মাঘের শেষে ঋতুর পালাবদলের মাধ্যমে প্রকৃতিতে বইছে ফাগুনের মনমাতানো বাতাস। না গরম না ঠান্ডা মাঝামাঝি টাইপের মৌসুম। আর সেই সাথে আসবে পোশাকের পরিবর্তন।
#গল্পে_গল্পে_বিজ্ঞাপন।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম
আল্লাহ্ সুবাহানহুয়া তা'আলার বিশেষ একটি নিয়ামত হচ্ছে- মাঝেমাঝে তিনি আমাদেরকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলেন যা আমাদেরকে তাঁর নিকটবর্তী করে দেয়।
আমরা সেটা হয়তো বুঝে উঠতে পারিনি।আর সেই জন্যই হতাশা কাজ করে। কিন্তু আল্লাহর উপর ভরসা করলে কোন না কোন উপায়ে কিংবা কারো উছিলায় সমাধান হয়ে যায়।
তাই তো আল্লাহর দরবারে শুকরিয়ার শেষ নেই এবং কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
কেননা প্রতি মূহুর্তে আল্লাহর দেওয়া অশেষ নিয়ামত ভোগ করছি। তার জন্য একবারও অন্তত বলি আলহামদুলিল্লাহ।
আর আল্লাহর আরেক নিয়ামত হলেন আমাদের প্রিয় মেন্টর। যদিও সকল প্রশংসার দাবিদার হচ্ছেন আল্লাহ। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ এতোটাই ভালো যে প্রশংসা না করে পারা যায় না।
প্রিয় মেন্টরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলেই নয়।কেননা এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম উপহার দিয়েছেন। যা মনে হয় নিজের পরিবার।
আরো ভালো লাগা মঙ্গলবার হাটবারে সবার নতুন নতুন প্রোডাক্ট দেখে নতুন নতুন আইডিয়া বা গল্প শুনে। মনে হয় প্রতি সপ্তাহে একবার ঈদের হাট বসে।
#আজকের_হাটবারে_৮৫_তম_হাটবারে_আপনাদের_সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আমিও আর লোভ সামালাতে পারিনি চলে আসলাম পণ্য নিয়ে গল্প করতে। আপন মনে কিছু সময় বক বক করতে। যদিও তেমন সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারিনা। তাও চলে আসলাম সবার কাছ থেকে শিখবো বলে।
কেননা এখানে সবাইকে কত আপন মনে হয়। মন খুলে কথা বলা গল্প লিখা যায়। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে কেউ খারাপ মন্তব্য করে নিরাশ করে না।বরং উৎসাহ ও উদ্দীপনা দিয়ে থাকে। আর সেটাই হচ্ছে আমার শক্তি বা সাহস।
কিছুদিন আগেও আমার মধ্যে একটা অজানা হতাশা কাজ করছিল। মনে হচ্ছিল আমার পাওয়া হয়ে গেছে। আর কিছুই পাবার নেই।বেঁচে থাকার আগ্রহ টা হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু সত্যি কথা আজকে যেটা দু-টানাতে আছে।
কাল সেটা নিশ্চয় হবে। কেননা যেখানে নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন আছে। সেখানে হতাশার কোন জায়গা নেই।কেউ না কেউ এসে হাত ধরে টেনে তুলবে মাটিতে পড়ে যেতে দেবে না।
আমিও সেই রকমই আশা বাণী পেয়েছি। শুধুমাত্র ৩ মিনিটের কিছু মূল্যবান কথা ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কানে আসছিল। আর আমি নিরব নিস্তব্ধতার সাথে সেই কথাগুলো শুনছিলাম। তার থেকে সারমর্ম হিসেবে একটি কথাই ফুটে উঠেছে চিন্তার মধ্যে পজিটিভি নিয়ে আসতে হবে।
যেটা স্যার সবসময়ই বলে থাকেন পজিটিভিটির কোন বিকল্প নেই। তার জন্য ব্যবহার জানতে হবে।
#স্যার_একটা_সেশনে_বলেছিলেন_শুধুমাত্র_ব্যবহার_না____জানলে_যে_কারো_জীবনের_সমস্ত_অর্জন_জিরো। যতই সফল হউন না কেন বা যত বড় মাপের মানুষই হউন না কেন !
