সফল মানুষ হতে গেলে,দশ পাঁচটা ভুলে যেতে হবে
⭐⭐বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।⭐⭐
আসসালামু আলাইকুম গ্রুপের ছোট বড় সবাইকে।
⭐⭐প্রথমে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সকলের পরিচিত ও প্রানপ্রিয় মেন্টর, মানুষ গড়ার কারগর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি।
যার অক্লান্ত পরিশ্রম ও কষ্টের বিনিময়ে আজকে আমরা সবাই এত সুন্দর একটা পরিবার পেয়েছি এবং এখানে সবাই ভালো মানুষ।
আর এখানে এসে অনেককিছু পেয়েছি,যা বলে শেষ করতে পারবোনা।
এখন বলবো আমার নিজের অভিঞ্জতা থেকে,
⭐⭐গল্পে গল্পে সেল পোস্ট ⭐⭐
⭐⭐ আমি খুব চঞ্চল ও মিশুক, কোন কাজ দেখলে সেটা শিখে না করা পযর্ন্ত ঐ টা নিয়ে ভাবা একজন মানুষ।
⭐⭐ আমার একজন পরিচিত লোকের কাছে জানতে পারলাম যে আমাদের মুক্তাগাছায় সরকারি ভাবে আবেদন করলে সেখানে পরিক্ষা নেওয়ার পর যারা যারা টিকে তাদেরকে নেওয়া হয় ও সম্পূর্ণ কাজ শিখিয়ে পরে সার্পিফিকেট দেওয়া হয়।
⭐⭐যেই শুনা,সেই কাজ আমারো,কেমন জানি আগ্রহ হলো যে আমার এত কাছে এই কাজ শিখায়,তাহলে আমি কেনো পিছিয়ে। আমিও যোগাযোগ করবো।কেনো জানি বার,বার মনে হচ্ছে এই কাজটাতে গেলে আমি টিকবো ও এটা আমি করতে পারবো এবং এটা আমার খুব দরকারি। শুরু থেকেই কিন্তু আমার এই বিশ্বাস টা ছিলো এবং এটাতে গেলে যে আমি ফেরত আসবো না এটা কখনো ভাবিনি।
একজন লোকের যে কোন কর্মের ক্ষেত রে এই Confidence টা অনেক বিশাল বড় ভূমিকা রাখে।
⭐⭐ পরে গেলাম এবং আবেদন করে আসসাল।
বললো 15 তারিখ পরিক্ষা।
পরিক্ষা দিয়ে আসলাম।বললো তিনদিন পর রেজাল্ট।তিনদিন পর গেলাম, গিয়ে দেখি 9 নাম্বারে আমার নাম।
বিশ্বাস করার মত না আমার সেদিন খুব ভালো লেগেছে এবং মনে মনে বলেছি আমার বিশ্বাস জয়লাভ করেছে।
⭐⭐ যখন এই আবেদনটা করেছিলাম তখন কাওকে বলে করিনি,না বলার কারন একটাই,আমি যদি না টিকি তাহলে সবাই হাসাহাসি করতে পারে।
আর যদি টিকি তাহলে সবাইকে বলতে পারবো গর্ব করে সে জন্য ই।
আমি কখনো কোন কাজ করার আগে কাওকে কিছু বলিনা কোন কিছু মনে মনে পরিকল্পনা করে বুদ্ধি খাটিয়ে করি যাতে পরে আমার কাজ দেখে সবাই গর্ব করে বলে এর জন্য। আর আমি তো খারাপ কোনকিছু করতেছিনা। এই বিশ্বাস থেকেই।
আর যদি আগে জানাই তাহলে যদি আমি সেই কাজটা না পারি বা না টিকে থাকতে পারি তাহলে সবাই হাসবে এবং আমাকে নিয়ে তামাশা করবে।আর আমি সেই তামাশা বা হাসির খোরাক হতে পছন্দ করিনা।
⭐⭐যাক, কাজ শুরু।
1 তারিখ থেকে ট্রেনিং শুরু হলো।
⭐⭐ প্রথমে হেড ম্যাডাম একজন তারপর তার পরে আরো দুইজন।
ক্লাস সকাল 10 টা থেকে 4 টা পযর্ন্ত। Lunch এর টাইম আর আমি ক্লাসে একটু কথা বেশি ই বলি।
আর Lunch এর টাইম ও সুযোগ খুঁজি কথা বলার। এবং সুযোগে সুযোগে কথাও বলি। কথা বলার এক পর্যায়ে ম্যাডাম বলে কি করেন আপনি? তখন
শুরু হলো আরো কথা বলা। বললাম, অনলাইন ব্যবসা,
আমি একজন ড্রেস ডিজাইনার
বাসায় ই সব করি।
তখন তিনি বললেন বাসা কোথায়?
