জিলাপি সেল করে আজ সফলতা পাওয়া জীবনে আমি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম,
✍️আমার জীবনের গল্প✍️
আমি আরম্ভ করিতেছি পরম করুণাময় মহান রাব্বুল আলামিনের নামে, অনেক অনেক শুকরিয়া আদায় করছি মহামনিবের দরবারে যিনি আমাকে দুনিয়া ব্যাপি মহামারীর মাঝেও এখনো সুস্থ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি প্রথমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার সহজ সরল মা... বাবার প্রতি যাদের উছিলায় আমি দেখতে পেয়েছি এতো সুন্দর পৃথিবী আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার প্রিয় মেন্টর অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ, মানবতার শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি, যার মেধা আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন সারা বাংলাদেশের আনাছে কানাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আজকে বাংলার গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার উদ্যোক্তা এবং তরুণ তরুণীর চোখে স্যারের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হচ্ছে আমি দোয়া করি স্যারকে মহান আল্লাহ যেন হায়াতে তৈয়্যবা দান করেন, আমিন।
আমার পরিবারের কথা:
আমার দাদার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে দ্বিতীয় বিয়ে করে আমার দাদুকে। আমার দাদুর ঘরে ছিলো দুই ছেলে, আমার বড় দাদুর ছিলো দুই ছেলে দুই মেয়। তারপর আমার দাদা মারা যাবার পর আমার দাদিকে কিছু মানুষ অত্যাচার করতো এরই মধ্যে আমার দাদুর ছোট সন্তান অসুস্থ হয়ে মারা যায়, চিকিৎসা করতে পারেনি টাকার অভাবে। আমি প্রায়ই শুনেছি বাবার মুখে যে ১০দশ টাকার জন্য আমার ভাই মারা গেছে। তার পর আমার দাদু স্বামীর শোক ছেলের শোক আর মানুষের অত্যাচার সইতে না পেরে সব কিছু পেলে শুধু ছেলেকে নিয়ে চলে আসে বাপের বাড়ি গ্রামের নাম ৩৫ কাহন। সেই সুত্রে আমার বাবার ঐগ্রামেই বেড়ে উঠা। আবার পার্শ্ববর্তী গ্রামেই কাজ কাম করে কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে নেয়। আবার বিয়েও করে নেয়, একই গ্রামে আমারা তিন ভাইয়ের জন্ম হয়। এই ৩৫ কাহন গ্রামে তার পর আমার দাদির যে ভাইয়ের বৌও ওনি আমরা খেলা ধুলা করলে এবং প্রসাব পায়খানা করলে আমার দাদিকে আমার মাকে বিভিন্ন ধরনের কথা শুনায়, আর বলে বাড়ির মাটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাড়িতে ঝামেলা বাড়ছে, বাড়ির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। তার পর আমার বাবা মা মিলে যায়গা জমি কিনতে শুরু করে, বাড়ির জন্য যায়গা কিনে ঐ বাড়ির পাশেই আরো অন্য চাষের জমিও কিনে কিছু জমি ইজারা রাখে, আবার কিছু জমি ভাগে চাষ করে, মানে আমার বাবা একজন কৃষক অনেক কৃপণ মানুষ। আমাদের বাড়ির পাশেই ছিলো