কথা গুলো চিরন্তন সত্যি। কেননা জীবনে কর্ম হচ্ছে ব্যক্তিত্ব,কর্মই হচ্ছেই পরিচয়। মানুষ মানুষকে মনে রাখে না।মনে রাখে মানুষের কর্ম এবং ব্যবহার।
জীবনে ব্যক্তি, বস্তু,সৌন্দর্য এর কোন স্থায়ীত্ব নেই।আমরা আজ যা নিয়েছি এখান থেকেই নিয়েছি। যা পেয়েছি এখান থেকেই পেয়েছি। আমার যা ছিল তা অন্য কারো হয়ে যাবে। পরিবর্তনই সংসারের নিয়ম।
আর সেক্ষেত্রে আমিও কিছু পরিবর্তন করে নিলাম রোজ রোজ আমিই শুধু বিক্রেতা হবো। সেটা তো হতে পারে না।কেননা এই ফাউন্ডেশনের স্লোগান হচ্ছে আমরাই ক্রেতা আমরাই বিক্রেতা।
তাই আজকের গল্পে আমিই ক্রেতা হয়ে উঠলাম পরিবর্তনের ধারায় আবার বিক্রেতা হবার জন্য।
নিজের পেইজে নতুন কিছু কালেকশন এড করার জন্য এক আপুকে ইনবক্সে নক করি। কিছু দেশীয় পণ্য বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাই। আর যেটার উৎপাদন শুরু আমারাই নিজ উপজেলায়। তাই একটু বেশি আগ্রহ নিয়ে নক করলাম।
কেননা সেল দিতে হলে কারো না কারো কাছ থেকে পণ্য কিনে আনতে হবে।তাই আপুকে নক দিলাম।আপুকে প্রায় নক করি বলি আপু সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত হোন।
তো আজও নক করি। আপু রিসিভ করেই বলছেন আপু আমি খুব বিজি সেশন ক্লাসে যুক্ত হতে পারবো না।
আপনি জানেন এতোটা ব্যস্ত সময় পার করছি আমার ছেলের হাতের নখগুলো কেটে দিতে সময় পাচ্ছি না।ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা নিজেরাই ঘর দুয়ার পরিষ্কার করছে। নিজেরাই একা একা খাচ্ছে।
আমি বললাম আপু আজ আমি ক্রেতা হয়ে আপনার কাছে এসেছে।সেকথা বলতেই আপু একটু থমকে দাঁড়ান।যেহেতু আজ আমি কাস্টমার । তখন বললেন কি নিবেন আপু।
আপু আমার মনিপুরী কিছু প্রোডাক্ট লাগবে। আমি আমার পেইজে নতুন কালেকশন এড করতে চাই।যেহেতু আপনাদের নিজস্ব কারিগর ও কারখানা আছে।আমি চাইলে যেকোনো সময় হোলসেল নিতে পারবো।
কেননা মাঘের শেষে ঋতুর পালাবদলের মাধ্যমে প্রকৃতিতে বইছে ফাগুনের মনমাতানো বাতাস। না গরম না ঠান্ডা মাঝামাঝি টাইপের মৌসুম। আর সেই সাথে আসবে পোশাকের পরিবর্তন।
আর সেই সুন্দর মৌসুমে চাই আরামদায়ক কিছু প্রোডাক্ট যা উষ্ণতা ছড়িয়ে দিবে কাস্টমারদের শরীর ও মনে। কদর বাড়বে তাঁত কাপড়ের। আর এক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে মনিপুরী তাঁত।তাই আপুকে নক করা।
তখন আপু বললো জ্বি পারবো।আমার কাছে বিভিন্ন রিজেনেভুল প্রাইজের কালেকশন আছে। তারপর বলতে শুরু কোন টা নিলে কি পরিমান লাভ আসবে।
আমি বললাম আপু সবই ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে সব বিষয়ে জানতে হবে কোনটা কোন কোয়ালিটির?
কিভাবে উৎপাদন হচ্ছে?
