প্রত্যেক মানুষের জীবনের কোন না কোন গল্প থাকে। হোক না সে গল্পে হাসি আনন্দ দুঃখ বেদনা পাওয়া না পাওয়ার
★বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ★
★আসসালামু আলাইকুম
★জীবনের গল্প ★
🧤🧤সকলকে পড়ার অনুরোধ রইলো🧤🧤
🧤প্রথমেই লক্ষ্য কোটি শুকরিয়া জানাই মহান রবের দরবারে। যিনি আমাদেরকে ১৮ হাজার মাখলুকাত এর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।🧤
♥️দরুদ সালাম পাঠাই মানবতার শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর রওজা মোবারকে।♥️
♥️কৃতজ্ঞতা সম্মান শ্রদ্ধা জানাই আমাদের প্রিয় শিক্ষক লক্ষ তরুণের আইডল ও মেন্টর জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যার কে। যিনি আমাদের এত সুন্দর একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার কারণে আমরা ভালো মানুষ ও উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারছি।♥️
🏝️আসলে প্রত্যেক মানুষের জীবনের কোন না কোন গল্প থাকে। হোক না সে গল্পে হাসি আনন্দ দুঃখ বেদনা পাওয়া না পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি বিষয়। জীবনের গল্প লিখে শেষ করার মতো না। তারপরও জীবনের কিছু গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।🏝️
আমি মো: মাহবুব আলম জামিল পিতা : এ , কে এম জহুরুল ইসলাম , নাটোর ৷ জন্ম : ০২/১১ /১৯৯২ ইং৷
🚶♀️🧍আমার শৈশব 🧍♀️🚶♂️
আমি গ্রামের একটা ছেলে। গ্রামের নয় দশ টা ছেলে মেয়ের মতোই আমার বেড়ে ওঠা কিন্তু আমি ছিলাম মধ্যবিত্ত স্কুল শিক্ষক পরিবারের সন্তান। পরিবারে মা-বাবা, পাঁচভাই ও এক বোন। ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ । আমি মোটামুটি অন্যান্য ভাই বোনের চেয়েও শান্ত ও নিরব প্রকৃতির ছিলাম। একদম শিশুকালে সুন্দর ফুটফুটে ও শান্ত থাকায় সবার কোলে কোলে থাকতাম ৷ বাল্যকালে অস্বাভাবিক চঞ্চল ও কৌতুহলী ছিলাম ৷ বাবা প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ও মা গৃহিনী ৷ আটজনের সদস্যের ভরণপোষণ করতে বাবার অনেক কষ্ট করতে হতো। কোন রকমে সাদামাটা জীবন-যাপন ছিল আমাদের। বাবার কাছেই আমার বিচরন সবচেয়ে বেশি ছিল তাই যে কোন কাজ বাবা আগে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতেন এবং বলতেন তোমার বড় ও ছোট সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে তোমার। বড় ভাই শুধু নামেই বড় কখনো কোন দায়িত্ব পালন করতেন না। তাই খুব কাছে থেকে উপলব্ধি করেছি কত কষ্ট করে টাকা ইনকাম করতে হয়। মাঝে থেকে উভয়দিক থেকে মানসিক চাপ সহ্য করা ছিল প্রতিদিনের নৈমত্তিক ব্যাপার। সেই সময়ে সবার ছোট থাকায় ফরমায়েশ বেশি শুনতে হতো। একবার কোন কিছু দেখলেই মনের ভিতর গেথে ফেলতাম ৷ পড়শোনার চেয়ে কোন কিছু দেখে শেখার আগ্রহ ছিল বেশি ৷
🖊️🖊️প্রাথমিক শিক্ষা