প্রাইমারি স্কুল এখানে ভর্তি করে আমাকে, কিন্তু ভর্তি ফিস, পরিক্ষায় ফিস সময় মতো দিতে চাইতোনা। কারণ আমার বাবা মা দুজনই ছিলো মুর্খ, অক্ষর জ্ঞান ছিলোনা, কিন্তু আমার মা কোরআন মাজিদ পড়তে পারতো, নিয়মিত কোরআন মাজিদ পড়তো এবং আমাকে প্রায় সময় গজল গেয়ে শুনাইত, এই জন্য আমাকে প্রথম ভর্তি করেছিল সকালের মক্তবে আরবি শিক্ষার জন্য, তারপর স্কুল। এমনটাও হয়েছে আমার সাথে পরিক্ষার ফি সময় মতো না দেওয়ার কারণে আমাকে ভিতরে যাইতে দেয়নি, তখন আমি যখন কান্নাকাটি করতাম, আমাদের বাড়ির কাছে স্কুল তো আমার গার্ডিয়ান পক্ষ এসে শিক্ষকদের সাথে ঝগড়া লেগে যেতো। যাইহোক এমতাবস্থায় ভালোই চলতেছিলো আমাদের সংসার। আমার বাবাঐ গ্রামে যখন জায়গা জমি কিনতে থাকে তখন আমার বড় দাদুর ঘরে যে দুই চাচা এর মধ্য থেকে ছোট জন আসে মানে আমার মেজো চাচা এসে বলে তুই এখানে এইভাবে জায়গা জমি কিনার দরকার কি আমাদের তো বাড়ি আছে চল বাড়িতে চল আমরা তিন ভাই একসাথে থাকবো। এইভাবে আমাদের বংশের বিভিন্ন মানুষ নিয়ে আসতে থাকে বুঝাতে থাকে আমার বাবাকে একপর্যায়ে বলে ঠিক আছে চল আগের বাড়িতে যেতে হবেনা আমরা তিন ভাই এক নতুন বাড়ি কিনে এক বাড়িতে থাকবো। তিনজন আমার মাকেও বুঝিয়ে বলে যে তোমাদের বন্টন তোমরা বুঝে নাও তোমাদের সম্পদ আমার কাছে গচ্ছিত আছে। তার পর আমার মা বাবা রাজি হলেও আমার দাদি রাজি হয়না বলে যেতে হয় তোরা যা আমি যাবোনা, আমি এখানেই থেকে যাবো। যেই বেদনা আমি পেয়েছি আমি আর এইখানে যেতে চাইনা, তার পরেও আমার চাচারা জোরাজুরি করে নিয়ে যায়, ভাগ করে দেয় দাদর সম্পদ। আমাদের এই গ্রামের নাম মতলবপুর একই ইউনিয়ন তো ৩৫ কাহনের জায়গা জমি বিক্রি করে দেয়, বাড়িটা ছাড়া। বাড়িটা এখনো আছে আমার দাদি মারা গেছে এই বাড়িতে, আমার দাদির এক বোন থাকে মতলবপুর। আমাদের বাড়ি নিয়ে যাবার পর আমার এক বোন হয় এখন আমরা তিন ভাই এক বোন। তারপর আমাদের বাড়ি মতলবপুর নিয়ে গেলেও আমি থেকে যাই আমার নানির বাড়িতে এখানকার স্কুলে পড়ি, আর মামার গরুকে ঘাস কেটে খাওয়াই। আর আমার বাবা মতলবপুর যাওয়ার পরে চাষাবাদের পাশাপাশি একটা ব্যাবসা শুরু করে নাড়িকেলের, ভালোই চলতে থাকে আমি মনে হয় ক্লাস ফাইভে পড়ি বৃত্তি দিবো প্রস্তুতি নিচ্ছি এই টাইমে আমাদের সংসারে নেমে আসে এক কালো ঝড়। উলট পালট হয়ে যায় আমাদের সংসার, আমার বাবা নাড়িকেলের চালান দিতে গিয়ে ট্রাক এক্সিডেন্ট করে মাথায় মারাক্তক ভাবে আঘাত পায়, তখন বাবাকে নিয়ে যাই ভাগলপুর হসপিটালে খবর আসে আমাদের বাড়িতে তার পর খবর দেয় আমার নানির বাড়িতে আমার মামার কাছে, তখন আমার নানি আমাকে খুজতে থাকে অনেক খুজাখুজি করে বের করে একমাঠে আমি খেলা করছিলাম। তখন খুব রেগে গিয়ে পিছন দিয়ে মারতে শুরু করে আর বলতে থাকে তর বাপ এক্সিডেন্ট করে হসপিটালে তাড়াতাড়ি চল। দৌড়ে যাইয়া