্যারের কথা যত শুনি আরো শুনতে মনে নতুন করে আকাঙ্খা জাগে।প্রিয় স্যার প্রথম যখন করোনায় আক্রান্ত হলেন, তখন কোন এক মিট-আপে শুনলাম যে বিষয়টা যেন ছড়ানো না হয়। তখন থেকেই স্যারের প্রতি এবং ফাউন্ডেশনের প্রতিটি ভাই-বোনের প্রতি কেন যেনো আরো গভীর মমতাবোধ ও মায়ায় জড়িয়ে যেতে থাকি। স্যারের জন্য সকল সময় মন থেকে দোয়া করি, আল্লাহ পাক যেন প্রিয় স্যারকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করেন।
আমিন, আমিন, ছুম্মা আমিন।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে - ৭৫৭
তারিখ- ০২/০৩/২০২২
মোঃ আফতাব উদ্দিন টিপু
আইডি নং- ৬৭,১০১
ব্যাচ- ১৩
একজন আজীবন গর্বিত সদস্য ও
“এসো ক্বোরআন শিখি” কাফেলার ১জন ছাত্র ।
জেলা - চাঁদপুর,
উপজেলা - ফরিদগঞ্জ ।
বর্তমান অবস্থান – ঢাকা (রাজারবাগ)।
কাজ শুরু করছি—খাঁটি সরিষার তেল ও খাঁটি ঘি নিয়ে।