ভেবে ছিলাম প্রবাস জীবন মনে হয় অনেক সুখ আর টাকা বাতাসে ওড়ে।তাই বাতাসের উড়ন্ত টাকা ধরতে চলে এলাম প্রবাসে।আর আমার নাম হয়ে গেল প্রবাসী।
বিসমিল্লাহির রাহ মানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্
অসংখ্য ও অগনিত শুকরিয়া মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে। যিনি অত্যন্ত দয়ালু ক্ষমাশীল এবং সবজান্তা।যিনি অনেক দয়া করে মায়া করে কোটি কোটি মানুষের মধ্যে আমাকে একজন সুস্থ সবল মানুষ হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।লাখো কোটি দুরদ ও সালাম প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর প্রতি।
অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আমাকে যারা জন্ম দিয়ে এই সুন্দর পৃথিবী দেখিয়েছেন এবং লালন পালন করে সুশিক্ষিত করে মানুষ করেছেন সেই মা ও বাবার প্রতি রইল অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা।
আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব প্রবাস জীবনের গল্প।
শুরু হলো প্রবাস জীবন
০৩.১২.২০০৭
আমরা এক গ্রুপে এসেছিলাম ১০ জন।আমাদের ভিসা ছিল আউটসোর্সিং।একটি কোম্পানির নামে যারা বিভিন্ন কোম্পানিকে লোক ছাপ্লাই দেয়। তেমন আমাদের কেও একটি ফার্নিচার কোম্পানিকে দেয়। ভেবে ছিলাম প্রবাস জীবন মনে হয় অনেক সুখ আর টাকা বাতাসে ওড়ে।তাই বাতাসের উড়ন্ত টাকা ধরতে চলে এলাম প্রবাসে।আর আমার নাম হয়ে গেল প্রবাসী।
প্রবাসে আসার সাথেই বুঝে নিয়েছিলাম জীবন কি জিনিস। যে দিন এসেছিলাম তার পর দিন থেকেই কাজ শুরু করেছিলাম। ভালো পান্ট-শার্ট পড়ে যখন গাড়িতে করে কাজের স্থানে নিয়ে যায়।তখন মনে স্বপ্ন চোখ দিয়ে বের হয়ে উঠে গেল ওই নীল আকাশে।
যেখানে স্বপ্ন দেখতাম চেয়ার টেবিলে বসে অফিস করবো।এভাবেই প্রতিটা প্রবাসী একদিন তার নিজ স্বপ্ন গুলোর কথা নিজের অজান্তেই ভুলে যায়। যতই দিন যায় ততই চাহিদা বাড়ে। কিন্তু বেতন বাড়ে এক শতাংশ।
একটা প্রবাসীর কাজের উপর ভর করে কয়েকটি জীবন সাজায় ভালো থাকার।
প্রবাসী ছেলেটা হাজার কষ্টের বিনিময়ে পরিবারের জন্য মাস শেষে টাকা পাঠায়।বসের কাছে কত কথা শুনতে হয় তা শুধু যারা প্রবাসে থাকেন তারাই জানেন। সারাদিন কাজ করে বাসায় ফিরে কাপড় পরিষ্কার করতে হয়। রান্না করতে হয়। গোসল করে বাড়িতে ফোন দিয়ে সবার খোঁজ খবর নিতে হয় তাও হাসি মুখে।
কিন্তু বাড়ির থেকে শুনতে হয় শুধু চাহিদার কথা। এই মাসে এতো লাগবে, এই খরচ ওই খরচ আর সেই চাহিদার বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুমাতে যাই। তখন আর ঘুম আসেনা চিন্তায়। রাত শেষ হয়ে ভোর হয়। আবার কাজ শুরু সকাল ৮টা থেকে রাত ৯/১০ টা এভাবেই চলতে থাকে ৩টি বছর।