গাড়িতে উঠি যাইয়া দেখি আমার বাবাকে চার হাত পা বেধে রাখছে বেডের সাথে আমার বাবার সাথে ছিলো আমার এক চাচাতো চাচা ওনি বন্ডসই দিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা চলতে থাকে। এইখানে চিকিৎসা চলে একমাস, তারপর পাঠিয়ে দেয় ময়মনসিংহ আবার মায়মনসিংহে কিছুদিন চিকিৎসার পরে পাঠিয়ে দেয় ঢাকা পিজিতে। এরই মধ্যে আমাদের জমানো টাকা পয়সা শেষ হয়ে অনেক দেনাগ্রস্ত হয়ে যাই আমি চলে আসি নানির বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে। আমি সংসারের বড় হিসেবে সংসার চলে আসে আমার উপরে তখন আমি ছোট মানুষ, কি করবো কোথায় যাবো দিশেহারা হয়ে যায়। বিভিন্ন মানুষ এসে বলে জমি বিক্রি করতে আমার মা রাজি হয়না, তখন আমাকে বলতে থাকে। আবার কেউ কেউ এসে বলে যদি আমার ভাইয়ের কিছু হয় তাহলে তোদের খবর আছে, তোরো জমি নিয়ে বসে থাক। আমার মামাকে হুমকি দেয় আমার এক চাচা শ্রমিক ইউনিয়নে রাজনীতি করে, কিন্তু ওদেরকে কোথাও নিয়ে গেলে রিকশা ভাড়াটাও আমাদের দিতে হয়। আব্বা যেই ট্রাকের সাথে এক্সিডেন্ট হয়েছিল এই ট্রাকের মালিক ছিলো হিন্দু মানুষ, ওনি আব্বাকে ঢাকা থেকে বাড়িতে আনার পর মানুষের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে চলে আসে আমাদের বাড়িতে। কারণ, ওনার গাড়ি আটক ছিলো থানায়, মামলা করছিলো আম্মা বাদি হয়ে। তাই আমাদের বাড়িতে এসে বলে আমার গাড়ি যদি থানায় থাকে তাহলে কি আপনাদের রোগী ভালো হয়ে যাবে, আসুন আমরা একটা মিমাংসা করি, আপনাদেরও ভালো হবে আমারও উপকার হবে, খুবি বিনয়ি হয়ে বলছিলো, যাবার সময় ওনার ঠিকানা দিয়ে বলে গেলেন যে যদি আমার কথা আপনার ভালো লাগে তাহলে কিশোরগঞ্জ আমার দোকানে চলে আসবেন, আগামীকাল সকালে আমি আপনাদের জন্য অপেক্ষায় থাকবো। আব্বার এক খালা বলে গেলেন রাজি করানোর জন্য, ওনি আম্মাকে বলে চল আমারা ওদের সাথে মামলা করে পারবোনা, ক্ষতি হয় আমাদেরই হোক, চল আপোষ করে ফেলবো। তার পর আমার মামা আব্বার এক খালাতো ভাই ওদেরকে নিয়ে চলে যাই গাড়ির মালিকের এইখানে, আপোষ নামাই সই করে দেই, ওরা আম্মার হাতে তুলে দেয় জোর করে ৭৫০০ টাকা। এই টাকা বাড়ি নিয়ে এসে মামা আমাদের কিনে দেয় একটি গাভি আরো একহাজার টাকা মামার পকেট থেকে দেয়, সম্ববত ৮৫০০ টাকা দিয়ে। কারণ, চিকিৎসা শেষে ডাক্তার বলছিলো ছোট মাছ দুধ ডিম এইগুলো বেশী করে খাওয়াতে সেই সুত্রে গাভি কিনা। এই গাভি দিয়ে পরবর্তিতে আমরা অবশ্য অনেক উপকৃত হয়েছি, এই গাভির বংশধর এখনো আমার ঘরে আছে। তার পর আমার বাবা যখন একটু সুস্থ হয় বুঝতে পারে যে আমার সব টাকা পয়সা শেষ, তখন টেনশনে হয়ে যাই একরকম পাগলের মতো, আর চিকিৎসা করতে ঢাকা যায়না, টাকার মায়াই আম্মার সাথে শুরু করে ঝগড়া ঝাটি রাগ করে চলে যায় এদিক সেদিক আম্মার জালা যন্ত্রনা আরো বেড়ে যায়। আমি আবার ভর্তি হয় নোহার