তখন বাসার ঠিকানাটা দিলাম তখন ম্যাডাম বললেন একদিন বাসায় যাব।
দু তিনদিন যায় ম্যাডাম তো বাসায় আসেনা।
আচ্ছা যাক,
দুতিন দিন পর আবার ম্যাডার এর সাথে কাজের ফাঁকে টিফিন এর সময় কথা বললাম।
তখন ম্যাম বললেন আপনি কি কি নিয়ে কাজ করেন?
তখন বললাম।
1:বেবি ফ্রক
2: বেবিদের শীতের সোয়েটার
3: ওয়ান পিছ
4: টুপিছ
5:থ্রিপিছ
6:শাড়ী
7:পাঞ্জাবী
আরো অন্যান্য আইটেম আছে।
আপনি বাসায় গেলে সব দেখতে পারবেন।
ম্যাডাম বললেন আচ্ছা ঠিক আছে।
সেদিন ছুটির পর বাসায় গেলাম।
আর যাওয়ার আগে বলে আসলাম আজ কিছু কাপড় ডেলিভারি দিব।
তখন বাসায় এসে তাড়াহুড়ো করে কাজগুলো শেষ করে ডেলিভারি দিব সেই কাপড় গুলো নিয়ে যাচ্ছি সুন্দরবন কুরিয়ারে তখন আমাদের অফিসের মাঝামাঝি আমি।
আর অফিসের দরজা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম দুজন বসে আছে।
আমি ঠিক তখন ই অফিসে চলে আসি ও ম্যাডাম কে দেখাই।তখন তার পছন্দ হয়ে গেছে এবং তিনি বললেন এ গুলো কি আরো আছে? তখন বলি দোকানে আছে ,আমি এখন দোকান থেকে নিয়ে আসবো।আপনি আজ বাসায় যাইয়েন। পরে দেখে আসবেন।
বিকাল শেষ হবার পথে আমি ভাবলাম হয়তো ম্যাম আর আসবেনা।
ঠিক তখন ই ;
ও আরেকটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম এদিন ম্যাম নিজের আগ্রহ দেখিয়ে আমার ফোন নাম্বার টা রেখেছিল। আর সেই নাম্বারে ম্যাম কল দিয়ে
বললো আপনি বাসায় আছেন?
জ্বী ম্যাম আছি,আপনি আসেন।
⭐⭐ ম্যাম আসলেন আমি একটা একটা করে আমার যতগুলো আইটেম আছে প্রায় সবগুলো দেখালাম ও ম্যাম সবগুলো দেখে বললেন।
আমি তো দেখে অবাক হয়ে গেলাম আপনার বাসায় এত পন্য আছে।
তখন তিনি বললেন আমার জন্য একটা শাড়ি ও হাজবেন্ড এর জন্য পাঞ্জাবী দেন দিলাম ওনি পছন্দ করে নিলেন।
তখন ওনি বললেন কাল ঢাকা যাব সার্টিফিকেট আনার জন্য তো সেখানে একটা প্রোগ্রাম আছে
এর জন্য ভালো দেখে একটা থ্রিপিছ দেন এবং সেটা আপনি তৈরি করে দিবেন।
তখন থ্রিপিছ ও নিলেন।
⭐⭐ তাহলে আমার মেয়ে বাকি থাকবে কেনো?