বাবা যেহেতু স্কুল শিক্ষক ছিলেন তাই আমার বাল্যজীবনে পরিচিতিও ছিল খুব বেশি ৷ প্রতিদিন বাবা তার সাথে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে গোসল করিয়ে জামাকাপড় ,জুতা পড়িয়ে রেডি করতেন আর মাথায় দুই তিনবার চিরুনি করে দিতেন , এরপর তার বাইসাইকেলের সামনে নরম কাপড় দিয়ে ছোট ছিট বানিয়ে সেখাতে বসাতেন ৷ দু জনে স্কুলে রওনা হতাম রাস্তায় অনেক লোকজন আমার বাবাকে সালাম দিতেন এ বিষয়টি আমার মনে ভিষন ভালো লাগতো ৷ আমাকে বাবা বুঝাত লেখাপড়া করলে সবাই সম্মান করে সালাম দেয় , আর রোদ বৃষ্টিতে ভিজে মাঠে কাজ করতে হয়না ৷ দেখ আমরা স্কুলে যাচ্ছি স্কুলে গিয়ে ফ্যানের নিচে বসে সারাদিন আরামে কাজ করবো কোন রোদ বৃষ্টি গায়ে পড়বে না ৷ আর যারা লেখাপড়া করে নাই তারা রোদে ঘেমে বৃষ্টিতে ভিজে কালো হয়ে যায় ৷ কত কষ্ট ওদের তাই তোমাকে ভালভাবে লেখাপড়া করতে হবে ৷ তোমাকে তোমার মামা আশরাফ আলীর মত (বিমান বালা) শহরে থাকতে হবে ৷ সরকারি চাকরি পেতে হবে ৷ আমাকে সারা রাস্তা পড়া ধরত ও বিভিন্ন শিক্ষামূলক গল্প করে স্কুলে নিয়ে যেতেন ৷ সবচেয়ে আমার বেশি ভালো লাগতো আমাকে নামিয়ে দিয়ে একটু আতর মেখে দিতেন আর চকলেট কলম দিয়ে ক্লাসে বসিয়ে দিয়ে আসতেন ৷ সকল শিক্ষার্থী এসে আমাকে ঘিরে ধরতো আদর করতো আর সিনিয়র আপুদের কোলে কোলে থাকতাম ৷ তাই স্কুলে আমার সাহসও বেশি ছিল কারন আমার বাবা ছিল স্যার আমাকে কে কি বলবে ৷ দুষ্টু ছেলেরা বুদ্ধি দিত দুষ্টামি করতাম ৷ খাতা দেখানোর আগেই পছন্দের বন্ধুদের মার্ক জানিয়ে দিতাম ৷ স্কুল ফাকি দেওয়ার জরিমানার টাকা নিয়ে এসে সবাইকে সাথে করে ঝাল মুড়ি খেতাম ৷ ক্লাসের ভাল ছাত্রীকে ডিস্টার্ব করা ছিল নিয়মিত রুটিন ৷ অন্য বন্ধুরা যা শিখিয়ে দিত সেটাই করতাম ৷ বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে থাকতাম ৷ পড়াতে বসালে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে টিভি দেখতে চলে যেতাম ৷ এসকল দুষ্টামির জন্য বাবার হাতে মার খেয়েছি অনেক ৷ তিনটা প্রাইমারি স্কুলে পড়ে শেষ হয় আমার প্রাইমারী লেখাপড়া ৷
মাদ্রাসায় পড়া
আমার বাবা দেখলো আমার ছেলে অনেক দুষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাই সে আমাকে আর হাইস্কুলে পড়াবে না ৷ আমাকে হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিলেন ৷ আমার প্রথমে খুব খারাপ লাগতো একা একা মাদ্রাসায় থাকতে কিন্তু যখন বুঝ আসলো পরিবারে সবার সাথে তো দিনে একবার দেখা হয় তাহলে আর কষ্ট কিসের তাছাড়া আমাদের গ্রামের আরো ছেলেরা তো একসাথে আছেই ৷ আস্তে আস্তে আমার মধ্যে ধর্মীয় বুঝ আসতে থাকে ৷ তখন আর বাবা-মার জন্য খুব কষ্ট হতো না ৷ নিজে ভাল হাফেজ আলেম হবো ৷ এই স্বপ্ন মনের ভিতর লালন করতে থাকি ৷ তখন পরিবার থেকে আমার প্রতি খেয়াল রাখা কমিয়ে দেয় , ঠিকমত আমার কাছে আসেনা , প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে যায় না ৷ বাড়ির কাছের মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যায় ৷ দূরে আরেকটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয় এবং লজিং থাকি ৷ প্রায় দুই বছর পড়ার পর আমার মনে নানান রকম জল্পনা কল্পনা শুরু হয় ৷ আমি তখন ৮ পারার হাফেজ ৷ আমার মনে হতো এই ৩০ পারা কোরআন কি আমি সারাজীবন মুখস্থ রাখতে পারবো ? মুখস্থ করার পর যদি ভুলে যাই তাহলে এর থেকে দু:খের বিষয় আর কি হতে পারে ৷ তাই যতটুকু পড়েছি এটুকুই যেন মুখস্থ রাখতে পারি ৷ আমার পাশের বাড়ির একজন আমার সাথে পড়তো ও বলতো আমরাতো বাংলা ইংরেজি কিছুই শিখলাম না ৷ ৪-৫ বছর পরে কি আমরা আবার ক্লাস সিক্সে ভর্তি হবো ? তখনই শয়তান ঘাড়ে চেপে বসে কোন কিছু ভাল লাগে না, সাইকেল কিনে চাই যেন প্রতিদিন বাড়িতে যেতে পারি হুজুরকে বলি , হুজুর আব্বাকে বলে এবং দুজনই রাগারাগি করে ৷ এক পর্যায়ে আমরা দুজন মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাই ৷ নেমে আসে জীবনে অন্ধকার ৷ বাড়ি ফেরার সুযোগ নেই তবুও আমি ও পাশের বাড়ির ঐ ছেলে বাড়িতে যাই , গালিগালাজ ও মারধর করে আবার মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেয় কিন্তু মাদ্রাসায় গেলে তো আবার হুজুরের পিঠানি খেতে হবে তাই আমরা একজনের সাথে কথা বলে বিছানাপত্র নিয়ে রুটির ফ্যাক্টরীতে কাজে যাই আর সেখানে কয়েকদিন থাকি খাই আর কাজ করি ৷ এরপর পাশের বাড়ির ছেলে বাড়িতে ফিরলেও আমার আর বাড়িতে থাকা হয় না ৷ বাড়ি আসলেই মারধর করতো তাই একদিন বাসের ছাদে করে চলে যাই সিরাজগন্জ চাচার বাসায় ৷ আব্বার সাথে চাচার কথা হয় তাই চাচাও তার কাছে রাখতে রাজি নয় ৷ চাচার বাসা থেকে আবার বের হই কাজের সন্ধানে কিন্তু কোন কাজ পাই না ৷ এক হোটেলে বসে সিংগারা খেতে খেতে হোটেল মালিকের সাথে কথা বলি আমার তো একটা কাজ দরকার আর বাড়ি যাওয়ার ভাড়া ও নাই আমার কাছে ৷ তখন বিশ্ব ইজতেমার সময় হোটেলে খুব চাপ লোক দরকার তাই চাচা আমাকে বলে কয়েকটা দিন আমার বাসায় থাকো আর আমার সাথে কাজ করো পরে তোমাকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে আসবো ৷ আমিও থাকি এবং কয়েকদিন পরে চাচা আমাকে কিছু টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেয় ৷ সিরাজগন্জ থাকাকালীন রোড এক্সসিডেন্ট করা রাজশাহীর এক ট্রাক ড্রাইভারের সাথে পরিচয় হয় সে আমাকে ট্রাকে রাখবে বলে ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিয়ে যায় ৷ তারপর আমি নানার বাড়ি গিয়ে একদিন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ট্রেনের ইন্জিনে করে রওনা হই ৷ কিন্তু সারাদিন খোজার পর আর সেই ড্রাইভারকে পাই না ৷ রাত হয়ে যায় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ষ্টেশনে ভুলে নেমে পড়ি ৷ আবার সেখানে একজনের সাথে পরিচয় হয় এবং দু দিন থাকি। এরপর বাড়িতে ২ দিন থেকে চলে যাই পাবনাতে খালার বাড়ি । কিছুদিন থাকি তারপরে আবার বাড়িতে আসি। তারপর আমার মনের ভিতরে বেশ ইচ্ছে জাগে ঢাকা যাওয়ার এবং আমি ঢাকা যাই। ঢাকা গিয়ে আমি আমার আরেক খালুর সাথে কাজ শুরু করি। বেশ কিছুদিন কাজ করি এবং আস্তে আস্তে ঢাকা শহর ঘোরাফেরা শুরু করি। কাজ করা শুরু করি। মাত্র ৯০ টাকা মজুরিতে লেবারের কাজে যোগ দেই, কিন্তু আমি যখন কাজ করতাম আর ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আমার সামনে দিয়ে যেত তাদের দেখে আমার খুবই খারাপ লাগত কারণ ইতিমধ্যেই আমি লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম।কাজ করতে আমার মোটেই ভাল লাগতোনা তাই আমি চাকরি খোঁজা শুরু করি। ২০০২ সালে আমি প্রথম চাকরিতে জয়েন করি সে সময় আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রাইমারী পাশ। আর আমার তখন কোন সাটিফিকেট ছিল না। প্রথম আমি ঢাকা ইপিজেড এর সামনে থেকে মাত্র ৮০টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কিনে চাকরির আবেদন করি কিন্তু ইপিজেডের কোন কোম্পানিতে আমার চাকরি হয় না । তবু ও আমি ভেঙ্গে পরি না, সপ্তাহে একদিন করে গার্মেন্টসে চাকরি খুজি এবং বাকি দিনগুলো কাজ করি। এভাবে চাকরি খোঁজার কিছুদিন পর আমার একটি কোম্পানিতে ১৬০০ টাকা বেতনে চাকরি হয়। আমি খুব আনন্দের সহিত সেই চাকরি করতে থাকি । তখন সার্টিফিকেট এর অভাবে আমার আর ভালো কোন প্রমোশন হয় না । মেশিনের কাজ শেখার চেষ্টা করি সেটাতে লাভবান হতে পারি না। আমার বাবা অনেক খোঁজাখুঁজির পরে আমার কাছে বেড়াতে যায়। এবং অফিসে গিয়ে বলে আসে যে আমার ছেলেকে পড়াশোনা করাতে চাই আপনারা বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন। তারপর ঐ চাকরি আর করা হয় না।
🖊️🖊️মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন
আমি বাড়ি চলে আসি এবং বাগাতিপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনীতে পড়াশুনা শুরু করি।ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণীতে আমার পড়াশুনা করা হয়নি। তাই ভতির পর বেশ কষ্ট হয়েছে আমার। নিয়মিত প্রাইভেট পড়তাম। মজার ব্যাপার হলো আমি সারাদিন যা পড়তাম তা ঘুৃমের মধ্যে রিভিশন হয়ে যেত। প্রথমে একটু কষ্ট হলে ও মনে মনে জিদ করি, আমি প্রথম পাঁচজনের মধ্যে থাকবো মন স্থির করি এবং রেজাল্টে ও তাই হয়। এ গ্রেড নিয়েএসএসসি পাস করি।
🖊️🖊️উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা জীবন
কলেজে ভর্তি হবার জন্য ফরম তুলি এবং পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল ইন্জিনিয়ারিং এ মেধা তালিকায় চান্স পাই। নতুন নতুন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করতে বেশ বিড়ম্বনায় পরি। অনেক রাত জেগে জেগে চলে আমার পড়াশুনা। আমাকে কোন প্রাইভেট পড়ার খরচ তখন দিতে পারে না। যেহেতু নিজ পছন্দেেই ভতি হয়েছি তাই মানসিক ও আথিক চাপে পরি। কিছুদিন পড়াশুনা করি কিন্তু তখন কেউ বুঝতে চাইতো না কারিগরী শিক্ষার গুরুত্ব! আমি হটাৎ খুবই অসুস্থ হয়ে পরি এর মাঝখানে বড় ভাই নিজ পছন্দে বিয়ে করে , সব মিলিয়ে বাবার অভিমান ও সবার অবহেলার কারনে আমার পড়াশুনার খরচ বন্ধ হয়ে যায়। আমার পড়াশুনা ১ বছরের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এক বছর পর আবার কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ আবারো সিভিল ইন্জিনিয়ারিং এ চান্স পাই কিন্তু আমার বাবা সাফ জানিয়ে দেয় আমি আর বাহিরে রেখে তোমাদের পড়াবো না। আমার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পরি। ঢাকা চলে যাই এবং গার্মেন্টস চাকরি করি। আবার চাকরি ছাড়িয়ে পড়াশোনার কথা বলে নিয়ে আসে কিন্তু আবারও সেই ঝামেলা। পড়াশুনার ঠিকমত খরচ পাই না। পরবর্তীতে আমি নিজ উদ্যোগে কৃষি ও কারিগরি কলেজে ভর্তি হই।