হঠাৎ একদিন আমাদের কোম্পানিতে ইমিগ্রেশন ব্লক দিয়ে আমাদের কোম্পানির ৩২ জনকে ধরে নিয়ে যায়। আমাদের অপরাধ ছিল আমাদের এজেন্টর সাথে কোম্পানির এগ্রিমেন্ট ছিল না।
৯৭ দিন কাম্পে বন্দি ছিলাম। এজেন্ট আর আমাদের ছাড়িয়ে নিতে আসেনি। শুনেছি অনেক টাকা জরিমানা হয়েছে এজেন্টর। এজেন্ট পালিয়ে যায়।মালেশিয়া কাম্পে অনেক কষ্ট সহ করতে হয়। আমি ও আমার সাথের লোক গুলো তার বাস্তব প্রমাণ। একটি টি-শার্ট ও একটি পান্ট পরে ৯৭ দিন বিনা অপরাধে মালেশিয়ার কাম্পে বন্দি ছিলাম। ৯৭ দিন পরে ইমিগ্রেশন ডিগ্লার আসলো নিজ নিজ খরচে টিকিট কেটে দেশে যাওয়া যাবে।ঠিক তাই করলাম দেশ থেকে টাকা এনে ইমিগ্রেশনের টিকিট কাটার দ্বায়ীত্বে যারা তাদের টাকা দিলাম।তারা টিকিট কেটেদিল।৩দিনের মধ্যে চলে আসলাম।
প্রবাস জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিচে তুলে ধরা হল।
একটা প্রবাস জীবন হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন প্রবাসীদের জীবনে হাজারো স্বপ্ন থাকে অনেক আশা,ভালোবাসা,সুখ আনন্দ ঠিক
তেমনি আবার থাকে অনেক হতাশা, দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা, ইত্যাদি ।
প্রতিটা মুহূর্তে যুদ্ধ করে কাটাতে হয় একজন প্রবাসীর জীবন।প্রিয়জনদেরকে একটু সুখে রাখার জন্য। প্রবাস জীবন আকর্ষণীয় হলেও পেছনে থাকে অন্যকিছু।
কেউ হয়তো কর্মজীবনের কিছু সময়ের জন্য প্রবাসী হন, আবার কেউ সারা জীবন কাটাতে।
এ জীবন কারো জন্য সুখের, কারো জন্য দুঃখের। দেশ থেকে মানুষ বিদেশ যায় দেশের মানুষগুলোকে ভালো ও আনন্দে রাখার জন্য। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও প্রবাসীদের ভূমিকা কম নয়।
প্রবাসের কর্মজীবিরা মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানকে ভালো রাখার জন্যই রাত-দিন পরিশ্রম করে থাকেন। তাই প্রবাসের জীবন একটু ভিন্ন।আমরা সবাই মনে করি প্রবাস জীবন অনেক সুখের আনন্দের।দেশ থেকে যখন প্রবাসের উদ্দেশ্য পাড়ি জমাই তখন সেই সময়টা অনেক আনন্দের।
কিন্তু নিজের পরিবার প্রিয়জন আত্মীয় স্বজন নিজ দেশ ছেড়ে যখন চলে আসা হয় তখন অনেক কষ্ট লাগে।
নিজের পরিবার প্রিয়জনদের ভালো রাখার জন্য এই কষ্ট বুকের মাঝে চেপে রেখে পাড়ি দিতে হয়।
প্রথমে অনেক খারাপ লাগে কারন এখানের সবকিছু অচেনা অজানা।আস্তে আস্তে হয়ত সবার সাথে পরিচয় হবো।
এখানের সব কিছু নতুন। কর্মজীবন শুরু নতুন দেশ নতুন মানুষ নতুন কাজ শুরু হয় কর্মজীবন।
আমরা সবাই কোন কাজের সাথে এখানে পরিচিত না।
প্রবাসে অনেক ধরনের সেক্টর আছে কাজ করার জন্য। আমরা সবাই যেকোন এক অপরিচিত কাজের সাথে যুক্ত হয়।
প্রথমে অনেক কষ্ট হয় কিন্তু আস্তে আস্তে সব কিছু মানিয়ে নিতে শিখে যায়।প্রবাসজীবন মানে ব্যস্ততা প্রবাস জীবন মানে লং টাইম ডিউটি।
তারপর ও নিজের পরিবারের সুখের জন্য এবং নিজের দেশের অর্থনীতি সচল রাখার জন্য কাজ করে যায়।