নান্দলা আলিম মাদ্রাসায়, আমাকে বই দেওয়া হয় মাদ্রাসার ফান্ড থেকে, কিন্তু ক্লাস করতে পারিনি, কারণ পেটে থাকে অনেক খিদে, ভালো লাগেনা কিছু, মনের দুঃখ কষ্ট নিয়ে চলে আসি বাড়িতে, এসে দেখি ঘরে খাবার নেই, ছোট ভাই বোন কান্না করে। কিছু না বলে চলে যাই এক ভাংগারি দোকানে যাইয়া দেখি এখানে কি কি কিনে, দেখে বাড়িত আসি বাড়ির আশেপাশের কিছু মাল টুকাইয়া নিয়ে যাই ভাংগারি দোকানে, বিক্রি করি ভালো টাকা পাই। কিছু বাজার করে নিয়ে আসি, আম্মা জিজ্ঞেস করে কই পাইলি, আমি বললাম ভাংগারি মাল বিক্রি করছি। আম্মার চোখে মুখে একটা আনন্দের ছাপ দেখতে পাই, আমার কিযে ভালো লাগে বলে বুঝানো যাবেনা। পরদিন ঘর ঝেড়ে পরিষ্কার করে আরো কিছু মাল নিয়ে গেলে দোকানের লোক আমাকে চিনে, আমি কার ছেলে। এই মাল রেখে বলে তুই আমার এখানে ব্যাবসা করবি তাহলে পুজি নিয়ে যা, মাল কিনে আনবি কিন্তু তর মা এসে বলতে হবে, আমি বললাম ঠিক আছে, বাড়িতে যাইয়া আম্মাকে নিয়ে আসলাম, বললাম আপনি শুধু দুরে থেকে একটু বলে আসুন। ভালো লাভ হবে আমি ব্যাবসা করলে আসলে তাই হলো প্রথম দিন ৩০ টাকা ব্যাবসা হয়েছিল, সত্যি হলো আমার মায়ের দোয়া ছিলো আমার সাথে। তার পর আমার ছোট ভাই দুজনকে ভর্তি করে দিলাম স্কুলে। এইভাবে চলতে থাকলে আমার বাবার মাথায় যখনি সমস্যা দেখা দেয় ঝগড়া করে চলে যায় বাড়ি থেকে, মাঝে মাঝে আমি বাড়িতে এসে দেখি আম্মাও নেই আব্বাও নেই রাগ করে একেক জন একেক দিকে চলে গেছে, আমি বাড়িতে এসে ওদেরকে খুজে বের করে নিয়ে এসে ভাত খাইছি, আমি এর আগে ভাত খায়নি। আর আম্মা জানতো যে আমি যতো রাতেই বাড়িতে আসি আম্মাকে না পেলে আমি ভাত খাবোনা, তাই যাওয়ার সাথে সাথে চলে আসতো এইভাবে আর আমার লেখা পড়া হয়নি। একটা সময় সমিতি থেকে লোন নিয়ে বিভিন্ন সিজনে বিভিন্ন রকমের ব্যাবসা করতে থাকি, ভাই বোন বড় হতে থাকে আবার আব্বা যখন সুস্থ থাকে তখন মেলাতে জিলেপির ব্যাবসা করে, এটা আব্বা এখনো করে সিজন আসলে নাড়িকেল মেলার সিজন আসলে। জিলেপির কিন্তু বৎসরে ব্যাবসা করে ১০-২০ হাজার টাকা কিন্তু আমাদের সংসারের প্রতি মাসে খরছ হয় বর্তমান মিনিমাম ৩০-৪০ হাজার টাকা। যাইহোক একটা সময় এসে আমি খুবি ক্ষতিগস্ত হয় নষ্ট হয়ে যাই ব্যাবসার পুজি তখন আমার প্রতিবেশী এক লোক অফার করে ইলেকট্রিক পার্সের দোকানে চাকরি। এখানে আবার ব্যাটারি নতুন বানানো হয় আবার ভাড়া দেওয়া হয়। শুরু করে দেই এইখানে বেতন ভাতা কিছু বলা হয়নি, অনি মনগরা আমাকে বেতন দেয় মাসে ৪০০ টাকা। তা নিয়ে এখানে থাকি কাজ শিখার জন্য ১বৎসর পরে চলে যাই আবার শুরু করি সিজনের ব্যাবসা। কিছু দিন পর একটা ব্যাটারি ভাড়ার দোকান দেই আমি এই বাজারে। অবস্থা আমার ভালো ছোট ভাইকে একটাইম দোকানে বসিয়ে আমি অন্যান্য দোকান থেকে পুরোনো ব্যাটারি ব্যাটারির চালি, শিষা এই গুলো কিনতাম। তখন কার