এবং বাড়িতে টুকিটাকি ইনকামের পথ বের করে নিজেই নিজের খরচ চালাতে থাকি, এভাবেই চলতে থাকে আমার পড়াশোনা। ডিপ্লোমা শেষ করে আমি সরকারি চাকরি খুঁজতে থাকি ও কোম্পানির চাকরি করি এবং পাশাপাশি সরকারি চাকরির প্রিপারেশন নিতে থাকি। ২০১৪ সালে হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত হই কিন্তু দুঃখের বিষয় সে চাকরী ও আমার করা হয় না সিলেটে। মাত্র এক লক্ষ টাকার জন্য আমি অনেক পিছিয়ে পরি। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমি ঢাকাতে এসে একটি বিদেশী কোম্পানিতে চাকরি নেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এ। অন্য ইঞ্জিনিয়ারদের দেখে আমার মনের ভিতর অনেক কষ্ট লাগতো। তখন থেকেই আমি সরকারি চাকরির পিছনে মন প্রান দিয়ে চেষ্টা শুরু করি।তখন আমি বুঝেতে পারি আসলে কোন কাজের পিছনে লেগে থাকার কোন বিকল্প নেই। দুদিন আগে পরে কাজের ফল পাবই। এই বিশ্বাস নিয়েই সারাদিন চাকরি করি এবং রাত দুইটা পর্যন্ত পড়াশুনা করতে থাকি। ঢাকাতে থাকা অবস্থায় পরপর দুইটি চাকরিতে সুপারিশ প্রাপ্ত হই ।
কিন্তু এই সরকারি চাকরিতে সিলেকশন ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হওয়ার পরেও আমাকে২০ মাস বেকার জীবন-যাপন করতে হয়েছে। এই সময়টা আমার জন্য খুবই একটা খারাপ সময় অতিবাহিত হয়েছে, কারণ ওই দিকে আমার বেসরকারি চাকরিটাও নেই।এই সময়টায় আমি সবচেয়ে বেশি বিরম্বনায় পড়ি। প্রতিটা দিন যেন আমার জন্য অভিশপ্ত একটি দিন হয়ে দাঁড়ায় কারণ আমার সকল ইনকামের রাস্তা বন্ধ । তখন আমি উপলব্ধি করি যে আমার যদি একটা ছোটখাটো বিজনেস থাকতো তাহলে এই সময়টা আমি ব্যাকআপ দিতে পারতাম।
তখন আমি অনলাইনে বিভিন্ন বিজনেসের ধারনা খুজতে থাকি । এমন সময় আমি স্যারের utv লাইভের একটি ভিডিও দেখতে পাই। ভিডিওটি দেখে আমার ভালো লাগে এবং #নিজের _বলার _মত_ একটা গল্প_ ফাউন্ডেশন সার্চ দিই, এরপর নিজেই রেজিষ্ট্রেশন করি। আমি ১৩ তম ব্যচ থেকে এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়েছি। আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচিত হই এবং সিদ্ধান্ত নিই আমের বিজনেস দিয়েই শুরু করবো। গত বছর আম বিক্রি করে পঞ্চাশ হাজার টাকা লাভ করি। এরপর ড্রাগন ও শরিফা ফলের কাজ শুরু করি । তারপর মশার কয়েলর ডিলারশীপ নিয়ে কাজ শুরু করি। এখানেও অফলাইনে ভাল সাড়া পাই। মাস তিনেক মশার কয়েল নিয়ে কাজ করার কিছুদিনপর আমার সরকারি চাকরিতে জয়েন হয়।
যার কারনে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এখন একটু কষ্টকর।
বর্তমানে আমি একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছি। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমি একজন কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাই ইনশাআল্লাহ। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। সবার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে এখানেই শেষ করছি। 🤲
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৪৬
Date:- ১৬/০২/২০২২ইং
✅মাহবুব জামিল
✅ব্যচ ঃ১৩
✅রেজিঃ৫৪৬০৮
✅জেলাঃ নাটোর