বিরতিহীন প্রবাস জীবনের ডিউটি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে।বিরতিহীন ভাবে চলে রাত পর্যন্ত।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে তারপর নামায পড়ে
কিছু হালকা নাস্তা করে শুরু হয় কাজ একটানা দুপুর পর্যন্ত চলে তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার শুরু হয় ডিউটি
চলতে থাকে সন্ধ্যা রাত দশটা বা বারোটা পযন্ত।
ডিউটি শেষ করে রুমে এসে রান্না করা নিজের পোশাক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে এবং নিজে ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করা।
পরিবারের একটু খোঁজ খবর নেওয়া।তারপর ঘুমিয়ে পড়া আবার সকালে ভোর বেলা উঠা।আমরা বেশি মিস করি দেশে যখন বিভিন্ন উৎসব হয়।
বিশেষ করে ঈদের সময়গুলো তখন আমরা পরিবার কে অনেক অনেক মিস করি।
এছাড়াও অনেক অনেক উৎসব গুলো।আর আমাদের প্রবাসীদের ঈদের নামায পড়ে শুরু করতে হয় ডিউটি।
নানান সমস্যা আমরা প্রবাসী বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখি।
আমরা প্রবাসে হাজার ও সমস্যার সম্মুখীন হয়।
কখনো কাজের,কখনো খাওয়ার, আবার কখনো
থাকার জায়গা, আবার কখনো অসুস্থতা
আবার পাসপোর্টের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।হাজার সমস্যা মাথায় নিয়ে প্রতিদিনের জীবন চলা।
প্রিয়জন আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সবার খোজ খবর নেয় সমস্যায় পড়লে।
সমস্যা শেষ হয়ে গেলে আর খোঁজ খবর রাখে না।
খোজ খবর নিতে গেলে ব্যস্তার অজুহাত। তারপর ও সবার খোজ খবর নেওয়া।
হাজার সমস্যা থেকে ভালো রাখার জন্য
আমাদের নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন.
আমরা জীবনে কি করবো? এই প্রশ্ন যখন আমাদের মাথায় কারা আমাদের খোঁজ খবর নিবে
বাংলাদেশের বুকে আর্বিভাব হলে আমাদের সকলের
প্রিয় মেন্টর ভালোমানুষ তৈরির কারিগরি আমাদের সকলের শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
প্রিয় স্যারকে হাজার ও স্যালুট আমরা প্রবাসী আমাদের এখন আছে এক ভালোবাসার প্লাটফর্ম
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন
এই প্লাটফর্মে পেয়েছি আমরা এক প্রিয় শিক্ষককে প্রিয় স্যারের প্রতিটা কথা প্রতিটা হাসি আমাদের অনুপ্রেরণা ও সুখের।
প্রিয় স্যার এখন আমাদের ভালোবাসা এক নয়নমণি।
নিজের বলার মত একটা গল্প " ফাউন্ডেশনে আমরা প্রবাসীদের পাওয়া।
নিজেদেরকে বেশী করে ভালোবাসতে শিখেছি। একটা সময় নিজেরা বেঁচে থাকার মাঝে শুধু ছিল হতাশা।
এখন আমরা নিজেকে খুব বেশি ভালোবাসতে শিখেছি। প্ল্যাটফর্ম আমাদেরকে চিনিয়েছে একজন সফল উদ্যােক্তা ও ভালো মানুষ হতে হলে পজিটিভিটি চিন্তার কোনো বিকল্প নেই।এই প্লাটফর্ম আমাদেরকে বাঁচিয়েছে হতাশার এক সমুদ্র থেকে।শিখেছি প্রচুর ধৈর্য ধারণ করতে।