সময় ৪০-৪২ হাজার টাকা টন আমি কিনতাম ৩০-৩২ হাজার টাকা টন। ১০ দিন ১৫ দিন পর পর ১-২ টন মাল দিতে পারতাম আমার অবস্থা খুবি ভালো এমন অবস্থায় কিছু খারাপ মানুষের সাথে হয়ে যাই সংগ। আমার সাথে মিশে যাই বিভিন্ন ধরনের মানুষ, টাকা পয়সা নষ্ট হয়ে যায়, ব্যাবসা নষ্ট হয়ে যায়। এই ব্যাবসা চলাকালীন পরিচয় হয় আমার পাশের থানার এক লোক বলছিলো ওনি কাজ করে মাধবদি ছাপকারখানায়। চলে যাই ওনার সাথে মাধবদি, ওনি আমাকে একটা চাকরি নিয়ে দেয় কল্যাণদি ডাইং, আর যে আমাকে নিয়ে যাই সে করে ভাত খাওয়ার মেস। কিছু দিন যাবার পরে লোকজন ওনার এখানে ভাত খাইয়া পয়সা দেয়না। ওনার শক্তি কম, তার পর ওনার মেসের দায়িত্ব নেই আমি, ওনাকে রাখি বাবুর্ছি হিসেবে, মাস গেলে বেতন দেই, আমি চাকরি ছেরে দেই, শুধু লোকজন খাওয়াতে থাকি ভালোই চলতে ছিলো আমার মেস। মমতাজ সিনেমা হলের স্টাফ সহ প্রায় লোক হয়ে গেছিলো ১৫০ জনের মতো ২২০ টাকা সপ্তাহ আবার স্পেশাল ২৫০ টাকা। কাজের লোক বাড়ছে কোনো সমস্যা নেই এখানকার আশেপাশের মানুষ কম বেশী সবাই চিনে আমাকে, এমন সময় এক হিরুইনছি আসে, এমনে চলাফেরা খুবি ভদ্র ছিলো একটি মোবাইল নিয়ে বিক্রি করার জন্য বলে, যে ওর মোবাইল সিটিসেল, যে হাওয়াই সেট গুলা বের হয়েছিল প্রথমে এইগুলি আমি কোনো যাচাই বাছাই ছাড়া কিনে রাখি, টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার পর আমি মোবাইল চার্জ দিয়ে ওপেন করি। এইটা ফিক্সড সিম, কল আসতে শুরু করে আমার রাস্তা হতে থাকে অন্ধকার, এখানকার স্থানীয় পোলাপাইনের সাথে ঝগড়া, একপর্যায়ে আমি বাধ্য হই এখান থেকে চলে আসতে। এইযে আসছি আর যাওয়া হয়নি আমার মাধবদি তারপর এলাকায় এসে আবার নতুন করে শুরু কর। এর মাঝখানে কুয়েত আসার জন্য পাসপোর্ট করি, আম্মা ধরে বিয়ে করিয়ে দেয় অল্প বয়সে, তার পর কুয়েত আর আসা হয়নি, কুয়েত হয়ে যাই বন্ধ। তারপর আমাদের এইখানে বাংলাদেশের নাম করা কালিয়া চাপড়া চিনিকল বন্ধ অবস্থায় নিটল টাটার চেয়ারম্যান মাতলুব সাহেব কিনেন। প্রথম বার চালু করলে আমার এক আত্মীয় এখানকার নেতৃত্বে স্থানে থাকায় আমি যাই চাকরির জন্য, ওনি বলে চাকরি করতে হবেনা আমার গাড়ি দেখাশোনা কর। এই চলে আসি গাড়ির জগতে কিছু দিন পর ওনি ড্রাইভারকে ভালোভাবে বেতন দিতোনা, তারপর ড্রাইভার গাড়ির ব্যাটারি খুলে নিয়ে চলে যায়। ওনি আমার সাথে করে খারাপ ব্যাবহার আমি চলে আসি। পরের এক সপ্তাহের ভিতরে আমি একটা গাড়ী কিনে আনি। শুরু আমার গাড়ীর ব্যাবসা, জড়িত হয়ে যাই শ্রমিকের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের সাথে শ্রমিক রাজনীতির সাথে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে আমার একটা নতুন গাড়ি টাটা সুপার আমার ভাগনে ড্রাইভার ছিলো, কোরবানি ঈদের মৌসুম ছিলো, গাড়ির খুবি বেশী চাহিদা, আমি কুড়িগ্রাম রাজিব