সব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে হবে।
তখন দেখলাম আপু শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাকে সময় দিয়ে সব বলে যাচ্ছেন। আপুর কাছ থেকে শিখলাম কিভাবে কাস্টমারের সাথে কথা বলতে হয়।
আপু কি মিষ্টি হাসি দিয়ে আমার সাথে কথা বলতে বলতে বলছেন একটা প্রবাদ আছে---মনিপুরী মেয়েরা জন্মসূত্রেই তাঁতি ও প্রায় ৯০ শতাংশ নারী তাঁতের সাথে যুক্ত।
মনিপুরীদের উৎপাদিত তাঁতপণ্যের মধ্যে রয়েছে- শাড়ি, শাল, ওড়না, থ্রি-পিস, গামছা, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, বিছানার চাদর।
আর মনিপুরী রা বুননের কাজে খুবই দক্ষ। নিজদের কাপড় তারা নিজেরাই বুনে পরিধান করে।
আর মনিপুরী শাড়ির রঙ ও নকশা দেখলেই বোঝা যায় যে এটি মনিপুরী শাড়ি। কারণ মনিপুরী শাড়ির মূল বৈশিষ্ট্য হলো- এর নকশায় মাইরাংগ প্রতিকৃতি থাকবে। তাই প্রায় প্রতিটি শাড়ির আঁচল, জমিন ও পাড়ের নকশায় দেখা যায় এই প্রতিকৃতি।
আর মনিপুরী শাড়ি তৈরি হয় বরাবরই রঙের সুতায়। কিন্তু বর্তমানে এ শাড়ির রঙ, নকশায়ও ধীরে ধীরে পরিবর্তন চলে আসছে।কেননা এখন সবকিছুতেই পরিবর্তনের ছোয়া লেগেছে।
তবে মনিপুরী শাড়ি কালার কখনও নষ্ট হয় না।মা থেকে শুরু করে মেয়েরাও পড়তে পড়ে। সহজে নষ্ট হয় না।কারণ হাতে বুনা জিনিস খুবই টেকসই ও মজবুত হয়।
আর একটি শাড়ি বুনতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগে। তবে শাড়ির রঙ ও নকশার ওপর নির্ভর করে বোনার সময়।এবং তার প্রাইজ টাও নির্ভর করে ডিজাইনের উপর।
১৮৫০ টাকা থাকা শুরু করে ৩৬০০ টাকার পর্যন্ত প্রাইজ হয়ে থাকে।নিজস্ব কারখানা পাইকারি সেল করা হয়।
কি সুন্দর করে করে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে আমাকে সব বুঝিয়ে দিলেন।আমি মুগ্ধ হয়ে আপুর কথা শুনছিলাম। তারপর বললাম ঠিক আছে আপু আজ থেকে আমি আপনার ক্রেতা হয়ে গেলাম।
সত্যি অসাধারণ একটা ভালো লাগা কাজ করছিল। মাঝে মাঝে ক্রেতা হলে অনেক তথ্য জানা যায়। অনেকের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।
একে অপরের প্রতি আস্থা বিশ্বাস ও ভালোবাসা তৈরী হয়।আমার ক্রেতার হওয়ার অনুভূতি ছিল অসাধারণ। এক কথায় অনবদ্য।
এবং অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। বুঝতে পেরেছি শুধু পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে সেল বাড়ানো যায় না।তার সাথে যোগ করতে সততা ও কমিটমেন্ট এবং মিষ্টি ব্যবহার।
আর আমার সুন্দর ব্যাবহার আমাকে করবে মহান, ব্যতিক্রম ও সবার চেয়ে আলাদা।কেননা প্রবাদেই আছে ব্যবহারে বংশের পরিচয়।
কেননা সুন্দর চেহারাও বেশিদিন থাকে না কিন্তু চিরদিন আমাকে উজ্জীবিত করে রাখবে আমার কাজ ও সুন্দর ব্যবহার। আমাকে আলোকিত করে তুলবে আমার সুন্দর মন।
আর সবই সম্ভব নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন এর সাথে লেগে থাকলে। যেখানে রয়েছে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সম্মান। মনে হয় একটা পরিবার।
আর এর পুরো কৃতিত্ব প্রিয় মেন্টরের। তাইতো শ্রদ্ধার সাথে স্যালুট জানাই প্রিয় মেন্টরকে।
এটা হচ্ছে আমার পেইজ লিংক সবাই ঘুরে আসবেন।
https://www.facebook.com/haterkajshop
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৩৯
Date:- ০৯/০২/২০২২ইং
রুনু বেগম
সোশাল মিডিয়া ফিডব্যাক টিম
রেজিষ্ট্রেশন টিম মেম্বার
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
ব্যাচ ১২/৪৪৪৮২
জেলা - মৌলভীবাজার।