আমাদের আয়কৃত অর্থে আমাদের পরিবারের বাহিরে অসহায় মানুষের হক রয়েছে। এই কথাটা নিজের ভিতরে খোদাই করা লিখা হয়ে গেছে, আর এটা স্যারের কথা থেকেই শিখেছি। নিজের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মিট-আপে বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় শুনছি এবং নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি হচ্ছে যা পরবর্তীতে আমাদের বিজনেসে সহায়ক হবে।নিজেদের ভিতর একটা অকল্পনীয় পরিবর্তন এসেছে যা কখন চিন্তা করিনি। আজকে তা বুঝতে পেরেছি।কৃতজ্ঞ জানাই আমাদের প্রিয় মেন্টর প্রিয় শিক্ষক ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে।
ধন্যবাদ জানাই এই প্লাটফর্মের সকলকে
কারন এই প্লাটফর্মে যুক্ত না হলে সকলের এতো ভালোবাসা কখনো আমরা পেতাম না।
এখন আমাদের হাজারো ভাই বোন আছে যারা আমাদের প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নেয়।
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই প্রিয় স্যারের প্রতি।
ভালোবাসা অবিরাম প্রিয় স্যার হাসি মুখে কথা বলি,সবার সাথে মিশে চলি,দুঃখ পেয়ে গোপন রাখি,সবাই ভাবে আমি সুখি,আসলে সুখি আমি নয়।আমার জীবন টা সুখের অভিনয় !
প্রবাস জীবন সুখের হোক বন্ধু প্রবাস জীবন বড় কষ্টের জীবন, সূর্যের উত্তাপ শরীরের রঙ পরিবর্তন করে প্রবাস মানেই কি নিঃসঙ্গতা? একাকিত্ব? নাকি প্রবাস মানেই হাড়ভাঙা পরিশ্রম। কেমন কাটে প্রবাসজীবন? কেউ বলে মলিন নয়তো ফ্যাকাশে। কেউ বলে পানসে। কারও কাছে রোমাঞ্চকর, অতিমাত্রায় স্বাধীনতা। কারও কাছে জীবনের সোনালী অধ্যায়ের যাত্রা শুরু কেউ ভাবছে, এই তো চলছি সোনার হরিণের পেছনে। আবার কেউ ফেলে দীর্ঘনিঃশ্বাস।
এই ভিন্ন ভিন্ন ভাবনাগুলো তাদের, যারা প্রবাসী। আর যারা প্রবাসী নন, তাদের ধারণাটা কেমন প্রবাসীদের সম্পর্কে? এটা আমার পক্ষে বলা মুশকিল হলেও কিছুটা তো উপলব্ধি করতে পারি।
যতদূর উপলব্ধি করেছি, প্রবাসী সম্পর্কে অপ্রবাসীদের ধারণা পুরোটাই অর্থকেন্দ্রিক। অর্থাৎ স্বজনেরা অন্তত ওই একটি বিষয়ে পরোপুরি সজাগ।
প্রবাসী মানে, থাকবে অর্থিক সচ্ছলতা। এই ধারণাটা মোটেই ভুল নয়। কিংবা নতুন কিছু নয়। এটা তো ঠিক বাংলাদেশের সমৃদ্ধ অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর চাবিকাঠি তো দীর্ঘকাল ধরেই প্রবাসীদের নিয়ন্ত্রণে।
আমার লেখার মাঝে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমি নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের একজন গর্বিত আজীবন সদস্য।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৩৭
Date:- ০৪/০২/২০২২ইং
নামঃ জহিরুল হক সান্টু ফরাজী
ব্যাচঃ১৪
রেজিস্ট্রিশনঃ ৬৭৩৩৬
জেলাঃ মাদারীপুর সদর
বতর্মান অবস্থানঃ NRB Malaysia
রক্তের গ্রুপঃ O পজেটিভ