পুর থেকে আসছি। আসার পর গরু নামানোর সাথে সাথে আবার রওনা হয় কুড়িগ্রাম রৌমারী বাজারের উদ্দেশ্য। আমার এলাকারই বেপারি ছিলো যাওয়ার পথে শেরপুর জেলা নকলা থানায় পৌছে মারাক্তক ভাবে এক্সিডেন্ট হই, জায়গায় দুইজন বেপারী মারা যায়, আমার ভাগনে আহত হয়, এই দুর্ঘটনায় আমি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাই। যেই গাড়ি একসিডেন্ট হয়েছে এই গাড়িতে লেখা ছিলো একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই দুর্ঘটনায় তিনটি চারটি ফ্যামিলির কান্না হয়েছিল। তারপর ২০১৫ সালে যখন আবার কুয়েতে লোক আনে তখন আবার নতুন করে পাসপোর্ট বানিয়ে জমা দিয়ে কুয়েত চলে আসি, কুয়েত আসার পর আমি অনেক হতাশাগ্রস্থ ছিলাম, কারণ আমার অনেকে দেনা ছিলো দেশে। তারপর আমি কুয়েত আসার তিন দিন যাবার পরে আমি পার্টটাইম কাজ শুরু করি, এইরকম ভাবে কিছু দিন গেলে এখানে পরিচিত হয় কিছু বন্ধু বান্ধব হয়, আমার এক বন্ধু নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের কথা বলে, তার পরে তার সাথে একদিন কুয়েত রাজধানী হোটেলে যাই দেখি স্যারের স্লোগান বিশ্লেষন করতেছে নুরুন্নবী রিয়াজ ভাই আর আমার পরম শ্রদ্ধেয় বর্তমান মডারেটর এবং কুয়েত কান্ট্রি এম্বাসেডর মোহাম্মদ মাহমুদ ভাই। স্লোগান ছিলো "সপ্ন দেখুন, সাহস করুন, শুরু করুন, লেগে থাকুন, সাফল্য আসবেই ইনশাআল্লাহ্। এই স্লোগানে আমি মুগ্ধ হয়ে সাথে সাথে রেজিস্ট্রেশন করি এবং এই ফাউন্ডেশনের প্রেমে পরে যাই। নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের আমার বন্ধু মির্জা ইব্রাহিমকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আমাকে এতো সুন্দর একটা সংগঠনের সন্ধান দেওয়ার জন্য এবং নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমার অন্তরের অন্তরস্তল থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আমার প্রিয় মেন্টর, নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন পরিবারের সকল সদ্যসদের নয়নের মনি, সারা বাংলার গর্ব আমার ভালো লাগা এবং ভালোবাসার মানুষ জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি, যিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম।
আল্লাহ তায়ালা স্যারকে নেক হায়াৎ দান করুক আমিন।
আমার এতো লম্বা লিখা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে আর যদি কোনো ভুল ত্রুটি হয় নিজ গুনে সবাই ক্ষমা করে দিবেন, আর আমার জন্য এবং আমার মার... জন্য সবাই দোয়া করবেন, আমার বর্তমানে খুবই অসুস্থ।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৪৮
Date:- ১৮-১৯/০২/২০২২ইং
তাজুল ইসলাম(সবুজ)
সদস্য নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন
NRB KUWAIT. টিম
শৃঙ্খলায় একধাপ এগিয়ে।
নিজ জেলা: কিশোরগঞ্জ।
ব্যাচঃ৮ম
রেজিঃ ৫৮৭৮