কাল ওর জন্ম দিন ওর জন্য ভালো জামা থাকলে দেখান।
তখন মেয়েও জন্য ও জামা দেখালাম ও পছন্দ করে নিয়ে নিলেন একটা জামা।
⭐⭐ তখন আরো তিন চারটা থ্রিপিছ ডিজাইন ও তৈরি করতে দিলেন। বললেন আজ কের এই সময়টাই ঠিক কাল এ সময়টাতে সবগুলো দিতে হবে। তখন আমি একটু চিন্তা য় পরে গেলাম।কারন ততক্ষনে আলাপ করতে করতে প্রায় দশটার মত হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে বলতেছি কিভাবে সম্ভব?? কারন একা মানুষ আমি।
সংসারের কাজ, মেয়েকে রেডি করে স্কুলে নিয়ে যাওয়া,নিয়ে আসা,তার খাবার রেডি করা, ঘর গৌঁছানো,নামাজ, মেয়েকে পড়ানো, অইনলাইন কাজ, ড্রেস ডিজাইনের কাজ, বাসায় লোকজন আসে ড্রেস নেওয়ার জন্য সেগুলো মেনশন করা, তারপর বিউটিশিয়ান কোর্সের ক্লাস সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা পযর্ন্ত তার পড়া + প্যাকটিক্যাল করা।এসব ভেবেই যাচ্ছি। এক পযায়ে বললাম পারবো কারন সব পারলে এটাও পারবো। কারন তখন এটা ভেবেছিলাম ওনি তো ড্রেস গুলো নিচ্ছে আমার পোশাক
সম্পর্কে তার বুঝ ধারনা হলো কিন্তু কষ্ট হলেও যদি আজ এই ডিজাইন গুলো তৈরি করে দিতে পারি তাহলে সে পরবর্তীতে আমার কাছে আসবে এবং আরো কয়েকজনের কাছে বলবে আমার তৈরিকৃত ডিজাইন গুলোও দেখবে + তার সে সম্পর্কে ও ভালো ধারনা হবে।
⭐⭐ আমি ভাবলাম দু এক রাত না হয় ঘুম একটু কম ই ঘুমাবো আর সবসময় তো আর এরকম হবেনা একদিন না হয় কষ্ট একটু বেশিই করলাম। তখন স্যারের কথা মনে হলো
সফল মানুষ হতে গেলে,দশ পাঁচটা ভুলে যেতে হবে। ম্যাম চলে গেলেন ঠিক তখন ই আর একটু ও সময় নষ্ট না করে ভাবলাম এখন যদি ডিজাইন গুলো ও কাটিং করে রাখি সব তাহলে কাল শুধু সেলাই করে আয়রন দিতে পারবো। ইনশাআল্লাহ। কারন সকাল থেকে আবার অফিস আছে।এবং সেই রাতেই সব ডিজাইন ও কাটিং করে পরে রাত প্রায় একটার দিকে ঘুমালাম।
⭐⭐পরেরদিন আযানের আগে সজাগ পেলাম,ফজরের নামাজ দিয়ে শুরু করলাম।নাজাম শেষ করে তাড়াতাড়ি করে মেয়ের স্কুলের খাবার রেডি করে মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাসায় এসে একটা থ্রিপিছ তেরি করে ফেললাম। ও তাড়াতাড়ি করে 9:30 রেডি হয়ে ছুটলাম অফিসের দিকে। অর্ধেক ক্লাস হলো ম্যাম বললো আমি ছুটি নিয়ে বাসায় যাচ্ছি তোমরা সবাই, এখন যেহেতু টিফিন এর সময় তো একঘণ্টা পর তোমাদের ও ছুটি।তো আমি বললাম আমি চলে যাই,ম্যাম বললো না তুমি এখন চলে গেলে বাকিরাও তাই করবে। এই বলে ম্যাম চলে গেছেন।আমি তো অবাক ম্যাম কাল বাসায় বললো এক আর এখন ক্লাসে আরেক।আর তার জন্য ই যেতে চাইলাম ওনি এমনটা করলেন কেনো? মনে মনে প্রশ্ন। এখন গেলে তো আরো কিছু কাজ রেডি করতে পারতাম।না। একঘন্টা সময় অযথা বসে রইলাম আর খুব মন খারাপ হলো। দুইটার সময় বাসায় গিয়ে এই অল্প সম য়ের মধ্যে কিভাবে কি করবো।অযথা কেনো আমাকে বসিয়ে রাখলো।।
⭐⭐যাক বাসায় গেলাম খুব তাড়াতাড়ি করে কাজ করতেছি বিকাল হয়ে গেলো ভাবতেছি সবগুলো কি দিতে পারবো? তখন ম্যামকে ফোন দিলাম, বললাম সবগুলো কি আজ ই দিতে হবে, আর এখন ই আসবেন তখন ওনি বললেন আট টা নয়টার আগে দিলেই হবে। আর আপনার কি কোন সমস্যা? আমি বললাম না সমস্যা নেই ঐ যে দু এক ঘন্টা বাড়িয়ে বলাতে খুশি যে তাহলে তো হ য়েই যাবে। যাক সবগুলো কাজ শেষ করে খুব সুন্দর করে আয়রন করে ওনাকে ফোন দিলাম। এবং ওনি দুপুরে অফিসে আমাদের সবাইকে রেখে আমার বাসায় এসে আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলেন তার মেয়ের কেক কাটবে বলে। এবং কেক কাটার অনুষ্ঠান শেষে তার মেয়ের সাথে আমার মামণী কেও তাদের বাসায় নিয়ে গিয়েছিল কারন আমার মেয়ে ও তার মেয়ে খুব সুন্দর ফেন্ড হয়ে গিয়েছে একদিনের পরিচয় ও কথা বলার মধ্যে। ফোন দেওয়ার পর রাতের রান্না শেষ করে আমার মেয়েকে ওর যা পছন্দ তা নিজের হাতে রান্না করে মুখে তুলে খাইয়ে সাথে করে বাসায় নিয়ে আসলেন।
নিদিষ্ট সময়ের আগেই রেডি।তা দেখে ম্যাম ও খুব খুশি ও আমিও খুব খুশি। ম্যাম যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল জীবনে আজ আরেকটা পরিক্ষা দিয়েছিলাম ও তা উত্তীর্ণ হলাম। আলহামদুলিল্লাহ্।
⭐⭐ তখন ম্যাম বাসায় এসে সবগুলো ডিজাইন দেখে এত খুশি এবং আমাকে বললেন আমার অনেক পরিচিত লোক আছে তাদের সাথে আপনাকে কথা বলিয়ে দিব। আপনি আমার দোকানেও আপনার পন্য রেখে বিক্রি করতে পারবেন।
⭐⭐আর আমার এক বান্দবী আছে আমি যা কিনি ওনিও তাই আমার মত ।তারপর আমাদের বড় ম্যাডাম ও অনেক জামাকাপড় কিনে ওনার সাথেও কথা বললো।
আমার অনেক ধরনের লোক আছে ওরা পাইকারি নেয় একদিন পরিচয় করিয়ে দিব আপনি তো পাইকারি ই দিতে পারবেন না
সময়ের অভাবে।।
এভাবেই চলছে এখন আমার ব্যবসা।মাশাআল্লাহ এখন বাসা থেকেই ভালো সেল হচ্ছে।
এই হচ্ছে সবার সাথে কথা বলা ও সহজেই মিশতে পারার একটা গুন যা একজন উদ্যোগতার জন্য খুব ই গুরুত্বপূর্ণ।
অবশেষে আমি আমার পরিচয় টা দিয়ে যাচ্ছি।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৩৫
Date:- ০১/০২/২০২২ইং
লায়লা আরজুমান
ব্যাচ:16
রেজি:76551
জেলা :ময়নসিংহ
থানা: মুক্তাগাছা
বতর্মান ও স্থায়ী মুক্তাগাছা মধ্যহিস্যা।
পেশা :অনলাইন ব্যবসা
ও উদ্যোগতা।
পাশাপাশি সেলাই ট্রেইনার ও ড্রেস ডিজাইনার।